রত্নার ক্ষতিপূরণের টাকায় কুনজর স্বামীর by কমল জোহা খান
এই বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে থাকেন রানা প্লাজার ভবন ধসে আহত রত্না। ছবি: কমল জোহা খান |
সাভারে
রানা প্লাজার ভবন ধসে রত্না আক্তারের কোমরের হাড় ভেঙেছে বছর দুই আগে।
স্বামী বাদশা মিয়া বছর দেড়েক হলো রত্না ও তাঁর ছেলেকে ফেলে চলে গেছেন।
তবে স্ত্রীর হাড় ভেঙেছে—এই কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে তোলা অর্ধলাখ
টাকা নিজের পকেট ভরেছেন তিনি। এখন স্ত্রী যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, তাতে
পড়েছে তাঁর কুনজর।
রত্না বললেন, ‘সাহায্যের কথা বইল্যা স্বামী টাকা তুইল্যা নেশা করা শুরু করে। হাসপাতাল থাইক্যা বাসায় আইলে সে আমারে ছাইড়া চইলা যায়। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা দেওনের লাইগ্যা হুমকি দেওন ছাড়ে নাই।’
ভবনধসের পর রত্না প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পান। মাস দুয়েক আগে রানা প্লাজা ক্লেইম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে দুই লাখ টাকা পান তিনি। বাকি চার লাখ ৮০ হাজার টাকা কয়েক মাসের মধ্যে হাতে পাবেন। শুধু স্বামীর হাত থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা রক্ষা করতে সাভার ছেড়ে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে চলে যাওয়া চিন্তা করছেন বলে সম্প্রতি প্রথম আলোকে জানান রত্না।
তবে গ্রামে গিয়েই বা কীভাবে টাকা আগলে রাখবেন—সেই চিন্তাও রত্নাকে ভাবিয়ে তুলছে। সাভারের বাসায় ২১ এপ্রিল রত্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কোনো ভাই নাই। আমরা পাঁচ বোন। ইচ্ছা আছে গ্রামে গিয়া জমি কিনমু। কিন্তু কেনার আগে টাকা কই রাখমু? ’
ছোট্ট একটি টিনের ঘর। খুব বেশি হলে দৈর্ঘ্যে আট ফুট আর চওড়া চার ফুট। ভাড়া মাসে ১ হাজার ৬০০ টাকা। সাভারের শাহীবাগের এই ঘর ভাড়া জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছেন রত্না আক্তার। বর্তমানে ক্ষতিপূরণের টাকাতেই পেট চলে রত্না ও তাঁর ছয় বছরের ছেলে শিমুলের।
রত্না জানান, ক্ষতিপূরণের এই টাকাই তাঁর ও ছেলের ভবিষ্যৎ। শুধু পেট নয়, ছেলের পড়াশোনার খরচও বের করে আনতে হবে এই সামান্য টাকার ভেতর থেকেই। তিনি বলেন, ‘এখন দুই লাখ টাকা ভাইংগা খাইতাছি। ছেলে স্কুলে গিয়া কিছু খাইতে চায়। তাও দিতে পারি না।’
রানা প্লাজার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ২৫ বছর বয়সী রত্না এখন চলাফেরা করেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। কাজ করা তো দূরে থাক, আধ ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে থাকলেই যন্ত্রণা জেঁকে বসে তাঁর শরীরজুড়ে। জানালেন, রানা প্লাজা ভবনধসের আগে তাঁর সংসার ভালোই চলছিল। স্বামীও ভালো ছিলেন। তবে ভবনধসের পর স্বামী বদলে যেতে থাকেন। স্বামী এখনো বিয়ে করেননি। তবে তিনি আলাদা থাকেন। তাঁর বা ছেলের কোনো খরচই দেন না।
রানা প্লাজার আট তলায় নিউ স্টাইল নামের একটি পোশাক কারখানার সুইং অপারেটর ছিলেন রত্না। মাসে আয় ছিল সাড়ে নয় হাজার টাকা। দিনমজুরের কাজ করা স্বামী বাদশা মিয়া ও তাঁর আয়ে দিন ভালোই কাটছিল। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের পরই পটপরিবর্তনের শুরু।
রত্না জানালেন, তাঁর চিকিৎসা করিয়েছে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। প্রথমে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে চলে চিকিৎসা। পরে তিন মাস থাকতে হয়েছে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানেই রত্নার দুই পা ও কোমরে অস্ত্রোপচার হয়।
রত্না অভিযোগ করলেন, তাঁর স্বামী ঘরের টেলিভিশন সেটটিও নিয়ে গেছেন। এসব কাজে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা মদদ দিচ্ছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাদশা মিয়া। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি নেশা করি না। রত্না আমার লগে বেঈমানি করছে। টাকা পাইয়া সে নিজেই পাল্টায় গেছে।’
রত্না বললেন, ‘সাহায্যের কথা বইল্যা স্বামী টাকা তুইল্যা নেশা করা শুরু করে। হাসপাতাল থাইক্যা বাসায় আইলে সে আমারে ছাইড়া চইলা যায়। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা দেওনের লাইগ্যা হুমকি দেওন ছাড়ে নাই।’
ভবনধসের পর রত্না প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পান। মাস দুয়েক আগে রানা প্লাজা ক্লেইম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে দুই লাখ টাকা পান তিনি। বাকি চার লাখ ৮০ হাজার টাকা কয়েক মাসের মধ্যে হাতে পাবেন। শুধু স্বামীর হাত থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা রক্ষা করতে সাভার ছেড়ে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে চলে যাওয়া চিন্তা করছেন বলে সম্প্রতি প্রথম আলোকে জানান রত্না।
তবে গ্রামে গিয়েই বা কীভাবে টাকা আগলে রাখবেন—সেই চিন্তাও রত্নাকে ভাবিয়ে তুলছে। সাভারের বাসায় ২১ এপ্রিল রত্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কোনো ভাই নাই। আমরা পাঁচ বোন। ইচ্ছা আছে গ্রামে গিয়া জমি কিনমু। কিন্তু কেনার আগে টাকা কই রাখমু? ’
ছোট্ট একটি টিনের ঘর। খুব বেশি হলে দৈর্ঘ্যে আট ফুট আর চওড়া চার ফুট। ভাড়া মাসে ১ হাজার ৬০০ টাকা। সাভারের শাহীবাগের এই ঘর ভাড়া জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছেন রত্না আক্তার। বর্তমানে ক্ষতিপূরণের টাকাতেই পেট চলে রত্না ও তাঁর ছয় বছরের ছেলে শিমুলের।
রত্না জানান, ক্ষতিপূরণের এই টাকাই তাঁর ও ছেলের ভবিষ্যৎ। শুধু পেট নয়, ছেলের পড়াশোনার খরচও বের করে আনতে হবে এই সামান্য টাকার ভেতর থেকেই। তিনি বলেন, ‘এখন দুই লাখ টাকা ভাইংগা খাইতাছি। ছেলে স্কুলে গিয়া কিছু খাইতে চায়। তাও দিতে পারি না।’
রানা প্লাজার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ২৫ বছর বয়সী রত্না এখন চলাফেরা করেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। কাজ করা তো দূরে থাক, আধ ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে থাকলেই যন্ত্রণা জেঁকে বসে তাঁর শরীরজুড়ে। জানালেন, রানা প্লাজা ভবনধসের আগে তাঁর সংসার ভালোই চলছিল। স্বামীও ভালো ছিলেন। তবে ভবনধসের পর স্বামী বদলে যেতে থাকেন। স্বামী এখনো বিয়ে করেননি। তবে তিনি আলাদা থাকেন। তাঁর বা ছেলের কোনো খরচই দেন না।
রানা প্লাজার আট তলায় নিউ স্টাইল নামের একটি পোশাক কারখানার সুইং অপারেটর ছিলেন রত্না। মাসে আয় ছিল সাড়ে নয় হাজার টাকা। দিনমজুরের কাজ করা স্বামী বাদশা মিয়া ও তাঁর আয়ে দিন ভালোই কাটছিল। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের পরই পটপরিবর্তনের শুরু।
রত্না জানালেন, তাঁর চিকিৎসা করিয়েছে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। প্রথমে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে চলে চিকিৎসা। পরে তিন মাস থাকতে হয়েছে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানেই রত্নার দুই পা ও কোমরে অস্ত্রোপচার হয়।
রত্না অভিযোগ করলেন, তাঁর স্বামী ঘরের টেলিভিশন সেটটিও নিয়ে গেছেন। এসব কাজে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা মদদ দিচ্ছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাদশা মিয়া। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি নেশা করি না। রত্না আমার লগে বেঈমানি করছে। টাকা পাইয়া সে নিজেই পাল্টায় গেছে।’
No comments