তবু বজ্রপাত দুর্যোগ নয় by এম জসীম উদ্দীন
গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসে ১২০ জন প্রাণ হারায়। এপ্রিলে ৫৫ জন ও জুনে ৭৬ জনের মৃত্যু হয় দেশে বজ্রপাতে প্রাণহানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। দুর্যোগ ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাজ পড়ে ২০১৩ সালে ২৮৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালে মারা যায় ২০১ জন। ২০১১ সালে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ছিল আরও কম। ১৭৯ জন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দুর্যোগ ফোরাম ওই প্রতিবেদন তৈরি করে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ঘেঁটে দেখা যায়, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসে ১২০ জন প্রাণ হারায়। এপ্রিলে ৫৫ জন ও জুনে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাতকে এখনো সরকারিভাবে দুর্যোগের তালিকাভুক্ত করা হয়নি। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুরো বৈশিষ্ট্য নিয়ে বজ্রপাতের ঘটনা ক্রমে বাড়ছে।
সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রে (এসএমআরসি) বজ্রপাতের ওপর ২০০৯ সাল থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ‘সার্ক স্টর্ম প্রোগ্রাম’ নামে একটি প্রকল্পের অধীনে এ গবেষণা হচ্ছে। এই কেন্দ্রের গবেষকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বজ্রপাতের সংখ্যা ও প্রাণহানির দিক দিয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত অন্য দেশের তুলনায় বজ্রপাতে এখানে মৃত্যুর হার বেশি।
সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের গবেষকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে মারা যায় ৫০০ থেকে ৮০০ লোক। তবে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইটনিং সেফটি ইনস্টিটিউটের’ ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর সারা বিশ্বে বজ্রপাতে যত মানুষের মৃত্যু ঘটে, তার এক-চতুর্থাংশ ঘটে বাংলাদেশে।
এসএমআরসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪০টি বজ্রপাত হয়। এতে বছরে মাত্র ১৫০ বা তার কিছু বেশি লোকের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে ছাপা হয়। আসলে এ সংখ্যা ৫০০ থেকে ৮০০ হবে।
এসএমআরসির বাংলাদেশ কার্যালয়ের বিজ্ঞানী আবদুল মান্নান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত ও এতে মৃত্যু—দুটোই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ জন্য বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত হওয়া জরুরি। কারণ, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প আসে। এদিকে উত্তর দিক থেকে উষ্ণতা নিয়ে জলীয় বাষ্প আসায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও বাংলাদেশে বজ্রপাতের প্রবণতা বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। এর মূল কারণ হচ্ছে, তীব্রতর বজ্রমেঘ তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে। এগুলো পূর্ণতা পায় বাংলাদেশে। এভাবে বাংলাদেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ডিন আ ক ম মোস্তফা জামান বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বজ্রপাতের ঘটনা। এতে বাংলাদেশে প্রতিবছর বহু লোকের প্রাণহানি ঘটছে। এটা এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সব বৈশিষ্ট্য নিয়েই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাই দুর্যোগের তালিকায় এটির স্থান পাওয়া প্রয়োজন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও অধিদপ্তরের দুর্যোগ প্রশমন বিভাগের উপপরিচালক আজিজুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে প্রাণহানি বাড়ছে। তাই এটিকে দুর্যোগের আওতাভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে।
একই বিভাগের সাবেক উপপরিচালক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আরেক উপসচিব আবদুর রব প্রথম আলোকে বলেন, বজ্রপাত দুর্যোগের তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এটা তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। কারণ, বজ্রপাতে নিহত ও আহত দুস্থ ব্যক্তিরা ১০ থেকে ২৫ হাজার এবং গুরুতর আহত ব্যক্তি ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা সহায়তা পায়। এই সহায়তা খুবই কম।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দুর্যোগ ফোরাম ওই প্রতিবেদন তৈরি করে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ঘেঁটে দেখা যায়, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসে ১২০ জন প্রাণ হারায়। এপ্রিলে ৫৫ জন ও জুনে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাতকে এখনো সরকারিভাবে দুর্যোগের তালিকাভুক্ত করা হয়নি। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুরো বৈশিষ্ট্য নিয়ে বজ্রপাতের ঘটনা ক্রমে বাড়ছে।
সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রে (এসএমআরসি) বজ্রপাতের ওপর ২০০৯ সাল থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ‘সার্ক স্টর্ম প্রোগ্রাম’ নামে একটি প্রকল্পের অধীনে এ গবেষণা হচ্ছে। এই কেন্দ্রের গবেষকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বজ্রপাতের সংখ্যা ও প্রাণহানির দিক দিয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত অন্য দেশের তুলনায় বজ্রপাতে এখানে মৃত্যুর হার বেশি।
সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের গবেষকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে মারা যায় ৫০০ থেকে ৮০০ লোক। তবে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইটনিং সেফটি ইনস্টিটিউটের’ ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর সারা বিশ্বে বজ্রপাতে যত মানুষের মৃত্যু ঘটে, তার এক-চতুর্থাংশ ঘটে বাংলাদেশে।
এসএমআরসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪০টি বজ্রপাত হয়। এতে বছরে মাত্র ১৫০ বা তার কিছু বেশি লোকের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে ছাপা হয়। আসলে এ সংখ্যা ৫০০ থেকে ৮০০ হবে।
এসএমআরসির বাংলাদেশ কার্যালয়ের বিজ্ঞানী আবদুল মান্নান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত ও এতে মৃত্যু—দুটোই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ জন্য বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত হওয়া জরুরি। কারণ, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প আসে। এদিকে উত্তর দিক থেকে উষ্ণতা নিয়ে জলীয় বাষ্প আসায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও বাংলাদেশে বজ্রপাতের প্রবণতা বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। এর মূল কারণ হচ্ছে, তীব্রতর বজ্রমেঘ তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে। এগুলো পূর্ণতা পায় বাংলাদেশে। এভাবে বাংলাদেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ডিন আ ক ম মোস্তফা জামান বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বজ্রপাতের ঘটনা। এতে বাংলাদেশে প্রতিবছর বহু লোকের প্রাণহানি ঘটছে। এটা এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সব বৈশিষ্ট্য নিয়েই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাই দুর্যোগের তালিকায় এটির স্থান পাওয়া প্রয়োজন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও অধিদপ্তরের দুর্যোগ প্রশমন বিভাগের উপপরিচালক আজিজুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে প্রাণহানি বাড়ছে। তাই এটিকে দুর্যোগের আওতাভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে।
একই বিভাগের সাবেক উপপরিচালক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আরেক উপসচিব আবদুর রব প্রথম আলোকে বলেন, বজ্রপাত দুর্যোগের তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এটা তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। কারণ, বজ্রপাতে নিহত ও আহত দুস্থ ব্যক্তিরা ১০ থেকে ২৫ হাজার এবং গুরুতর আহত ব্যক্তি ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা সহায়তা পায়। এই সহায়তা খুবই কম।
No comments