নীলাদ্রি হত্যা: মূল হামলাকারী বাঁহাতি?
ব্লগার
নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে হত্যার ঘটনায় পুলিশ কাউকে শনাক্ত কিংবা
গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পূর্ব গোড়ানের ভাড়া
বাসায় ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নীলাদ্রির শরীরে ১৪টি জখম রয়েছে। মূল হামলাকারী বাঁহাতি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে সিলেটে নিহত অনন্ত বিজয় দাশের ওপর হামলার ধরনও একই রকম। দুই হামলাকারী একই ব্যক্তি কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার রাতেই নীলাদ্রির স্ত্রী আশা মনি অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় হত্যা ও ল্যাপটপ-মুঠোফোন চুরির অভিযোগে মামলা করেছেন। গতকাল দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে কাকা বিমল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। মর্গ থেকে লাশ সরাসরি পিরোজপুরে টোনা ইউনিয়েনে তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই ফোন করে এই মামলার তদন্তে সাহায্য করার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসীরুল ইসলাম বলেন, এফবিআই ফোন করে যোগাযোগ করেছে। তারা নীলাদ্রি হত্যা মামলার তদন্তে সাহায্য করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। ডিএমপিও তাতে সাড়া দিয়েছে। এখন কীভাবে তাঁরা সাহায্য করতে পারেন, সে বিষয়ে যোগাযোগ করা হবে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। থানার পাশাপাশি র্যাব, ডিবি, সিআইডিও তদন্ত করছে।
পূর্ব গোড়ানের ওই ভবনের বাসিন্দারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, নীলাদ্রিকে হত্যার পর খুনিরা অন্তত পাঁচ মিনিট ভবনের নিচতলায় অবস্থান করে রক্ত ধুয়েমুছে তারপর চলে যায়। ভবন ও আশপাশের একাধিক লোক এ দৃশ্য দেখেছেন। খুনিরা অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়েছে কয়েকজনকে। এ জন্য ওদের ধরতে এগিয়ে যায়নি কেউ।
খুনিরা ভবন থেকে বের হয়ে বাঁ দিকে, নাকি ডান দিকে গেছে, সেটাও কেউ বলতে পারেননি। বাঁ দিকে গেলে বনশ্রী আর ডান দিকে গেলে গোড়ান বাজার। বাঁ দিকে কয়েক পা এগোলেই জামে মসজিদ। সেখানে তখন জুমার নামাজ চলছিল। নামাজ পরে বের হয়ে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অনেক লোকই ওই বাসায় ভিড় জমান। আশপাশের ভবনগুলোর কোনোটিতে সিসি ক্যামেরা না থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ফুটেজও পায়নি পুলিশ। নীলাদ্রির স্ত্রী আশা মনি গোড়ানের বাসা থেকে গতকাল পুলিশ পাহারায় এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান।
১৪টি কোপ: খুনি শনাক্ত করতে না পারলেও তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মূল হামলাকারী বাঁ হাতি। কারণ, প্রায় সব জখমের চিহ্ন শরীরের ডান দিকে। এর আগে গত ১২ মে সিলেটে খুন হওয়া ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশের আঘাতগুলোও ছিল শরীরের ডান দিকে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ মনে করেন, শরীরের ডান দিকে আঘাতের ক্ষেত্রে হামলাকারী বাঁ হাতি হওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। তবে এটা স্বতঃসিদ্ধ নয়।
ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হাবিবুজ্জামান চৌধুরী জানান, নীলাদ্রির শরীরে ১৪টি কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সব ব্লগার হত্যার ধরন একই রকম। নীলাদ্রিকে একাধিক লোক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। শরীরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি কোপের জখম রয়েছে। এর মধ্যে আটটি মারাত্মক জখম। তাঁর গলায় ও থুতনিতে মারাত্মক কয়েকটি জখম রয়েছে। এ ছাড়া ঘাড়ে, পীঠে, আঙুলে, তালুতে ও কনুইতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নীলাদ্রির সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করেছে, মাথা ও গলার ডান পাশ, ডান কানের নিচের অংশে তিন থেকে চার ইঞ্চি গভীর কয়েকটি কাটা জখম রয়েছে। ডান হাতেও চার ইঞ্চির জখম রয়েছে, বাঁ হাতে তিনটি ও ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কাটা পড়েছে।
একই ধরনের জখম: সিলেটে খুন হওয়া ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকেও একই রকমভাবে কোপানো হয়েছিল। তাঁর শরীরেও ১৪টি জখমের চিহ্ন ছিল বলে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সিলেটের আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. ইয়াসিন জানিয়েছিলেন। ইয়াসিন বলেন, অনন্তকে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাঁর মাথায়, ঘাড়ে ও পিঠে ১৪টি কোপের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া দুই হাতের কবজিতে কোপ দেওয়া হয়েছে। কুপিয়ে ডান হাতের তর্জনী বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মাথা ও ঘাড়ের সবগুলো কোপই ছিল ডানদিকে।
গত ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে খুন হওয়া ব্লগার ওয়াশিকুরের শরীরে ছয়টি, ২৬ ফেব্রুয়ারি খুন হওয়া লেখক অভিজিতের শরীরে পাঁচটি আর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিহত রাজীব হায়দারের শরীরে ছয়টি জখম পাওয়া যায়। আঘাতগুলো সব মাথা, ঘাড় ও মুখমণ্ডলে।
এদিকে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় খিলগাঁও থানায় জিডি করতে গিয়েছিলেন বলে তাঁর স্ত্রী আশা মনি শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন। কোনো থানার নাম উল্লেখ না করে জিডি না নেওয়ার বিষয়টি নিজের ফেসবুক পাতাতেও লিখেছিলেন নীলাদ্রি। তবে পুলিশ বলছে, কেউ থানায় এলে জিডি না নেওয়ার কোনো কারণ নেই। খিলগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজ ভুঁইয়া গতকাল বলেন, নীলাদ্রি কোন থানায় গিয়েছিলেন, সেটা তাঁর স্ট্যাটাসে উল্লেখ নেই। তারপরও তিনি খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাননি।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নীলাদ্রির শরীরে ১৪টি জখম রয়েছে। মূল হামলাকারী বাঁহাতি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে সিলেটে নিহত অনন্ত বিজয় দাশের ওপর হামলার ধরনও একই রকম। দুই হামলাকারী একই ব্যক্তি কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার রাতেই নীলাদ্রির স্ত্রী আশা মনি অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় হত্যা ও ল্যাপটপ-মুঠোফোন চুরির অভিযোগে মামলা করেছেন। গতকাল দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে কাকা বিমল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। মর্গ থেকে লাশ সরাসরি পিরোজপুরে টোনা ইউনিয়েনে তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই ফোন করে এই মামলার তদন্তে সাহায্য করার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসীরুল ইসলাম বলেন, এফবিআই ফোন করে যোগাযোগ করেছে। তারা নীলাদ্রি হত্যা মামলার তদন্তে সাহায্য করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। ডিএমপিও তাতে সাড়া দিয়েছে। এখন কীভাবে তাঁরা সাহায্য করতে পারেন, সে বিষয়ে যোগাযোগ করা হবে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। থানার পাশাপাশি র্যাব, ডিবি, সিআইডিও তদন্ত করছে।
পূর্ব গোড়ানের ওই ভবনের বাসিন্দারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, নীলাদ্রিকে হত্যার পর খুনিরা অন্তত পাঁচ মিনিট ভবনের নিচতলায় অবস্থান করে রক্ত ধুয়েমুছে তারপর চলে যায়। ভবন ও আশপাশের একাধিক লোক এ দৃশ্য দেখেছেন। খুনিরা অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়েছে কয়েকজনকে। এ জন্য ওদের ধরতে এগিয়ে যায়নি কেউ।
খুনিরা ভবন থেকে বের হয়ে বাঁ দিকে, নাকি ডান দিকে গেছে, সেটাও কেউ বলতে পারেননি। বাঁ দিকে গেলে বনশ্রী আর ডান দিকে গেলে গোড়ান বাজার। বাঁ দিকে কয়েক পা এগোলেই জামে মসজিদ। সেখানে তখন জুমার নামাজ চলছিল। নামাজ পরে বের হয়ে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অনেক লোকই ওই বাসায় ভিড় জমান। আশপাশের ভবনগুলোর কোনোটিতে সিসি ক্যামেরা না থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ফুটেজও পায়নি পুলিশ। নীলাদ্রির স্ত্রী আশা মনি গোড়ানের বাসা থেকে গতকাল পুলিশ পাহারায় এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান।
১৪টি কোপ: খুনি শনাক্ত করতে না পারলেও তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মূল হামলাকারী বাঁ হাতি। কারণ, প্রায় সব জখমের চিহ্ন শরীরের ডান দিকে। এর আগে গত ১২ মে সিলেটে খুন হওয়া ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশের আঘাতগুলোও ছিল শরীরের ডান দিকে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ মনে করেন, শরীরের ডান দিকে আঘাতের ক্ষেত্রে হামলাকারী বাঁ হাতি হওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। তবে এটা স্বতঃসিদ্ধ নয়।
ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হাবিবুজ্জামান চৌধুরী জানান, নীলাদ্রির শরীরে ১৪টি কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সব ব্লগার হত্যার ধরন একই রকম। নীলাদ্রিকে একাধিক লোক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। শরীরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি কোপের জখম রয়েছে। এর মধ্যে আটটি মারাত্মক জখম। তাঁর গলায় ও থুতনিতে মারাত্মক কয়েকটি জখম রয়েছে। এ ছাড়া ঘাড়ে, পীঠে, আঙুলে, তালুতে ও কনুইতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নীলাদ্রির সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করেছে, মাথা ও গলার ডান পাশ, ডান কানের নিচের অংশে তিন থেকে চার ইঞ্চি গভীর কয়েকটি কাটা জখম রয়েছে। ডান হাতেও চার ইঞ্চির জখম রয়েছে, বাঁ হাতে তিনটি ও ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কাটা পড়েছে।
একই ধরনের জখম: সিলেটে খুন হওয়া ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকেও একই রকমভাবে কোপানো হয়েছিল। তাঁর শরীরেও ১৪টি জখমের চিহ্ন ছিল বলে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সিলেটের আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. ইয়াসিন জানিয়েছিলেন। ইয়াসিন বলেন, অনন্তকে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাঁর মাথায়, ঘাড়ে ও পিঠে ১৪টি কোপের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া দুই হাতের কবজিতে কোপ দেওয়া হয়েছে। কুপিয়ে ডান হাতের তর্জনী বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মাথা ও ঘাড়ের সবগুলো কোপই ছিল ডানদিকে।
গত ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে খুন হওয়া ব্লগার ওয়াশিকুরের শরীরে ছয়টি, ২৬ ফেব্রুয়ারি খুন হওয়া লেখক অভিজিতের শরীরে পাঁচটি আর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিহত রাজীব হায়দারের শরীরে ছয়টি জখম পাওয়া যায়। আঘাতগুলো সব মাথা, ঘাড় ও মুখমণ্ডলে।
এদিকে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় খিলগাঁও থানায় জিডি করতে গিয়েছিলেন বলে তাঁর স্ত্রী আশা মনি শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন। কোনো থানার নাম উল্লেখ না করে জিডি না নেওয়ার বিষয়টি নিজের ফেসবুক পাতাতেও লিখেছিলেন নীলাদ্রি। তবে পুলিশ বলছে, কেউ থানায় এলে জিডি না নেওয়ার কোনো কারণ নেই। খিলগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজ ভুঁইয়া গতকাল বলেন, নীলাদ্রি কোন থানায় গিয়েছিলেন, সেটা তাঁর স্ট্যাটাসে উল্লেখ নেই। তারপরও তিনি খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাননি।
No comments