রাঙ্গামাটিতে ফের কারফিউ by শংকর হোড়
নয়
ঘণ্টা বিরতির পর আবার গতকাল বিকাল ৫টা থেকে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত
রাঙ্গামাটি শহরে কারফিউ জারি করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা
পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় জেলা প্রশাসন পুনরায় রাঙ্গামাটি শহরে কারফিউ
জারি করলো। এর আগে রোববার বিকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ি বাঙালির
সংঘর্ষের পর শহরে রাত সাড়ে ৭টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা
করেছিল প্রশাসন। গতকাল সকাল ১১টা থেকে আবার রাঙামাটি শহরে কারফিউ জারি
করলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বিকাল
৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়। পুলিশ জানায়, কারফিউ চলাকালে রাতে শহরের
বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার ও অন্তত ৮০ রাউন্ড গুলি করেছে
পুলিশ। তবে এসব গুলিতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে শহরের
বিভিন্ন স্থানে বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশকে টহল দিতে দেখা
গেছে। এদের সঙ্গে গতকাল সকাল থেকে র্যাব-৭ এর পাঁচটি গাড়ি শহরে টহল দিতে
দেখা যায়। রাঙ্গামাটির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন,
সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এড়াতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।
বিকাল ৫টা থেকে রাঙ্গামাটি শহরে পুনরায় কারফিউ বলবৎ থাকবে। আজ সকাল সাতটায়
কারফিউ প্রত্যাহার করা হলেও ১৪৪ ধারা বজায় থাকবে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক
মো. শামসুল আরেফিন জানান, অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে রাঙ্গামাটি শহরে পুনরায়
কারফিউ জারি করা হয়েছে। এদিকে রোববার রাতে আকস্মিক কারফিউ জারির পর সাধারণ
লোকজন অনেকেই বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে। গতকাল সকাল ৮টার পর থেকে কারফিউ না
থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকেই ঘর থেকে বের হতে দেননি। ব্যবসায়ীদের
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়। পরে সকাল সোয়া ১০টায় রাঙ্গামাটি শহরে
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে পুুলিশ
মাইকিং করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পৌনে ১২টায় পুলিশ পুনরায় শহরে মাইকিং করে
বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিলের খবর প্রচার করে। কিন্তু এরপরও সাধারণ
জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করায় রাস্তাঘাট সারা দিনই ফাঁকা ছিল। কয়েক জনকে
মোটরসাইকেল নিয়ে জরুরি কাজ সারতে দেখা গেলেও রাঙ্গামাটি শহর কার্যত ছিল
একেবারেই নিষ্প্রাণ। অন্যদিকে ২০ দলের ডাকে সারা দেশে অবরোধ চললেও কারফিউর
আতঙ্কে নেতাকর্মীদেরও আর পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। বিকাল সাড়ে তিনটায় জেলা
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকাল ৫টার পর থেকে আজ সাতটা পর্যন্ত কারফিউ জারির খবর
মাইকিং করা হয়। অন্যদিকে শহরের বনরূপা ও ভেদভেদী এলাকায় রোববার সন্ধ্যায়
দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর ওই এলাকার সাধারণ মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পাহাড়ি ও বাঙালি এলাকায় হামলা প্রতিহত করতে পাহারা দেয় এলাকাবাসী। তবে
রোববার রাতে কারফিউ জারির পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা অনেকটা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে
আসে। এ আইনশৃঙ্খলা স্থির রাখার স্বার্থে গতকাল বিকাল ৫টা থেকে পুনরায়
কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।
No comments