ছাত্ররাজনীতি এখন ব্যক্তি-গোষ্ঠীনির্ভর হয়ে পড়ছে -সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি
(ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৯ তম সমাবর্তনা অনুষ্ঠানে শিক্ষাথীদের উল্লাস। ।
উত্তীর্ণ শিক্ষাথীদের হাতে আজ তুলে দেওয়া হয়েছে সনদ। ছবিটি ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভার্স্কয়ের সামনে থেকে তোলা হয়েছে। ছবি: মনিরুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তনে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবর্তন পোশাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত) ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ছাত্ররাজনীতি
এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে আদর্শের পরিবর্তে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থনির্ভর
হয়ে পড়ছে। এ থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্ররাজনীতিকে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে
আদর্শিক ও গণমুখী করে তুলতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। আজ মঙ্গলবার
বেলা পৌনে দুইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির
বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জন্ম
দিয়েছে অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের। মূলত ছাত্ররাজনীতির পথ বেয়েই তাঁদের
উত্থান ঘটেছে। নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে তা হতে
হবে আদর্শিক ও জনকল্যাণমুখী। নিজেদের সময়ের ছাত্ররাজনীতির কথা বলতে গিয়ে
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ষাটের দশকে আমরা যারা ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম,
তাদের সবারই আদর্শ ছিল। সেই আদর্শ হলো দেশ ও জনগণের কল্যাণ সাধন। সেখানে
ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের কোনো স্থান ছিল না।’ তিনি সমাবর্তনে অংশ
নেওয়া শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে ও মননে দেশের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ
করতে বলেন। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বই পড়া, নিজ এলাকায় পাঠাগার
তৈরি, দরিদ্র শিশুদের সহায়তা, রক্তদান ও বস্ত্রদানসহ মানবিক, সামজিক ও
উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এর আগে বেলা ১১টা ৫৫
মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আচার্য কার্জন হলের সামনে
থেকে শোভাযাত্রা করে সমাবর্তনস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার
মাঠে যান। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বেলা
একটা ৫১ মিনিটে আবার জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সমাবর্তন
অনুষ্ঠানে জেনেভাভিত্তিক মেধাস্বত্ব সংগঠন ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল
প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের (ডব্লিওআইপিও) মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গ্যারিকে
সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেওয়া হয়। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা এখনো একুশ
শতকের সব পর্যায়ের শিক্ষাকে বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে পারিনি। আগামী ৫০ বছরে
না হোক, অন্তত আগামী ২০ বছরে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী জাতীয় এবং
কী পরিমাণ বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রয়োজন, সে রূপরেখা তৈরি করে তা
বাস্তবায়ন আমাদের শিক্ষা পরিকল্পনায় এখনো প্রাধিকার লাভ করেনি।
শিক্ষার্থীদের উপদেশ দিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘তোমরা কেবল ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করো না, তোমাদের জাগ্রত সত্তায় এ বোধ যেন
সব সময় সজাগ থাকে যে, তোমরা এ দেশের সম্পদ। জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি তোমাদের
প্রতিজ্ঞা।’
সমাবর্তনে ৩৫ জনকে স্বর্ণপদক, ৪২ জনকে পিএইডি, ২০ জনকে এমফিল, ৫৬৫ জনকে স্নাতকোত্তর এবং তিন হাজার ১৬০ জনকে স্নাতকসহ মোট ছয় হাজার ১৫৭ জনকে বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
সমাবর্তনে ৩৫ জনকে স্বর্ণপদক, ৪২ জনকে পিএইডি, ২০ জনকে এমফিল, ৫৬৫ জনকে স্নাতকোত্তর এবং তিন হাজার ১৬০ জনকে স্নাতকসহ মোট ছয় হাজার ১৫৭ জনকে বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
No comments