আম, লিচুসহ মৌসুমি ফলে ফরমালিন মেলেনি by পার্থ শঙ্কর সাহা
বাজারে আমের পসরা। ছবিটি রাজধানীর পুরানা পল্টন থেকে তোলা l প্রথম আলো |
খাদ্যপণ্য
তদারক করা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষায় আম, লিচুসহ মৌসুমি বিভিন্ন
ফলে ক্ষতিকর ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই
এবং বিসিএসআইআর ঢাকাসহ বেশ কটি জেলায় ফল সংগ্রহ করে গত দেড় মাসে কয়েক দফায়
বিভিন্ন ফল পরীক্ষা করেছে। গত বছর ফলে ফরমালিন নিয়ে জনমনে আতঙ্কের পর
সরকার কঠোর অভিযান পরিচালনা করায় এবার এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।
গত বছর ফলে ফরমালিনের অস্তিত্ব নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির পর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করে। পরে এতে যুক্ত হয় পুলিশ। বিএসটিআই তখন অভিযানকালে তাৎক্ষণিকভাবে ফল পানিতে ডুবিয়ে এতে ক্রমোট্রপিক অ্যাসিড দিয়ে পরীক্ষা করে ফরমালিন আছে কি না, তা নির্ণয় করত। এ পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ না উঠলেও ফরমালিন নির্ণয়ে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত ডি ফরমালডিহাইড-৩০০ মিটার নামের যন্ত্রটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ফল ব্যবসায়ীদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই যন্ত্র দিয়ে ফল পরীক্ষা বন্ধ এবং গ্রহণযোগ্য যন্ত্র খুঁজে বের করতে তিনটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। যন্ত্র নির্দিষ্ট না হওয়ায় জনস্বার্থে বিএসটিআই এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) নিজস্ব উদ্যোগে ও পরীক্ষাগারে এবার ফল পরীক্ষা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিএসটিআইয়ের ঢাকার এবং ঢাকার বাইরের চারটি কেন্দ্র প্রায় দেড় মাস ধরে মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে নিজস্ব পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করছে। ঢাকায় এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে চলতি মাসের শুরুতে। বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল হক গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, তিন দফায় রাজধানীর মিরপুর, খিলগাঁও থেকে আম, লিচু ও আপেল সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। কোনো ফলেই ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
আম ও লিচুর জন্য বিখ্যাত উত্তরাঞ্চলের একাধিক জেলা থেকে আম, লিচু, জাম সংগ্রহ করে পরীক্ষায় ফরমালিন পায়নি বিএসটিআইয়ের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া ও গাইবান্ধা থেকে আম, জাম, লিচু, মাল্টার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় ফরমালিন পাইনি আমরা।’ তিনি জানান, নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এসব পরীক্ষার পাশাপাশি বিএসটিআই স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে রাজশাহীর বানেশ্বর আমের বাজার এবং বাঘার মনিগ্রাম বাজারে ৫ জুন থেকে নিয়মিত আম পরীক্ষা করছে। গত ১১ দিনের নিয়মিত পরীক্ষায় কোনো ফরমালিন পাওয়া যায়নি।
বিএসটিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গত মে মাসে চট্টগ্রাম নগরের ৪৫টি স্থান থেকে আম ও লিচুর ১৬৯টি নমুনা সংগ্রহ করে। নিজস্ব স্থানীয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এগুলোতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি। ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কে এম হানিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ১ থেকে ১৬ জুন প্রশাসনের সহযোগিতাতেই আম ও লিচুর ১২৯টি নমুনা নেওয়া হয়। এগুলোতেও ফরমালিন পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও হাটহাজারীর বাজার থেকে ফল নিয়েও পরীক্ষা করা হয়। এগুলোও ফরমালিনমুক্ত ছিল।
বিএসটিআইয়ের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় নগরের পৌর সুপার মার্কেট, খালিশপুর, নিউমার্কেট, কাঁচাবাজার, রব মার্কেট এবং বয়রা বাজার থেকে সাত দফায় আম ও লিচু এনে পরীক্ষা করে ফরমালিন পায়নি। এ কথা জানিয়ে সহকারী পরিচালক মৃণাল কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘খুলনায় আম খুব কম উৎপাদিত হয়। এখানে আসে মূলত সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরের আম। এখানে আমে ফরমালিন না মেলার অর্থ হলো, ওই সব জায়গাতেও ফরমালিন দেওয়া হচ্ছে না।’ তিনি জানান, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও যশোর থেকেও ফলের নমুনা এনে পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর পরীক্ষার ফল পেতে আরও তিন-চার দিন লাগবে।
আম, লিচু, জাম, জামরুল চার দফায় পরীক্ষা করে ফরমালিনের অস্তিত্ব পায়নি বিএসটিআইয়ের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর শহরের আম্বরখান ও কদমতলী বাজারে ফলে একাধিকবার ফরমালিন পাওয়া গেলেও এবার এ দুটি এলাকাসহ চারটি বাজারের ফলে ফরমালিন পাওয়া যায়নি।’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মতিন উল হক জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার তাঁরা ফলের বাজারে অভিযান চালাননি।
এদিকে বিসিএসআইআর এবার ১০ দফায় আম পরীক্ষা করেছে বলে জানান সংস্থাটির খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক মো. জহুরুল হক। গতকাল তিনি বলেন, যে ১০ দফায় আম পরীক্ষা করা হয়েছে, এর সবই ব্যক্তি ও সুপারশপ থেকে পাঠানো। গত বছর আম ও খেজুরে কয়েক দফায় ফরমালিন পাওয়া গিয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, ফলে ফরমালিন না পাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে শুভসংবাদ। তবে এই অবস্থা যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়, সে জন্য নজরদারি রাখতে হবে।
গত বছর ফলে ফরমালিনের অস্তিত্ব নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির পর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করে। পরে এতে যুক্ত হয় পুলিশ। বিএসটিআই তখন অভিযানকালে তাৎক্ষণিকভাবে ফল পানিতে ডুবিয়ে এতে ক্রমোট্রপিক অ্যাসিড দিয়ে পরীক্ষা করে ফরমালিন আছে কি না, তা নির্ণয় করত। এ পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ না উঠলেও ফরমালিন নির্ণয়ে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত ডি ফরমালডিহাইড-৩০০ মিটার নামের যন্ত্রটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ফল ব্যবসায়ীদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই যন্ত্র দিয়ে ফল পরীক্ষা বন্ধ এবং গ্রহণযোগ্য যন্ত্র খুঁজে বের করতে তিনটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। যন্ত্র নির্দিষ্ট না হওয়ায় জনস্বার্থে বিএসটিআই এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) নিজস্ব উদ্যোগে ও পরীক্ষাগারে এবার ফল পরীক্ষা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিএসটিআইয়ের ঢাকার এবং ঢাকার বাইরের চারটি কেন্দ্র প্রায় দেড় মাস ধরে মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে নিজস্ব পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করছে। ঢাকায় এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে চলতি মাসের শুরুতে। বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল হক গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, তিন দফায় রাজধানীর মিরপুর, খিলগাঁও থেকে আম, লিচু ও আপেল সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। কোনো ফলেই ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
আম ও লিচুর জন্য বিখ্যাত উত্তরাঞ্চলের একাধিক জেলা থেকে আম, লিচু, জাম সংগ্রহ করে পরীক্ষায় ফরমালিন পায়নি বিএসটিআইয়ের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া ও গাইবান্ধা থেকে আম, জাম, লিচু, মাল্টার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় ফরমালিন পাইনি আমরা।’ তিনি জানান, নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এসব পরীক্ষার পাশাপাশি বিএসটিআই স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে রাজশাহীর বানেশ্বর আমের বাজার এবং বাঘার মনিগ্রাম বাজারে ৫ জুন থেকে নিয়মিত আম পরীক্ষা করছে। গত ১১ দিনের নিয়মিত পরীক্ষায় কোনো ফরমালিন পাওয়া যায়নি।
বিএসটিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গত মে মাসে চট্টগ্রাম নগরের ৪৫টি স্থান থেকে আম ও লিচুর ১৬৯টি নমুনা সংগ্রহ করে। নিজস্ব স্থানীয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এগুলোতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি। ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কে এম হানিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ১ থেকে ১৬ জুন প্রশাসনের সহযোগিতাতেই আম ও লিচুর ১২৯টি নমুনা নেওয়া হয়। এগুলোতেও ফরমালিন পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও হাটহাজারীর বাজার থেকে ফল নিয়েও পরীক্ষা করা হয়। এগুলোও ফরমালিনমুক্ত ছিল।
বিএসটিআইয়ের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় নগরের পৌর সুপার মার্কেট, খালিশপুর, নিউমার্কেট, কাঁচাবাজার, রব মার্কেট এবং বয়রা বাজার থেকে সাত দফায় আম ও লিচু এনে পরীক্ষা করে ফরমালিন পায়নি। এ কথা জানিয়ে সহকারী পরিচালক মৃণাল কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘খুলনায় আম খুব কম উৎপাদিত হয়। এখানে আসে মূলত সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরের আম। এখানে আমে ফরমালিন না মেলার অর্থ হলো, ওই সব জায়গাতেও ফরমালিন দেওয়া হচ্ছে না।’ তিনি জানান, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও যশোর থেকেও ফলের নমুনা এনে পরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলোর পরীক্ষার ফল পেতে আরও তিন-চার দিন লাগবে।
আম, লিচু, জাম, জামরুল চার দফায় পরীক্ষা করে ফরমালিনের অস্তিত্ব পায়নি বিএসটিআইয়ের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর শহরের আম্বরখান ও কদমতলী বাজারে ফলে একাধিকবার ফরমালিন পাওয়া গেলেও এবার এ দুটি এলাকাসহ চারটি বাজারের ফলে ফরমালিন পাওয়া যায়নি।’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মতিন উল হক জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার তাঁরা ফলের বাজারে অভিযান চালাননি।
এদিকে বিসিএসআইআর এবার ১০ দফায় আম পরীক্ষা করেছে বলে জানান সংস্থাটির খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক মো. জহুরুল হক। গতকাল তিনি বলেন, যে ১০ দফায় আম পরীক্ষা করা হয়েছে, এর সবই ব্যক্তি ও সুপারশপ থেকে পাঠানো। গত বছর আম ও খেজুরে কয়েক দফায় ফরমালিন পাওয়া গিয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, ফলে ফরমালিন না পাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে শুভসংবাদ। তবে এই অবস্থা যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়, সে জন্য নজরদারি রাখতে হবে।
No comments