সামিউল হত্যাঃ পুলিশের গাফিলতিতেই পালিয়ে যায় আসামিরা
সিলেটের
শিশু শেখ মো. সামিউল আলম রাজন (১৪) হত্যা মামলার আসামিরা পুলিশের
গাফিলতির কারণেই পালিয়ে গিয়েছিল। পরে একে একে তারা ধরা পড়ে। পুলিশের করা
তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই তদন্ত প্রতিবেদন সিলেট
মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি হায়দার আলী ওরফে আলী গতকাল নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আরেক আসামি বাদল আহমদকে (১৯) পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ এম রুকনউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি পেয়েছে। পুলিশের এ ভূমিকার পেছনেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল বলে তদন্ত কমিটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে।
রাজন হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম ঘটনার এক দিন পরই সৌদি আরবের জেদ্দায় পালিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাকে আটক করে পুলিশে দেন। ঘটনার পরপর মামলার অন্য আসামিরাও গা ঢাকা দেয়।
শুরু থেকেই রাজনের বাবা অভিযোগ করছিলেন, পুলিশ আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ১৪ জুলাই পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই দিন জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। ওই কমিটির তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে আরও পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়। প্রতিবেদন দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার।
তদন্ত কমিটির প্রধান এ এম রুকনউদ্দিন গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই সরাসরি কিছু বলছেন না।
আরও একজনের স্বীকারোক্তি: সিলেট মহানগর হাকিম মো. সাহেদুল করিম গতকাল বিকেলে আসামি আলী হায়দারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বেলা তিনটা থেকে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র আলীর জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানায়, রাজনকে খুঁটিতে বাঁধার সময় ঘটনাস্থলে ছিল না আলী হায়দার। চোর আটকের কথা বলে ছোট ভাই কামরুল তাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয়। আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় কামরুল, ময়নাসহ কয়েকজন মিলে রাজনকে বেঁধে পেটাচ্ছে। রাজনকে দেখিয়ে কামরুল বলে, এটা চোর। এরপর আলীও মারধরে অংশ নেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, জবানবন্দিতে আলী ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছে।
এ নিয়ে রাজন হত্যাকাণ্ডে আলীসহ মোট পাঁচজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিল। আর গ্রেপ্তার হয়েছ মোট ১১ জন।
পাঁচ দিনের রিমান্ডে বাদল: মামলার তদন্ত সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, গতকাল সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বাদল আহমদকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত বাদলের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজনকে নির্যাতনের সময় বাদল (১৯) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। অন্য আসামিদের জবানবন্দিতে বাদলের নাম আসার বিষয়টি জানার পর বাদলের বাবা সুলতান আহমদ এলাকাবাসীকে নিয়ে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে মহানগরের জালালাবাদ থানায় গিয়ে ছেলেকে পুলিশে দেন।
এদিকে সিলেট নগরের তেমুখী এলাকায় আজ শুক্রবার মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে এলাকাবাসী। আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তাকারীদের বিচারের দাবিতে ওই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
সিলেট শহরের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ৮ জুলাই খুঁটির সঙ্গে রাজনকে বেঁধে রোলার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনকারীরাই রাজনকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। লাশ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে প্রধান আসামি মুহিত আলম। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
প্রথম ভিডিওচিত্রের সূত্র ধরে ১২ জুলাই প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘নির্মম, পৈশাচিক!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এদিকে রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি হায়দার আলী ওরফে আলী গতকাল নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আরেক আসামি বাদল আহমদকে (১৯) পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ এম রুকনউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি পেয়েছে। পুলিশের এ ভূমিকার পেছনেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল বলে তদন্ত কমিটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে।
রাজন হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম ঘটনার এক দিন পরই সৌদি আরবের জেদ্দায় পালিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাকে আটক করে পুলিশে দেন। ঘটনার পরপর মামলার অন্য আসামিরাও গা ঢাকা দেয়।
শুরু থেকেই রাজনের বাবা অভিযোগ করছিলেন, পুলিশ আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ১৪ জুলাই পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই দিন জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। ওই কমিটির তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে আরও পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়। প্রতিবেদন দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার।
তদন্ত কমিটির প্রধান এ এম রুকনউদ্দিন গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই সরাসরি কিছু বলছেন না।
আরও একজনের স্বীকারোক্তি: সিলেট মহানগর হাকিম মো. সাহেদুল করিম গতকাল বিকেলে আসামি আলী হায়দারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বেলা তিনটা থেকে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র আলীর জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানায়, রাজনকে খুঁটিতে বাঁধার সময় ঘটনাস্থলে ছিল না আলী হায়দার। চোর আটকের কথা বলে ছোট ভাই কামরুল তাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয়। আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় কামরুল, ময়নাসহ কয়েকজন মিলে রাজনকে বেঁধে পেটাচ্ছে। রাজনকে দেখিয়ে কামরুল বলে, এটা চোর। এরপর আলীও মারধরে অংশ নেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, জবানবন্দিতে আলী ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছে।
এ নিয়ে রাজন হত্যাকাণ্ডে আলীসহ মোট পাঁচজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিল। আর গ্রেপ্তার হয়েছ মোট ১১ জন।
পাঁচ দিনের রিমান্ডে বাদল: মামলার তদন্ত সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, গতকাল সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বাদল আহমদকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত বাদলের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজনকে নির্যাতনের সময় বাদল (১৯) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। অন্য আসামিদের জবানবন্দিতে বাদলের নাম আসার বিষয়টি জানার পর বাদলের বাবা সুলতান আহমদ এলাকাবাসীকে নিয়ে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে মহানগরের জালালাবাদ থানায় গিয়ে ছেলেকে পুলিশে দেন।
এদিকে সিলেট নগরের তেমুখী এলাকায় আজ শুক্রবার মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে এলাকাবাসী। আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তাকারীদের বিচারের দাবিতে ওই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
সিলেট শহরের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ৮ জুলাই খুঁটির সঙ্গে রাজনকে বেঁধে রোলার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনকারীরাই রাজনকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। লাশ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে প্রধান আসামি মুহিত আলম। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
প্রথম ভিডিওচিত্রের সূত্র ধরে ১২ জুলাই প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘নির্মম, পৈশাচিক!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
No comments