নির্বিঘ্নে শেষ প্রথম দফার ভোট ‘সুগার বেল্ট’ যাচ্ছে কার ঘরে?
উত্তর প্রদেশ বিধানসভার প্রথম দফার ভোট প্রায় নির্বিঘ্নে শেষ হলো গতকাল শনিবার। ১৫টি জেলার ৭৩টি আসনে এই ভোট ৮৩৯ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবে। তবে ভোটের শতাংশের হার কিন্তু আহামরি নয়। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। কম ভোট পড়া কার পক্ষে শুভ আর কার পক্ষে অশুভ, সেই জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের এই জেলাগুলো ‘সুগার বেল্ট’ বলে পরিচিত। উন্নত মানের আখ চাষ হওয়ার জন্য রাজ্যের অধিকাংশ চিনিকল এই অঞ্চলে। এখানেই মুজাফ্ফরনগর জেলায় ২০১৩ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ৬০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন শতাধিক। এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে জাঠ সম্প্রদায় শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের দাবিতে সরব। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে সারা রাজ্যের মতো এই অংশও ঢেলে সমর্থন জানিয়েছিল নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে। অথচ অন্য অংশের মতো এই অঞ্চলে বিজেপির রমরমা যথেষ্ট কম। ২০১২ সালের বিধানসভা ভোটে ৭৩টির মধ্যে বিজেপি জিতেছিল মাত্র ১১টি। ২৪টি করে আসন জিতেছিল সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। অজিত সিংয়ের রাষ্ট্রীয় লোকদল পেয়েছিল নয়টি আসন।
আর কংগ্রেস পাঁচটি। সেবারের ভোটে কংগ্রেস ও রাষ্ট্রীয় লোকদল জোট বেঁধেছিল। এবারের ভোটে রাজ্যের পরিস্থিতি ভিন্ন। সমাজবাদী পার্টিতে পালাবদল ঘটেছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদবের কোনো ভূমিকাই এই ভোটে নেই বললেই চলে। দলের রাশ পুরোপুরি চলে এসেছে মুলায়মপুত্র অখিলেশ যাদবের হাতে। তিনি হাত মিলিয়েছেন কংগ্রেসের সঙ্গে। অখিলেশ ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী রাজ্যে যৌথ প্রচারও চালাচ্ছেন। জোট জিতলে অখিলেশই যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা ঘোষিত। তাঁর দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের এই চেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিজেপি ও বহুজন সমাজ পার্টি। কাজেই রাজ্যে এবারের লড়াইটা ত্রিমুখী। যদিও প্রদেশে নিশ্চিতভাবেই ভোট ভাগাভাগি করবে জাঠ সমর্থনে পুষ্ট রাষ্ট্রীয় লোকদল। বিজেপি, বহুজন সমাজ পার্টি ও সমাজবাদী-কংগ্রেস জোট—তিন পক্ষের কাছেই এই ভোট গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপি প্রায় ১৫ বছর রাজ্যে ক্ষমতার বাইরে। কংগ্রেস টানা ২৭ বছর। বহুজন সমাজের নেত্রী মায়াবতী ২০১২ বিধানসভা ও ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রায় কিছুই করতে পারেননি। এবার তাই তিনি সবার আগে আসরে নামেন। দলিত ও মুসলমান ভোট তাঁর টার্গেট। এবার সরকার গড়তে ব্যর্থ হলে মায়াবতীর দলিত সমর্থন অটুট না-ও থাকতে পারে।
No comments