প্রাণী রক্ষার সঙ্গে শিক্ষাও হচ্ছে
জলারবন রাতারগুল থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা ইগলের চিকিৎসা চলছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিকে l ফাইল ছবি |
সিলেটের
জলারবন রাতারগুলের একটি ঝোপে বসে ছটফট করছিল ইগল। সকালবেলা বনে মহিষ
খুঁজতে গিয়ে ইগলের এ অবস্থা দেখেন রাতারগুল গ্রামের ইব্রাহিম আলী। উড়ে
যাচ্ছিল না দেখে খটকা লাগে তাঁর। আগলে ধরে দেখেন, ইগলের ডানার একাংশে গভীর
ক্ষত। রোগে আক্রান্ত কি না-এ আশঙ্কায় ইব্রাহিম ইগলকে নিয়ে আসেন সিলেট
নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক
পাচ্ছিলেন না। শেষে ছুটলেন নগরের টিলাগড় এলাকায় সিলেট কৃষি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিকে। সেখানেই চলে চিকিৎসা।
এভাবে শুধু একটি ইগল নয়, সিলেট অঞ্চলের সংরক্ষিত বনসহ বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শেখার কাজও হচ্ছে। ভেটেরিনারি ক্লিনিক ঘিরে গড়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের প্রাণী অধিকারবিষয়ক সংগঠন ‘প্রাধিকার’। এই সংগঠন আর ক্লিনিকের তৎপরতায় গত প্রায় এক বছরে বিরল প্রাণীরও চিকিৎসা হয়েছে। ১০ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্ত ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকায় ধরা পড়েছিল মায়া হরিণ। কমলগঞ্জের রাজকান্দি বন বিটের তত্ত্বাবধানে মায়া হরিণেরও চিকিৎসা হয়েছে। সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে বনে।
ভেটেরিনারি ক্লিনিকের শুরু সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যখন কলেজ ছিল, তখন থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিকের কাঠামো পরিবর্তন হয়। অনেকটা প্রাণী হাসপাতালের মতো জরুরি চিকিৎসাসেবার সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের অধীন এই ক্লিনিকের কার্যক্রমের প্রসার ঘটে একটি সংগঠনের সাংগঠনিক তৎপরতায়। সংগঠনটি হচ্ছে প্রাধিকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাণীদের অধিকার-সচেতনতায় সাংগঠনিকভাবে তৎপর হওয়ায় সিলেট নগর থেকে শুরু করে আশপাশের চা-বাগান ও বনাঞ্চলে অজগর, হনুমান, লজ্জাবতী বানর, বাঘডাসা, বনবিড়াল, মেছো বাঘসহ বিরল পাখির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসারও ব্যবস্থা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক পরিচালক মতিয়ার রহমান হাওলাদারের তত্ত্বাবধানে ভেটেরিনারি চিকিৎসক মতিউর রহমান ও মীর মোহাম্মদ ইকবালের তত্ত্বাবধানে ক্লিনিক পরিচালিত হলেও বড় প্রচারক হয়ে উঠেছে প্রাধিকার। সংগঠনের সভাপতি আকাশ খাশনবীশ জানান, ২০১২ সালের ৫ জুন সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাংগঠনিক তৎপরতায় বড় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শতাধিক প্রাণীর প্রাণ রক্ষায় ভূমিকা রেখেছে ক্লিনিক। পাশাপাশি প্রাণীদের প্রাণ রক্ষার মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষার কাজটিও হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, প্রাণীদের প্রাণ রক্ষা ছাড়াও প্রাণীর প্রতি আঘাতজনিত তথ্যও উদ্ঘাটিত হয় ক্লিনিকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানালেন, কমলগঞ্জ থেকে মায়া হরিণ ধরা পড়ার পর বন বিভাগের ধারণা ছিল, শিকারিদের আঘাতে সেটি আহত হয়েছে। ক্লিনিকে চিহ্নিত হয় শিকারি নয়, সীমান্তে কাঁটাতারের আঘাতে সেটি আহত হয়েছে।
পরিবেশ ও প্রাণী নিয়ে কর্মতৎপর সিলেটের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিরসন্তান বাংলাদেশ’-এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কবীর ক্লিনিকে নিয়মিত যাতায়াত করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতারগুল বন থেকে উদ্ধার করা ইগলের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আশরাফুল বলেন, ‘আহত ইগল নিয়ে একজন ইব্রাহিমের গ্রাম থেকে শহরে ছুটে আসায় আমিও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলাম। ইগলটির চিকিৎসা নিতে গিয়ে শেখাও হয়েছে, সেটি হচ্ছে সংরক্ষিত রাতারগুল বনে শুধু বেড়াতে যাওয়া মানুষ নয়, বন্দুকধারী শিকারিদের তৎপরতাও রয়েছে।’
শিকারির গুলি খেয়ে আহত ইগলের ত্রাতা ইব্রাহিম আলী (৩৫) পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক। রাতারগুল গ্রামেই তাঁর বাড়ি। ইব্রাহিম বলেন, ‘ইগলের ডানায় ক্ষতটি দেখে কোনো রোগ কি না-এমন আশঙ্কা হলে পরে মহিষ খোঁজা ফেলে রেখে ওই ইগলের প্রাণ রক্ষায় ব্যস্ত হয়েছিলাম। ক্লিনিকে আসার পর ইগল সম্পর্কেও জানা হয়েছে।’
এভাবে শুধু একটি ইগল নয়, সিলেট অঞ্চলের সংরক্ষিত বনসহ বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শেখার কাজও হচ্ছে। ভেটেরিনারি ক্লিনিক ঘিরে গড়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের প্রাণী অধিকারবিষয়ক সংগঠন ‘প্রাধিকার’। এই সংগঠন আর ক্লিনিকের তৎপরতায় গত প্রায় এক বছরে বিরল প্রাণীরও চিকিৎসা হয়েছে। ১০ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্ত ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকায় ধরা পড়েছিল মায়া হরিণ। কমলগঞ্জের রাজকান্দি বন বিটের তত্ত্বাবধানে মায়া হরিণেরও চিকিৎসা হয়েছে। সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে বনে।
ভেটেরিনারি ক্লিনিকের শুরু সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যখন কলেজ ছিল, তখন থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিকের কাঠামো পরিবর্তন হয়। অনেকটা প্রাণী হাসপাতালের মতো জরুরি চিকিৎসাসেবার সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের অধীন এই ক্লিনিকের কার্যক্রমের প্রসার ঘটে একটি সংগঠনের সাংগঠনিক তৎপরতায়। সংগঠনটি হচ্ছে প্রাধিকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাণীদের অধিকার-সচেতনতায় সাংগঠনিকভাবে তৎপর হওয়ায় সিলেট নগর থেকে শুরু করে আশপাশের চা-বাগান ও বনাঞ্চলে অজগর, হনুমান, লজ্জাবতী বানর, বাঘডাসা, বনবিড়াল, মেছো বাঘসহ বিরল পাখির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসারও ব্যবস্থা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক পরিচালক মতিয়ার রহমান হাওলাদারের তত্ত্বাবধানে ভেটেরিনারি চিকিৎসক মতিউর রহমান ও মীর মোহাম্মদ ইকবালের তত্ত্বাবধানে ক্লিনিক পরিচালিত হলেও বড় প্রচারক হয়ে উঠেছে প্রাধিকার। সংগঠনের সভাপতি আকাশ খাশনবীশ জানান, ২০১২ সালের ৫ জুন সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাংগঠনিক তৎপরতায় বড় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শতাধিক প্রাণীর প্রাণ রক্ষায় ভূমিকা রেখেছে ক্লিনিক। পাশাপাশি প্রাণীদের প্রাণ রক্ষার মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষার কাজটিও হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, প্রাণীদের প্রাণ রক্ষা ছাড়াও প্রাণীর প্রতি আঘাতজনিত তথ্যও উদ্ঘাটিত হয় ক্লিনিকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানালেন, কমলগঞ্জ থেকে মায়া হরিণ ধরা পড়ার পর বন বিভাগের ধারণা ছিল, শিকারিদের আঘাতে সেটি আহত হয়েছে। ক্লিনিকে চিহ্নিত হয় শিকারি নয়, সীমান্তে কাঁটাতারের আঘাতে সেটি আহত হয়েছে।
পরিবেশ ও প্রাণী নিয়ে কর্মতৎপর সিলেটের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিরসন্তান বাংলাদেশ’-এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কবীর ক্লিনিকে নিয়মিত যাতায়াত করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতারগুল বন থেকে উদ্ধার করা ইগলের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আশরাফুল বলেন, ‘আহত ইগল নিয়ে একজন ইব্রাহিমের গ্রাম থেকে শহরে ছুটে আসায় আমিও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলাম। ইগলটির চিকিৎসা নিতে গিয়ে শেখাও হয়েছে, সেটি হচ্ছে সংরক্ষিত রাতারগুল বনে শুধু বেড়াতে যাওয়া মানুষ নয়, বন্দুকধারী শিকারিদের তৎপরতাও রয়েছে।’
শিকারির গুলি খেয়ে আহত ইগলের ত্রাতা ইব্রাহিম আলী (৩৫) পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক। রাতারগুল গ্রামেই তাঁর বাড়ি। ইব্রাহিম বলেন, ‘ইগলের ডানায় ক্ষতটি দেখে কোনো রোগ কি না-এমন আশঙ্কা হলে পরে মহিষ খোঁজা ফেলে রেখে ওই ইগলের প্রাণ রক্ষায় ব্যস্ত হয়েছিলাম। ক্লিনিকে আসার পর ইগল সম্পর্কেও জানা হয়েছে।’
No comments