সাতকানিয়ায় এবার বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা
সাতকানিয়া উপজেলায় বোরোর আবাদ শুরু করেছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে প্রায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পুরোদমে চলছে বোরোর আবাদ। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার চাষিরা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, মাঠ তৈরি ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার কৃষি কার্যালয়ের লোকজনের ধারণা, এবার সাতকানিয়ায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, পৌরসভার খলিফাপাড়া, ঢেমশা ইউনিয়নের বিল্লাপাড়া, ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদেরপাড়া, কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহানির বিল, এওচিয়া ইউনিয়নের আলীনগর, পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা, ছরখোলা, চুড়ামনি, কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা, গুরগুরি, বখশিরখীল, কালিয়াইশ ইউনিয়নের মাঝরপাড়া, মাইঙ্গাপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে জানুয়ারি মাস থেকেই পুরোদমে বোরোর আবাদ শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের মাইঙ্গাপাড়া ও ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদেরপাড়া এলাকার বিলে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা পাশের শঙ্খ নদ থেকে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিচ্ছেন। অনেক চাষি ট্রাক্টরের সাহায্যে জমিতে চাষ দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চাষ দেওয়া জমিতে চারা রোপণে ব্যস্ত। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। কিন্তু ধানের বাজারমূল্য কম থাকায় ও সেচের ব্যবস্থা সহজলভ্য না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে এ বছর পানির সহজলভ্যতা ও ধানের বাজারমূল্য ঊর্ধ্বমুখী থাকায় চাষিরা বোরো চাষে নেমে পড়েছেন।
কালিয়াইশ ইউনিয়নের মধ্যম কালিয়াইশ গ্রামের চাষি নুরুন্নবী (৫২) ও ফোরকান উদ্দিন (৫৫) বলেন, ‘গত বছর ধানের বাজারমূল্য যথেষ্ট পরিমাণে কম থাকায় জমিতে বোরো ধানের চাষই করিনি (স্থানীয় ভাষায় খিলা রেখেছি)। কিন্তু এ বছর ধানের ভালো দাম দেখে চাষে আগ্রহী হয়েছি। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে।’ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, সাতকানিয়া উপজেলায় এ বছর ৬ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৬৩১ মেট্রিক টন। এ বছর চাষিরা স্থানীয় জাতের চেয়ে উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বেশি করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শোয়েব মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বছর চাষিদের মাঝে বোরোর আবাদ করার ব্যাপারে ভালো আগ্রহ দেখা গেছে। ধারণা করছি, ধানের বাজারমূল্য দেখে এবং সেচসুবিধার কারণে তাঁরা বোরো চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আমরা চাষিদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে যাচ্ছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’
No comments