বিজয় দিবস -বিকশিত গণতন্ত্র ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রত্যাশা
আজ বিজয় দিবস। সেই বিজয়, যার জন্য যুগের পর যুগ এই ভূখণ্ডের নিপীড়িত মানুষ স্বপ্ন দেখেছে; সেই বিজয়, যার জন্য বাংলাদেশের মানুষ নয়টি মাস রক্তসাগর পাড়ি দিয়েছে; সেই বিজয়, লাখ লাখ প্রাণের মূল্যে যা অর্জিত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে। বিজয়ের ৩৮তম বার্ষিকীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ প্রত্যেককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এবং সব মুক্তিযোদ্ধাকে জানাই রক্তিম অভিনন্দন।
উপমহাদেশের মানচিত্রে বাংলাদেশের আবির্ভাব ছিল সব অর্থেই যুগান্তকারী ঘটনা। সেই সময়ের বিশ্বপরিস্থিতিতে নতুন কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের আবির্ভাব সহজতর ছিল না। কিন্তু সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিচল প্রত্যয়, অশেষ ত্যাগ স্বীকার, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সুযোগ্য ভূমিকা এবং ভারত ও তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সার্বিক সহযোগিতায় সেই অসম্ভবকে সম্ভব করা গিয়েছিল। মুক্তিকামী বাংলার লড়াই সে সময় বিশ্বব্যাপী বিপুল আবেগ, সমর্থন টানতে সক্ষম হয়েছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের এ-দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি ঘাতক বাহিনীর গণহত্যা বিশ্ববিবেককেও কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার স্বাধিকার দাবি থেকে একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রের গর্জন স্বাধীনতার দাবিকে অনিবার্য করে তুলেছিল। সোনার বাংলার স্বপ্নে বাংলার ছাত্রসমাজ ও শ্রমিক, কৃষক, নারী, মধ্যবিত্ত ও বুদ্ধিজীবীসমাজ এমনই উদ্দীপ্ত হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে নস্যাত্ করা কারও পক্ষেই সম্ভব ছিল না। এবং সেই স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।
কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পর রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ, বারবার সামরিক অভ্যুত্থান ও শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতির কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। বারবার ব্যাহত হয়েছে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা। তবে এত কিছু সত্ত্বেও এ দেশের জনগণের উদার গণতান্ত্রিক চেতনা, উত্পাদনমুখিতা ও দৃঢ় প্রত্যয়ের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে। দারিদ্র্য এখন ৩৮ বছর আগের মতো প্রকট নয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার বিস্তার ঘটেছে, দেশের উত্পাদন-ভিত্তি নাজুক নয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। ধীরে হলেও প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। গণতন্ত্রে ছেদ পড়লেও বারেবারে তা উঠে দাঁড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজনীতি ও প্রশাসনের সব স্তরে জনগণের শাসন তথা গণতান্ত্রিক চর্চা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। সর্বোপরি দুর্নীতির ভূত জাতির কাঁধ থেকে চূড়ান্তভাবে নেমে যায়নি।
সবচেয়ে দুঃখের ব্যাপার, একাত্তরের গণহত্যার ৩৮ বছরের মাথায়ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যায়নি। তবে আশার কথা, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনগণের মধ্যেও অভূতপূর্ব আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। এখন প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার সফল বাস্তবায়ন। আমরা আশা করব, সরকার অচিরেই সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করবে।
দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে, শতাব্দীর ভয়াবহতম গণহত্যা যারা চালিয়েছে, তাদের বিচার এবং রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিদের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্র ও জাতি গঠনের কাজ যেমন সম্পূর্ণ হতে পারে না, তেমনি ১৬ ডিসেম্বরের গৌরব ও বিজয় পরিপূর্ণতা পাবে না।
উপমহাদেশের মানচিত্রে বাংলাদেশের আবির্ভাব ছিল সব অর্থেই যুগান্তকারী ঘটনা। সেই সময়ের বিশ্বপরিস্থিতিতে নতুন কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের আবির্ভাব সহজতর ছিল না। কিন্তু সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিচল প্রত্যয়, অশেষ ত্যাগ স্বীকার, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সুযোগ্য ভূমিকা এবং ভারত ও তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সার্বিক সহযোগিতায় সেই অসম্ভবকে সম্ভব করা গিয়েছিল। মুক্তিকামী বাংলার লড়াই সে সময় বিশ্বব্যাপী বিপুল আবেগ, সমর্থন টানতে সক্ষম হয়েছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের এ-দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি ঘাতক বাহিনীর গণহত্যা বিশ্ববিবেককেও কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার স্বাধিকার দাবি থেকে একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রের গর্জন স্বাধীনতার দাবিকে অনিবার্য করে তুলেছিল। সোনার বাংলার স্বপ্নে বাংলার ছাত্রসমাজ ও শ্রমিক, কৃষক, নারী, মধ্যবিত্ত ও বুদ্ধিজীবীসমাজ এমনই উদ্দীপ্ত হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে নস্যাত্ করা কারও পক্ষেই সম্ভব ছিল না। এবং সেই স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।
কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পর রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ, বারবার সামরিক অভ্যুত্থান ও শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতির কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। বারবার ব্যাহত হয়েছে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা। তবে এত কিছু সত্ত্বেও এ দেশের জনগণের উদার গণতান্ত্রিক চেতনা, উত্পাদনমুখিতা ও দৃঢ় প্রত্যয়ের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে। দারিদ্র্য এখন ৩৮ বছর আগের মতো প্রকট নয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার বিস্তার ঘটেছে, দেশের উত্পাদন-ভিত্তি নাজুক নয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। ধীরে হলেও প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। গণতন্ত্রে ছেদ পড়লেও বারেবারে তা উঠে দাঁড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজনীতি ও প্রশাসনের সব স্তরে জনগণের শাসন তথা গণতান্ত্রিক চর্চা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। সর্বোপরি দুর্নীতির ভূত জাতির কাঁধ থেকে চূড়ান্তভাবে নেমে যায়নি।
সবচেয়ে দুঃখের ব্যাপার, একাত্তরের গণহত্যার ৩৮ বছরের মাথায়ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যায়নি। তবে আশার কথা, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনগণের মধ্যেও অভূতপূর্ব আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। এখন প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার সফল বাস্তবায়ন। আমরা আশা করব, সরকার অচিরেই সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করবে।
দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে, শতাব্দীর ভয়াবহতম গণহত্যা যারা চালিয়েছে, তাদের বিচার এবং রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিদের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্র ও জাতি গঠনের কাজ যেমন সম্পূর্ণ হতে পারে না, তেমনি ১৬ ডিসেম্বরের গৌরব ও বিজয় পরিপূর্ণতা পাবে না।
No comments