প্রকৃতিই ভরসা আদিবাসী কোচদের
শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার খলচন্দা গ্রামে যাওয়ার সেতুটি দুই বছর আগে দেবে যায়। আজও এটি সংস্কার করা হয়নি। গত শুক্রবার তোলা ছবি l প্রথম আলো |
শেরপুরের
নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে বনঘেঁষা ছোট একটি গ্রাম খলচন্দা।
এখানে আদিবাসী ৫০টি কোচ পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য বাস করে। আধুনিক জীবনের
ছোঁয়া লাগেনি এই গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার
সুযো থেকে বঞ্চিত। খাদ্য, বস্ত্রসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য
প্রকৃতির ওপরই তাদের নির্ভর করতে হয়। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। এই
দিবসে তাদের জীবন-জীবিকা ও নানা ধরনের সমস্যা তুলে ধরার জন্য এই প্রতিনিধি
সরেজমিনে খলচান্দা গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে কয়েকজন আদিবাসীর সঙ্গে কথা
বলে জানা গেছে, এই গ্রামের সবাই কোচ সম্প্রদায়ের। এখানে কোচ সম্প্রদায়ের
৫০টি পরিবা বাস করে। এ গ্রামের নারী ও পুরুষেরা কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ
করেন। এ ছাড়া পাহাড় থেকে লাকড়ি সংগ্রহ ও বাঁশ দিয়ে ঢোল তৈরি করে তাঁরা
সংসার চালান। অধিকাংশ বাড়িতে কাঁচা পায়খানা। এ গ্রামে বেসরকারি সংস্থা
(এনজিও) পরিচালিত তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত একটি বিদ্যালয় ছাড়া নেই কোনো
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ পাড়ার শিশুরা সাধারণত পড়ালেখা করে না। বয়স
বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড়দের সঙ্গে চাষাবাদের কাজে জড়িয়ে পড়ে। সারা গ্রামে
চারটি নলকূপ থাকলেও বছরের বেশির ভাগ সময় নষ্ট থাকে। তাই মাটির কূপ ও নদীর
পানিই তাদের ভরসা। কোনো রোগ হলে তাদের ছুটে যেতে হয় সাড়ে তিন কিলোমিটার
পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে মিশনারি হাসপাতালে। সেখানে না যেতে পারলে ২০
কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যেতে হয় উপজেলা সদরে। গ্রামটিতে কোনো পাকা সড়ক নেই।
শুষ্ক মৌসুমে কাঁচা সড়কে চলাফেরা করতে পারলেও বর্ষায় চলাচলে সম্পূর্ণ
অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
আদিবাসী গৃহবধূ মায়াদেবী কোচ (৪০) বলেন, ‘ভাঙা ব্রিজের ওপর দিয়া প্রায় আধা মাইল দূর থাইকা দুই বেলা পানি আইনা চলি। এতে আমগর বিরাট কষ্ট অয়। মেঘ (বৃষ্টি) অইলে রাস্তা দিয়া হাঁটন যায় না। সরকার যদি আমগরে গ্রামে রিং টিউবওয়েলের ব্যবস্থা কইরা দিত, বিরাট উপকার অইত।’
সতীশ কোচ (৫০) বলেন, ‘আমরা কষ্ট কইরা যেইটুকু ধান লাগাই, হাতি আইসা সব খাইয়া ফালায়। জীবন রক্ষার লাইগা তহন মশাল জ্বালাইয়া সবাই রাইত জাইগা হাতি পাহারা দিই। সরকার যদি আমগরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করত, তাইলে হাতির অত্যাচার থাইকা কিছুডা রক্ষা পাইতাম।’
কোচপাড়ার মণ্ডল (প্রধান) সুবরন্ত কোচ (৭১) বলেন, ‘প্রকৃতির দয়ায় আমরা কোনো রহম বাইচ্চা আছি।’
নালিতাবাড়ী টাইটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লুই নেংমিঞ্জা জানান, সব দিক থেকেই এই ৫০টি কোচ পরিবার অবহেলিত। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ম আজাদ মিয়া বলেন, গ্রামটিতে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। তবে তাড়াতাড়ি বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে। ওই গ্রামে যাওয়ার জন্য সেতু নির্মাণসহ সড়ক সংস্কারের বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
আদিবাসী গৃহবধূ মায়াদেবী কোচ (৪০) বলেন, ‘ভাঙা ব্রিজের ওপর দিয়া প্রায় আধা মাইল দূর থাইকা দুই বেলা পানি আইনা চলি। এতে আমগর বিরাট কষ্ট অয়। মেঘ (বৃষ্টি) অইলে রাস্তা দিয়া হাঁটন যায় না। সরকার যদি আমগরে গ্রামে রিং টিউবওয়েলের ব্যবস্থা কইরা দিত, বিরাট উপকার অইত।’
সতীশ কোচ (৫০) বলেন, ‘আমরা কষ্ট কইরা যেইটুকু ধান লাগাই, হাতি আইসা সব খাইয়া ফালায়। জীবন রক্ষার লাইগা তহন মশাল জ্বালাইয়া সবাই রাইত জাইগা হাতি পাহারা দিই। সরকার যদি আমগরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করত, তাইলে হাতির অত্যাচার থাইকা কিছুডা রক্ষা পাইতাম।’
কোচপাড়ার মণ্ডল (প্রধান) সুবরন্ত কোচ (৭১) বলেন, ‘প্রকৃতির দয়ায় আমরা কোনো রহম বাইচ্চা আছি।’
নালিতাবাড়ী টাইটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লুই নেংমিঞ্জা জানান, সব দিক থেকেই এই ৫০টি কোচ পরিবার অবহেলিত। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ম আজাদ মিয়া বলেন, গ্রামটিতে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। তবে তাড়াতাড়ি বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে। ওই গ্রামে যাওয়ার জন্য সেতু নির্মাণসহ সড়ক সংস্কারের বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
No comments