ডেটিং পয়েন্টে অন্যরকম দৃশ্য by শুভ্র দেব
নেশা
লেগেছে রাজধানীর ডেটিংস্পটেও। সুষ্ঠু বিনোদনের ছোঁয়া নিতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে
অনেককেই বিব্রতকর অবস্থায়। মাদক আর অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। ভবঘুরে, মাদক
বিক্রেতা, মাদকসেবী ও যৌনকর্মীদের আড্ডাও চলে সমানতালে। সকাল থেকে চলে সেই
গভীর রাত পর্যন্ত। রয়েছে হিজড়াদের উৎপাতও। এতে করে ডেটিংস্পটগুলো হারাচ্ছে
সুষ্ঠু বিনোদনপ্রেমী। ডেটিংস্পট নামে পরিচিত রাজধানীর রমনা পার্ক, টিএসসি,
বলধা গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন, চন্দ্রিমা উদ্যান, জিয়া উদ্যান, ওসমানী
উদ্যান, পান্থকুঞ্জ, আনোয়ারা উদ্যান, মিরপুর বেড়িবাঁধসহ অন্যান্য স্পটগুলো
এখন তার চিরচেনা রূপ হারাচ্ছে। এক সময় এসব স্থান সব শ্রেণির মানুষের
প্রাণভরে নিঃশ্বাস আর প্রেমিক জুটিদের ডেটিংয়ের পছন্দের তালিকায় ছিল।
কিন্তু চরম অব্যবস্থাপনা, মাদকসেবী ও বিক্রেতা, ভবঘুরে, হিজড়াদের চাঁদাবাজি
ও ভাসমান পতিতাদের উৎপাতে আগ্রহ হারাচ্ছে অনেকে। চিরচেনা রমনা পার্কে
আড্ডা দিতে দেখা যায় অনেক তরুণ-তরুণীকে। রমনায় ঘুরতে আসা শিমুল-তানহা নামের
দুই তরুণ-তরুণী বলেন, পার্কটি অনেক বড় থাকার কারণে মানুষের ঘেঁষাঘেঁষি কম।
তাছাড়া ভেতরের পরিবেশটা অন্যান্য স্থানের চেয়ে অনেক ঠাণ্ডা। তবে সেখানে
ঘুরতে আসা আলম নামের এক তরুণ জানালেন ভিন্ন কথা। দিনের রমনা পার্কের সঙ্গে
রাতের কোনো মিল নাই। দিনেও যেমন মাদকসেবীদের উৎপাত থাকে রাতের বেলা তার
সঙ্গে যোগ হয় ভাসমান পতিতা। নিরাপত্তাকর্মীদের যোগসাজশেই এমনটা হয় বলে তিনি
জানিয়েছেন। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী বিষয়টি অস্বীকার করলেও নাম প্রকাশ না
করার শর্তে এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, কম বেশি হয়। তবে এখানে বড় একটি
সিন্ডিকেট কাজ করে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওঠা দায়।
বেশিরভাগ প্রেমিক জুটিদের আগ্রহের স্থান বলধা গার্ডেন। সবুজে ঘেরা নির্মল বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে অনেকেই ছুটে যেতেন সেখানে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আজ অনেকটা বেহাল হয়ে পড়েছে বলধা গার্ডেন। সরজমিন দেখা যায়, টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে কপোত-কপোতীরা হারিয়ে যায় অন্য জগতে। গার্ডেনের ভেতরে পুকুর পাড়ের চার পাশে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গাছ। আর এই গাছের আড়ালেই জুটি বেঁধে বসে বসে অন্তরঙ্গ সময় পার করছেন প্রেমিক জুটিরা। নিরাপত্তাকর্মীরা সেখানে থাকলেও টিকিটের প্রবেশ মূল্যের পাশাপাশি বাড়তি টাকা দিলেও পাওয়া যাচ্ছে বাড়তি সুবিধা। অনেকেই সেই সুযোগটাও লুফে নিচ্ছে। পাশাপাশি বলধা গার্ডেনে মাদক সেবন চলে। অনেক বখাটেকে এখানে বসে নির্বিঘ্নে মাদক সেবনের দৃশ্যও দেখা গেছে। একটু ভিন্ন চেহারা দেখা যায় জিয়া উদ্যান ও চন্দ্রিমা উদ্যানে। সকাল থেকেই সেখানে সব বয়সী মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে। লেকের পাড়ে সারি সারি প্রেমিক জুটি বসে থাকা এটা নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকেই এখানে ঘুরতে এসে বেশ আনন্দ উপভোগ করেন। এক পাশে জাতীয় সংসদ ভবন। চওড়া লেকের পাড়ে বসার ব্যবস্থা আর সবুজের সমারোহ আছেই। রায়হান নামের মধ্য বয়সী এক চাকরিজীবী বলেন, জায়গাটা ভালোই লাগে। অবসর পেলেই চলে আসি। বন্ধুদের সঙ্গেই আসা হয়। কিছু সময় আড্ডা দিয়ে চলে যাই। রিমন-সেতু নামের প্রেমিক জুটি বলেন, অনেকেই আসে। এজন্য আসা হয়। মাঝে মধ্যে হিজড়া, মাদকসেবী আর ভবঘুরেরা খুব ঝামেলা করে। না হলেই সব ঠিকঠাক ছিল। তবে রমনা পার্কের মতো রাতের জিয়া উদ্যান ও চন্দ্রিমা উদ্যানের চেহারা পাল্টে যায়। ভুল করে যদি কেউ সন্ধ্যার পর সেখানে যায় তবে তাকে পড়তে হয় অনেক বিব্রতকর অবস্থায়। কারণ সেখানে সন্ধ্যার পর থেকে চলে অবাধে মাদক বিক্রি, সেবন আর যৌনতা। এমনকি সেখানে ভাড়ায় প্রেমিকাও পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিলেই গল্প করা থেকে শুরু করে সেখানকার রাতের বেলার অস্থায়ী প্রেমকুঞ্জে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর সুযোগ হয়। জিয়া উদ্যান সম্পর্কে ধারণা নাই এমন অনেককেই সেই সুযোগটা নিতে গিয়ে সর্বস্ব হারাতে হয়েছে। সেখানকার সিন্ডিকেট ও নিরাপত্তাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে কিছু নারীকে দিয়ে মেলামেশার নামে সর্বস্ব লুট করার পরিকল্পনা করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তন (টিএসসি) এলাকায় এক সময় প্রেমিক জুটিদের জম্পেশড আড্ডা হতো। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এখানে আড্ডা দিতে চলে আসতো। এখনো অনেকেই আসে। তবে এখনকার চেহারা একটু অন্যরকম। সোহরাওয়ার্দী ও টিএসসি এলাকা এখন অনেকটা অঘোষিত মাদকের হাট হয়ে গেছে। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে এখানে মাদক সেবন ও বিক্রি হয়। তাই আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেক বিনোদনপ্রেমীরা টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কম ভিড়ে। টিএসসি এলাকার ইমন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছাড়াও এখানে সব শ্রেণির মানুষের আনাগোনা ছিল। বিশেষ করে কপোত-কপোতীরা বেশ প্রাণ খুলেই আড্ডা দিতো। কিন্তু এখন মাদকের ছড়াছড়ি হওয়াতে সেই চির চেনা রূপ আর দেখা যায় না।
মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে মাদকসেবী-বিক্রেতা আর যৌনকর্মীদের রাজত্ব। বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের এক সিন্ডিকেট। যারা হাতিয়ে নিয়ে যায় সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের ঘটনা। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘুরতে এসেছেন দুই বন্ধু। মিরপুর চিড়িয়াখানায় ঘুরাঘুরির পর প্রবেশ করেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ঘুরাঘুরির একপর্যায়ে সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক লোক এসে তাদের বলে মামা লাগবে নাকি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই নিরাপত্তাকর্মী তাদের জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে অস্থায়ীভাবে তৈরি কিছু ছোট ছোট খুপড়ি ঘরে বসে আছেন কিছু তরুণী। দর কষাকষি করে একটু আড়ালে যাওয়ার পর বাধা আসে। তাদের ঘিরে ফেলে উঠতি বয়সী কয়েক তরুণ। অনেক কাকুতি মিনতি করেও তারা রেহাই পাননি। সঙ্গে থাকা ৭ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ আরো কিছু জিনিস দিয়ে তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। সূত্রমতে, এখানে বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা আর মানুষকে হেনস্তা করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসব কারণে বোটানিক্যাল গার্ডেন এক আতঙ্কের নাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব জেনেও অনেক সময় চুপ করে থাকেন।
বেশিরভাগ প্রেমিক জুটিদের আগ্রহের স্থান বলধা গার্ডেন। সবুজে ঘেরা নির্মল বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে অনেকেই ছুটে যেতেন সেখানে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আজ অনেকটা বেহাল হয়ে পড়েছে বলধা গার্ডেন। সরজমিন দেখা যায়, টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে কপোত-কপোতীরা হারিয়ে যায় অন্য জগতে। গার্ডেনের ভেতরে পুকুর পাড়ের চার পাশে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গাছ। আর এই গাছের আড়ালেই জুটি বেঁধে বসে বসে অন্তরঙ্গ সময় পার করছেন প্রেমিক জুটিরা। নিরাপত্তাকর্মীরা সেখানে থাকলেও টিকিটের প্রবেশ মূল্যের পাশাপাশি বাড়তি টাকা দিলেও পাওয়া যাচ্ছে বাড়তি সুবিধা। অনেকেই সেই সুযোগটাও লুফে নিচ্ছে। পাশাপাশি বলধা গার্ডেনে মাদক সেবন চলে। অনেক বখাটেকে এখানে বসে নির্বিঘ্নে মাদক সেবনের দৃশ্যও দেখা গেছে। একটু ভিন্ন চেহারা দেখা যায় জিয়া উদ্যান ও চন্দ্রিমা উদ্যানে। সকাল থেকেই সেখানে সব বয়সী মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে। লেকের পাড়ে সারি সারি প্রেমিক জুটি বসে থাকা এটা নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকেই এখানে ঘুরতে এসে বেশ আনন্দ উপভোগ করেন। এক পাশে জাতীয় সংসদ ভবন। চওড়া লেকের পাড়ে বসার ব্যবস্থা আর সবুজের সমারোহ আছেই। রায়হান নামের মধ্য বয়সী এক চাকরিজীবী বলেন, জায়গাটা ভালোই লাগে। অবসর পেলেই চলে আসি। বন্ধুদের সঙ্গেই আসা হয়। কিছু সময় আড্ডা দিয়ে চলে যাই। রিমন-সেতু নামের প্রেমিক জুটি বলেন, অনেকেই আসে। এজন্য আসা হয়। মাঝে মধ্যে হিজড়া, মাদকসেবী আর ভবঘুরেরা খুব ঝামেলা করে। না হলেই সব ঠিকঠাক ছিল। তবে রমনা পার্কের মতো রাতের জিয়া উদ্যান ও চন্দ্রিমা উদ্যানের চেহারা পাল্টে যায়। ভুল করে যদি কেউ সন্ধ্যার পর সেখানে যায় তবে তাকে পড়তে হয় অনেক বিব্রতকর অবস্থায়। কারণ সেখানে সন্ধ্যার পর থেকে চলে অবাধে মাদক বিক্রি, সেবন আর যৌনতা। এমনকি সেখানে ভাড়ায় প্রেমিকাও পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিলেই গল্প করা থেকে শুরু করে সেখানকার রাতের বেলার অস্থায়ী প্রেমকুঞ্জে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর সুযোগ হয়। জিয়া উদ্যান সম্পর্কে ধারণা নাই এমন অনেককেই সেই সুযোগটা নিতে গিয়ে সর্বস্ব হারাতে হয়েছে। সেখানকার সিন্ডিকেট ও নিরাপত্তাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে কিছু নারীকে দিয়ে মেলামেশার নামে সর্বস্ব লুট করার পরিকল্পনা করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তন (টিএসসি) এলাকায় এক সময় প্রেমিক জুটিদের জম্পেশড আড্ডা হতো। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এখানে আড্ডা দিতে চলে আসতো। এখনো অনেকেই আসে। তবে এখনকার চেহারা একটু অন্যরকম। সোহরাওয়ার্দী ও টিএসসি এলাকা এখন অনেকটা অঘোষিত মাদকের হাট হয়ে গেছে। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে এখানে মাদক সেবন ও বিক্রি হয়। তাই আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেক বিনোদনপ্রেমীরা টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কম ভিড়ে। টিএসসি এলাকার ইমন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছাড়াও এখানে সব শ্রেণির মানুষের আনাগোনা ছিল। বিশেষ করে কপোত-কপোতীরা বেশ প্রাণ খুলেই আড্ডা দিতো। কিন্তু এখন মাদকের ছড়াছড়ি হওয়াতে সেই চির চেনা রূপ আর দেখা যায় না।
মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে মাদকসেবী-বিক্রেতা আর যৌনকর্মীদের রাজত্ব। বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের এক সিন্ডিকেট। যারা হাতিয়ে নিয়ে যায় সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের ঘটনা। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘুরতে এসেছেন দুই বন্ধু। মিরপুর চিড়িয়াখানায় ঘুরাঘুরির পর প্রবেশ করেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ঘুরাঘুরির একপর্যায়ে সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক লোক এসে তাদের বলে মামা লাগবে নাকি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই নিরাপত্তাকর্মী তাদের জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে অস্থায়ীভাবে তৈরি কিছু ছোট ছোট খুপড়ি ঘরে বসে আছেন কিছু তরুণী। দর কষাকষি করে একটু আড়ালে যাওয়ার পর বাধা আসে। তাদের ঘিরে ফেলে উঠতি বয়সী কয়েক তরুণ। অনেক কাকুতি মিনতি করেও তারা রেহাই পাননি। সঙ্গে থাকা ৭ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ আরো কিছু জিনিস দিয়ে তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। সূত্রমতে, এখানে বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা আর মানুষকে হেনস্তা করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসব কারণে বোটানিক্যাল গার্ডেন এক আতঙ্কের নাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব জেনেও অনেক সময় চুপ করে থাকেন।
No comments