শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বাড়ৈ সিন্ডিকেট তদন্ত ও বিচার দাবি
দীর্ঘদিন
দাপটের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে ছিলেন তিনি। তার দাপট ছিল শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব
দপ্তরে। ছিল বিস্তৃত সিন্ডিকেট। তিনি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের
আলোচিত এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। তাকে এ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ায় এখন আতঙ্ক
বিরাজ করছে ওই সিন্ডিকেটে। এপিএস বদলির পর শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষাভবন,
এনসিটিবি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি), পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর
(ডিআইএ), নায়েম, সেসিপ ও টিকিউআই, ইএমআইএস সেলের শীর্ষ কর্মকর্তারাও রয়েছেন
বদলি আতঙ্কে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার এপিএস বাড়ৈকে
অব্যাহতি দেয়ার পর গতকাল তাকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক পদে
পদায়ন করা হয়েছে। উপ-কলেজ পরিদর্শক অদ্বৈত কুমার রায়কে উপ-পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক পদে পদায়ন করা হয়েছে। এপিএসকে শিক্ষা বোর্ডের পদায়নের ব্যাপারে
শিক্ষা সচিবের চরম আপত্তি থাকার পরও শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধে এমনটা করা
হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। দুর্নীতির দায়ে অব্যাহিত পাওয়া
এপিএসকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও তার গড়া সিন্ডিকেট ভাঙা ও দুর্নীতি করে
অর্জিত কোটি কোটি টাকা উদ্ধার, দুদকের মাধ্যমে তদন্ত ও তাকে গ্রেপ্তার
দাবি করেছেন শিক্ষকরা। গতকাল বিসিএস শিক্ষা সমিতি ও বেসরকারি কয়েকটি শিক্ষক
সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
এদিকে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে এতো অভিযোগ থাকার পরও দীর্ঘ দিন কেন তাকে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস করে রাখা হলো। অভিযোগের বিষয়ে কি শিক্ষামন্ত্রী কিছুই জানতেন না। আর এতো অভিযোগ থাকার ওপর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফের পদায়ন নিয়েও প্রশ্ন তোলেছেন অনেকে।
বাংলাদেশে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে শিক্ষক-কর্মচারীরা একজন ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। তাকে পদ থেকে শুধু অব্যাহতি নয়, অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করে তদন্তের দাবি জানান তিনি। গতকাল শিক্ষাভবনে গিয়ে দেখা যায়, সবার মুখে মুখে এপিএসের বদলি কাহিনী এবং তার সম্পর্কে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। ইইডি, ডিআইএ, এনসিটিবি সবার মাঝেই ছিল বদলি আতঙ্ক। নাম প্রকাশ না করার শর্তের শিক্ষাভবনের একজন ডিডি বলেন, এই শিক্ষাভবনে অনেক দক্ষ, মেধাবী কর্মকর্তারা থাকতে পারেনি কেবল এপিএসের সিন্ডিকেটের সদস্য না হওয়ায়। তিনি পুরো শিক্ষা পরিবারকে জিম্মি করে রাখেন। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত এপিএসকে সরিয়ে দিতে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বার বার তাগাদা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করা হয়নি।
সর্বশেষ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণীর অনলাইন ভর্তিতে তার সিন্ডিকেটের কারণে গোটা পদ্ধতিতে একটি বিতর্কের মুখে পড়ে। ভর্তির সংকট উত্তরণে ৪ঠা জুলাই রাজধানীর হেয়ার রোডে শিক্ষামন্ত্রী বাসভবনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রকাশ্যে এপিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন শিক্ষাসচিব। এরপর থেকে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার গুঞ্জন উঠে।
সোমবার এপিএস বাড়ৈকে বদলি করার পর তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেট পুরোটাই বদলি আতঙ্কে। শিক্ষাসচিব বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে আসলেই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিকে শিক্ষাভবন, শিক্ষা বোর্ড, নায়েম, এনসিটিবি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সেসিপ ও টিকিউআই, ইএমআইএস সেলের শীর্ষ কর্মকর্তারাও রয়েছে বদলি আতঙ্কে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন ঢাকা বোর্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। এ ছাড়াও সারা দেশে বাকি ৯টি বোর্ডের সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কলেজ, স্কুল পরিদর্শকদের মাঝে একই আতঙ্ক রয়েছে। বোর্ডগুলোর লোভনীয় এ পদগুলোর সবকটির নিয়ন্ত্রণ ছিল এপিএসের কব্জায়। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি সব পদগুলো এপিএসের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল। মাউশির বর্তমান মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বোর্ড থেকে আসার পরই তিনি এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন। যা এখনও আছে। তবে শিক্ষাসচিব এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার পক্ষে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা বোর্ডের বর্তমান সচিব শাহেদুল কবির, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ যখন স্কুল ও কলেজ পরিদর্শক ছিলেন তখনই তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচের মাধ্যমে নামে বেনামে স্কুল কলেজ অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ উঠে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এপিএসের সিন্ডিকেটের লোক বলে। ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানকে টাকার বিনিময়ে বোর্ডের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠে।
প্রায় এক বছর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে চলছে মাদরাসা বোর্ড। নিজের লোক হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় রেজিস্ট্রার ছায়েফ উল্লাকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসীন করে রাখা হয়েছে। তিনি এপিএসের পকেটের লোক বলে প্রচার আছে। এজন্য শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে বসান তিনি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগের কমতি নেই। এ ছাড়া মাদরাসা বোর্ডের সকল কেনাকাটা, টেন্ডারসহ সকল কাজে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষাভবন মূলত দুটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। একটি মহাপরিচালকের, অন্যটি এপিএসের সিন্ডিকেট। এরপর আছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব উন্নয়ন কাজ করে করে থাকে এ দপ্তর। এভানের চীফ ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে ৩৮ জোনের অধিকাংশ নির্বাহী প্রকৌশলী এপিএসের অনুগত ছিলেন বলে আলোচনা আছে। কোন ধরনের যোগ্যতা না থাকার পরও গত বছর ঢাকা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় মির্জা নজরুল ইসলামকে। তিনি আসার পর তার আপন ভাই ঢাকা জোনের পুরো টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেন। অভিযোগ উঠে ৫ থেকে ৭% কমিশন নিয়ে আগেই টেন্ডারের শিডিউল বিক্রি করে দেয়ার। এ ছাড়া কুমিল্লা, সাভার, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বড় জোনগুলোতে অযোগ্যদের বসিয়েছিলেন এপিএস বাড়ৈ। এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে বদলির আতঙ্ক এখন চরমে।
জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র গুরুত্বপূর্ণ পদেও এপিএস বাড়ৈর অনুগতরা ছিলেন।
সেসিপ ও টিকিউআইয়ের সকল ঠিকাদারী, গাড়ি কেনাকাটা, বিদেশভ্রমণসহ যাবতীয় বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতেন এপিএস। এ দুটি প্রকল্প থেকে বাৎসরিক মাসোহারা পেতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিতর্ক এখানে শেষ নয়, গত বছর বর্তমান সরকারের শেষ সময় তিনি ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রবিনন্দুতে। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের শেষ সময়ে ৫ বছরের জন্য ছুটির আবেদন করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানিতে চাকরি করবেন সেটি উল্লেখ করেন তার ছুটির আবেদনপত্রে। সেই আবেদন অনুযায়ী ৩ বছরের ছুটি অনুমোদন করেন শিক্ষামন্ত্রী। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে তার ছুটি বাতিল করা হয়। তখন তাকে ঢাকা বোর্ডে পদায়ন করা হলেও বসতেন মন্ত্রীর দপ্তরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়ৈ ১৯৯৫ সালে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সহকারী অধ্যাপক।
এপিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে এপিএসের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্যত্র পদায়ন করেছে। কি কারণে তাকে সরানো হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলতে পারবে। শিক্ষা বোর্ডে পদায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি একজন শিক্ষক। তাকে সেখানে পদায়নে বাধা কোথায়।
এদিকে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে এতো অভিযোগ থাকার পরও দীর্ঘ দিন কেন তাকে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস করে রাখা হলো। অভিযোগের বিষয়ে কি শিক্ষামন্ত্রী কিছুই জানতেন না। আর এতো অভিযোগ থাকার ওপর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফের পদায়ন নিয়েও প্রশ্ন তোলেছেন অনেকে।
বাংলাদেশে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে শিক্ষক-কর্মচারীরা একজন ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। তাকে পদ থেকে শুধু অব্যাহতি নয়, অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করে তদন্তের দাবি জানান তিনি। গতকাল শিক্ষাভবনে গিয়ে দেখা যায়, সবার মুখে মুখে এপিএসের বদলি কাহিনী এবং তার সম্পর্কে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। ইইডি, ডিআইএ, এনসিটিবি সবার মাঝেই ছিল বদলি আতঙ্ক। নাম প্রকাশ না করার শর্তের শিক্ষাভবনের একজন ডিডি বলেন, এই শিক্ষাভবনে অনেক দক্ষ, মেধাবী কর্মকর্তারা থাকতে পারেনি কেবল এপিএসের সিন্ডিকেটের সদস্য না হওয়ায়। তিনি পুরো শিক্ষা পরিবারকে জিম্মি করে রাখেন। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত এপিএসকে সরিয়ে দিতে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বার বার তাগাদা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করা হয়নি।
সর্বশেষ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণীর অনলাইন ভর্তিতে তার সিন্ডিকেটের কারণে গোটা পদ্ধতিতে একটি বিতর্কের মুখে পড়ে। ভর্তির সংকট উত্তরণে ৪ঠা জুলাই রাজধানীর হেয়ার রোডে শিক্ষামন্ত্রী বাসভবনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রকাশ্যে এপিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন শিক্ষাসচিব। এরপর থেকে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার গুঞ্জন উঠে।
সোমবার এপিএস বাড়ৈকে বদলি করার পর তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেট পুরোটাই বদলি আতঙ্কে। শিক্ষাসচিব বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে আসলেই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিকে শিক্ষাভবন, শিক্ষা বোর্ড, নায়েম, এনসিটিবি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সেসিপ ও টিকিউআই, ইএমআইএস সেলের শীর্ষ কর্মকর্তারাও রয়েছে বদলি আতঙ্কে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন ঢাকা বোর্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। এ ছাড়াও সারা দেশে বাকি ৯টি বোর্ডের সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কলেজ, স্কুল পরিদর্শকদের মাঝে একই আতঙ্ক রয়েছে। বোর্ডগুলোর লোভনীয় এ পদগুলোর সবকটির নিয়ন্ত্রণ ছিল এপিএসের কব্জায়। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি সব পদগুলো এপিএসের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল। মাউশির বর্তমান মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বোর্ড থেকে আসার পরই তিনি এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন। যা এখনও আছে। তবে শিক্ষাসচিব এ সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার পক্ষে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা বোর্ডের বর্তমান সচিব শাহেদুল কবির, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ যখন স্কুল ও কলেজ পরিদর্শক ছিলেন তখনই তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচের মাধ্যমে নামে বেনামে স্কুল কলেজ অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ উঠে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এপিএসের সিন্ডিকেটের লোক বলে। ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানকে টাকার বিনিময়ে বোর্ডের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠে।
প্রায় এক বছর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে চলছে মাদরাসা বোর্ড। নিজের লোক হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় রেজিস্ট্রার ছায়েফ উল্লাকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসীন করে রাখা হয়েছে। তিনি এপিএসের পকেটের লোক বলে প্রচার আছে। এজন্য শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে বসান তিনি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগের কমতি নেই। এ ছাড়া মাদরাসা বোর্ডের সকল কেনাকাটা, টেন্ডারসহ সকল কাজে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষাভবন মূলত দুটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। একটি মহাপরিচালকের, অন্যটি এপিএসের সিন্ডিকেট। এরপর আছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব উন্নয়ন কাজ করে করে থাকে এ দপ্তর। এভানের চীফ ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে ৩৮ জোনের অধিকাংশ নির্বাহী প্রকৌশলী এপিএসের অনুগত ছিলেন বলে আলোচনা আছে। কোন ধরনের যোগ্যতা না থাকার পরও গত বছর ঢাকা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় মির্জা নজরুল ইসলামকে। তিনি আসার পর তার আপন ভাই ঢাকা জোনের পুরো টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেন। অভিযোগ উঠে ৫ থেকে ৭% কমিশন নিয়ে আগেই টেন্ডারের শিডিউল বিক্রি করে দেয়ার। এ ছাড়া কুমিল্লা, সাভার, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বড় জোনগুলোতে অযোগ্যদের বসিয়েছিলেন এপিএস বাড়ৈ। এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে বদলির আতঙ্ক এখন চরমে।
জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র গুরুত্বপূর্ণ পদেও এপিএস বাড়ৈর অনুগতরা ছিলেন।
সেসিপ ও টিকিউআইয়ের সকল ঠিকাদারী, গাড়ি কেনাকাটা, বিদেশভ্রমণসহ যাবতীয় বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতেন এপিএস। এ দুটি প্রকল্প থেকে বাৎসরিক মাসোহারা পেতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিতর্ক এখানে শেষ নয়, গত বছর বর্তমান সরকারের শেষ সময় তিনি ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রবিনন্দুতে। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের শেষ সময়ে ৫ বছরের জন্য ছুটির আবেদন করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানিতে চাকরি করবেন সেটি উল্লেখ করেন তার ছুটির আবেদনপত্রে। সেই আবেদন অনুযায়ী ৩ বছরের ছুটি অনুমোদন করেন শিক্ষামন্ত্রী। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে তার ছুটি বাতিল করা হয়। তখন তাকে ঢাকা বোর্ডে পদায়ন করা হলেও বসতেন মন্ত্রীর দপ্তরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়ৈ ১৯৯৫ সালে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সহকারী অধ্যাপক।
এপিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে এপিএসের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্যত্র পদায়ন করেছে। কি কারণে তাকে সরানো হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলতে পারবে। শিক্ষা বোর্ডে পদায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি একজন শিক্ষক। তাকে সেখানে পদায়নে বাধা কোথায়।
No comments