চোখধাঁধানো আলতাপরি by আ ন ম আমিনুর রহমান
পুরুষ আলতাপরি। ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ কালেঙ্গা অভয়ারণ্য থেকে লেখকের তোলা ছবি |
ওদের
দুজনকে প্রথম দেখি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। চোখধাঁধানো রূপে মন ভরে
গিয়েছিল, মনোমুগ্ধ হয়ে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম জানি না। তবে প্রথম দর্শনে ওদের
রূপ-জৌলুশে মুগ্ধ হয়ে ক্যামেরাতেই ক্লিক করতে ভুলে গিয়েছিলাম! সেবার
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণী চিকিৎসার ছাত্রদের ব্যবহারিক পরীক্ষা
নিয়ে ফেরার পথে মৌলভীবাজারের বন্য প্রাণী আলোকচিত্রী ও ফরেস্ট রেঞ্জার
প্রয়াত মুনির আহমেদ খানের সঙ্গে দেখা করতে ভুলিনি। তাঁর সঙ্গে ২০১১ সালের ৮
এপ্রিল লাউয়াছড়া গিয়ে বর্ণিল ওই দম্পতির সঙ্গে দেখা। আজ মুনির আহমেদ নেই,
কিন্তু তাঁর সঙ্গে তোলা ওদের ছবিগুলো রয়ে গেছে।
এর দুবছর পর ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে আবার দেখা হলো এই দম্পতির সঙ্গে। আর এরও ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ১৫ মার্চ ২০১৪-এ সুন্দরবনে আবার দেখা। একটি আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রতিবারই ওদের দর্শনে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার কারণে ভালো ছবি তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। তবে এতে দুঃখ নেই। কারণ, ওদের দিকে তাকিয়ে থাকার সুখ ও আনন্দের মূল্য ছবি তোলার চেয়েও ঢের বেশি।
রূপ-লাবণ্যে ভরপুর অনিন্দ্যসুন্দর যে পাখি দম্পতির কথা এতক্ষণ বললাম, ওরা এ দেশের দুর্লভ প্রজাতির পাখি আলতাপরি (Scarlet Minivet)। রাঙাবউ, সিঁদুরে সহেলি, সিঁদুরে-লাল সাত সহেলি বা সিঁদুরে সাত সাইলি নামেও পরিচিত। এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Pericrocotus flammeus।
আলতাপরি ছোট আকারের পাখি। লম্বায় মাত্র ২২ সেমি ও ওজন ২৬ গ্রাম। পুরুষটির বুক, পেট ও লেজের তলা আলতা লাল। মাথা, গলা, পিঠ ও লেজের উপরিভাগ চকচকে কালো। কালচে ডানায় দুটি আলতা লাল পট্টি। কোমর আলতা লাল। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির রঙে বেশ পার্থক্য দেখা যায়। তবে প্রথম দর্শনে স্ত্রী পাখিটিকে দেখতে পুরোপুরি হলদে বলেই মনে হবে। স্ত্রী পাখির কপাল, গলা, বুক, পেট ও লেজের তলা হলুদ। মাথা, পিঠ ও লেজে ওপরটা কালচে ধূসর। ডানা কালচে ধূসর এবং তাতে দুটি হলুদ পট্টি রয়েছে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই চোখ বাদামি আর ঠোঁট কালো। পা, পায়ের পাতা এবং আঙুলও কালো।
মূলত পাহাড়-টিলাময় বনজঙ্গল ও সুন্দরবনে এদের আবাস। এরা বন ও চষা জমিতে বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় এবং কখনো বা ঝাঁকে দেখা যায়। শুঁয়োপোকা ও বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ এদের প্রধান খাদ্য। খাবারের সন্ধানে এরা গাছের ডাল থেকে ডালে ঘুরে বেড়ায় আর কীটপতঙ্গ শিকার করে। ‘টিউয়ি-টিউয়ি’ করে বেশ মধুর স্বরে বারবার ডাকতে থাকে।
এরা ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরে প্রজনন করে। গাছের সরু শাখায় লতা, শিকড়, লাইকেন, মাকড়সার জাল প্রভৃতি দিয়ে গোলাকার ছিমছাম বাসা তৈরি করে। বাসা তৈরি হলে তাতে দু-চারটি নীল-সবুজ রঙের ডিম পাড়ে। স্ত্রী একাই ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৩ থেকে ১৯ দিনে। মা-বাবা দুজনে মিলেমিশেই বাচ্চাদের খাইয়ে-দাইয়ে বড় করে তোলে। এরপর একদিন এরা কচি ডানায় ভর করে নীল আকাশে উড়াল দেয়।
এর দুবছর পর ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে আবার দেখা হলো এই দম্পতির সঙ্গে। আর এরও ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ১৫ মার্চ ২০১৪-এ সুন্দরবনে আবার দেখা। একটি আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রতিবারই ওদের দর্শনে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার কারণে ভালো ছবি তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। তবে এতে দুঃখ নেই। কারণ, ওদের দিকে তাকিয়ে থাকার সুখ ও আনন্দের মূল্য ছবি তোলার চেয়েও ঢের বেশি।
রূপ-লাবণ্যে ভরপুর অনিন্দ্যসুন্দর যে পাখি দম্পতির কথা এতক্ষণ বললাম, ওরা এ দেশের দুর্লভ প্রজাতির পাখি আলতাপরি (Scarlet Minivet)। রাঙাবউ, সিঁদুরে সহেলি, সিঁদুরে-লাল সাত সহেলি বা সিঁদুরে সাত সাইলি নামেও পরিচিত। এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Pericrocotus flammeus।
আলতাপরি ছোট আকারের পাখি। লম্বায় মাত্র ২২ সেমি ও ওজন ২৬ গ্রাম। পুরুষটির বুক, পেট ও লেজের তলা আলতা লাল। মাথা, গলা, পিঠ ও লেজের উপরিভাগ চকচকে কালো। কালচে ডানায় দুটি আলতা লাল পট্টি। কোমর আলতা লাল। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির রঙে বেশ পার্থক্য দেখা যায়। তবে প্রথম দর্শনে স্ত্রী পাখিটিকে দেখতে পুরোপুরি হলদে বলেই মনে হবে। স্ত্রী পাখির কপাল, গলা, বুক, পেট ও লেজের তলা হলুদ। মাথা, পিঠ ও লেজে ওপরটা কালচে ধূসর। ডানা কালচে ধূসর এবং তাতে দুটি হলুদ পট্টি রয়েছে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই চোখ বাদামি আর ঠোঁট কালো। পা, পায়ের পাতা এবং আঙুলও কালো।
মূলত পাহাড়-টিলাময় বনজঙ্গল ও সুন্দরবনে এদের আবাস। এরা বন ও চষা জমিতে বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় এবং কখনো বা ঝাঁকে দেখা যায়। শুঁয়োপোকা ও বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ এদের প্রধান খাদ্য। খাবারের সন্ধানে এরা গাছের ডাল থেকে ডালে ঘুরে বেড়ায় আর কীটপতঙ্গ শিকার করে। ‘টিউয়ি-টিউয়ি’ করে বেশ মধুর স্বরে বারবার ডাকতে থাকে।
এরা ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরে প্রজনন করে। গাছের সরু শাখায় লতা, শিকড়, লাইকেন, মাকড়সার জাল প্রভৃতি দিয়ে গোলাকার ছিমছাম বাসা তৈরি করে। বাসা তৈরি হলে তাতে দু-চারটি নীল-সবুজ রঙের ডিম পাড়ে। স্ত্রী একাই ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৩ থেকে ১৯ দিনে। মা-বাবা দুজনে মিলেমিশেই বাচ্চাদের খাইয়ে-দাইয়ে বড় করে তোলে। এরপর একদিন এরা কচি ডানায় ভর করে নীল আকাশে উড়াল দেয়।
No comments