ধুঁকছে খুলনার বক্ষব্যাধি ক্লিনিক by শেখ আল-এহসান
৪০ বছরের বেশি পুরোনো, জরাজীর্ণ খুলনার বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের আধা পাকা ভবন l ছবি: প্রথম আলো |
৪০
বছরের বেশি পুরোনো ভবন। নেই কোনো চিকিৎসা কর্মকর্তা। নেই পরামর্শকও
(কনসালট্যান্ট)। একমাত্র এক্স-রে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে আছে ২০ বছরেরও বেশি
সময় ধরে। এখানেই শেষ নয়, ক্লিনিকটির ১৬টি পদের বিপরীতে জনবল আছে মাত্র
নয়জন। একমাত্র পরীক্ষকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রেই চলে রোগীদের চিকিৎসা।
এভাবেই ধুঁকছে খুলনার বক্ষব্যাধি ক্লিনিক।
ক্লিনিকটির অবস্থান খুলনা নগরের খান এ সবুর রোডের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) সামনে। অবকাঠামো ও পরিবেশের জীর্ণ দশা দেখে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, এখানে কোনো চিকিৎসা কার্যক্রম চলতে পারে। সে ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা সাইনবোর্ড।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, আধা পাকা ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। টিনের চালে মরিচা ধরেছে। ফুটো হয়ে গেছে কোথাও কোথাও। দেয়ালে ধরেছে ফাটল, পলেস্তারাও খসে পড়ছে। ভেতরে নেই রোগীদের পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, একজন সহকারী সেবিকা রোগীদের নামের তালিকা নিবন্ধন করছেন। একজন পরীক্ষক রোগীদের কফ পরীক্ষা করে একটি সাদা কাগজে সিল মেরে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। আর সে অনুযায়ী ওষুধ দিচ্ছেন একজন ফার্মাসিস্ট। এর মধ্যে একজন আবার কফ পরীক্ষায় সহযোগিতা করছেন।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ক্লিনিকটির পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন শেখ আবদুল কাদের। গত ৩ জানুয়ারি তিনি অবসরে চলে যান। এর পর কনিষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে আতিয়ার রহমান শেখকে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৭ এপ্রিল তিনি পদোন্নতি পেয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হয়ে যান। তার পর থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পদটি শূন্য। চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আবদুল গফফার। তিনিও এপ্রিল মাসে অভয়নগর থানায় বদলি হয়ে গেছেন। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) গত ৯ এপ্রিল বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু যোগদানের আগেই তাঁর বদলির আদেশ বাতিল হয়ে যায়।
ক্লিনিকের সেবিকা ও পরীক্ষকের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, একমাত্র এক্স-রে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে আছে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আধুনিক যন্ত্র বরাদ্দ হলেও অবকাঠামোর জন্য তা স্থাপন করা সম্ভব হয় না। ফলে অন্য কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবছর আধা পাকা ভবনটি জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করার চেষ্টা করা হয়। ক্লিনিকের ফার্মাসিস্ট অচিন্ত্য কুমার সরকার ও সহকারী সেবিকা তকদীর-এ-এলাহী বলেন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের জন্য এক্স-রে খুবই প্রয়োজন। এ রোগের জীবাণু থাকে পাকস্থলীতে। অনেক সময় কফ পরীক্ষা করে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তখন এক্স-রের প্রয়োজন হয়। মাসে গড়ে ৩০০ যক্ষ্মা রোগী এ ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নেন বলে জানান তাঁরা।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের এমন করুণ দশা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন মো. ইয়াসিন আলী সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি ক্লিনিকটিকে ভালো রাখার। চিকিৎসক ও পরামর্শকও নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা ওপরের মহল থেকে বদলির আদেশ বাতিল করে আনেন। এক্স-রে মেশিন মেরামতের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির সেটা চালু হবে।’
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ক্লিনিকের অবকাঠামো নির্মাণ এবং চিকিৎসক ও পরামর্শক নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। গত জানুয়ারিতে বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের ওই জায়গায় অথবা খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের অবশিষ্ট জায়গায় একটি দ্বিতল ভবন তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, পরামর্শক নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয়। তাই সেটা মন্ত্রণালয় দেখবে। তবে চিকিৎসা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আগ্রহী কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় দেরি হচ্ছে।
ক্লিনিকটির অবস্থান খুলনা নগরের খান এ সবুর রোডের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) সামনে। অবকাঠামো ও পরিবেশের জীর্ণ দশা দেখে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, এখানে কোনো চিকিৎসা কার্যক্রম চলতে পারে। সে ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা সাইনবোর্ড।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, আধা পাকা ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। টিনের চালে মরিচা ধরেছে। ফুটো হয়ে গেছে কোথাও কোথাও। দেয়ালে ধরেছে ফাটল, পলেস্তারাও খসে পড়ছে। ভেতরে নেই রোগীদের পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, একজন সহকারী সেবিকা রোগীদের নামের তালিকা নিবন্ধন করছেন। একজন পরীক্ষক রোগীদের কফ পরীক্ষা করে একটি সাদা কাগজে সিল মেরে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। আর সে অনুযায়ী ওষুধ দিচ্ছেন একজন ফার্মাসিস্ট। এর মধ্যে একজন আবার কফ পরীক্ষায় সহযোগিতা করছেন।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ক্লিনিকটির পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন শেখ আবদুল কাদের। গত ৩ জানুয়ারি তিনি অবসরে চলে যান। এর পর কনিষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে আতিয়ার রহমান শেখকে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৭ এপ্রিল তিনি পদোন্নতি পেয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হয়ে যান। তার পর থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পদটি শূন্য। চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আবদুল গফফার। তিনিও এপ্রিল মাসে অভয়নগর থানায় বদলি হয়ে গেছেন। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) গত ৯ এপ্রিল বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু যোগদানের আগেই তাঁর বদলির আদেশ বাতিল হয়ে যায়।
ক্লিনিকের সেবিকা ও পরীক্ষকের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, একমাত্র এক্স-রে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে আছে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আধুনিক যন্ত্র বরাদ্দ হলেও অবকাঠামোর জন্য তা স্থাপন করা সম্ভব হয় না। ফলে অন্য কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবছর আধা পাকা ভবনটি জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করার চেষ্টা করা হয়। ক্লিনিকের ফার্মাসিস্ট অচিন্ত্য কুমার সরকার ও সহকারী সেবিকা তকদীর-এ-এলাহী বলেন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের জন্য এক্স-রে খুবই প্রয়োজন। এ রোগের জীবাণু থাকে পাকস্থলীতে। অনেক সময় কফ পরীক্ষা করে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তখন এক্স-রের প্রয়োজন হয়। মাসে গড়ে ৩০০ যক্ষ্মা রোগী এ ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নেন বলে জানান তাঁরা।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের এমন করুণ দশা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন মো. ইয়াসিন আলী সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি ক্লিনিকটিকে ভালো রাখার। চিকিৎসক ও পরামর্শকও নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা ওপরের মহল থেকে বদলির আদেশ বাতিল করে আনেন। এক্স-রে মেশিন মেরামতের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির সেটা চালু হবে।’
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ক্লিনিকের অবকাঠামো নির্মাণ এবং চিকিৎসক ও পরামর্শক নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। গত জানুয়ারিতে বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের ওই জায়গায় অথবা খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের অবশিষ্ট জায়গায় একটি দ্বিতল ভবন তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, পরামর্শক নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয়। তাই সেটা মন্ত্রণালয় দেখবে। তবে চিকিৎসা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আগ্রহী কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় দেরি হচ্ছে।
No comments