ট্রেন তো আসেই না, ছাড়বে কীভাবে? by কমল জোহা খান
(ছবি:১- অবরোধের কারণে রেললাইন উপড়ে ফেলা, ফিশপ্লেট তুলে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণে দূরপাল্লার ট্রেনের শিডিউল অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। ফলে স্টেশনে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কখন আসবে তারও সঠিক জবাব দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ছবিটি আজ কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তোলা। ছবি: মনিরুল আলম ছবি:২- অবরোধের কারণে রেললাইন উপড়ে ফেলা, ফিশপ্লেট তুলে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণে দূরপাল্লার ট্রেনের শিডিউল অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। ফলে স্টেশনে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কখন আসবে তারও সঠিক জবাব দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ছবিটি আজ কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তোলা। ছবি: মনিরুল আলম) ‘ট্রেন
তো আসেই না, ছাড়বে কীভাবে?’ রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টানা ১৩
ঘণ্টা অপেক্ষার পর আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ কথা বলেন উত্তরাঞ্চলগামী
লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রী মনতাজুল ইসলাম। রংপুর যাওয়ার জন্য মনতাজুল
গতকাল সোমবার রাত নয়টায় প্ল্যাটফরমে এসেছেন। ট্রেনটি গতকাল রাতেই ছাড়ার
কথা ছিল। কিন্তু আজ দুপুর ১২টা পর্যন্তও সেই ট্রেনের দেখা মেলেনি। কখন
আসবে, বা আদৌ আসবে কি না, তাও জানেন না।
মনতাজুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসে উঠতে ভয় পাচ্ছি। বাসে কখন পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেবে তার ঠিক নেই। তা ছাড়া বাস চলাচলও তো অনিয়মিত। তাই ট্রেনই ভরসা। রংপুর থেকে কুড়িগ্রামে যাব নিজ বাড়িতে। তাই সঙ্গে থাকা ব্যাগ, পুঁটলাপাটলি নিয়ে বসেই আছি।’
মনতাজুল ইসলামের মতো একই অবস্থা প্রায় প্রত্যেক যাত্রীর। সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল সামনে হয়তো ঈদ। ঘরমুখী মানুষের ভিড়। আসল কারণ হলো, অবরোধে ট্রেনের গতি কমে যাওয়ার কারণে দূরপাল্লার ট্রেনগুলো স্টেশনে পৌঁছাতেই দেরি করে। কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কোনো কোনোটা ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে আসছে। আগে রেলের গতি ছিল ব্রডগেজে সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার, অঅর মিটার গ্রেজে ৭২ কিলোমিটার। এখন সেটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো ট্রেন আদৌ আসবে কি না, তাও যাত্রীরা জানেন না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও যাত্রীদের তেমন কোনো সন্তোষজনক উত্তর জানাতে পারছেন না।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রংপুর এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল সকাল নয়টায়। এখন সম্ভাব্য ট্রেন ছাড়ার সময় আজ রাত নয়টা। ধূমকেতু এক্সপ্রেস ভোর ছয়টায় ছাড়ার কথা ছিল। এখন বেলা পৌনে দুইটার দিকে ছাড়তে পারে। রাজশাহী এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, পারাবতসহ সব ট্রেনেই চলছে শিডিউল বিপর্যয়। তবে ঢাকার আশপাশে চলাচলকারী ট্রেন আসতে বা যেতে খুব বেশি দেরি হচ্ছে না।
মাহবুবুল আলম মেয়ে ও নাতনিদের নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় যাবেন। আজ ভোর ছয়টায় ট্রেন ছাড়ার কথা। কিন্তু ট্রেন নেই। একই অবস্থা খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী নাজমুস সাকিবের। ভোর থেকে তিনি প্ল্যাটফরমে বসে আছেন। ট্রেন যে কোথায় আছে তাও জানেন না। নাজমুস সাকিব শুধু বললেন, ‘জরুরি কাজ আছে। বাড়ি যেতেই হবে।’
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেন চলাচল বন্ধ নেই। সব ট্রেনই চলছে। তবে অবরোধের কারণে দূরপাল্লার ট্রেনের শিডিউলে বিঘ্ন ঘটেছে। অবরোধের কারণে রেললাইন উপড়ে ফেলা, ফিশপ্লেট তুলে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণেই বিঘ্ন ঘটছে। উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোর ক্ষেত্রে অবরোধ, কুয়াশা এবং ট্রেনে যাত্রীর চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় গতি কমাতেই হচ্ছে।’
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অনেক যাত্রী টিকিট ফেরত দিচ্ছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এখন টিকিট ফেরত দিলেও যাত্রীকে পুরো টাকাই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। টাকা কেটে রাখা হচ্ছে না।
রেলপথ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যথাসাধ্য চেষ্টা এবং সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানালেন ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ। তিনি জানালেন, রেলওয়ের নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় সশস্ত্র এবং সাদা পোশাকে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। আজ থেকে আট হাজার আনসারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রেললাইনে কোনো ধরনের নাশকতা হচ্ছে কি না—তা তদারকের জন্য শুধু ইঞ্জিন চালিয়েও টহল দেওয়া হচ্ছে।
মনতাজুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসে উঠতে ভয় পাচ্ছি। বাসে কখন পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেবে তার ঠিক নেই। তা ছাড়া বাস চলাচলও তো অনিয়মিত। তাই ট্রেনই ভরসা। রংপুর থেকে কুড়িগ্রামে যাব নিজ বাড়িতে। তাই সঙ্গে থাকা ব্যাগ, পুঁটলাপাটলি নিয়ে বসেই আছি।’
মনতাজুল ইসলামের মতো একই অবস্থা প্রায় প্রত্যেক যাত্রীর। সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল সামনে হয়তো ঈদ। ঘরমুখী মানুষের ভিড়। আসল কারণ হলো, অবরোধে ট্রেনের গতি কমে যাওয়ার কারণে দূরপাল্লার ট্রেনগুলো স্টেশনে পৌঁছাতেই দেরি করে। কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কোনো কোনোটা ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে আসছে। আগে রেলের গতি ছিল ব্রডগেজে সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার, অঅর মিটার গ্রেজে ৭২ কিলোমিটার। এখন সেটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো ট্রেন আদৌ আসবে কি না, তাও যাত্রীরা জানেন না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও যাত্রীদের তেমন কোনো সন্তোষজনক উত্তর জানাতে পারছেন না।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রংপুর এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল সকাল নয়টায়। এখন সম্ভাব্য ট্রেন ছাড়ার সময় আজ রাত নয়টা। ধূমকেতু এক্সপ্রেস ভোর ছয়টায় ছাড়ার কথা ছিল। এখন বেলা পৌনে দুইটার দিকে ছাড়তে পারে। রাজশাহী এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, পারাবতসহ সব ট্রেনেই চলছে শিডিউল বিপর্যয়। তবে ঢাকার আশপাশে চলাচলকারী ট্রেন আসতে বা যেতে খুব বেশি দেরি হচ্ছে না।
মাহবুবুল আলম মেয়ে ও নাতনিদের নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় যাবেন। আজ ভোর ছয়টায় ট্রেন ছাড়ার কথা। কিন্তু ট্রেন নেই। একই অবস্থা খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী নাজমুস সাকিবের। ভোর থেকে তিনি প্ল্যাটফরমে বসে আছেন। ট্রেন যে কোথায় আছে তাও জানেন না। নাজমুস সাকিব শুধু বললেন, ‘জরুরি কাজ আছে। বাড়ি যেতেই হবে।’
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেন চলাচল বন্ধ নেই। সব ট্রেনই চলছে। তবে অবরোধের কারণে দূরপাল্লার ট্রেনের শিডিউলে বিঘ্ন ঘটেছে। অবরোধের কারণে রেললাইন উপড়ে ফেলা, ফিশপ্লেট তুলে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণেই বিঘ্ন ঘটছে। উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোর ক্ষেত্রে অবরোধ, কুয়াশা এবং ট্রেনে যাত্রীর চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় গতি কমাতেই হচ্ছে।’
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অনেক যাত্রী টিকিট ফেরত দিচ্ছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এখন টিকিট ফেরত দিলেও যাত্রীকে পুরো টাকাই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। টাকা কেটে রাখা হচ্ছে না।
রেলপথ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যথাসাধ্য চেষ্টা এবং সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানালেন ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ। তিনি জানালেন, রেলওয়ের নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় সশস্ত্র এবং সাদা পোশাকে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। আজ থেকে আট হাজার আনসারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রেললাইনে কোনো ধরনের নাশকতা হচ্ছে কি না—তা তদারকের জন্য শুধু ইঞ্জিন চালিয়েও টহল দেওয়া হচ্ছে।
No comments