ভারতের সঙ্গে নৌ-প্রটোকলের নবায়নসীমা পাঁচ বছর হচ্ছে
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকল নবায়নের সীমা দুই বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হচ্ছে। অর্থাৎ একবার নবায়ন হলে প্রটোকল কার্যকর থাকার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এই প্রটোকলটি ভারতকে নৌপথে ট্রানজিট দেওয়ার প্রটোকল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত।
সাধারণত বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতা থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যায়।
গত ২২ ডিসেম্বর নৌপরিবহনসচিব আবদুল মান্নান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত নৌ-প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নবায়নের মেয়াদ পাঁচ বছর করার সিদ্ধান্তের ওপর মতামত চেয়ে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে মতামত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
১৯৭২ সালে স্বাক্ষরিত এই প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ ছিল দুই বছর। প্রতি দুই বছর পর পর এর মেয়াদ বাড়ানো হতো। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই নৌ-প্রটোকলের মেয়াদ দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়, যা একই বছরের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। আগামী ৩১ মার্চ এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
কয়েকটি নৌ-রুট ট্রানজিট-সুবিধার আওতায় থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত রুট শেখবাড়িয়া থেকে চাঁদপুর ও আশুগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ রুটটিই বেশি ব্যবহূত হয়।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পক্ষ থেকে এই নবায়নের মেয়াদ সাত বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তা পাঁচ বছর করতেই বেশি আগ্রহী।
আবার ভারতকে নৌ, সড়ক ও রেলপথে ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে। এই ট্রানজিট চালু হয়ে গেলে আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় পণ্য পরিবহন ব্যাপকভাবে বাড়বে। আর তাই বেশি সময় ধরে প্রটোকল নবায়ন করতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ সরকার।
তার পরও পাঁচ বছর অনেক বেশি সময় বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, যেখানে ট্রানজিটের বিষয়টি এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে হঠাৎ এই প্রটোকলের মেয়াদ দুই বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা ঠিক হবে না।
এ বিষয়ে শুল্ক কর্মকর্তাদের অভিমত হলো, নৌ-প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হলে আগামী পাঁচ বছর নতুন করে নৌপথে পণ্য পরিবহনের জন্য কোনো মাশুল পাওয়া যাবে না। নৌপথে পণ্য পরিবহন বাড়লেও এর সুফল পাবে না বাংলাদেশ। শুধু নাব্যতা রক্ষার জন্য নৌ-প্রটোকলের আওতায় বছরে পাঁচ কোটি ডলার দেবে ভারত। কেননা, ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট বিধিমালা স্থগিত করায় ট্রানজিট মাশুল নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অবশ্য ট্রানজিট বিশেষজ্ঞ রহমত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নৌ-প্রটোকলের আওতায় পুরোনো নৌ-ট্রানজিট রুটগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। এই রুটগুলোতে পণ্য পরিবহন বেশ সময়সাপেক্ষ; ভারতও আর এই রুট ব্যবহারে আগ্রহী নয়। তাই প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হলেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বাংলাদেশ।’
রহমত উল্লাহ আরও জানান, আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর হয়ে ভারতীয় পণ্য ট্রানজিট নিলে সেটা একটি নতুন রুট হিসেবে চিহ্নিত হবে।
তবে তা নৌ-রুট তথা নৌ-প্রটোকলের অন্তর্ভুক্ত হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ভারতকে নৌপথের পাশাপাশি সড়ক ও রেলপথেও ট্রানজিট দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার।
আর অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। তবে এটি মূলত সরবরাহকারী ঋণ। এর আওতায় পণ্য ও সেবা ভারতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিনতে হবে। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ পণ্য সরাসরি ভারতের কাছ থেকে কিনতে হবে, আর অবশিষ্ট ১৫ শতাংশ কিনতে হবে ভারতীয় ঠিকাদারের পরামর্শে। এ ছাড়া ঋণচুক্তির আওতায় যেসব প্রকল্পে অর্থায়ন হবে, তাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
ইতিমধ্যে নৌপথের পণ্য পরিবহন বাড়াতে আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় চার লাখ টিইইউ (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের) কনটেইনার পরিবহন করা হবে। ১৯৭২ সালের নৌ-প্রটোকলে এই বন্দরটি ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। কলকাতা থেকে ভারতীয় পণ্য এসে আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর ব্যবহার করে তা আখাউড়া ও তামাবিল হয়ে যথাক্রমে ত্রিপুরা ও আসামে যাবে।
সাধারণত বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতা থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যায়।
গত ২২ ডিসেম্বর নৌপরিবহনসচিব আবদুল মান্নান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত নৌ-প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নবায়নের মেয়াদ পাঁচ বছর করার সিদ্ধান্তের ওপর মতামত চেয়ে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে মতামত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
১৯৭২ সালে স্বাক্ষরিত এই প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ ছিল দুই বছর। প্রতি দুই বছর পর পর এর মেয়াদ বাড়ানো হতো। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই নৌ-প্রটোকলের মেয়াদ দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়, যা একই বছরের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। আগামী ৩১ মার্চ এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
কয়েকটি নৌ-রুট ট্রানজিট-সুবিধার আওতায় থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত রুট শেখবাড়িয়া থেকে চাঁদপুর ও আশুগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ রুটটিই বেশি ব্যবহূত হয়।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পক্ষ থেকে এই নবায়নের মেয়াদ সাত বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তা পাঁচ বছর করতেই বেশি আগ্রহী।
আবার ভারতকে নৌ, সড়ক ও রেলপথে ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে। এই ট্রানজিট চালু হয়ে গেলে আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় পণ্য পরিবহন ব্যাপকভাবে বাড়বে। আর তাই বেশি সময় ধরে প্রটোকল নবায়ন করতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ সরকার।
তার পরও পাঁচ বছর অনেক বেশি সময় বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, যেখানে ট্রানজিটের বিষয়টি এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে হঠাৎ এই প্রটোকলের মেয়াদ দুই বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা ঠিক হবে না।
এ বিষয়ে শুল্ক কর্মকর্তাদের অভিমত হলো, নৌ-প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হলে আগামী পাঁচ বছর নতুন করে নৌপথে পণ্য পরিবহনের জন্য কোনো মাশুল পাওয়া যাবে না। নৌপথে পণ্য পরিবহন বাড়লেও এর সুফল পাবে না বাংলাদেশ। শুধু নাব্যতা রক্ষার জন্য নৌ-প্রটোকলের আওতায় বছরে পাঁচ কোটি ডলার দেবে ভারত। কেননা, ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট বিধিমালা স্থগিত করায় ট্রানজিট মাশুল নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অবশ্য ট্রানজিট বিশেষজ্ঞ রহমত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নৌ-প্রটোকলের আওতায় পুরোনো নৌ-ট্রানজিট রুটগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। এই রুটগুলোতে পণ্য পরিবহন বেশ সময়সাপেক্ষ; ভারতও আর এই রুট ব্যবহারে আগ্রহী নয়। তাই প্রটোকলের নবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হলেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বাংলাদেশ।’
রহমত উল্লাহ আরও জানান, আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর হয়ে ভারতীয় পণ্য ট্রানজিট নিলে সেটা একটি নতুন রুট হিসেবে চিহ্নিত হবে।
তবে তা নৌ-রুট তথা নৌ-প্রটোকলের অন্তর্ভুক্ত হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ভারতকে নৌপথের পাশাপাশি সড়ক ও রেলপথেও ট্রানজিট দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার।
আর অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। তবে এটি মূলত সরবরাহকারী ঋণ। এর আওতায় পণ্য ও সেবা ভারতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিনতে হবে। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ পণ্য সরাসরি ভারতের কাছ থেকে কিনতে হবে, আর অবশিষ্ট ১৫ শতাংশ কিনতে হবে ভারতীয় ঠিকাদারের পরামর্শে। এ ছাড়া ঋণচুক্তির আওতায় যেসব প্রকল্পে অর্থায়ন হবে, তাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
ইতিমধ্যে নৌপথের পণ্য পরিবহন বাড়াতে আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় চার লাখ টিইইউ (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের) কনটেইনার পরিবহন করা হবে। ১৯৭২ সালের নৌ-প্রটোকলে এই বন্দরটি ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। কলকাতা থেকে ভারতীয় পণ্য এসে আশুগঞ্জ কনটেইনার নৌবন্দর ব্যবহার করে তা আখাউড়া ও তামাবিল হয়ে যথাক্রমে ত্রিপুরা ও আসামে যাবে।
No comments