সুন্দরবন রক্ষায় বাঘ বাঁচাতে হবে -প্রথম আলোর গোলটেবিল বৈঠক
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে গতকাল প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকেরা -ছবি: প্রথম আলো |
বেঙ্গল
টাইগার বা বাঘ রক্ষায় স্থানীয় এবং জাতীয় উদ্যোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের
সব বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে একমাত্র সুন্দরবনে টিকে থাকা এই বিপন্ন প্রাণীটিকে
রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ২৯ জুলাই ‘বাঘ বাঁচলে বাঁচবে বন, রক্ষা পাবে সুন্দরবন’—এই বিষয় সামনে রেখে বাঘ দিবস পালিত হবে। এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনে সহযোগিতা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ, বিশ্বব্যাংক, বন সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও এক্সপ্রেশন।
বৈঠকে বক্তারা বাঘ রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র ইউনিট গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। বাঘবিষয়ক বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এই সংস্থায় যুক্ত করার সুপারিশ করেন।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯০০ সালে পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লাখ। বর্তমানে তা চার হাজারে নেমে এসেছে। কত দ্রুত হারে বাঘের সংখ্যা কমছে, তা শুনলে শঙ্কিত হতে হয়। তিনি বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, অন্য বন্য প্রাণীর চেয়ে বাংলাদেশে বাঘের গুরুত্ব আলাদা। একসময় এই ঢাকা শহরেও বাঘ বিচরণ করত। দেশের সবখান থেকে বিলুপ্ত হয়ে এটি এখন শুধু সুন্দরবনেই আছে। এই বনটিকে রক্ষা করতে পারলে বাঘ বাঁচবে। আর বাঘ থাকলে সুন্দরবন টিকে থাকবে।
প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার হলেও আমাদের সেখানে জনবল আছে মাত্র ৫০০ জন। যথেষ্ট পরিমাণে বন ফাঁড়ি থাকলেও বন টহলের জন্য পর্যাপ্ত নৌযান এবং ব্যবস্থাপনা খরচ নেই বন বিভাগের।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ও বন্য প্রাণীবিষয়ক সংস্থা ওয়াইল্ড টিমের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চীনসহ বেশ কিছু দেশে বাঘের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। সেখানে প্রচলিত চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহৃত হয়। তাই বাঘ রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরে জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইনাম আল হক দেশে বাঘের সংখ্যার ঐতিহাসিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমি জীবনে মোট বহুবার সুন্দরবনে গেছি, কিন্তু কখনো বাঘ দেখিনি। ব্রিটিশ সরকার বাঘ মারার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করলে ১৮০৭ সালে ২৭০টি বাঘ মারার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯০৭ সালে মারা হয় ১৩টি বাঘ। সুন্দরবনে ডাকাতেরা আগের চেয়ে সংগঠিতভাবে বাঘ মারছে। এই ডাকাতদের দমন করতে না পারলে বাঘ রক্ষা করা যাবে না।’
আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ সুন্দরবনের ওপরে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য। ওই দরিদ্র মানুষেরা বনে গোলপাতা কাটতে গিয়ে অন্যান্য দামী বস্তু কেটে নিয়ে আসে। অনেকে ডাকাতি ও বাঘ মেরে ফেলার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফলে বাঘ রক্ষা করতে হলে ওই বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুন্দরবনে এবং এর চারপাশে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে বাঘের বসতি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঘ আছে এমন দেশগুলো এই প্রাণীটি রক্ষায় এখন সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছে। তাই আমাদেরও বাঘ রক্ষাকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুকিত মজুমদার দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বাঘ ও বন্য প্রাণীর প্রতি সচেতনতামূলক চেতনা থাকা উচিত বলে মত দেন। তিনি বলেন, পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি শেখানো হয় গাছের পাতা ও ডাল ভাঙা যাবে না, প্রাণী মারা যাবে না, তাহলে ওই প্রাণীরা রক্ষা পাবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল হাসান খান বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সবচেয়ে বড় শত্রু চোরা শিকারি। চট্টগ্রাম ও সিলেটে এখনো গুটি কয়েক বাঘ রয়েছে—এই তথ্য উল্লেখ করে মনিরুল বলেন, বাঘ রক্ষা করতে হলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে অবৈধ নৌপথও বন্ধ করতে হবে। এই প্রথম দেশে বাঘের একটি বিজ্ঞানসম্মত শুমারি হয়েছে এই তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই শুমারির মাধ্যমে বাঘের যে সংখ্যা বেরিয়ে আসবে তা মেনে আমাদের বাঘ রক্ষায় কাজ করতে হবে।’
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বনসংরক্ষক তপন কুমার দে গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে বাঘের একটি চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাঘ সুন্দরবনের প্রহরী হিসেবে কাজ করছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে কয়েক বছর ধরে মানুষ ও বাঘের সংঘাত কমে এসেছে।
বন বিভাগের উপপ্রধান সংরক্ষক আকবর হোসেন বলেন, সুন্দরবনের তিন দিকেই জনবসতি। ১৭টি উপজেলার চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ সুন্দরবনের ওপরে নির্ভরশীল। সুন্দরবনের চারপাশের এই মানুষদের সচেতন করার মধ্য দিয়ে সুন্দরবন রক্ষায় কাজ করতে হবে।
টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরে বলেন, সুন্দরবন ও বাঘ রক্ষায় গণমাধ্যম সব সময়ই সচেতন ভূমিকা পালন করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শায়ের মাহমুদ ইবনে আলম বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় অনেক ভালো ভালো প্রকল্প হয়। কিন্তু প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে ওই কাজের আর ধারাবাহিকতা থাকে না। তাই বাঘ রক্ষায় ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বৈঠকের সঞ্চালক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বাঘ রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ২৯ জুলাই ‘বাঘ বাঁচলে বাঁচবে বন, রক্ষা পাবে সুন্দরবন’—এই বিষয় সামনে রেখে বাঘ দিবস পালিত হবে। এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনে সহযোগিতা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ, বিশ্বব্যাংক, বন সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও এক্সপ্রেশন।
বৈঠকে বক্তারা বাঘ রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র ইউনিট গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। বাঘবিষয়ক বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এই সংস্থায় যুক্ত করার সুপারিশ করেন।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯০০ সালে পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লাখ। বর্তমানে তা চার হাজারে নেমে এসেছে। কত দ্রুত হারে বাঘের সংখ্যা কমছে, তা শুনলে শঙ্কিত হতে হয়। তিনি বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, অন্য বন্য প্রাণীর চেয়ে বাংলাদেশে বাঘের গুরুত্ব আলাদা। একসময় এই ঢাকা শহরেও বাঘ বিচরণ করত। দেশের সবখান থেকে বিলুপ্ত হয়ে এটি এখন শুধু সুন্দরবনেই আছে। এই বনটিকে রক্ষা করতে পারলে বাঘ বাঁচবে। আর বাঘ থাকলে সুন্দরবন টিকে থাকবে।
প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার হলেও আমাদের সেখানে জনবল আছে মাত্র ৫০০ জন। যথেষ্ট পরিমাণে বন ফাঁড়ি থাকলেও বন টহলের জন্য পর্যাপ্ত নৌযান এবং ব্যবস্থাপনা খরচ নেই বন বিভাগের।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ও বন্য প্রাণীবিষয়ক সংস্থা ওয়াইল্ড টিমের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চীনসহ বেশ কিছু দেশে বাঘের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। সেখানে প্রচলিত চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহৃত হয়। তাই বাঘ রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরে জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইনাম আল হক দেশে বাঘের সংখ্যার ঐতিহাসিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমি জীবনে মোট বহুবার সুন্দরবনে গেছি, কিন্তু কখনো বাঘ দেখিনি। ব্রিটিশ সরকার বাঘ মারার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করলে ১৮০৭ সালে ২৭০টি বাঘ মারার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯০৭ সালে মারা হয় ১৩টি বাঘ। সুন্দরবনে ডাকাতেরা আগের চেয়ে সংগঠিতভাবে বাঘ মারছে। এই ডাকাতদের দমন করতে না পারলে বাঘ রক্ষা করা যাবে না।’
আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ সুন্দরবনের ওপরে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য। ওই দরিদ্র মানুষেরা বনে গোলপাতা কাটতে গিয়ে অন্যান্য দামী বস্তু কেটে নিয়ে আসে। অনেকে ডাকাতি ও বাঘ মেরে ফেলার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফলে বাঘ রক্ষা করতে হলে ওই বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুন্দরবনে এবং এর চারপাশে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে বাঘের বসতি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঘ আছে এমন দেশগুলো এই প্রাণীটি রক্ষায় এখন সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছে। তাই আমাদেরও বাঘ রক্ষাকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুকিত মজুমদার দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বাঘ ও বন্য প্রাণীর প্রতি সচেতনতামূলক চেতনা থাকা উচিত বলে মত দেন। তিনি বলেন, পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি শেখানো হয় গাছের পাতা ও ডাল ভাঙা যাবে না, প্রাণী মারা যাবে না, তাহলে ওই প্রাণীরা রক্ষা পাবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল হাসান খান বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সবচেয়ে বড় শত্রু চোরা শিকারি। চট্টগ্রাম ও সিলেটে এখনো গুটি কয়েক বাঘ রয়েছে—এই তথ্য উল্লেখ করে মনিরুল বলেন, বাঘ রক্ষা করতে হলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে অবৈধ নৌপথও বন্ধ করতে হবে। এই প্রথম দেশে বাঘের একটি বিজ্ঞানসম্মত শুমারি হয়েছে এই তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই শুমারির মাধ্যমে বাঘের যে সংখ্যা বেরিয়ে আসবে তা মেনে আমাদের বাঘ রক্ষায় কাজ করতে হবে।’
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বনসংরক্ষক তপন কুমার দে গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে বাঘের একটি চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাঘ সুন্দরবনের প্রহরী হিসেবে কাজ করছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে কয়েক বছর ধরে মানুষ ও বাঘের সংঘাত কমে এসেছে।
বন বিভাগের উপপ্রধান সংরক্ষক আকবর হোসেন বলেন, সুন্দরবনের তিন দিকেই জনবসতি। ১৭টি উপজেলার চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ সুন্দরবনের ওপরে নির্ভরশীল। সুন্দরবনের চারপাশের এই মানুষদের সচেতন করার মধ্য দিয়ে সুন্দরবন রক্ষায় কাজ করতে হবে।
টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরে বলেন, সুন্দরবন ও বাঘ রক্ষায় গণমাধ্যম সব সময়ই সচেতন ভূমিকা পালন করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শায়ের মাহমুদ ইবনে আলম বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় অনেক ভালো ভালো প্রকল্প হয়। কিন্তু প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে ওই কাজের আর ধারাবাহিকতা থাকে না। তাই বাঘ রক্ষায় ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বৈঠকের সঞ্চালক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বাঘ রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
No comments