মান্দায় আনন্দ মেলার নামে চলছে জুয়া ও নগ্ন নৃত্য
নওগাঁর মান্দায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদের কিছু পশ্চিমে দেলুয়াবাড়ি-চৌবাড়িয়া সড়কের পার্শ্বে আনন্দ মেলার নামে পুলিশের চোখের সামনেই চলছে অবাধে জুয়া ও অশ্লল নগ্ন নৃত্য। ২৭ মার্চ থেকে মাইক ব্যবহার করে ও বড় বড় সাউন্ড বক্স এ হিন্দি গান জুড়ে দিয়ে সন্ধার পর থেকে রাতভর চলছে বেসামালভাবে উদ্ভট সুন্দরী নারীদের গাঁয়ের সব পোশাক খুলে ফেলে উলঙ্গ ও নগ্ন নৃত্য ও গান। এর পার্শেই চলছে ৬টি জমজমাট জুয়ার আসর। এতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে উঠতি বয়সের সব স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী ও গ্রাম্য যুবকসহ দূর-দূরান্তের বিকৃত মানসিকতার মানুষের উপচেপড়া ভীড়। তাদের আড্ডায় জমে উঠছে মেলা প্রাঙ্গন।এখানে চলছে এখন শুধুই অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌন আবেদনে ভরা উলঙ্গ নৃত্য ও অরুচিকর গানের আগ্রাসন। ফলে চলতি এইচএসসি,আলীম ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পরীর্ক্ষীসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। প্রশাসন জেনেও না জানার ভান করে চোখেমুখে কুলূপ এঁটে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। সরেজমিনে মেলায় গিয়ে জানা যায়, সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে ও নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় ভারশোঁ গ্রামের জানবক্স সরকারের ছেলে ও মেলা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম সরকার চিতল, বড় ভাই ইদল, ভারশোঁ ইউপি’র চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, বকাজার কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন,সেনা সদস্য আপেল, পিয়ন ডালিম,কাইজাল,সদের আলী, আবদুর রশিদ, ইউনুছ আলী মন্ডল এবং ডিসলাইনের মালিক বাবুল আকতারসহ আরো কতগুলো সমাজের দলপতি ও তাদের অনুগত কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী দলীয় লোকজন শেয়ার পার্টনার হিসেবে একজোট হয়ে এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ। মেলায় অর্থ যোগানদাতা হিসেবে রয়েছেন গোলাম মোর্শেদ কাবুল। তাদের মতো বিকৃত মনের মানুষ দ্বারা সমাজ বিরোধী এসব অপকর্ম পরিচালিত হলেও নগদ লক্ষ্যি কিছু হাতে পড়ায় তুষ্ট হয়ে উপজেলা প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রশাসনের সহযোগিতা থাকায় এসব অপকর্ম করার সাহস দেখিয়ে যাচ্ছে প্রতি বছরের মতো এ বছরও তা বলাই বাহুল্য মাত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসির অভিযোগ, ভারশোঁ মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, বাজার জামে মসজিদ, তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাত্র ২০০-৩০০ মিটার অদূরে নিয়মিতভাবে এখানে আনন্দ মেলার নামে ১০০টাকা থেকে সর্বনি¤œ ২০টাকা টিকিটে চলছে বোনাস হিসেবে ফ্রি হিট শো সর্ম্পূণ উলঙ্গ নৃত্য। সন্ধ্যা থেকে মাইক ও বড় বড় সাউন্ড বক্স এ হিন্দি গান জুড়ে দিয়ে প্রচার চালানো হয়। এরপর রাতভর সেখানে ১টি আনন্দ মেলা নামের যাত্রায় ও মিতা অলৌকিক যাদু প্রদর্শনী গ্রুপ বিচিত্রা অনুষ্ঠান এবং অলৌকিক যাদু প্রদর্শনী পুতুল নাচের নামে ভ্যারাইটি শো চলছে। এতে প্রদর্শন করা হচ্ছে বেসামালভাবে উদ্ভট ফর্সা সুন্দরী নারীদের গাঁয়ের সব পোশাক খুলে ফেলে উলঙ্গ ও নগ্ন নৃত্য ও গান। পার্শ্বেই চলছে রাজশাহীন কুখ্যাত জুয়ারু আবদুল কাইয়ুমসহ চাঁপাই নবাবগঞ্জের ৬টি অবৈধ জুয়ার আসর। জুয়ার আসরগুলোয় লাখ লাখ টাকার অবৈধ জুয়া খেলা চলছে প্রকাশ্যে। সাংবাদিক জুয়ার ছবি মোবাইলে উঠালে এক জুয়ারুর লোকজন ছবি ডিলিট করে দেয় এবং বলে ছবি তুলছেন কেনো? আপনি কি করেন? ছবি তুললে এখুনি পুলিশ এসে জুয়া বন্ধ করে দিবে।
এ সময় মোবাইল কেড়ে নিতেও সাহস দেখায়। প্রশাসনিকভাবে ১৫ দিনের জন্য বিচিত্রা গানের নামে অনুমোদনের পর উলঙ্গ নৃত্য চালালে পুলিশ ভেঙ্গে দিচ্ছেন না। প্রশাসনও পুলিশকে ম্যানেজ করে ঐখানে আনন্দ মেলার নামে চলছে অবৈধ জুয়া ও উলঙ্গ নৃত্য। বর্তমানে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সায় করে মাইকিং করে মেলায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো ছাড়াও দৈনিক পদ্মা র্যাফেল ড্র’র নামে অবৈধভাবে ৬০টি অটোরিক্সায় করে ২০টাকা মূল্যের লটারির প্রচারিভিযান ছাড়াও মান্দা,নিয়ামতপুর ও তানোর উপজেলায় ডিশ লাইনের মাধ্যমে খোনো হচ্ছে। বিচিত্রা অনুষ্ঠানের নামে সন্ধার পর থেকে শুরু হচ্ছে উলঙ্গ নৃত্য ও অবৈধ জুয়ার আসর। যুব সমাজসহ সব বয়সের লোকদেরকে গ্রাস করছে ভয়াবহ অবক্ষয়ের নীল ছোবল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় দলপতি জানান, প্রথমে অনুমতি না পেলেও ২৭ মার্চ থেকে বিচিত্রা অনুষ্ঠানের কথা বলে প্রশাসনের অনুমতি নেয়া হয়েছে। তাই ভিন্ন পথে অন্যনামে আবেদন করে তবেই প্রশাসনের অনুমতিতে তা অবলিলায় চালানো সম্ভব হচ্ছে।এ জন্য অবশ্য মান্দা থানায় নিয়মিত টাকা দিয়ে অবৈধভাবে উলঙ্গ নৃত্য, ডাব্বু জুয়াও লটারি চালানো হচ্ছে। তাছাড়া অয়োজকরা সবাই স্থানীয় ও দলীয় লোকজন হওয়ায় দলীয় নাম ভাঙ্গিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে এ উলঙ্গ নৃত্য ও অবৈধ জুয়ার আসর চালানোর সাহস পাচ্ছে বলে অভিযোগ সচেতন এলাকাবাসীর। উলঙ্গ নৃত্য ও অবৈধ জুয়ার আসরগুলো বন্ধের জন্য সচেতন এলাকাবাসিরা প্রশাসনের নিকট দাবী জানিয়ে লিখিত আবেদন দিলেও প্রশাসন তা কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ চেয়ারম্যান সুমনের নাম ভাঙ্গিয়ে আনন্দ মেলার নামে অশ্ল¬ীলতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকরা বিপথ গামী করা হচ্ছে।
No comments