রমজান মাসে ফাঁসি কার্যকর বন্ধ রাখবে পাকিস্তান
পবিত্র মাস রমজান চলাকালে বিভিন্ন আসামির ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারিকৃত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র মাস রমজানের পবিত্রতা রক্ষায়’ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। গত বছরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানে পেশোয়ারের একটি বিদ্যালয়ে তালেবান জঙ্গিদের হামলায় নিহত হয় দেড় শতাধিক মানুষ। এদের বেশিরভাগই ছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এরপরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর ৬ বছরের বিশেষ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পাকিস্তান। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত মামলাগুলোয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর পুনরায় শুরু করা হয়। কিন্তু মার্চে সরকার সব ধরনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক ব্যক্তির ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। আইনবিদ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বেশ কিছু মামলায় ন্যায়বিচার নিয়ে উদ্বেগ ছিল। তাই সেসব বিবেচনায় না নিয়েই ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা অনেকটাই অন্যায্য। ১০ই জুন আফতাব বাহাদুর (৩৭) নামের একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আফতাবকে কারাগারের ভেতর খুনের দায় স্বীকার করে নিতে পুলিশ নির্যাতন চালিয়েছিল। তার বিচারে ব্যাপক ত্রুটি ছিল বলে আইনজীবীরা দাবি করছেন। বাহাদুরের মামলাটি নিয়ে উদ্বেগের আরেকটি কারণ হলো, তাকে যখন মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল, তখন সে ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে শাফকাত হুসেনের ক্ষেত্রে। তাকেও অপ্রাপ্ত বয়সে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে। শাফকাতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, খুনের অভিযোগ স্বীকার করার জন্য তার ওপরও নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ। ১০ই জুন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট হুসেনের আপিল আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এর ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এগিয়ে যায়। এর আগে চারবার শেষ মুহূর্তে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করা হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, পাকিস্তানে বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছে আনুমানিক ৮ হাজার বন্দি, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, পাকিস্তানে বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছে আনুমানিক ৮ হাজার বন্দি, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।
No comments