মাহফুজ আনামের তৃতীয় মত, হাসিনার পরিকল্পনা
একজন নাগরিক, করদাতা এবং সাংবাদিক হিসেবে
আমরা এটা বিশ্বাস করতে পারি না যে, আসন্ন রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে
রাজনীতিবিদরা উদাসীন থাকতে পারেন।
যে সংকটে সহিংসতা,
সম্পত্তি লুট এবং জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। এবং এসবই করা হচ্ছে গণতন্ত্রের নামে।
আমরা সত্যিই বুঝতে অক্ষম সহিংসতার মাধ্যমে কিভাবে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়।
দেশের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম শুক্রবার এক
মন্তব্য প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছেন। থার্ড ভিউ শীর্ষক মন্তব্য প্রতিবেদনে
তিনি আরও লিখেছেন, শেখ হাসিনা এটা বারবারই বলছেন যে, তিনি বর্তমান
সংবিধানের আলোকেই নির্বাচনের আয়োজন করবেন। তার এ অবস্থান যৌক্তিক হিসেবে
বিবেচনার সুযোগ ছিল। কিন্তু সত্য হলো, নিজের গেম প্ল্যান অনুযায়ী সম্প্রতি
তিনি নিজেই সংবিধানে পরিবর্তন আনেন। এটা নিয়তির নির্মম পরিহাস যে শেখ
হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার
জন্য ৯০ দশকের মাঝামাঝি প্রায় ৩ বছর তিনি আন্দোলন করেছেন এবং ২০০ দিনের
কাছাকাছি হরতাল পালন করেছেন। বিরোধীদল তো দূরের কথা নিজ দলের সংসদ সদস্য
এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই তিনি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে
ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেন। সুপ্রিম কোর্ট
তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ ঘোষণা করে। কিন্তু দেশ এবং জনগনের নিরাপত্তার
কারণে দুই মেয়াদে এ ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন হতে পারে বলে মত দিয়েছিল।
শেখ হাসিনা এটাও বলে আসছেন, তার প্রতিষ্ঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটির এক বছরের কাজের ফসল হিসেবেই ১৫তম সংশোধনী আনা হয়। যেটা তিনি বলেন না তা হলো, ওই কমিটি তাদের খসড়া প্রস্তাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার কারণেই পরে ওই প্রস্তাবে পরিবর্তন আনা হয়। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছি। যদিও প্রধানমন্ত্রী তার বর্ণনা অব্যাহত রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দেখাচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কারণে অনির্বাচিত ব্যক্তিরা ৯০ দিন দেশ পরিচালণা করেন। এটা সংবিধান এবং গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনার পরিপন্থী। কারণ সংবিধান এবং গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনা হচ্ছে সবসময় জনগনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। তার যুক্তি সঠিক। কিন্তু তা আজ যেমন সত্য ১৯৯৪-৯৬ সালেও তা সত্য ছিল। যখন তিনি এ ব্যাবস্থা সংবিধানে যুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। এখন কেউ বলতেই পারে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধীদলে থাকে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভাল আর আওয়ামী লীগ যখন সরকারে থাকে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা খারাপ। যদি ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করতো এবং একই কারণ দেখিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতো তাহলে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা কি তা মেনে নিতেন। আমরা এ ব্যাপারে গভীর সন্দিহান। প্রধানমন্ত্রী আরেকটি যুক্তি দেখান, তত্ত্বাবধায়ক সরকাররের কারণে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের শাসনের সময় দীর্ঘ হতে পারে ২০০৬-০৮ এ যেমনটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রেও সঠিক। কিন্তু তা হয়েছে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের কারণেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করা যেতো এবং এ ব্যবস্থাকে আরও টেকসই করারও সুযোগ ছিল। প্রধানমন্ত্রী ত্রুটি দূর করার ব্যবস্থা না নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকেই বাতিল করে দিলেন। এ যেন মাথা ব্যাথার কারণে মাথা কেটে ফেলা।
শেখ হাসিনা এটাও বলে আসছেন, তার প্রতিষ্ঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটির এক বছরের কাজের ফসল হিসেবেই ১৫তম সংশোধনী আনা হয়। যেটা তিনি বলেন না তা হলো, ওই কমিটি তাদের খসড়া প্রস্তাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার কারণেই পরে ওই প্রস্তাবে পরিবর্তন আনা হয়। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছি। যদিও প্রধানমন্ত্রী তার বর্ণনা অব্যাহত রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দেখাচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কারণে অনির্বাচিত ব্যক্তিরা ৯০ দিন দেশ পরিচালণা করেন। এটা সংবিধান এবং গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনার পরিপন্থী। কারণ সংবিধান এবং গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনা হচ্ছে সবসময় জনগনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। তার যুক্তি সঠিক। কিন্তু তা আজ যেমন সত্য ১৯৯৪-৯৬ সালেও তা সত্য ছিল। যখন তিনি এ ব্যাবস্থা সংবিধানে যুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। এখন কেউ বলতেই পারে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধীদলে থাকে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভাল আর আওয়ামী লীগ যখন সরকারে থাকে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা খারাপ। যদি ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করতো এবং একই কারণ দেখিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতো তাহলে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা কি তা মেনে নিতেন। আমরা এ ব্যাপারে গভীর সন্দিহান। প্রধানমন্ত্রী আরেকটি যুক্তি দেখান, তত্ত্বাবধায়ক সরকাররের কারণে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের শাসনের সময় দীর্ঘ হতে পারে ২০০৬-০৮ এ যেমনটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রেও সঠিক। কিন্তু তা হয়েছে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের কারণেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করা যেতো এবং এ ব্যবস্থাকে আরও টেকসই করারও সুযোগ ছিল। প্রধানমন্ত্রী ত্রুটি দূর করার ব্যবস্থা না নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকেই বাতিল করে দিলেন। এ যেন মাথা ব্যাথার কারণে মাথা কেটে ফেলা।
No comments