বালু ব্যবসা-আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হোক

২০১০ সালের ২১ মার্চ হাইকোর্ট নির্দেশ জারি করেছিলেন, ঢাকার পার্শ্ববর্তী চার নদীর তীরবর্তী সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল ৭ শিল্প প্রতিষ্ঠান। সে আপিল খারিজ করে দিয়ে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখেন।


জনসেবায় নিয়োজিত সরকারি স্থাপনা ছাড়া সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ের পর কার্যত বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আর কোনো বাধা থাকার কথা নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পর স্থাপনা উচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগের উদ্যোগে ঘাটতি থাকাও প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও ঢাকার পার্শ্ববর্তী নদী-তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি। শুধু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই নয়_ দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এ নিয়ে আন্দোলন করছে, গণমাধ্যমে বহু প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এক কথায় শহরের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে নাগরিকরাও কায়মনোবাক্যে অবৈধ স্থাপনা, দূষণ ও দখলমুক্ত নদীই প্রত্যাশা করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবৈধ দখল বহাল আছে এবং বিভিন্ন সময়ে নিত্যনতুন দখল ও দূষণের খবর মিলছে। গত ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট শীতলক্ষ্যা সংলগ্ন কাঁচপুর সেতু ও তুরাগ নদ দখল করে মিরপুরের সনি্নরটেকের সব বালুমহাল উচ্ছেদ করে নদীতীরকে পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। রায়ের পর ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও নদীতীর দখল করে স্থাপিত বালুর গদিগুলো উচ্ছেদ হয়নি। দুই বছরেও যখন সর্বোচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়িত হয় না, তখন ১৫ দিন খুব সামান্য সময়। দুই বছর আগে দেওয়া রায়ের কপি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পেঁৗছায়নি, এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে কেন তারা বসে থাকছেন? বিআইডবি্লউটিএসহ দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোই-বা কী করে? করছি-করব বলে ধীরগতির যেসব অভিযান চালায়, তাকে কোনো অর্থেই কার্যকর বলা যায় না। আমরা মনে করি, নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত। এ নিয়ে যা চলছে তা শুধু আদালতের রায়ের প্রতি অবমাননাই নয়, শহরের পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। এ বিষয়ে দ্রুত সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।
 

No comments

Powered by Blogger.