টেন্ডুলকার নয়, যুবরাজের ম্যাচ
তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের স্যুভেনিয়রে প্রথম লেখাটা এখানকার ৮০ বছরের ক্রিকেট-ঐতিহ্য নিয়ে। সেই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হতো শচীন টেন্ডুলকার তাঁর সেঞ্চুরির সেঞ্চুরিটা পেলে। মাত্র ২ রানেই টেন্ডুলকারের আউট হয়ে যাওয়ায় চেন্নাইয়ের এই রাতটা আলোকোজ্জ্বল হলো না। বরং আবারও মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের ব্যাটিং-ধসের পর একটা সময় পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কড়া চ্যালেঞ্জ বড় এক স্নায়ুর পরীক্ষা নিল মাঠভর্তি দর্শকের।
শেষ পর্যন্ত ভারতের সহজ জয়ে চিত্রনাট্যের সমাপ্তি। নিজেরা ২৬৮ করে ৮০ রানের জয়। এই মাঠে ইংল্যান্ডের ২৪৩ তাড়া করতে নেমে শেষ দিকে লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৮ রানে হেরে বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন পরীক্ষার সামনে। সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশ পাস নম্বরের ধারেকাছেও নেই। আশ্চর্য ব্যাপার, কালও একই অবস্থা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় উইকেট পড়ল ১৫৪ রানে। দেখতে দেখতে ৪৩ ওভারে ১৮৮ রানে অলআউট!
এতে অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনালেই অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতকে। ২৪ মার্চ আহমেদাবাদে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মহারণ, ২০০৩ ফাইনালে প্রতিশোধ নেওয়ার একটা সুযোগ ভারতীয় দলের সামনে। কিন্তু কাল রাতে হোটেলে ফিরে প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবার চেয়ে নিজেদের সমস্যাগুলোই মাথায় কিলবিল করার কথা ধোনির।
সমস্যার নাম হঠাৎ ভেঙে পড়া। দুরন্ত বেগে ছুটতে ছুটতে খাদে বাস পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিংয়ের বিজ্ঞাপনই হয়ে গেছে এটা। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ—দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৯ রানে ৯ উইকেট নেই! অত বড় বিপর্যয় কাল হয়নি ঠিকই, তবে এ দিন ২৮ রানে শেষ ৫ উইকেট হারানোও তো কম নয়। কে বলবে এটি ক্রিকেট-দুনিয়ায় সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপের ছবি!
পাওয়ার প্লেতে রান কই? বোলিং পাওয়ার প্লেতে ২৮, ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতেও চার-চারটি উইকেট হারিয়ে ২৮! ২৮ ওভারে ২ উইকেটে ১৫০, ৪০ ওভারে ৩ উইকেটে ২১২। বিকল গাড়ির মতো ঠেলে-ধাক্কিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫ বল আগে ভারত অলআউট ২৬৮ রানে।
হাঁটুর হালকা চোট এ দিন বিশ্রামে রেখেছে বীরেন্দর শেবাগকে। টেন্ডুলকার নিজের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার পর শুরুতেই বড় ধাক্কা। আম্পায়ার আউট না দিলেও নিজেই ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। টেন্ডুলকার নিজেও যে একজন বড় মাপের মানুষ সেটি বোঝালেন আরেকবার। যে দুজনের ব্যাটিং দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বসে থাকতে রাজি, তাঁদের একজনও উইকেটে না থাকা মানে আকর্ষণ অর্ধেক কমে যাওয়া। টেন্ডুলকার যখন আউট, গোটা স্টেডিয়াম যেন ঢেকে গেল শোকের চাদরে। থেমে গেছে বাঁশি ফুঁকানো, পতাকা ওড়ানো। কারও যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না টেন্ডুলকার আউট!
যুবরাজ সিং মঞ্চে এলেন। টেন্ডুলকারের ম্যাচ হলো না, এটি হলো আসলে যুবরাজেরই ম্যাচ। এই বিশ্বকাপেই এর আগে দুটি করে ম্যাচ জেতানো ফিফটি, একটায় ৫ উইকেটও। সেঞ্চুরি পেলেন এই প্রথম। এবারের বিশ্বকাপটা যেন যুবরাজময় হয়ে উঠছে!
ক্ষমতাসীন করুণানিধি না জয়ললিতা জিতবেন আগামী মাসের তমিলনাড়ুর রাজ্য নির্বাচনে, এটা নিয়ে এখানকার মানুষের বেশ আগ্রহ। এসবই কাল ভুলিয়ে রাখলেন যুবরাজ। কোহলির সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ২৩.৫ ওভারে তুললেন ১২০ রান। এটিই ভারতীয় ইনিংসে সবচেয়ে স্বস্তির অংশ। ১১২ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া যুবরাজ আউট হলেন ১১৩ রানে, ১০ চার, দুই ছক্কা। বল হাতে দুই উইকেট। ব্যাট-বলে উজ্জ্বল (এই বিশ্বকাপে যুবরাজের ব্যাটিং গড় ৯৪ আর স্ট্রাইক রেট ৮৬) যুবরাজ ক্রমেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নিজেকে এবং হয়ে উঠছেন দলের কান্ডারি।
ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় পরীক্ষা হবে কেমার রোচের গতির সামনে—ম্যাচের আগে অনেকেই বলছিলেন। কিন্তু রোচ ছিলেন না ম্যাচে। রবি রামপল হয়ে উঠলেন উইকেট শিকারি। ৫১ রানে ৫ উইকেট—রান একটু বেশি দিলেও ভারতীয়দের প্রাণঘাতীর নাম তো রামপলই। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর এই তরুণ ক্যারিবিয়ান আঞ্চলিক যুব টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচে পেয়েছিলেন ৪৫ উইকেট! তাঁর জ্বলে ওঠার বার্তা আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
অথচ দেখুন, ম্যাচ-পূর্ব আলোচনা ছিল স্পিনারদের নিয়েই। অফ স্পিনার আর অশ্বিনকে না খেলানো নিয়ে অনেক জল ঘোলার পর এ দিন আশিস নেহরার বদলি হিসেবে তিনি একাদশে। এর আগে চিদাম্বরমের উইকেটে ইংলিশ স্পিনার সোয়ান ও ট্রেডওয়েল বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন, সেটা দেখেই কিনা এ দিন ধোনি বোলিং শুরুই করলেন অশ্বিনকে দিয়ে। শুভসূচনা—অশ্বিন প্রথম ওভারে দিলেন এক রান।
তবে গেইলবিহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি ভারতীয় স্পিনাররা। ইনজুরির কারণে একাদশের বাইরে গেইল। মিডল-অর্ডারে ফেরানো হয়নি অভিজ্ঞ চন্দরপলকে। তবু ধুঁকল ভারতীয় বোলিং। উইকেটে জমে যাওয়া স্মিথকে (৮১) ৩১তম ওভারে ফেরালেন দ্বিতীয় স্পেলে আসা জহির খান। এই স্পেলে ২ ওভারে মাত্র ৪ রানে ১ উইকেট নিলেন জহির। ৩৩তম ওভারে মারকুটে পোলার্ডকে ইউসুফ পাঠানের হাতে ক্যাচ বানালেন হরভজন। এর পর তো পরাজয়ের দিকেই এগিয়ে চলা।
শেষ পর্যন্ত ভারতের সহজ জয়ে চিত্রনাট্যের সমাপ্তি। নিজেরা ২৬৮ করে ৮০ রানের জয়। এই মাঠে ইংল্যান্ডের ২৪৩ তাড়া করতে নেমে শেষ দিকে লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৮ রানে হেরে বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন পরীক্ষার সামনে। সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশ পাস নম্বরের ধারেকাছেও নেই। আশ্চর্য ব্যাপার, কালও একই অবস্থা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় উইকেট পড়ল ১৫৪ রানে। দেখতে দেখতে ৪৩ ওভারে ১৮৮ রানে অলআউট!
এতে অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনালেই অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতকে। ২৪ মার্চ আহমেদাবাদে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মহারণ, ২০০৩ ফাইনালে প্রতিশোধ নেওয়ার একটা সুযোগ ভারতীয় দলের সামনে। কিন্তু কাল রাতে হোটেলে ফিরে প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবার চেয়ে নিজেদের সমস্যাগুলোই মাথায় কিলবিল করার কথা ধোনির।
সমস্যার নাম হঠাৎ ভেঙে পড়া। দুরন্ত বেগে ছুটতে ছুটতে খাদে বাস পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিংয়ের বিজ্ঞাপনই হয়ে গেছে এটা। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ—দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৯ রানে ৯ উইকেট নেই! অত বড় বিপর্যয় কাল হয়নি ঠিকই, তবে এ দিন ২৮ রানে শেষ ৫ উইকেট হারানোও তো কম নয়। কে বলবে এটি ক্রিকেট-দুনিয়ায় সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপের ছবি!
পাওয়ার প্লেতে রান কই? বোলিং পাওয়ার প্লেতে ২৮, ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতেও চার-চারটি উইকেট হারিয়ে ২৮! ২৮ ওভারে ২ উইকেটে ১৫০, ৪০ ওভারে ৩ উইকেটে ২১২। বিকল গাড়ির মতো ঠেলে-ধাক্কিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫ বল আগে ভারত অলআউট ২৬৮ রানে।
হাঁটুর হালকা চোট এ দিন বিশ্রামে রেখেছে বীরেন্দর শেবাগকে। টেন্ডুলকার নিজের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার পর শুরুতেই বড় ধাক্কা। আম্পায়ার আউট না দিলেও নিজেই ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। টেন্ডুলকার নিজেও যে একজন বড় মাপের মানুষ সেটি বোঝালেন আরেকবার। যে দুজনের ব্যাটিং দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বসে থাকতে রাজি, তাঁদের একজনও উইকেটে না থাকা মানে আকর্ষণ অর্ধেক কমে যাওয়া। টেন্ডুলকার যখন আউট, গোটা স্টেডিয়াম যেন ঢেকে গেল শোকের চাদরে। থেমে গেছে বাঁশি ফুঁকানো, পতাকা ওড়ানো। কারও যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না টেন্ডুলকার আউট!
যুবরাজ সিং মঞ্চে এলেন। টেন্ডুলকারের ম্যাচ হলো না, এটি হলো আসলে যুবরাজেরই ম্যাচ। এই বিশ্বকাপেই এর আগে দুটি করে ম্যাচ জেতানো ফিফটি, একটায় ৫ উইকেটও। সেঞ্চুরি পেলেন এই প্রথম। এবারের বিশ্বকাপটা যেন যুবরাজময় হয়ে উঠছে!
ক্ষমতাসীন করুণানিধি না জয়ললিতা জিতবেন আগামী মাসের তমিলনাড়ুর রাজ্য নির্বাচনে, এটা নিয়ে এখানকার মানুষের বেশ আগ্রহ। এসবই কাল ভুলিয়ে রাখলেন যুবরাজ। কোহলির সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ২৩.৫ ওভারে তুললেন ১২০ রান। এটিই ভারতীয় ইনিংসে সবচেয়ে স্বস্তির অংশ। ১১২ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া যুবরাজ আউট হলেন ১১৩ রানে, ১০ চার, দুই ছক্কা। বল হাতে দুই উইকেট। ব্যাট-বলে উজ্জ্বল (এই বিশ্বকাপে যুবরাজের ব্যাটিং গড় ৯৪ আর স্ট্রাইক রেট ৮৬) যুবরাজ ক্রমেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নিজেকে এবং হয়ে উঠছেন দলের কান্ডারি।
ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় পরীক্ষা হবে কেমার রোচের গতির সামনে—ম্যাচের আগে অনেকেই বলছিলেন। কিন্তু রোচ ছিলেন না ম্যাচে। রবি রামপল হয়ে উঠলেন উইকেট শিকারি। ৫১ রানে ৫ উইকেট—রান একটু বেশি দিলেও ভারতীয়দের প্রাণঘাতীর নাম তো রামপলই। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর এই তরুণ ক্যারিবিয়ান আঞ্চলিক যুব টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচে পেয়েছিলেন ৪৫ উইকেট! তাঁর জ্বলে ওঠার বার্তা আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
অথচ দেখুন, ম্যাচ-পূর্ব আলোচনা ছিল স্পিনারদের নিয়েই। অফ স্পিনার আর অশ্বিনকে না খেলানো নিয়ে অনেক জল ঘোলার পর এ দিন আশিস নেহরার বদলি হিসেবে তিনি একাদশে। এর আগে চিদাম্বরমের উইকেটে ইংলিশ স্পিনার সোয়ান ও ট্রেডওয়েল বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন, সেটা দেখেই কিনা এ দিন ধোনি বোলিং শুরুই করলেন অশ্বিনকে দিয়ে। শুভসূচনা—অশ্বিন প্রথম ওভারে দিলেন এক রান।
তবে গেইলবিহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি ভারতীয় স্পিনাররা। ইনজুরির কারণে একাদশের বাইরে গেইল। মিডল-অর্ডারে ফেরানো হয়নি অভিজ্ঞ চন্দরপলকে। তবু ধুঁকল ভারতীয় বোলিং। উইকেটে জমে যাওয়া স্মিথকে (৮১) ৩১তম ওভারে ফেরালেন দ্বিতীয় স্পেলে আসা জহির খান। এই স্পেলে ২ ওভারে মাত্র ৪ রানে ১ উইকেট নিলেন জহির। ৩৩তম ওভারে মারকুটে পোলার্ডকে ইউসুফ পাঠানের হাতে ক্যাচ বানালেন হরভজন। এর পর তো পরাজয়ের দিকেই এগিয়ে চলা।
No comments