এ ক্ষেত্রেও তদন্তে ব্যর্থতা!
(পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতা)
শুক্রবার সমকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের শিরোনাম ছিল : 'পুলিশ হত্যার
তদন্তে পুলিশই ব্যর্থ, একটি মামলারও চার্জশিট হয়নি'। পুলিশের আইজি যদিও
বলেছেন, 'যারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায়
আনা হবে। তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষ হলে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।' তার এ
আশাবাদ পুলিশ বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য এবং দুর্ভাগ্যের শিকার
পরিবারগুলোকে কি সন্তুষ্ট করতে পারবে? সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১১
মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা পুলিশ হত্যা মামলার একটিও
অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলার আসামিকেও গ্রেফতার
করা সম্ভব হয়নি। আবার যাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, তাদের সবাই প্রকৃত
অপরাধী কি-না সেটা নিয়ে কিন্তু সংশয় থেকেই যায়। এ সময়ে জামায়াতে ইসলামী ও
বিএনপি জোটের সহিংসতায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন পুলিশ সদস্যের। বিজিবির দু'জন
সদস্যও এ ধরনের হামলায় নিহত হয়েছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে অতিমাত্রায়
ব্যস্ততার কারণে মামলার তদন্ত কাজ বিঘি্নত হচ্ছে, পুলিশের এ ব্যাখ্যা
একেবারে অমূলক বলা যাবে না। কিন্তু বিষয়টিকে অন্যভাবেও দেখা যেতে পারে_ যদি
দ্রুত তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে প্রকৃত দোষীদের কঠোর দণ্ড প্রদান করা যেত,
তাহলে হয়তো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো।
একইভাবে আমরা দেখি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও অন্যান্য সম্পত্তি এবং
তাদের মন্দিরগুলোয় দেশের নানা স্থানে হামলার অনেক ঘটনা ঘটলেও একটি
ক্ষেত্রেও এখন পর্যন্ত দায়ী কাউকে শাস্তি প্রদান করা হয়নি। সর্বত্র এ ধরনের
ঘটনার নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হচ্ছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনীর প্রতি সহিংসতাও কোনোভাবেই কেউ মেনে নিতে পারছে না। কিন্তু তারপরও
কেন এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি লালিত হচ্ছে? অনেক ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে।
টেলিভিশন ক্যামেরায় ধরা আছে ভিডিওচিত্র। তারপরও প্রকৃত অপরাধীরা কেন
ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যেতে পারছে? নিরপরাধ কেউ গ্রেফতার এবং বিচারে শাস্তি
হোক, এটা কাম্য নয়। কিন্তু এতগুলো ঘটনার দায়ে প্রায় এক বছরের মধ্যে কাউকে
কাঠগড়ায় তুলতে পুলিশের ব্যর্থতা কীভাবে মেনে নেব?
No comments