উত্ত্যক্তকরণ থেকে হত্যা - দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন
মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নাটোরের লোকমানপুরে এক কলেজশিক্ষক ও ফরিদপুরের মধুখালীতে এক মায়ের হত্যাকাণ্ড আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, নারী উত্ত্যক্তকারী বখাটে-সন্ত্রাসীদের উপদ্রব কী ভয়ংকর মাত্রায় বেড়ে চলেছে। উত্ত্যক্তকারীরা কী নৃশংস হত্যাকারী হয়ে উঠছে।
মধুখালীর চাঁপা রানী ভৌমিক (৪৮) চেয়েছিলেন তাঁর দুটি কিশোরী মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে পারে, বিদ্যালয়ের পথে বখাটেরা যেন তাদের উত্ত্যক্ত না করে, হাত ধরে না টানে, অপহরণের হুমকি না দেয়। অবশ্য তিনি থানা-পুলিশের কাছে যাননি; উপজেলা চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়েদের বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু এর ফল হলো উল্টো, অতি ভয়ংকর। বখাটে সন্ত্রাসী চাঁপা রানীকে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা করল।
নাটোরের কলেজশিক্ষক মিজানুর রহমানের হত্যার ঘটনাও ছিল একই রকম। তিনিও তাঁর ছাত্রীদের উত্ত্যক্তকারীদের সরাসরি কিছুই বলেননি, বলেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষকে। অধ্যক্ষ উত্ত্যক্তকারী দুই বখাটে সন্ত্রাসীকে ভর্ৎসনা করেছিলেন—সেই ক্রোধে তারা মিজানুর রহমানের ওপর প্রথমে মোটরসাইকেল তুলে দিয়ে, পরে মাথায় ও চোখে আঘাত করে হত্যা করেছে। অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রেই নিগ্রহের শিকার মেয়েদের অভিভাবকেরা আইন-আদালত এড়িয়ে সামাজিকভাবে সমস্যাটির সমাধান প্রত্যাশা করেছিলেন।
মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাকে এখন আর ‘ইভ টিজিং’ বলে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। ‘ইভ টিজিং একটা সামাজিক সমস্যা, এটা শুধু পুলিশিংয়ের মাধ্যমে নির্মূল করা সম্ভব নয়’—এমন কথা বলাও এখন আর যথেষ্ট নয়, যেমনটি বলেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। যদি শুধু সামাজিক সমস্যাই হতো, তাহলে লোকমানপুরে বা মধুখালীতে—কোথাও হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত গড়াত না, কারণ দুটি ক্ষেত্রেই মেয়েদের অভিভাবকেরা সমাধান চেয়েছিলেন সামাজিক পন্থায়।
এখন অত্যন্ত কঠোর হাতে নামতে হবে উত্ত্যক্তকারীদের দমনের অভিযানে। গত এক বছরে ১২৬৯ জন উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু শাস্তি হয়েছে কজনের? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে উত্ত্যক্তকারীদের দৌরাত্ম্য হয়তো এতটা বাড়ত না। এই অপরাধকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইনের আওতায় নিয়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধের তালিকাভুক্ত করা উচিত। এর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্তকরণ বিষয়ে সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, যেন তাঁরা দ্রুত সাড়া দিয়ে নিগৃহীত মেয়েদের সাহায্যার্থে এগিয়ে যান। উত্ত্যক্তকারীদের হাতেনাতে ধরতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকাসহ বিভিন্ন সামাজিক স্থানে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যদের টহলের উদ্যোগ নিলে ভালো হয়।
সামাজিকভাবেও উত্ত্যক্তকরণ-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, মসজিদ-মন্দিরের ধর্মীয় নেতা, কিশোর-কিশোরীদের মা-বাবা ও পাড়া-মহল্লার গণ্যমান্য নাগরিকেরা—সবাই একজোটে চাইলে উত্ত্যক্তকারীদের দমন করা অসম্ভব কিছু নয়। আমরা দেখেছি, উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়ে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, উত্ত্যক্তকারীরা হত্যাকারী হয়ে উঠেছে। এই নৃশংস দুর্বৃত্তি আর বাড়তে দেওয়া যায় না। এখনই শক্ত হাতে এর রাশ টেনে ধরতে হবে। মিজানুর রহমান ও চাঁপা রানী ভৌমিকের হত্যাকারীদের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
মধুখালীর চাঁপা রানী ভৌমিক (৪৮) চেয়েছিলেন তাঁর দুটি কিশোরী মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে পারে, বিদ্যালয়ের পথে বখাটেরা যেন তাদের উত্ত্যক্ত না করে, হাত ধরে না টানে, অপহরণের হুমকি না দেয়। অবশ্য তিনি থানা-পুলিশের কাছে যাননি; উপজেলা চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়েদের বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু এর ফল হলো উল্টো, অতি ভয়ংকর। বখাটে সন্ত্রাসী চাঁপা রানীকে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা করল।
নাটোরের কলেজশিক্ষক মিজানুর রহমানের হত্যার ঘটনাও ছিল একই রকম। তিনিও তাঁর ছাত্রীদের উত্ত্যক্তকারীদের সরাসরি কিছুই বলেননি, বলেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষকে। অধ্যক্ষ উত্ত্যক্তকারী দুই বখাটে সন্ত্রাসীকে ভর্ৎসনা করেছিলেন—সেই ক্রোধে তারা মিজানুর রহমানের ওপর প্রথমে মোটরসাইকেল তুলে দিয়ে, পরে মাথায় ও চোখে আঘাত করে হত্যা করেছে। অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রেই নিগ্রহের শিকার মেয়েদের অভিভাবকেরা আইন-আদালত এড়িয়ে সামাজিকভাবে সমস্যাটির সমাধান প্রত্যাশা করেছিলেন।
মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাকে এখন আর ‘ইভ টিজিং’ বলে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। ‘ইভ টিজিং একটা সামাজিক সমস্যা, এটা শুধু পুলিশিংয়ের মাধ্যমে নির্মূল করা সম্ভব নয়’—এমন কথা বলাও এখন আর যথেষ্ট নয়, যেমনটি বলেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। যদি শুধু সামাজিক সমস্যাই হতো, তাহলে লোকমানপুরে বা মধুখালীতে—কোথাও হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত গড়াত না, কারণ দুটি ক্ষেত্রেই মেয়েদের অভিভাবকেরা সমাধান চেয়েছিলেন সামাজিক পন্থায়।
এখন অত্যন্ত কঠোর হাতে নামতে হবে উত্ত্যক্তকারীদের দমনের অভিযানে। গত এক বছরে ১২৬৯ জন উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু শাস্তি হয়েছে কজনের? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে উত্ত্যক্তকারীদের দৌরাত্ম্য হয়তো এতটা বাড়ত না। এই অপরাধকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইনের আওতায় নিয়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধের তালিকাভুক্ত করা উচিত। এর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্তকরণ বিষয়ে সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, যেন তাঁরা দ্রুত সাড়া দিয়ে নিগৃহীত মেয়েদের সাহায্যার্থে এগিয়ে যান। উত্ত্যক্তকারীদের হাতেনাতে ধরতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকাসহ বিভিন্ন সামাজিক স্থানে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যদের টহলের উদ্যোগ নিলে ভালো হয়।
সামাজিকভাবেও উত্ত্যক্তকরণ-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, মসজিদ-মন্দিরের ধর্মীয় নেতা, কিশোর-কিশোরীদের মা-বাবা ও পাড়া-মহল্লার গণ্যমান্য নাগরিকেরা—সবাই একজোটে চাইলে উত্ত্যক্তকারীদের দমন করা অসম্ভব কিছু নয়। আমরা দেখেছি, উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়ে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, উত্ত্যক্তকারীরা হত্যাকারী হয়ে উঠেছে। এই নৃশংস দুর্বৃত্তি আর বাড়তে দেওয়া যায় না। এখনই শক্ত হাতে এর রাশ টেনে ধরতে হবে। মিজানুর রহমান ও চাঁপা রানী ভৌমিকের হত্যাকারীদের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
No comments