কেউ ব্যর্থতার দায় নিচ্ছে না- প্রবাসীকল্যাণ ও পররাষ্ট্র দায় চাপাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর by রোজিনা ইসলাম ও শরিফুল হাসান
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম |
সমুদ্রপথে
মানব পাচারের কোনো দায় নিতে রাজি নয় পররাষ্ট্র কিংবা প্রবাসীকল্যাণ ও
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এই দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন,
বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে পাচার
বন্ধের কাজটি করার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্রের। কিন্তু তারা কাজটি করতে ব্যর্থ
হয়েছে।
মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমনে ২০১২ সালে যে আইন করা হয়েছে, তার অধীনে তিনটি বিধিমালা করার কথা। কিন্তু তিন বছরেও সেটি করতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইনে পাচারকারীদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখা হলেও এখন পর্যন্ত কারও শাস্তি হয়নি। বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাচারকারীদের তালিকা করলেও তারা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সামগ্রিকভাবে পাচার বন্ধে সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেই কাজটিও করতে পারেনি। এমনকি মাঠ প্রশাসন ও দূতাবাস থেকে গত কয়েক বছরে সমুদ্রপথে পাচারের বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি; বরং বেশির ভাগ কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে ব্যস্ত ছিলেন বিদেশ সফরে।
তারপরেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময়ে মানব পাচার প্রতিরোধে তাদের সাফল্যের প্রতিবেদন দিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। কিন্তু এখন থাইল্যান্ডে গণকবর আবিষ্কার এবং হাজার হাজার বাংলাদেশি আটক হওয়ার পর মন্ত্রণালয় বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, পাচার বন্ধে গঠিত আন্তমন্ত্রণালয় কমিটিতে পররাষ্ট্র, প্রবাসী, আইন মন্ত্রণালয়সহ র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড—সবার প্রতিনিধি আছেন। কিন্তু বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে এ কমিটি ঠিকমতো কাজ করে না। এ ছাড়া, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পাচার প্রতিরোধে কমিটি থাকার কথা থাকলেও সেগুলো কার্যকর করতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় সমুদ্রপথে পাচারের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এখন তারা পদক্ষেপ নেবে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে মানব পাচার। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা হলেও বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে কয়েকটি বৈঠক এবং কয়েকজন পাচারকারীকে ক্রসফায়ারে দেওয়া ছাড়া বড় কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তবে সর্বশেষ গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মানব পাচার বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাচার বন্ধের কাজটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। এ জন্য আমরা প্রতিনিয়তই পাচারকারীদের আটক করছি। র্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তবে একটি কথা আমি বারবারই বলতে চাই যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের কারণেই সমুদ্রপথে মানব পাচার সমস্যা বেড়েছে। আমরা এখন এর সঙ্গে জড়িত দালাল চক্রের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া পাচার থেকে উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগীদের কাহিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করে জনসচেতনতা বাড়াতে বলেছি।’
আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু বৈধ অভিবাসন করি। অবৈধ অভিবাসন নিয়ে যেহেতু আমরা যুক্ত নই, কাজেই আমাদের সেখানে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না। এটি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তবে এ বিষয়ে এই দুই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। তারা কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা করব।’
অন্যদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সমুদ্রপথে মানব পাচার যে বাড়ছে, সেটি বিভিন্ন সময়ে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আর এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুটি দল থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া উপকূলে রয়েছে। আটক বাংলাদেশিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দেশে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছে এই মন্ত্রণালয়।
তবে দায় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়েরও আছে। কেননা, অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়া বন্ধে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩-এর ৭ ধারায় বলা আছে, ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বন্দর বা স্থান দিয়েই বহির্গমন করতে হবে।’ আর আইনের ৩৪ ধারায় বলা আছে, ‘কোনো ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট অন্য কোনো ব্যক্তিকে বহির্গমনের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থান দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বহির্গমনের ব্যবস্থা করলে বা সহায়তা করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এ জন্য তিনি অনধিক দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আইনটির ব্যাখ্যা করে বলেন, এই আইন অনুযায়ী সরকার শুধু বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে বহির্গমনের স্থান হিসেবে উল্লেখ করেছে। কাজেই কেউ যদি সমুদ্রপথে লোক পাঠায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই আইনের অধীনে একটি মামলাও করেনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানব পাচার আর বিদেশে চাকরি নিয়ে বৈধভাবে যাওয়া—দুটো দুই জিনিস। আমরা শুধু বৈধভাবে যারা যায়, তাদের বিষয়টি দেখভাল করি। পাচারের বিষয়টি দেখার কাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত কয়েক বছরে পাচার বন্ধে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল প্রথম আলোকে জানানো হয়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ পাঁচ মাসে ৬৬ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার এবং ৩৫৮ জনকে পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেছে। অন্যদিকে কোস্টগার্ডের বিরাট সাফল্য হচ্ছে, ৭ হাজার ৩৯২টি অভিযান পরিচালনা করে ২২৩ জনকে আটক। আর বিজিবি গত চার মাসে ৮২৩ জনকে পাচারকারীর হাত থেকে উদ্ধার করেছে।
মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমনে ২০১২ সালে যে আইন করা হয়েছে, তার অধীনে তিনটি বিধিমালা করার কথা। কিন্তু তিন বছরেও সেটি করতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইনে পাচারকারীদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখা হলেও এখন পর্যন্ত কারও শাস্তি হয়নি। বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাচারকারীদের তালিকা করলেও তারা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সামগ্রিকভাবে পাচার বন্ধে সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেই কাজটিও করতে পারেনি। এমনকি মাঠ প্রশাসন ও দূতাবাস থেকে গত কয়েক বছরে সমুদ্রপথে পাচারের বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি; বরং বেশির ভাগ কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে ব্যস্ত ছিলেন বিদেশ সফরে।
তারপরেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময়ে মানব পাচার প্রতিরোধে তাদের সাফল্যের প্রতিবেদন দিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। কিন্তু এখন থাইল্যান্ডে গণকবর আবিষ্কার এবং হাজার হাজার বাংলাদেশি আটক হওয়ার পর মন্ত্রণালয় বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, পাচার বন্ধে গঠিত আন্তমন্ত্রণালয় কমিটিতে পররাষ্ট্র, প্রবাসী, আইন মন্ত্রণালয়সহ র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড—সবার প্রতিনিধি আছেন। কিন্তু বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে এ কমিটি ঠিকমতো কাজ করে না। এ ছাড়া, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পাচার প্রতিরোধে কমিটি থাকার কথা থাকলেও সেগুলো কার্যকর করতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় সমুদ্রপথে পাচারের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এখন তারা পদক্ষেপ নেবে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে মানব পাচার। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা হলেও বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে কয়েকটি বৈঠক এবং কয়েকজন পাচারকারীকে ক্রসফায়ারে দেওয়া ছাড়া বড় কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তবে সর্বশেষ গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মানব পাচার বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাচার বন্ধের কাজটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। এ জন্য আমরা প্রতিনিয়তই পাচারকারীদের আটক করছি। র্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তবে একটি কথা আমি বারবারই বলতে চাই যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের কারণেই সমুদ্রপথে মানব পাচার সমস্যা বেড়েছে। আমরা এখন এর সঙ্গে জড়িত দালাল চক্রের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া পাচার থেকে উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগীদের কাহিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করে জনসচেতনতা বাড়াতে বলেছি।’
আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু বৈধ অভিবাসন করি। অবৈধ অভিবাসন নিয়ে যেহেতু আমরা যুক্ত নই, কাজেই আমাদের সেখানে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না। এটি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তবে এ বিষয়ে এই দুই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। তারা কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা করব।’
অন্যদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সমুদ্রপথে মানব পাচার যে বাড়ছে, সেটি বিভিন্ন সময়ে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আর এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুটি দল থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া উপকূলে রয়েছে। আটক বাংলাদেশিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দেশে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছে এই মন্ত্রণালয়।
তবে দায় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়েরও আছে। কেননা, অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়া বন্ধে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩-এর ৭ ধারায় বলা আছে, ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বন্দর বা স্থান দিয়েই বহির্গমন করতে হবে।’ আর আইনের ৩৪ ধারায় বলা আছে, ‘কোনো ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট অন্য কোনো ব্যক্তিকে বহির্গমনের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থান দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বহির্গমনের ব্যবস্থা করলে বা সহায়তা করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এ জন্য তিনি অনধিক দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আইনটির ব্যাখ্যা করে বলেন, এই আইন অনুযায়ী সরকার শুধু বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে বহির্গমনের স্থান হিসেবে উল্লেখ করেছে। কাজেই কেউ যদি সমুদ্রপথে লোক পাঠায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই আইনের অধীনে একটি মামলাও করেনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানব পাচার আর বিদেশে চাকরি নিয়ে বৈধভাবে যাওয়া—দুটো দুই জিনিস। আমরা শুধু বৈধভাবে যারা যায়, তাদের বিষয়টি দেখভাল করি। পাচারের বিষয়টি দেখার কাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত কয়েক বছরে পাচার বন্ধে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল প্রথম আলোকে জানানো হয়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ পাঁচ মাসে ৬৬ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার এবং ৩৫৮ জনকে পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেছে। অন্যদিকে কোস্টগার্ডের বিরাট সাফল্য হচ্ছে, ৭ হাজার ৩৯২টি অভিযান পরিচালনা করে ২২৩ জনকে আটক। আর বিজিবি গত চার মাসে ৮২৩ জনকে পাচারকারীর হাত থেকে উদ্ধার করেছে।
No comments