সামাজিক ব্যবসা সব সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে পারে: ড. ইউনূস
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সামাজিক ব্যবসা সব ধরনের সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে পারে। সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার জন্য সব বিত্তবান ব্যবসায়ীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ‘গ্লোবাল সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি অব জার্মান বিজনেস কনফারেন্স’-এর প্রথম অধিবেশনের সামাজিক ব্যবসা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিজিসিসিআই) স্থানীয় এক হোটেলে এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সহায়তা করেছে ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাস ও জিটিজেড।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ, স্বাস্থ্য খাতের মান উন্নয়নে সামাজিক ব্যবসা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ সামাজিক সমস্যার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলেও তিনি অভিমত দেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামাজিক ব্যবসা করতে পারে। এ জন্য শুধু বড় বড় কোম্পানির দ্বারস্থ হতে হবে না। অপেক্ষাকৃত কম সামর্থ্যবান ব্যক্তি সামাজিক ব্যবসায় অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগের সুযোগ থেকে কেউই বঞ্চিত হবেন না। সামাজিক ব্যবসা হলো এক ধরনের সৃষ্টিশীল চিন্তার বাস্তবায়ন।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, সামাজিক ব্যবসা করতে গেলে মুনাফা নেওয়া যাবে না। শুধু বিনিয়োগকারী তাঁর বিনিয়োগের অংশ তুলে নিতে পারেন আর মুনাফার অংশ পুনর্বিনিয়োগ করবেন। আর প্রচলিত ব্যবসায় মুনাফা তুলে নিতে পারেন উদ্যোক্তারা।
মুহাম্মদ ইউনূস জানান, প্রচলিত ব্যবসা ও সামাজিক ব্যবসা—দুই ধরনের ব্যবসার বাজার, পণ্য ও ব্যবসার ধরন একই রকমের। সর্বোপরি পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু দুটির উদ্দেশ্য ভিন্ন।
মুহাম্মদ ইউনূস উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রচলিত ব্যবসায় বছর শেষে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাব করেন কী পরিমাণ মুনাফা হলো। আর সামাজিক ব্যবসায় হিসাব হচ্ছে এর ফলে সমাজের কতটা উপকার হলো। সামজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো একই ধরনের বেতন পেতে পারেন।
গ্রামীণ ড্যানোনের শক্তি দই উৎপাদন সামাজিক ব্যবসার একটি বড় উদাহরণ বলে অভিমত দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানের যৌথভাবে সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগ শুরু করার কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক সেবিকা (নার্স) রয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁর প্রতিষ্ঠান একটি নার্স কলেজ স্থাপন করেছে। আরও ১৩টি নার্স কলেজ স্থাপন করা হবে। নার্স তৈরির মাধ্যমে চিকিৎসা খাতে নার্সিং সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগও একটি সামাজিক ব্যবসা। এ ছাড়া কেমিক্যাল কোম্পানি বিএএসএফের সহায়তায় বিশেষ ধরনের মশারি তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বখ্যাত পাদুকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাডিডাসের সঙ্গে জুতার ব্যবসা শুরুর বিষয়টি আলোচনা চলছে বলে ড. ইউনূস জানান।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন জার্মান রাষ্ট্রদূত হোলগার মাইকেল, বিজিসিসিআইয়ের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জার্মান কোম্পানি টুব সুড এজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইং এক্সেল স্টিপকেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, অটো গ্রুপের চেয়ারম্যান মাইকেল অটো, বিএএসএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সভাপতি সোয়ারি ডুভার্গ। এতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে বিনিয়োগ করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে কর ছাড় দিয়েছে সরকার। অথচ বড় কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করতে চায় না।
মাইকেল অটো বলেন, সামাজিক ব্যবসার ধারণা আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য একটি কার্যকর উপায়। দারিদ্র্য বিমোচনে এই সামাজিক ব্যবসা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
মাহফুজ আনাম বলেন, যেকোনো সমাজে নতুন ধারণা সঙ্গে সঙ্গেই গ্রহণযোগ্য হয় না। সামাজিক ব্যবসায় মুনাফা রয়েছে, কিন্তু এর প্রভাব থাকে সমাজে। প্রচলিত ব্যবসায় মুনাফা সারাজীবন থাকে না। এর অন্যতম বড় উদাহরণ বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা।
বাংলাদেশের ইমেজ সম্পর্কে মাহফুজ আনাম বলেন, ‘দরিদ্র দেশ—এমন হীনম্মন্যতায় আমরা ভোগী। আমরা বলতে পারি না বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের নিতে হবে। কেননা আমাদের জিডিপির বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ। আমাদের এই মানসিকতা বদলাতে হবে।’
দিনব্যাপী সম্মেলনে দ্বিতীয় করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) সংক্রান্ত সেমিনার হয়। এক দিনের এই সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক কর্মকর্তা অংশ নেন। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা সম্মেলনের নানা দিক সম্পর্কে তুলে ধরেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ‘গ্লোবাল সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি অব জার্মান বিজনেস কনফারেন্স’-এর প্রথম অধিবেশনের সামাজিক ব্যবসা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিজিসিসিআই) স্থানীয় এক হোটেলে এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সহায়তা করেছে ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাস ও জিটিজেড।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ, স্বাস্থ্য খাতের মান উন্নয়নে সামাজিক ব্যবসা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ সামাজিক সমস্যার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলেও তিনি অভিমত দেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামাজিক ব্যবসা করতে পারে। এ জন্য শুধু বড় বড় কোম্পানির দ্বারস্থ হতে হবে না। অপেক্ষাকৃত কম সামর্থ্যবান ব্যক্তি সামাজিক ব্যবসায় অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগের সুযোগ থেকে কেউই বঞ্চিত হবেন না। সামাজিক ব্যবসা হলো এক ধরনের সৃষ্টিশীল চিন্তার বাস্তবায়ন।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, সামাজিক ব্যবসা করতে গেলে মুনাফা নেওয়া যাবে না। শুধু বিনিয়োগকারী তাঁর বিনিয়োগের অংশ তুলে নিতে পারেন আর মুনাফার অংশ পুনর্বিনিয়োগ করবেন। আর প্রচলিত ব্যবসায় মুনাফা তুলে নিতে পারেন উদ্যোক্তারা।
মুহাম্মদ ইউনূস জানান, প্রচলিত ব্যবসা ও সামাজিক ব্যবসা—দুই ধরনের ব্যবসার বাজার, পণ্য ও ব্যবসার ধরন একই রকমের। সর্বোপরি পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু দুটির উদ্দেশ্য ভিন্ন।
মুহাম্মদ ইউনূস উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রচলিত ব্যবসায় বছর শেষে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাব করেন কী পরিমাণ মুনাফা হলো। আর সামাজিক ব্যবসায় হিসাব হচ্ছে এর ফলে সমাজের কতটা উপকার হলো। সামজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো একই ধরনের বেতন পেতে পারেন।
গ্রামীণ ড্যানোনের শক্তি দই উৎপাদন সামাজিক ব্যবসার একটি বড় উদাহরণ বলে অভিমত দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানের যৌথভাবে সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগ শুরু করার কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক সেবিকা (নার্স) রয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁর প্রতিষ্ঠান একটি নার্স কলেজ স্থাপন করেছে। আরও ১৩টি নার্স কলেজ স্থাপন করা হবে। নার্স তৈরির মাধ্যমে চিকিৎসা খাতে নার্সিং সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগও একটি সামাজিক ব্যবসা। এ ছাড়া কেমিক্যাল কোম্পানি বিএএসএফের সহায়তায় বিশেষ ধরনের মশারি তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বখ্যাত পাদুকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাডিডাসের সঙ্গে জুতার ব্যবসা শুরুর বিষয়টি আলোচনা চলছে বলে ড. ইউনূস জানান।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন জার্মান রাষ্ট্রদূত হোলগার মাইকেল, বিজিসিসিআইয়ের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জার্মান কোম্পানি টুব সুড এজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইং এক্সেল স্টিপকেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, অটো গ্রুপের চেয়ারম্যান মাইকেল অটো, বিএএসএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সভাপতি সোয়ারি ডুভার্গ। এতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে বিনিয়োগ করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে কর ছাড় দিয়েছে সরকার। অথচ বড় কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করতে চায় না।
মাইকেল অটো বলেন, সামাজিক ব্যবসার ধারণা আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য একটি কার্যকর উপায়। দারিদ্র্য বিমোচনে এই সামাজিক ব্যবসা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
মাহফুজ আনাম বলেন, যেকোনো সমাজে নতুন ধারণা সঙ্গে সঙ্গেই গ্রহণযোগ্য হয় না। সামাজিক ব্যবসায় মুনাফা রয়েছে, কিন্তু এর প্রভাব থাকে সমাজে। প্রচলিত ব্যবসায় মুনাফা সারাজীবন থাকে না। এর অন্যতম বড় উদাহরণ বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা।
বাংলাদেশের ইমেজ সম্পর্কে মাহফুজ আনাম বলেন, ‘দরিদ্র দেশ—এমন হীনম্মন্যতায় আমরা ভোগী। আমরা বলতে পারি না বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের নিতে হবে। কেননা আমাদের জিডিপির বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ। আমাদের এই মানসিকতা বদলাতে হবে।’
দিনব্যাপী সম্মেলনে দ্বিতীয় করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) সংক্রান্ত সেমিনার হয়। এক দিনের এই সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক কর্মকর্তা অংশ নেন। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা সম্মেলনের নানা দিক সম্পর্কে তুলে ধরেন।
No comments