নতুন ইসির প্রথম পরীক্ষা ডিসিসি নির্বাচন

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচন করাই হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রথম পরীক্ষা। একজন নির্বাচন কমিশনার প্রথম আলোকে বলেন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের চেষ্টা থাকবে সে রকম পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে বিএনপি নির্বাচনে আসে।


ইসি গঠনের পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বলেছে, এ নিয়োগ অসাংবিধানিক। তাই বিএনপি এই কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
তবে বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, ডিসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসি ও সরকারের সঙ্গে দর-কষাকষির কৌশল নেবেন তাঁরা। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার শর্তে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ দেখাতে পারে।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, মোহাম্মদ আবদুল মোবারক এবং জাভেদ আলী বৃহস্পতিবার শপথ নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি এম সাখাওয়াত হোসেনের মেয়াদ শেষে যোগ দেবেন নবনিযুক্ত অপর কমিশনার মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ।
নতুন ইসির অধীনে প্রথম নির্বাচন হবে ১৫ মার্চ। ওই দিন জাতীয় সংসদের শরীয়তপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন। তবে ইসির মূল চিন্তা ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) ঘিরে। কারণ ডিসিসিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালের ২৪ এপ্রিল। এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় ২০০৭ সালের ১৪ মে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি।
২০০৯ ও ১০ সালে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন একাধিকবার ডিসিসি নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেও সরকারের অসহযোগিতার কারণে তা সফল হয়নি। উল্টো সরকার ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে ভাগ করে গত ২৯ নভেম্বর সংসদে আইন পাস করে। নতুন আইনে ৫৬টি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এবং ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। উত্তরের ভোটার সংখ্যা ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৪ জন এবং দক্ষিণের ১৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪৫ জন।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, করপোরেশন গঠনের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সুযোগ থাকলেও নিজেদের মেয়াদে ভোট গ্রহণের সুযোগ না থাকায় শামসুল হুদার কমিশন ডিসিসি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে আইন সংশোধন করে ৯০-এর পরিবর্তে ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান করা হচ্ছে।
ডিসিসি নির্বাচন এবং বিএনপির মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে নতুন সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। নির্বাচন কমিশনার জাভেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো সবে শপথ নিয়ে কমিশনে যোগ দিয়েছি। এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার কোনো সুযোগ হয়নি। তবে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে। সে জন্য আলোচনা করে যা যা করার দরকার করা হবে।’
নতুন কমিশন সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নেতিবাচক মন্তব্য করলেও জয়ের সম্ভাবনা থাকায় শেষ পর্যন্ত বিএনপি ডিসিসি নির্বাচনে অংশ নিতে পারে বলে দলীয় সূত্র জানায়। সে রকম আভাস গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের কথাতেও পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘ডিসিসি তফসিল ঘোষণা হোক। তখন আমরা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাব, নির্বাচনে যাব কি যাব না। এ বিষয়ে এখন জানানোর কিছু নেই।’

No comments

Powered by Blogger.