বিচার বিভাগের সংসদীয় তদারকি! by কামাল আহমেদ
একজন নারী প্রথমবারের মতো প্রধান
বিচারপতির আসনে আসীন হওয়ায় দেশজুড়ে যে ধরনের উচ্ছ্বাস তৈরি হওয়ার কথা, তার
ঘোর তখনো কাটেনি। বছর না ঘুরতেই ওই প্রধান বিচারপতি এমন দুটি সিদ্ধান্ত
দিলেন, যা সরকারের রাজনৈতিক পরিকল্পনা রূপায়ণে বাধার সৃষ্টি করল। ক্ষুব্ধ
সরকারের রোষানলে পড়লেন সেই প্রধান বিচারপতি। শুরু হলো আদালতের সঙ্গে
ক্ষমতাসীনদের টানাপোড়েন। সংসদে উত্থাপিত হলো প্রধান বিচারপতির অভিশংসন
প্রস্তাব, যে সংসদে ক্ষমতাসীন দলের রয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দুর্নীতির। তিনি নাকি বিদেশে টাকা পাচার
করে ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন।
কেউ বিশ্বাস করছেন না ওই অভিযোগ। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের নেতারা সোচ্চার হলেন। সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে সংসদের অভিশংসন প্রস্তাবকে অবৈধ বলে রায় দিলেন। কিন্তু, সংসদ অভিশংসনের উদ্যোগ থেকে পিছু হটতে রাজি হলো না। বহির্বিশ্বে রীতিমতো বিস্ময়। কমনওয়েলথ, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা, বিচারক ও আইনজীবীদের বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলো দেশটির বিপন্ন বিচার বিভাগের পাশে দাঁড়াল, সরকারের প্রতি যত ধরনের চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব, তার সবই করল। কিন্তু, সংসদ পিছপা হয় না। দেশটির রাজনীতি যে পরিবারের নিয়ন্ত্রণে, সেই পরিবারপ্রধান তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। সুতরাং, সংসদে প্রধান বিচারপতির অভিশংসন পালা সাঙ্গ হলো এবং রাষ্ট্রপতি তাঁকে পদচ্যুত করলেন। যেসব বিচারপতি প্রধান বিচারপতির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের অনেককেই সরে যেতে হয়। রাষ্ট্রপতি নতুন একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন এবং নতুন চেহারায় পুনর্গঠিত হয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
ওপরের এই বর্ণনার একটুও কিন্তু কল্পনা নয়। এখানে কোনো অতিরঞ্জনও নেই। বরং, শুধু ঘটনাক্রম তুলে ধরা হয়েছে, ঘটনাগুলোর বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়নি। যে দেশটিতে এটা ঘটেছে, সেটা আমাদের প্রতিবেশী এবং বঙ্গোপসাগরেরই একটি দ্বীপরাষ্ট্র—শ্রীলঙ্কা। এগুলোর সবই ঘটেছে ২০১২ সালের শেষ ও ২০১৩ সালের গোড়ার দিকে। ওই প্রধান বিচারপতির নাম শিরানি বন্দরনায়েক, যিনি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে আদালতের সর্বোচ্চ পদে আসীন হন। যে পরিবারটি এখন দেশটির রাজনীতিতে প্রায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেটি হচ্ছে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের পরিবার। তাঁর আপন ভাই দেশটির সবচেয়ে প্রতাপশালী দপ্তর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদের অধিকারী।
দেশটিতে মন্ত্রী-সাংসদদের পদ ধরে রাখতে কী ধরনের আনুগত্য প্রয়োজন হয়, তার একটি নমুনা ২০১৩ সালের একটি পত্রিকা সাহস করে প্রকাশ করে দিয়েছিল৷ যাতে দেখা যায় যে দেশটির পর্যটনমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের পায়ে মাথা ছোঁয়াচ্ছেন। শিরানি বন্দরনায়েক যেসব কারণে সরকারের রোষানলে পড়েন, তার মধ্যে দুটো খুবই উল্লেখযোগ্য। স্বায়ত্তশাসিত আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল কেন্দ্রীয় উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের একটি উদ্যোগ তাঁর বিচারিক সিদ্ধান্তের কারণে বিলম্বিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন উন্নয়নমন্ত্রী, যিনি আবার প্রেসিডেন্টের সহোদরদের একজন। তারও আগে, প্রদেশগুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ফিরিয়ে নেওয়ার একটি আইনকে সুপ্রিম কোর্ট আটকে দিয়ে সিদ্ধান্ত দেন যে এসব ক্ষমতা প্রত্যাবাসনে প্রাদেশিক পরিষদগুলোর অনুমোদন লাগবে (বিবিসি, ৫ নভেম্বর ২০১২)।
একসময় ধারণা চালু ছিল যে শ্রীলঙ্কা হচ্ছে এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও সংসদীয় পদ্ধতির মধ্যে আদর্শ ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। কিন্তু, সময়ের ব্যবধানে দেশটির অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাঁকে পরিবারতন্ত্রের এক নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য করা ছাড়া বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো তুলনা করা এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। আমার লক্ষ্য হলো, শুধু সেখানকার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু শেখার আছে কি না, সেই প্রশ্নটি মনে করিয়ে দেওয়া।
অভিশংসন ধারণাটির উৎস হচ্ছে ব্রিটেন, যেখানে এই ব্যবস্থাটি প্রয়োগ হয় সাধারণত পাবলিক অফিস বা রাষ্ট্রীয় পদের অধিকারীদের ক্ষেত্রে। গুরুতর অসদাচরণ, কিংবা নৈতিক স্খলনের মতো অপরাধের জন্য পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে শুনানি এবং বিচারের এই ব্যবস্থা মূলত এক সংসদীয় বিচারব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় সর্বশেষ বিচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন লর্ডসভার সদস্য হেনরি ডুনডাস, ১৮০৬ সালে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ, হাউস অব লর্ডসে বিভিন্ন পেশার মধ্যে আইনজীবী ও বিচারপতিদেরও প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। আর, হাউস অব লর্ডসের সদস্য বিচারপতিরা ল লর্ডস নামে পরিচিত হতেন এবং তাঁরা গত দশক পর্যন্ত সর্বোচ্চ আপিল আদালতের ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু, ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে সে ব্যবস্থার অবসান ঘটে, প্রতিষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট, যার প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় সেপ্টেম্বরে। অতীতে ল লর্ডসদের মধ্যে কাউকে অসদাচরণ বা আইন লঙ্ঘনের জন্য অভিশংসনের সম্মুখীন হওয়ার কোনো রেকর্ড কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর, বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জবাবদিহির প্রশ্ন নিয়ে কোনো আলোচনা গত দেড় দশকে ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমে আমার নজরে আসেনি। তবে, বিচারকদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ বা অপরাধমূলক কাজের তদন্তে সেখানে রয়েছে একটি আলাদা প্রতিষ্ঠান, দ্য জুডিশিয়াল কনডাক্টস ইনভেস্টিগেশন অফিস। আইনমন্ত্রী (লর্ড চ্যান্সেলর) এবং প্রধান বিচারপতি (লর্ড চিফ জাস্টিস) যৌথভাবে এই দপ্তরের কার্যক্রম তদারক করে থাকেন। তবে, এই দপ্তর শুধু বিচারকদের ব্যক্তিগত আচার-আচরণসম্পর্কিত অভিযোগই তদন্ত করতে পারে, কোনো বিচারিক সিদ্ধান্ত নয়।
ব্রিটেনে হাইকোর্টের এক স্বাধীনচেতা বিচারপতির সঙ্গে মন্ত্রী, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের টানাপোড়েন নিয়ে গত দশকে বিবিসিতে প্রচারিত হয় খুব জনপ্রিয় এবং সফল একটি ধারাবাহিক, জাজ জন ডিড। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চলা এই ধারাবাহিকটি আমার খুবই প্রিয়। কাল্পনিক ওই কাহিনিগুলোয় বিচারপতি ডিড প্রচলিত নিয়মনীতি ভেঙে সব প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে কীভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেন, তা-ই চিত্রায়িত হয়েছে ওই নাটকে। আমাদের বাংলাদেশি কোনো আদালতে কোনো বিচারপতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে অতীতে এতটা দুঃসাহস দেখিয়েছেন বলে আমার মনে পড়ে না। সাংবাদিকতার আগে আইন পেশায় সংক্ষিপ্ত বিচরণ এবং পারিবারিক কারণে আদালত ও বিচারব্যবস্থার বিষয়ে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। আমার শঙ্কার উৎসও সেখানে। বিচারপতিদের জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রবর্তনের যে তড়িঘড়ি আয়োজন, তাতে ভবিষ্যতে কোনো বিচারপতি তাঁর পেশাগত দায়বদ্ধতা ধরে রাখতে সমর্থ হবেন কি না, সে প্রশ্ন এখন খুবই প্রাসঙ্গিক।
এ বছরের মে ও জুন মাসের দুটি দেশের দুটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করা যায়। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় র্যাবের কতিপয় কর্মকর্তা, বিশেষ করে একজন মন্ত্রীর জামাই জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার পটভূমিতে হাইকোর্ট তদন্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে নির্দেশ দিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হন। তিনি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের কার্যক্রমে বিচার বিভাগ অযথা বাধা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করেন (সমকাল, ১৫ মে ২০১৪)। অন্য ঘটনাটি ব্রিটেনের। বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড-এর বেআইনিভাবে অন্যের ফোনের রেকর্ড শোনার মামলায় পত্রিকাটির সাবেক একজন সম্পাদক অ্যান্ডি কুলসনকে দোষী সাব্যস্ত করেন সেখানকার এক বিচারিক আদালত। প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন তাঁর সাবেক প্রচার উপদেষ্টা, ওই সম্পাদক অ্যান্ডি কুলসনের দোষী সাব্যস্ত করার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে কুলসনকে চিনতে ভুল করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান। অথচ, অ্যান্ডি কুলসনের বিরুদ্ধে তখনো বিচার শেষ হয়নি। আরও কয়েকটি অভিযোগ সম্পর্কে জুরিরা আলোচনা করছিলেন এবং সাজা ঘোষণাও বাকি আছে। বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল। সুতরাং, ওই বিচারক প্রকাশ্য আদালতে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের বিচারবুদ্ধির সমালোচনা করেন (গার্ডিয়ান, ২৫ জুন ২০১৪)। ওই বিচারিক আদালতের মর্যাদা আমাদের দায়রা আদালতের বিচারকের সমতুল্য।
বিচার বিভাগের জবাবদিহির বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়েই বিতর্ক ও আলোচনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি প্রবর্তন এবং সেগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে ও হচ্ছে। সে কারণেই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক পরিসরে বেশ কিছু মৌলিক নীতিমালা অনুসরণের প্রশ্নে বৃহত্তর সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের মানবাধিকার কমিটির সুপারিশমালা। হিউম্যান রাইটস কমিটি ২০১২ সালের ৯ থেকে ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত ১০৫তম অধিবেশনের প্রস্তাবে সুপারিশ করেছে যে ‘রাষ্ট্রের উচিত বিচারকদের নিয়োগ, পদোন্নতি এবং শৃঙ্খলার বিষয়ে দায়িত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা।’ ওই কমিটি তার সুপারিশমালায় আরও বলেছে যে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করার জন্য রাষ্ট্রের উচিত বিচারিক আচরণ এবং শৃঙ্খলায় বিচারিক (জুডিশিয়াল) তদারকির ব্যবস্থা করা, সংসদীয় (পার্লামেন্টারি) তদারকি নয়।’
বিচারপতিদের নিয়োগ–প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক দূষণের অভিযোগ যখন প্রকট (আইনজীবী আমীর-উল ইসলামের সাক্ষাৎকার: ইত্তেফাক, ২০ আগস্ট ২০১৪), তখন তাঁদের অভিশংসনের আইন পাসে রাজনৈতিক আবেগকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ খুবই উদ্বেগজনক। ’৭২-এর সংবিধান পুনর্জীবনের যুক্তি যে পুরোটাই রাজনৈতিক আবেগকে ব্যবহারের বাসনাতাড়িত, তা ওই সংবিধানের অন্য কয়েকটি ধারার বিষয়ে নির্বিকার মনোভাবেই প্রতিফলিত হয়। বিচারপতিদের নিয়োগপদ্ধতি সম্পর্কে ৪২ বছরেও কোনো আইন তৈরির ফুরসত মেলেনি আমাদের রাজনীতিকদের। কেননা, তাতে সময়ে-অসময়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালানোর সুযোগ মিলেছে।
রাজনীতিকদের হাতে বিচারপতিদের জবাবদিহির ভার তুলে দেওয়ার বিপদ বহুমাত্রিক। প্রথমত, আমাদের প্রধান দলগুলোর রাজনীতি পুরোটাই ব্যক্তি তথা পরিবারকেন্দ্রিক। যে কারণে সংসদের স্পিকারের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জকারী একজন বহুল আলোচিত বিচারপতির বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমালোচনা সত্ত্বেও কোনো প্রস্তাব উত্থাপনও সম্ভব হয়নি। সেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক আনুগত্যের ব্যবস্থায় সংসদীয় জবাবদিহির অর্থ দাঁড়াবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি। তদুপরি, সংবিধানের ৭০ ধারা তো রয়েছেই। আর, দ্বিতীয় বিপদ হলো, যেসব রাজনীতিক বিচার এড়িয়ে পার পেয়ে যাওয়ার ঐতিহ্য গড়েছেন, তাঁরাই এখন হবেন বিচারপতিদের আচরণের যথার্থতা বিচারকারী।
কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।
No comments