সেই ‘সাধু মার্টিন’
আর্জেন্টিনার ‘নতুন ম্যারাডোনা’দের একজন তিনি নন। তাঁকে নিয়ে কেউ কোনো দিন মাতামাতিও করেনি। নীরবে এসেছিলেন, সরব নিন্দার ভেতর দিয়ে ‘শেষ’ হয়ে গিয়েছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার। নিজেও আকাশি-নীল জার্সি পরার স্বপ্ন দেখতে ভুলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ফুটবল-নিয়ন্তার ইচ্ছে ছিল অন্য রকম। অন্য রকম সেই ইচ্ছেতে ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’ তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ১১ বছর পর আবার ফিরে এলেন তিনি। শুধু ফিরেই এলেন না, ৩৬ বছর বয়সে বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচে নেমেই গোল করলেন ‘সেইন্ট মার্টিন’—মার্টিন পালের্মো।
সেই পালের্মো; ১৯৯৯ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচে তিনটি পেনাল্টি মিস করে যিনি নাম লিখিয়েছিলেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। সেই পালের্মো, যিনি এক দশকেরও বেশি সময় আগে হারিয়ে গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের দুনিয়া থেকে।
পরশু গ্রিসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচে দুনিয়া দেখল পালের্মোর প্রত্যাবর্তন। মাঠে নামার দশ মিনিটের মধ্যেই গোল—লিওনেল মেসির শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক, পায়ের ওপর এসে পড়া বল জালে জড়িয়ে দিলেন পালের্মো।
উৎসবে মেতে উঠলেন। হাসিতে ভরে যাওয়া চোখ থেকে বেরিয়ে এল আনন্দের অশ্রু। বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে এসেছেন, খেলতে পেরেছেন, এমনকি গোলও করেছেন! বিশ্বাসই হচ্ছে না ‘বুড়ো’ হয়ে যাওয়া পালের্মোর, ‘সত্যি বলি, আমার এখনো কিছু বিশ্বাস হচ্ছে না। ১০ মিনিটের মধ্যেই সবকিছু হয়ে গেল।’
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই এই কথাটা বলে আসছেন পালের্মো। মেসি-তেভেজ-হিগুয়েইন-আগুয়েরো-মিলিতোদের মতো মহাতারকাদের পাশে নিজেকে তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। আর্জেন্টিনার এই দলে তাঁর যে জায়গা হবে, সেটা নাকি স্বপ্নেও ভাবেননি পালের্মো।
অথচ পারের্মো এতটা হেলাফেলা করার মতো খেলোয়াড় নন। ১৯৯২ সালে আর্জেন্টিনারই এস্তুদিয়ান্তেসের হয়ে অভিষেক। ১৯৯৭ সালে যোগ দিয়েছিলেন বোকা জুনিয়র্সে। ২০০১ থেকে ২০০৪, চার বছর স্পেনে কাটিয়ে যাওয়ার পর আবার ফিরেছেন বোকা জুনিয়র্সে। ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে। ক্লাবের সমর্থকেরা ভালোবেসে নাম দিয়েছে—সাধু মার্টিন।
জাতীয় দলেও দারুণ একটা ক্যারিয়ারের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৯ সালে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সে বছরই কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের ওই ‘কীর্তি’ করায় এক ধাক্কায় শেষ হয়ে গিয়েছিল পালের্মোর ক্যারিয়ার।
প্রায় মৃত এই ক্যারিয়ারটাকে আসলে পুনরুজ্জীবিত করতে চেয়েছিলেন আলফিও বাসিলে। বোকা জুনিয়র্সের হয়ে পালের্মোর দুর্দান্ত ফর্ম দেখে ২০০৮ সালেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁকে ফেরাতে চেয়েছিলেন। সেবার বাদ সেধেছিল ইনজুরি। অবশেষে পালের্মো পুনরুজ্জীবন পেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে।
এই বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে প্রত্যাবর্তন হলো হারিয়ে যাওয়া পালের্মোর। মাঝে ঘানার বিপক্ষে একটা প্রীতি ম্যাচ খেললেন। এরপর পেরুর বিপক্ষে সেই ম্যাচ। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে তুলে দেওয়া গোলটা করলেন পালের্মো।
আর্জেন্টিনার দুর্দিনে ত্রাতা হয়ে ওঠা পালের্মো তার পরও বিশ্বকাপের আশা করেননি। এখনো তাই বলছেন, ‘আমি ডিয়েগোর (ম্যারাডোনার) কাছে ও কোচিং দলের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি জানি, দলে আমার চেয়ে এগিয়ে থাকা অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় আছে।’
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে খেলার, গোল করার এই যে সুযোগ পালের্মো পেলেন, এর পেছনে তিনি অলৌকিক কিছুর ছোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন, ‘এই অনুভূতি বর্ণনা করা যায় না, এই অনুভূমি অমূল্য। ওপরে বসে থাকা তিনি সব সময় আমার দিকে চেয়ে হাসেন এবং আমার সৌভাগ্য লিখে দেন। নিশ্চয়ই কোনো একজন দেবদূত আজ আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন।’
সেই ‘দেবদূত’ কি ম্যারাডোনা?
কিন্তু ফুটবল-নিয়ন্তার ইচ্ছে ছিল অন্য রকম। অন্য রকম সেই ইচ্ছেতে ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’ তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ১১ বছর পর আবার ফিরে এলেন তিনি। শুধু ফিরেই এলেন না, ৩৬ বছর বয়সে বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচে নেমেই গোল করলেন ‘সেইন্ট মার্টিন’—মার্টিন পালের্মো।
সেই পালের্মো; ১৯৯৯ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচে তিনটি পেনাল্টি মিস করে যিনি নাম লিখিয়েছিলেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। সেই পালের্মো, যিনি এক দশকেরও বেশি সময় আগে হারিয়ে গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের দুনিয়া থেকে।
পরশু গ্রিসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচে দুনিয়া দেখল পালের্মোর প্রত্যাবর্তন। মাঠে নামার দশ মিনিটের মধ্যেই গোল—লিওনেল মেসির শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক, পায়ের ওপর এসে পড়া বল জালে জড়িয়ে দিলেন পালের্মো।
উৎসবে মেতে উঠলেন। হাসিতে ভরে যাওয়া চোখ থেকে বেরিয়ে এল আনন্দের অশ্রু। বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে এসেছেন, খেলতে পেরেছেন, এমনকি গোলও করেছেন! বিশ্বাসই হচ্ছে না ‘বুড়ো’ হয়ে যাওয়া পালের্মোর, ‘সত্যি বলি, আমার এখনো কিছু বিশ্বাস হচ্ছে না। ১০ মিনিটের মধ্যেই সবকিছু হয়ে গেল।’
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই এই কথাটা বলে আসছেন পালের্মো। মেসি-তেভেজ-হিগুয়েইন-আগুয়েরো-মিলিতোদের মতো মহাতারকাদের পাশে নিজেকে তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। আর্জেন্টিনার এই দলে তাঁর যে জায়গা হবে, সেটা নাকি স্বপ্নেও ভাবেননি পালের্মো।
অথচ পারের্মো এতটা হেলাফেলা করার মতো খেলোয়াড় নন। ১৯৯২ সালে আর্জেন্টিনারই এস্তুদিয়ান্তেসের হয়ে অভিষেক। ১৯৯৭ সালে যোগ দিয়েছিলেন বোকা জুনিয়র্সে। ২০০১ থেকে ২০০৪, চার বছর স্পেনে কাটিয়ে যাওয়ার পর আবার ফিরেছেন বোকা জুনিয়র্সে। ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে। ক্লাবের সমর্থকেরা ভালোবেসে নাম দিয়েছে—সাধু মার্টিন।
জাতীয় দলেও দারুণ একটা ক্যারিয়ারের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৯ সালে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সে বছরই কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের ওই ‘কীর্তি’ করায় এক ধাক্কায় শেষ হয়ে গিয়েছিল পালের্মোর ক্যারিয়ার।
প্রায় মৃত এই ক্যারিয়ারটাকে আসলে পুনরুজ্জীবিত করতে চেয়েছিলেন আলফিও বাসিলে। বোকা জুনিয়র্সের হয়ে পালের্মোর দুর্দান্ত ফর্ম দেখে ২০০৮ সালেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁকে ফেরাতে চেয়েছিলেন। সেবার বাদ সেধেছিল ইনজুরি। অবশেষে পালের্মো পুনরুজ্জীবন পেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে।
এই বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে প্রত্যাবর্তন হলো হারিয়ে যাওয়া পালের্মোর। মাঝে ঘানার বিপক্ষে একটা প্রীতি ম্যাচ খেললেন। এরপর পেরুর বিপক্ষে সেই ম্যাচ। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে তুলে দেওয়া গোলটা করলেন পালের্মো।
আর্জেন্টিনার দুর্দিনে ত্রাতা হয়ে ওঠা পালের্মো তার পরও বিশ্বকাপের আশা করেননি। এখনো তাই বলছেন, ‘আমি ডিয়েগোর (ম্যারাডোনার) কাছে ও কোচিং দলের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি জানি, দলে আমার চেয়ে এগিয়ে থাকা অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় আছে।’
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে খেলার, গোল করার এই যে সুযোগ পালের্মো পেলেন, এর পেছনে তিনি অলৌকিক কিছুর ছোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন, ‘এই অনুভূতি বর্ণনা করা যায় না, এই অনুভূমি অমূল্য। ওপরে বসে থাকা তিনি সব সময় আমার দিকে চেয়ে হাসেন এবং আমার সৌভাগ্য লিখে দেন। নিশ্চয়ই কোনো একজন দেবদূত আজ আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন।’
সেই ‘দেবদূত’ কি ম্যারাডোনা?
No comments