বাঙালি পরীক্ষকদের সৃজনশীলতা -গদ্যকার্টুন by আনিসুল হক
আমাদের দেশপ্রেমিক শিক্ষা-বিশেষজ্ঞরা বুদ্ধি খাটিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে একটা সমস্যার সমাধান বের করলেন। সমস্যাটা হলো, স্কুলের শিক্ষার্থীরা বড় বেশি নোটবই, গৃহশিক্ষক, কোচিং সেন্টার আর মুখস্থবিদ্যার ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এতে তাদের সৃজনশীলতা ব্যাহত হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে তাঁরা আবিষ্কার করলেন সৃজনশীল প্রশ্ন। প্রশ্নপত্রে দেওয়া থাকবে একটা অনুচ্ছেদ। শিক্ষার্থীরা প্রথমে সেই লেখাটা পড়বে। তারপর কিছু প্রশ্ন থাকবে। শিক্ষার্থীরা নিজের কল্পনা আর সৃজনশীলতা মিশিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে। এই অনুচ্ছেদটা কী, সেটা কোনো নোটবইয়ে দেওয়া থাকবে না। এর উত্তরও মুখস্থ লিখতে হবে না। ছাত্রছাত্রীরা বানিয়েই লিখতে পারবে। এর ফলে তাকে আর নোটবই মুখস্থ করতে হবে না। কোনো কোচিং সেন্টারে যেতে হবে না। কোনো গৃহশিক্ষকের কাছে বসতে হবে না।
খুবই ভালো কথা। কিন্তু বাঙালি ব্যবসায়ীদের সৃজনশীলতা সম্পর্কে এই সজ্জন ও সাধু ব্যক্তিদের ধারণা একটু কমই ছিল। নতুন প্রবর্তিত এই সৃজনশীল প্রশ্ন ও তার উত্তরকেই নোটবই ব্যবসায়ী ও কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ীরা করে তুললেন তাঁদের বাণিজ্যের নতুন উপায়। বাজারে এখন বেরিয়েছে অনেকগুলো নতুন নোটবই, সেসবের বিষয় হলো, সৃজনশীল প্রশ্ন। রাস্তায় রাস্তায় পোস্টার পড়েছে, সৃজনশীল প্রশ্ন বিষয়টা কী, কীভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, জানতে হলে আজই কিনুন সৃজনশীল প্রশ্ন গাইড। পাঁচ শ সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরসংবলিত। হায়, আমাদের প্রিয় শিক্ষকেরা কী চাইলেন, আর বাস্তবে কী ঘটতে লাগল।
আমি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারকে বলেছিলাম, স্যার, আপনাদের ওই সৃজনশীল প্রশ্ন আর উত্তর নিয়েই তো নতুন গাইড বই বের হয়ে গেছে। স্যার জবাব দিলেন, বের হোক, কোনো লাভ হবে না, ওই গাইড বই থেকে কোনো প্রশ্ন আসবে না, শিক্ষার্থীদের নিজের সৃজনশীলতা দিয়েই নতুন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
ওই সব নোটবই পড়ে শিক্ষার্থীদের কোনো লাভ হবে না, সে তো জানা কথাই। তবে ওই সব নোটবই কিনলে যে ব্যবসায়ীদের লাভ হবে, তাও আমাদের অজানা নয়।
আর শিক্ষার্থীদের বা তাদের অভিভাবকদের ভয় পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। বাচ্চারা নিজেদের মতো করে খুব সুন্দর করে লিখবে। তারা নিজেদের মতো করে ভাববে, লিখতে, নিজেকে উপস্থাপন করতে শিখবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের মতো সুন্দর বিষয়টাকেও নোটবই ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসার সৃজনশীল একটা উপায় হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাই নয়, এটা দেখা যাচ্ছে, আমাদের প্রশ্নকর্তাদেরও সৃজনশীলতার পথ খুলে দিয়েছে।
গত কয়েক দিনে কাগজে অনেকগুলো প্রশ্নের নমুনা খবর হয়ে এসেছে। ‘হাসিনা ও খালেদা দুই বান্ধবী। তাঁরা দুজন টিভি দেখছিলেন। নামাজের সময় হলো। খালেদা নামাজ পড়তে গেলেন। হাসিনা বললেন, মন চায় নাই, তাই যাই নাই।’
‘মাওলানা নিজামী খুব ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি।’ ‘হাসিনার বান্ধবী মতিয়া।’
নানা ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ন করছেন আমাদের শিক্ষকেরা। আমাদের শিক্ষকেরা যে এত সৃজনশীল, তা আমাদের জানাই ছিল না। আমাদের ব্যবসায়ীরা যে এত উদ্ভাবনী প্রতিভার অধিকারী, তা-ই বা কে জানত!
এখন বাস্তবক্ষেত্রে প্রমাণিত হলো, শিক্ষা-বিশেষজ্ঞরা চলেন ডালে ডালে, আর অন্যেরা চলেন পাতায় পাতায়।
শিশুদের সৃজনশীলতা নিয়ে আমাদের কোনোই সন্দেহ নেই। তাদের কল্পনাশক্তি অপরিসীম আর সুযোগ দিলে তার প্রমাণ তারা রাখে হরহামেশাই।
বিদেশে একবার বিশেষজ্ঞরা চার থেকে আট বছরের বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ভালোবাসা কী?’
খুব সুন্দর সুন্দর উত্তর দিয়েছিল বাচ্চারা।
যেমন—একজন লিখেছিল, ‘আমার দাদি যখন পায়ে নেইলপলিশ দিতে পারেন না, তখন দাদার বাতের ব্যথা হওয়া সত্ত্বেও দাদা দাদির পায়ে নেইলপলিশ লাগিয়ে দেন। এটা হলো ভালোবাসা।’
আরেকজন লিখেছিল, ‘ভালোবাসা হচ্ছে—যখন একটা মেয়ে গায়ে সুগন্ধি মাখে, আর ছেলে গালে আফটার শেভ লোশন দেয়, তারপর তারা বাইরে যায় আর একে অন্যের সুগন্ধ উপভোগ করতে থাকে...।’
এই রকম করে একেকজন বাচ্চা একেকটা জিনিস লিখেছিল। সেসবের কয়েকটা নিচে দেওয়া হলো:
‘ভালোবাসা হচ্ছে তা, যখন তুমি কারও সঙ্গে বাইরে যাও, সে তার থালা থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তোমার পাতে তুলে দেয় আর তার বদলে তোমাকে তার পাতে কিছুই দিতে হয় না।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে যখন তোমার মুখে হাসি থাকে অথচ তুমি আসলে খুবই ক্লান্ত।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে— মা আমার বাবার জন্য কফি বানায়, আর বাবাকে তা দেওয়ার আগে একটু চেখে দেখে কফির স্বাদ ঠিক হয়েছে কি না!’
‘ভালোবাসা কী যদি তুমি শিখতে চাও, তাহলে তুমি সেটা শুরু করতে পারো, তুমি যাকে সবচেয়ে ঘৃণা করো তাকে তুমি ভালোবাসতে আরম্ভ করো।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে—কেউ তোমাকে বলে, তোমার শার্টটা সুন্দর আর তুমি সেটা রোজ পরতে শুরু করো...।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে এক বুড়ো আর বুড়ি, তাঁদের মধ্যে এখনও অনেক বন্ধুত্ব, যদিও নিজেদের সম্পর্কে জানার কিছুই তাদের বাকি নেই।’
‘আমি যখন মঞ্চে পিয়ানো বাজানোর জন্য উঠেছিলাম আর ভয় পাচ্ছিলাম, তখন আমি দেখলাম, বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন হাসিমুখে, তিনি হাত নাড়ছেন, আর কেউ সেটা করেনি আর আমার ভয় চলে গেল...এই হলো ভালোবাসা।’
‘আমার মা আমাকে এই দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। আর কেউ কি আছে যে আমাকে আমার ঘুমের মধ্যেও চুমু খায়?’
‘ভালোবাসা হচ্ছে যখন বাবা ঘর্মাক্ত আর নোংরা থাকেন, তখনো মা বলেন, তুমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে হ্যান্ডসাম।’
‘আমার বড় বোন আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, কারণ সে তার কাপড়চোপড়গুলো আমাকে দিয়ে দেয়। আর বেচারিকে কাপড়ের জন্য দোকানে যেতে হয়।’
‘কাউকে কখনো বলা উচিত না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। যদি তুমি সেটা বিশ্বাস না করো। আর যদি সত্যি তুমি তাকে ভালোবাসো, তাহলে অনেকবার বলো। কারণ মানুষ খুব ভুলে যায়।’
আর এই বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো যে বলেছিল, তার উক্তি, ‘আমার বাড়ির পাশের একজন বুড়ো মানুষের বউ মারা যান। আমি তাঁর কাছে যাই। তাঁর কোলে বসে থাকি। মা জিজ্ঞেস করলেন, জন, তুমি ভদ্রলোককে কীভাবে সাহায্য করলে। আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তাকে কাঁদতে সাহায্য করেছি।’
তো দেখা যাচ্ছে বাচ্চারা খুব সুন্দর করে বলতে পেরেছে লাভ বা প্রেম বা ভালোবাসা কী?
এইবার একটা কৌতুক।
চিকিত্সকের কাছে গিয়ে একজন বললেন, ‘আমি ড্রাইভিং টেস্টের সময় খুব নার্ভাস হয়ে পড়ি।’
চিকিত্সক বললেন, ‘ভয় পাবেন না। আপনি ঠিকই পাস করবেন।’
রোগী বলল, ‘ডাক্তার সাহেব, আমি নিজেই তো পরীক্ষক।’
এবার আমাদের পরীক্ষকদের পাস করার পালা।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
খুবই ভালো কথা। কিন্তু বাঙালি ব্যবসায়ীদের সৃজনশীলতা সম্পর্কে এই সজ্জন ও সাধু ব্যক্তিদের ধারণা একটু কমই ছিল। নতুন প্রবর্তিত এই সৃজনশীল প্রশ্ন ও তার উত্তরকেই নোটবই ব্যবসায়ী ও কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ীরা করে তুললেন তাঁদের বাণিজ্যের নতুন উপায়। বাজারে এখন বেরিয়েছে অনেকগুলো নতুন নোটবই, সেসবের বিষয় হলো, সৃজনশীল প্রশ্ন। রাস্তায় রাস্তায় পোস্টার পড়েছে, সৃজনশীল প্রশ্ন বিষয়টা কী, কীভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, জানতে হলে আজই কিনুন সৃজনশীল প্রশ্ন গাইড। পাঁচ শ সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরসংবলিত। হায়, আমাদের প্রিয় শিক্ষকেরা কী চাইলেন, আর বাস্তবে কী ঘটতে লাগল।
আমি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারকে বলেছিলাম, স্যার, আপনাদের ওই সৃজনশীল প্রশ্ন আর উত্তর নিয়েই তো নতুন গাইড বই বের হয়ে গেছে। স্যার জবাব দিলেন, বের হোক, কোনো লাভ হবে না, ওই গাইড বই থেকে কোনো প্রশ্ন আসবে না, শিক্ষার্থীদের নিজের সৃজনশীলতা দিয়েই নতুন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
ওই সব নোটবই পড়ে শিক্ষার্থীদের কোনো লাভ হবে না, সে তো জানা কথাই। তবে ওই সব নোটবই কিনলে যে ব্যবসায়ীদের লাভ হবে, তাও আমাদের অজানা নয়।
আর শিক্ষার্থীদের বা তাদের অভিভাবকদের ভয় পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। বাচ্চারা নিজেদের মতো করে খুব সুন্দর করে লিখবে। তারা নিজেদের মতো করে ভাববে, লিখতে, নিজেকে উপস্থাপন করতে শিখবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের মতো সুন্দর বিষয়টাকেও নোটবই ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসার সৃজনশীল একটা উপায় হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাই নয়, এটা দেখা যাচ্ছে, আমাদের প্রশ্নকর্তাদেরও সৃজনশীলতার পথ খুলে দিয়েছে।
গত কয়েক দিনে কাগজে অনেকগুলো প্রশ্নের নমুনা খবর হয়ে এসেছে। ‘হাসিনা ও খালেদা দুই বান্ধবী। তাঁরা দুজন টিভি দেখছিলেন। নামাজের সময় হলো। খালেদা নামাজ পড়তে গেলেন। হাসিনা বললেন, মন চায় নাই, তাই যাই নাই।’
‘মাওলানা নিজামী খুব ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি।’ ‘হাসিনার বান্ধবী মতিয়া।’
নানা ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ন করছেন আমাদের শিক্ষকেরা। আমাদের শিক্ষকেরা যে এত সৃজনশীল, তা আমাদের জানাই ছিল না। আমাদের ব্যবসায়ীরা যে এত উদ্ভাবনী প্রতিভার অধিকারী, তা-ই বা কে জানত!
এখন বাস্তবক্ষেত্রে প্রমাণিত হলো, শিক্ষা-বিশেষজ্ঞরা চলেন ডালে ডালে, আর অন্যেরা চলেন পাতায় পাতায়।
শিশুদের সৃজনশীলতা নিয়ে আমাদের কোনোই সন্দেহ নেই। তাদের কল্পনাশক্তি অপরিসীম আর সুযোগ দিলে তার প্রমাণ তারা রাখে হরহামেশাই।
বিদেশে একবার বিশেষজ্ঞরা চার থেকে আট বছরের বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ভালোবাসা কী?’
খুব সুন্দর সুন্দর উত্তর দিয়েছিল বাচ্চারা।
যেমন—একজন লিখেছিল, ‘আমার দাদি যখন পায়ে নেইলপলিশ দিতে পারেন না, তখন দাদার বাতের ব্যথা হওয়া সত্ত্বেও দাদা দাদির পায়ে নেইলপলিশ লাগিয়ে দেন। এটা হলো ভালোবাসা।’
আরেকজন লিখেছিল, ‘ভালোবাসা হচ্ছে—যখন একটা মেয়ে গায়ে সুগন্ধি মাখে, আর ছেলে গালে আফটার শেভ লোশন দেয়, তারপর তারা বাইরে যায় আর একে অন্যের সুগন্ধ উপভোগ করতে থাকে...।’
এই রকম করে একেকজন বাচ্চা একেকটা জিনিস লিখেছিল। সেসবের কয়েকটা নিচে দেওয়া হলো:
‘ভালোবাসা হচ্ছে তা, যখন তুমি কারও সঙ্গে বাইরে যাও, সে তার থালা থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তোমার পাতে তুলে দেয় আর তার বদলে তোমাকে তার পাতে কিছুই দিতে হয় না।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে যখন তোমার মুখে হাসি থাকে অথচ তুমি আসলে খুবই ক্লান্ত।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে— মা আমার বাবার জন্য কফি বানায়, আর বাবাকে তা দেওয়ার আগে একটু চেখে দেখে কফির স্বাদ ঠিক হয়েছে কি না!’
‘ভালোবাসা কী যদি তুমি শিখতে চাও, তাহলে তুমি সেটা শুরু করতে পারো, তুমি যাকে সবচেয়ে ঘৃণা করো তাকে তুমি ভালোবাসতে আরম্ভ করো।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে—কেউ তোমাকে বলে, তোমার শার্টটা সুন্দর আর তুমি সেটা রোজ পরতে শুরু করো...।’
‘ভালোবাসা হচ্ছে এক বুড়ো আর বুড়ি, তাঁদের মধ্যে এখনও অনেক বন্ধুত্ব, যদিও নিজেদের সম্পর্কে জানার কিছুই তাদের বাকি নেই।’
‘আমি যখন মঞ্চে পিয়ানো বাজানোর জন্য উঠেছিলাম আর ভয় পাচ্ছিলাম, তখন আমি দেখলাম, বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন হাসিমুখে, তিনি হাত নাড়ছেন, আর কেউ সেটা করেনি আর আমার ভয় চলে গেল...এই হলো ভালোবাসা।’
‘আমার মা আমাকে এই দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। আর কেউ কি আছে যে আমাকে আমার ঘুমের মধ্যেও চুমু খায়?’
‘ভালোবাসা হচ্ছে যখন বাবা ঘর্মাক্ত আর নোংরা থাকেন, তখনো মা বলেন, তুমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে হ্যান্ডসাম।’
‘আমার বড় বোন আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, কারণ সে তার কাপড়চোপড়গুলো আমাকে দিয়ে দেয়। আর বেচারিকে কাপড়ের জন্য দোকানে যেতে হয়।’
‘কাউকে কখনো বলা উচিত না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। যদি তুমি সেটা বিশ্বাস না করো। আর যদি সত্যি তুমি তাকে ভালোবাসো, তাহলে অনেকবার বলো। কারণ মানুষ খুব ভুলে যায়।’
আর এই বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো যে বলেছিল, তার উক্তি, ‘আমার বাড়ির পাশের একজন বুড়ো মানুষের বউ মারা যান। আমি তাঁর কাছে যাই। তাঁর কোলে বসে থাকি। মা জিজ্ঞেস করলেন, জন, তুমি ভদ্রলোককে কীভাবে সাহায্য করলে। আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তাকে কাঁদতে সাহায্য করেছি।’
তো দেখা যাচ্ছে বাচ্চারা খুব সুন্দর করে বলতে পেরেছে লাভ বা প্রেম বা ভালোবাসা কী?
এইবার একটা কৌতুক।
চিকিত্সকের কাছে গিয়ে একজন বললেন, ‘আমি ড্রাইভিং টেস্টের সময় খুব নার্ভাস হয়ে পড়ি।’
চিকিত্সক বললেন, ‘ভয় পাবেন না। আপনি ঠিকই পাস করবেন।’
রোগী বলল, ‘ডাক্তার সাহেব, আমি নিজেই তো পরীক্ষক।’
এবার আমাদের পরীক্ষকদের পাস করার পালা।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
No comments