আজ তারা শুধুই বেদনার স্মৃতি by কামরান পারভেজ
জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে নিহত হন মা সখিনা ও তাঁর দুই বছরের মেয়ে লামিয়া। তাঁদের ছবি দেখেই এখন দিন কাটে পরিবারের অন্য সদস্যদের। ছবি: সংগৃহীত |
ঈদে
মা নতুন শাড়ি পরবে। এই ভেবে মায়ের জন্য নানির সঙ্গে জাকাতের কাপড় আনতে
গিয়েছিল ১১ বছরের মেয়ে বৃষ্টি। মায়ের শাড়ি আনতে গিয়ে পদদলনে প্রাণ যায় তার।
সঙ্গে মারা যান নানিও। আজ সেই ঈদের দিন। মা পলি আক্তার বাড়ির সামনে উদাস
ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে। কাল থেকে নাওয়া-খাওয়া হয়নি। শুধু কয়েকবার পাশের বাড়ি থেকে
মুঠোফোন নিয়ে এসেছেন। সেখানে মেয়ে বৃষ্টির একটি ছবি আছে। সেই ছবিই দেখেছেন
বারবার।
কথা বলতে চাইলে পলি আক্তার বলেন, ‘ভাই আর কত কানদন (কান্না) যায়। চোক্ষের পানি শুকায়া গেছে। আমার জন্য একটা নতুন শাড়ি আনতে গিয়ে আমার মেয়ে মইর্যা গেল। এই কষ্ট আমি কই রাখি।’
ঈদে জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলনে গত ১০ জুলাই প্রাণ হারান ২৭ জন। তাঁদের মধ্যে ২২ জনই নারী। ছিল পাঁচজন শিশুও। ময়মনসিংহ শহরের অতুল চক্রবর্তী সড়কে ওই দিন নূরানী জর্দা কারখানার মালিক মো. শামীম দরিদ্র মানুষদের জাকাতের কাপড় দেওয়ার জন্য ডাকেন। নতুন কাপড়ের আশায় বাড়ির সামনে জড়ো হন অনেকে। পরে হুড়োহুড়িতে পদদলনে প্রাণ হারান ২৭ জন।
আজ ঈদের দিনে সেসব পরিবারে কেবলই কান্না। শহরতলির কাঠগোলা বাজার এলাকার অনেকের সঙ্গে ওই দিন ভোরে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে নিহত হয় ১২ বছরের রুবি আক্তার। ব্রহ্মপুত্র নদের কাছে রুবির পরিবার একটা ঘরে বাস করে। রুবির ছোট বোন সুমাইয়া নিজের জন্য কেনা জামা জড়িয়ে ধরে বলে, ‘ঈদের দিন আমি আমার বইনের লগে পার্কে যাইতাম, নদীর পাড় ধইর্যা বেড়াইতাম, নদীর পাড়ে নানির বাড়িত যাইতাম। এইবার আমার বোন নাই।’
এই বলে আবার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। রুবির বাবা রতন অসুস্থ। কথা বলতে পারছেন না। ডুকরে কেঁদে উঠে মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘আপনেরা আমার মেয়ের একটা ছবি দিবে পারবেন। আমার মেয়ের একটা ছবিও নাই আমার কাছে।’
পদদলনে নিহত হয় থানাঘাট এলাকার সখিনা ও তাঁর দুই বছরের মেয়ে লামিয়া। দুপুর ১২টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লামিয়ার বাবা নূর ইসলামের ঘরে প্রতিবেশীর ভিড়। বিছানায় পড়ে আছে ছোট্ট লাল একটা জামা, সাদা নূপুর আর একটা পুতুল। বাবা ঈদে মেয়ের জন্য কিনেছিলেন এসব। মেয়ে নেই। এখন সেগুলো দেখেই সময় কাটে বাবার। নূর ইসলাম বলেন, ‘মেয়েটা একটু বড় হওয়ার পর এইটা ছিল তার সঙ্গে আমার প্রথম ঈদ। আজ সারা দিন আমি মেয়ের পাশে থাকতাম। তারে সুন্দার কইর্যা সাজায়া ছবি তুলতাম। কিন্তু আমার কপালে নাই মেয়ে লইয়া ঈদ করা।’
একই এলাকার ১২ বছরের শিশু সিদ্দিকও ওই দিন মা রওশন আরার জন্য ঈদের কাপড় আনতে গিয়ে মারা যায়। রওশন আরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে কইছিল, আম্মা, তুমি কোনো চিন্তা কইরো না, চাঁন রাইতে আমি ঈদের সব বাজার কইরা নিয়া আসব।’
কিন্তু মায়ের শাড়ি আনতে গিয়ে ছেলে আর ফেরেনি। না ফেরা মানুষগুলোর কথা মনে করেই ঈদ কাটাচ্ছেন ময়মনসিংহের এসব পরিবারের মানুষ।
কথা বলতে চাইলে পলি আক্তার বলেন, ‘ভাই আর কত কানদন (কান্না) যায়। চোক্ষের পানি শুকায়া গেছে। আমার জন্য একটা নতুন শাড়ি আনতে গিয়ে আমার মেয়ে মইর্যা গেল। এই কষ্ট আমি কই রাখি।’
ঈদে জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলনে গত ১০ জুলাই প্রাণ হারান ২৭ জন। তাঁদের মধ্যে ২২ জনই নারী। ছিল পাঁচজন শিশুও। ময়মনসিংহ শহরের অতুল চক্রবর্তী সড়কে ওই দিন নূরানী জর্দা কারখানার মালিক মো. শামীম দরিদ্র মানুষদের জাকাতের কাপড় দেওয়ার জন্য ডাকেন। নতুন কাপড়ের আশায় বাড়ির সামনে জড়ো হন অনেকে। পরে হুড়োহুড়িতে পদদলনে প্রাণ হারান ২৭ জন।
আজ ঈদের দিনে সেসব পরিবারে কেবলই কান্না। শহরতলির কাঠগোলা বাজার এলাকার অনেকের সঙ্গে ওই দিন ভোরে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে নিহত হয় ১২ বছরের রুবি আক্তার। ব্রহ্মপুত্র নদের কাছে রুবির পরিবার একটা ঘরে বাস করে। রুবির ছোট বোন সুমাইয়া নিজের জন্য কেনা জামা জড়িয়ে ধরে বলে, ‘ঈদের দিন আমি আমার বইনের লগে পার্কে যাইতাম, নদীর পাড় ধইর্যা বেড়াইতাম, নদীর পাড়ে নানির বাড়িত যাইতাম। এইবার আমার বোন নাই।’
এই বলে আবার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। রুবির বাবা রতন অসুস্থ। কথা বলতে পারছেন না। ডুকরে কেঁদে উঠে মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘আপনেরা আমার মেয়ের একটা ছবি দিবে পারবেন। আমার মেয়ের একটা ছবিও নাই আমার কাছে।’
পদদলনে নিহত হয় থানাঘাট এলাকার সখিনা ও তাঁর দুই বছরের মেয়ে লামিয়া। দুপুর ১২টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লামিয়ার বাবা নূর ইসলামের ঘরে প্রতিবেশীর ভিড়। বিছানায় পড়ে আছে ছোট্ট লাল একটা জামা, সাদা নূপুর আর একটা পুতুল। বাবা ঈদে মেয়ের জন্য কিনেছিলেন এসব। মেয়ে নেই। এখন সেগুলো দেখেই সময় কাটে বাবার। নূর ইসলাম বলেন, ‘মেয়েটা একটু বড় হওয়ার পর এইটা ছিল তার সঙ্গে আমার প্রথম ঈদ। আজ সারা দিন আমি মেয়ের পাশে থাকতাম। তারে সুন্দার কইর্যা সাজায়া ছবি তুলতাম। কিন্তু আমার কপালে নাই মেয়ে লইয়া ঈদ করা।’
একই এলাকার ১২ বছরের শিশু সিদ্দিকও ওই দিন মা রওশন আরার জন্য ঈদের কাপড় আনতে গিয়ে মারা যায়। রওশন আরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে কইছিল, আম্মা, তুমি কোনো চিন্তা কইরো না, চাঁন রাইতে আমি ঈদের সব বাজার কইরা নিয়া আসব।’
কিন্তু মায়ের শাড়ি আনতে গিয়ে ছেলে আর ফেরেনি। না ফেরা মানুষগুলোর কথা মনে করেই ঈদ কাটাচ্ছেন ময়মনসিংহের এসব পরিবারের মানুষ।
No comments