লাশ গুমের চেষ্টার বর্ণনা দিলেন প্রধান আসামি মুহিত
সিলেটের
শিশু শেখ মো. সামিউল আলম রাজনকে (১৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মুহিত
আলম (৩৬) গতকাল বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তিনি লাশ গুম করার চেষ্টার বর্ণনা দেন।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ জানান, গতকাল বিকেলে সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে (তৃতীয়) জবানবন্দি দেন মুহিত। বিচারক মো. আনোয়ারুল হক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জবানবন্দি গ্রহণ চলে। শেষে আদালত থেকে মুহিতকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, জবানবন্দিতে মুহিত লাশ গুম করার চেষ্টার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লাশটি ফেলতে গিয়ে ধরা পড়েন। নির্যাতনের কারণেই সামিউলের মৃত্যু হয়েছে বলে মুহিত জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। তবে নির্যাতনকালে তিনি সেখানে ছিলেন না বলে দাবি করেন। মারা যাওয়ার পর কামরুলসহ তাঁর ভাইদের কথায় মুহিত কয়েকজনকে নিয়ে মাইক্রোবাসযোগে লাশটি ফেলতে (গুম) গিয়ে ধরা পড়েন বলে জানান।
এর আগে গত সোমবার মামলার অন্যতম আসামি চৌকিদার ময়না মিয়া এবং গত মঙ্গলবার নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ও নির্যাতনে সহায়তাকারী দুলাল আহমদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এক আসামিকে পুলিশে সোপর্দ: সামিউলকে নির্যাতন ও হত্যা মামলায় আরও এক আসামিকে গতকাল রাতে পুলিশে দিয়েছেন পরিবারসহ এলাকাবাসী। গতকাল রাত ১০টার দিকে সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় গিয়ে ওই আসামিকে পুলিশে দেওয়া হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, বাদল আহমদ (১৯) নামের ওই যুবক সামিউলকে নির্যাতনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জবানবন্দিতে বাদলের নাম আসায় বাদলের বাবা সুলতান আহমদ এলাকাবাসীকে নিয়ে ছেলেকে পুলিশে দেন। বাদলকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে সামিউল হত্যায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১তে।
রাজনের বাড়িতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: রাজন হত্যা মামলার বিচার দ্রুত বিচার আইনেই হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেয়ালি গ্রামে রাজনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মন্ত্রী বাড়ির সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতায় এসব কথা জানান।
গতকাল বেলা পৌনে তিনটার দিকে রাজনের বাড়িতে পৌঁছেই মন্ত্রী তার মা-বাবার সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজনের পরিবারকে এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। পরে বাড়ির পাশে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুত বিচার আইনেই বিচার সম্পন্ন করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে সিলেট থেকে প্রস্তাব পাঠানোমাত্র অনুমোদন করা হবে।’
সৌদি আরবের জেদ্দায় গিয়ে ধরা পড়া মামলার অন্যতম আসামি কামরুলকে দেশ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আসামি কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কবে আনা সম্ভব হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। তবে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আশা করছি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে কামরুলকে বাংলাদেশে আনা সম্ভব হবে।’
আসামিকে দেশ ছেড়ে পালানো ও ঘটনার প্রথম দিকে পুলিশের গাফিলতি বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধান আসামি কীভাবে দেশ ছেড়ে চলে গেল, তার সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকে, এর জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, জড়িত প্রমাণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি।’
এলাকাবাসী ও রাজনের পরিবারের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দোষী ব্যক্তিদের অপরাধ অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
সমাবেশে মন্ত্রী ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ঘটনাস্থলে মানববন্ধন: শিশু রাজনকে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্টেশনের আশপাশ এলাকায় প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দুপুরে কুমারগাঁওয়ের অদূরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ‘প্রবাসী দাদুভাই ছইল মিয়া ফাউন্ডেশন’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ৮ জুলাই খুঁটির সঙ্গে রাজনকে (১৪) বেঁধে রোলার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনকারীরাই তাকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। তার লাশ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েন মুহিত। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
প্রথম ভিডিওচিত্রের সূত্র ধরে ১২ জুলাই প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘নির্মম, পৈশাচিক!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ জানান, গতকাল বিকেলে সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে (তৃতীয়) জবানবন্দি দেন মুহিত। বিচারক মো. আনোয়ারুল হক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জবানবন্দি গ্রহণ চলে। শেষে আদালত থেকে মুহিতকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, জবানবন্দিতে মুহিত লাশ গুম করার চেষ্টার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লাশটি ফেলতে গিয়ে ধরা পড়েন। নির্যাতনের কারণেই সামিউলের মৃত্যু হয়েছে বলে মুহিত জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। তবে নির্যাতনকালে তিনি সেখানে ছিলেন না বলে দাবি করেন। মারা যাওয়ার পর কামরুলসহ তাঁর ভাইদের কথায় মুহিত কয়েকজনকে নিয়ে মাইক্রোবাসযোগে লাশটি ফেলতে (গুম) গিয়ে ধরা পড়েন বলে জানান।
এর আগে গত সোমবার মামলার অন্যতম আসামি চৌকিদার ময়না মিয়া এবং গত মঙ্গলবার নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ও নির্যাতনে সহায়তাকারী দুলাল আহমদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এক আসামিকে পুলিশে সোপর্দ: সামিউলকে নির্যাতন ও হত্যা মামলায় আরও এক আসামিকে গতকাল রাতে পুলিশে দিয়েছেন পরিবারসহ এলাকাবাসী। গতকাল রাত ১০টার দিকে সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় গিয়ে ওই আসামিকে পুলিশে দেওয়া হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, বাদল আহমদ (১৯) নামের ওই যুবক সামিউলকে নির্যাতনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জবানবন্দিতে বাদলের নাম আসায় বাদলের বাবা সুলতান আহমদ এলাকাবাসীকে নিয়ে ছেলেকে পুলিশে দেন। বাদলকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে সামিউল হত্যায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১তে।
রাজনের বাড়িতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: রাজন হত্যা মামলার বিচার দ্রুত বিচার আইনেই হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেয়ালি গ্রামে রাজনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মন্ত্রী বাড়ির সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতায় এসব কথা জানান।
গতকাল বেলা পৌনে তিনটার দিকে রাজনের বাড়িতে পৌঁছেই মন্ত্রী তার মা-বাবার সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজনের পরিবারকে এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। পরে বাড়ির পাশে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুত বিচার আইনেই বিচার সম্পন্ন করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে সিলেট থেকে প্রস্তাব পাঠানোমাত্র অনুমোদন করা হবে।’
সৌদি আরবের জেদ্দায় গিয়ে ধরা পড়া মামলার অন্যতম আসামি কামরুলকে দেশ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আসামি কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কবে আনা সম্ভব হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। তবে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আশা করছি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে কামরুলকে বাংলাদেশে আনা সম্ভব হবে।’
আসামিকে দেশ ছেড়ে পালানো ও ঘটনার প্রথম দিকে পুলিশের গাফিলতি বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধান আসামি কীভাবে দেশ ছেড়ে চলে গেল, তার সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকে, এর জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, জড়িত প্রমাণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি।’
এলাকাবাসী ও রাজনের পরিবারের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দোষী ব্যক্তিদের অপরাধ অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
সমাবেশে মন্ত্রী ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ঘটনাস্থলে মানববন্ধন: শিশু রাজনকে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্টেশনের আশপাশ এলাকায় প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দুপুরে কুমারগাঁওয়ের অদূরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ‘প্রবাসী দাদুভাই ছইল মিয়া ফাউন্ডেশন’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ৮ জুলাই খুঁটির সঙ্গে রাজনকে (১৪) বেঁধে রোলার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনকারীরাই তাকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। তার লাশ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েন মুহিত। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
প্রথম ভিডিওচিত্রের সূত্র ধরে ১২ জুলাই প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘নির্মম, পৈশাচিক!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
No comments