বিকাশে নানামুখী প্রতারণা by হামিদ বিশ্বাস
বিকাশকে
ঘিরে প্রতারণার জাল ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। গড়ে উঠছে বড় ধরনের সিন্ডিকেট
চক্র। সে কারণে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না বিকাশের মাধ্যমে হওয়া নানা
প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না গ্রাহক হয়রানি। অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও দক্ষ কায়দায় কোটি
কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বিকাশের মাধ্যমে। বিকাশের মাধ্যমে
প্রতারণাকারীদের খপ্পর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
প্রতারণার শিকার হয়েছেন অবসরে যাওয়া উচ্চ পর্যায়ের সরকারি চাকরিজীবী, সেনা
কর্মকর্তা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও সুশীল সমাজের
সদস্যরাও। প্রতারণার ধরনের মধ্যে রয়েছে নোবেল লরিয়েটের সঙ্গে ডিনার
প্রোগ্রামের অফার, সুলভমূল্যে ফ্ল্যাট, প্লটের অফার, অপহরণ, মানবপাচার,
চুরি, হ্যাকিং, সিম রিপ্লেস, ন্যাশনাল আইডি কার্ড জালিয়াতি, সিএনজি, অটো
রিকশা ছিনতাই, জিনের বাদশার অফার, বিভিন্ন ইস্যুতে ‘আপনি চূড়ান্ত বিজয়ী’
বলে নির্ধারিত নম্বরে রেজিস্ট্রেশনের টাকা পাঠানোর অফার। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের
সঙ্গে মিল রেখে অফার অনুযায়ী বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর কোথাও অনুরোধ
আবার কোথাও বাধ্য করা হচ্ছে। অফার অনুযায়ী টাকার পরিমাণ সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা
থেকে সর্বোচ্চ কোটি টাকা পর্যন্ত রয়েছে। এসব বিষয়ে সমপ্রতি পুলিশ প্রশাসন
প্রায় ৮০ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গত ১৬ই এপ্রিল
রাজধানীতে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। যেখানে
বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও মোবাইল
ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের কেস স্টাডি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সিএনজি চোর
গ্রুপের একজন অপরিচিত সদস্য সিএনজি মালিকের কাছে ১,৭০,০০০ টাকা চেয়ে এই
নম্বরে ০১৬৭৯-১৩১৭৫২ বিকাশ করতে বলে। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত এ ঘটনায়
টাকা বিকাশ হয়ে চলে যায় সেই অপরিচিত প্রতারকের কাছে। এভাবে সংঘবদ্ধ চোরচক্র
সিএনজি, মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ নানা গাড়ি জব্ধ করে বিকাশের মাধ্যমে
নির্ধারিত নম্বরে টাকা পাঠাতে বলে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ‘হ্যালো পার্টি’
নামে একটি প্রতিষ্ঠান (যার বাস্তব কোন ভিত্তি নেই) দু’টি নম্বরে
(০১৯১৯০০০০০০ অথবা ০১৭১১১২৩৪৫৬) মানুষদের মধ্যে তথ্য দেয়-আপনি চূড়ান্ত
বিজয়ী হয়েছেন। পাচ্ছেন এক সেট অলংকার। একইভাবে রাজধানীতে পাচ্ছেন প্লট অথবা
একটি ফ্ল্যাটের পজিশন। অথবা কোন নোবেল লরিয়েটের সঙ্গে ডিনার গ্রোগ্রাম।
সংঘবদ্ধ এই চক্রটি বড় অফারের সঙ্গে দিচ্ছে মোবাইল অপারেটরদের মতো ওয়েলকাম
টিউন ও কলার টিউনের মতো ছোট অফার। যেখানে ৩০০ থেকে ৩০০০ টাকা দিয়ে
রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়। এসব প্রতারণা থেকে উঁচু থেকে নিচু মানের কেউ
রক্ষা পাচ্ছেন না।
পুলিশের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিভিন্ন বিজনেস কোম্পানি, জব ফার্ম নানাভাবে আকর্ষণীয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরির অফার দেয়। যেখানে চাকরির শতভাগ গ্যারান্টি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। সঙ্গে বলছে সিকিউরিটি বাবদ নির্ধারিত নম্বরে নির্ধারিত পরিমাণে টাকা বিকাশ করতে। কখনও জাতীয় দৈনিকে পাত্র-পাত্রির বিয়ের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হচ্ছে। বিয়ের পর অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হবে। পাসপোর্ট না থাকলে দ্রুত পাসপোর্ট তৈরি বাবদ ৫০০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। এধরনের একজন অপরাধীকে গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে। খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি একেক সময় একেক পরিচয়ে লোভনীয় অফার দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করতো।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, জিনের বাদশা নামের এক ভণ্ড প্রতারক। যে চতুর্থ আকাশে থাকে বলে দাবি করে। সে মানুষদের মাঝে কথা দেয় এই বলে- বাংলাদেশী ২৫ জন নিয়মিত মোবাইল ব্যবহারকারী তার মোবাইল কল রিসিভ করলে সে স্বর্ণের কয়েন ও বড় জার উপহার দেবে। জিনের কল পেতে জিনের নম্বরে ২৫ টাকা করে দিতে হবে। এসব কিছু বেশি দেখা যায় গ্রামীণ নারীদের মধ্যে। এক পর্যায়ে ওই সব কলরিসিভারদের সব সম্পত্তি জিনের দখলে চলে যায়। তারা হয়ে যায় নিঃস্ব। উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু জায়গায় জিনের এই ব্যবসার প্রচলন রয়েছে। এ ধরনের অপরাধমূলক ব্যবসায় একজন রিকশাচালক, শপকিপার, উপজেলার চেয়ারম্যান থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট পর্যন্ত জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিকাশের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক দাসগুপ্ত অসীম কুমার বলেন, কিছু কিছু অনিয়মের অভিযোগ আসছে। তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পুলিশের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিভিন্ন বিজনেস কোম্পানি, জব ফার্ম নানাভাবে আকর্ষণীয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরির অফার দেয়। যেখানে চাকরির শতভাগ গ্যারান্টি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। সঙ্গে বলছে সিকিউরিটি বাবদ নির্ধারিত নম্বরে নির্ধারিত পরিমাণে টাকা বিকাশ করতে। কখনও জাতীয় দৈনিকে পাত্র-পাত্রির বিয়ের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হচ্ছে। বিয়ের পর অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হবে। পাসপোর্ট না থাকলে দ্রুত পাসপোর্ট তৈরি বাবদ ৫০০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। এধরনের একজন অপরাধীকে গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে। খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি একেক সময় একেক পরিচয়ে লোভনীয় অফার দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করতো।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, জিনের বাদশা নামের এক ভণ্ড প্রতারক। যে চতুর্থ আকাশে থাকে বলে দাবি করে। সে মানুষদের মাঝে কথা দেয় এই বলে- বাংলাদেশী ২৫ জন নিয়মিত মোবাইল ব্যবহারকারী তার মোবাইল কল রিসিভ করলে সে স্বর্ণের কয়েন ও বড় জার উপহার দেবে। জিনের কল পেতে জিনের নম্বরে ২৫ টাকা করে দিতে হবে। এসব কিছু বেশি দেখা যায় গ্রামীণ নারীদের মধ্যে। এক পর্যায়ে ওই সব কলরিসিভারদের সব সম্পত্তি জিনের দখলে চলে যায়। তারা হয়ে যায় নিঃস্ব। উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু জায়গায় জিনের এই ব্যবসার প্রচলন রয়েছে। এ ধরনের অপরাধমূলক ব্যবসায় একজন রিকশাচালক, শপকিপার, উপজেলার চেয়ারম্যান থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট পর্যন্ত জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিকাশের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক দাসগুপ্ত অসীম কুমার বলেন, কিছু কিছু অনিয়মের অভিযোগ আসছে। তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
No comments