নাসিরপুরের আস্তানায় আত্মঘাতী ৭ জঙ্গি একই পরিবারের
মৌলভীবাজার সদরের নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন হিটব্যাক’ চলাকালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত সাত জঙ্গি একই পরিবারের বলে দাবি উঠেছে। তাদের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় বলে দাবি করেছেন নিহত জঙ্গি লোকমান আলীর শ্বশুর কলাবাড়ী গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিক। নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় ২৯ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরু করলে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত সাত-আট জঙ্গি নিহত হয়। পরদিন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ভেতরে থাকা জঙ্গিদের লাশ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আবুবক্করের দাবি ওই ঘটনায় নিহতরা হল- ঘোড়াঘাট উপজেলার ডাঙ্গা গ্রামের জঙ্গি লোকমান আলী (৪৫), তার স্ত্রী শিরিনা আক্তার (৩০), বড় মেয়ে আমেনা খাতুন (২০), সুমাইয়া (১২), মরিয়ম (১০) ও ফাতেমা (৭)। আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, ২৯ মার্চ রাত ১টার দিকে অজ্ঞাত নম্বর থেকে তার মোবাইলে ফোন আসে। রিসিভ করার পর বড় নাতনি আমেনা খাতুনের কণ্ঠস্বর ভেসে আসে। যাকে দুই মাস আগে বগুড়ায় বিয়ে দেয়া হয়। আমেনা কথা বলার পর মা শিরিনা আক্তারের কাছে মোবাইল দেন। শিরিন আক্তার আবুবক্করের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা কথা বলেন।
এসময় শিরিন বাবাকে বলেন, আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন। আমাদের সঙ্গে আর কোনো দিন দেখা হবে না। তখন আবুবক্কবর বলেন, আমি তোমার নামে এক বিঘা জমি লিখে দিয়েছি। তুমি কোথায় আছ, ঠিকানা বল, আমি সেখান থেকে নিয়ে আসব। শিরিনা আক্তার জানান, তারা যেখানে আছেন সেখান থেকে আর ফেরার সুযোগ নেই। তখন আবুবক্কর বুঝতে পারেন যে, তার মেয়ে স্বামী লোকমানের সঙ্গে আছে। আবুবক্করের দাবি, জঙ্গি আস্তানায় আত্মহননকারী সাতজনই একই পরিবারের। তারা তার মেয়ে, জামাই ও নাতনি। তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। দিনাজপুরের পুলিশ সুপার হামিদুল আলম রোববার প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আবুবক্কর জানান, তিন বছর ধরে তার জামাই ও মেয়ের সঙ্গে তার পরিবারের কোনো যোগাযোগ ছিল না। ঘটনার দিন ২৯ মার্চ রাতে তার জামাই, মেয়ে ও নাতনির সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। এদিকে লোকমানসহ পরিবারের সাতজনের আত্মঘাতী হামলায় নিহত সংবাদ পাওযার পর অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন তার বাবা একই উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম। লোকমানের বোন নুরজাহান, নুরবানু ও ভাই জাকারিয়া নিহতদের লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
No comments