প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ অনির্দিষ্ট! by সাজেদুল হক
বাংলাদেশ ক্রমশ একটি সাংবিধানিক সঙ্কটের দিকে এগোচ্ছে। সংবিধানকে নিজের পক্ষে ব্যবহারের চেষ্টা অবশ্য এদেশে নতুন কিছু নয়।
শেরে-বাংলানগরের
অপারেশন থিয়েটারও সক্রিয় হয়েছে নানা সময়। সার্জনরা ১৫ বার ছুরি চালিয়েছেন
পবিত্র সংবিধানের ওপর। যদিও এটাও সত্য, সংবিধান কোন ধর্মগ্রন্থ নয় যে, তার
কোন পরিবর্তন করা যাবে না। একবার স্মরণ করে দেখুন ২০০৬ সালের
সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের কথা। সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ তখন সবার মুখে মুখে।
বিচারপতি কেএম হাসান প্রধান উপদেষ্টা না হলে কে হবেন প্রধান উপদেষ্টা সে
আলোচনা ছিল সবখানে। সংবিধানকে রীতিমতো ভূলুণ্ঠিত করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট
ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ সে সময় প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন। সংবিধান
অনুযায়ী যারা প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্য ছিলেন তাদেরকে শঠতাপূর্ণ কৌশলের
আশ্রয় নিয়ে বঞ্চিত করা হয়। যার ফল পরে বিএনপিকে ভোগ করতে হয়েছে।
ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সংবিধানের এক নতুন
ব্যাখ্যা হাজির করেছিলেন সাংবিধানিক পণ্ডিতরা। তারা সে সময় বলেছিলেন,
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন সুনির্দিষ্ট মেয়াদ নেই। কারণ সংবিধানের তখনকার
বিধান অনুযায়ী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত
প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা দায়িত্বভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব পালন
করেছিলেন। অক্টোবরের পর বাংলাদেশ ঠিক একই ধরনের সাংবিধানিক পরিস্থিতিতে
পড়তে পারে। বর্তমান সাংবিধানিক সঙ্কট সম্পর্কে সোমবার এক সিনিয়র মন্ত্রীর
সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সংবিধানের তিনটি অনুচ্ছেদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ
করেন। সুনির্দিষ্টভাবে তিনি সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদের কথা বলেন। ওই
অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা
পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই অযোগ্য
করিবে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলাম তার গ্রন্থে লিখেছেন,
প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হবে যদি তিনি পদত্যাগ করেন অথবা তার সংসদ সদস্যপদ
খারিজ হয়। তবে যে কোন ক্ষেত্রেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া
পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
দশম সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটছে না। সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে (ক) মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে; (খ) মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদিও বলেছেন, অক্টোবরের শেষ দিকে সংসদ ভেঙে দেয়া হবে। তবে সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভেঙে দেয়ার এখতিয়ার নিয়ে কোথাও কিছু বলা নেই। সংবিধানের ৫৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারালে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন এবং সংসদ ভেঙে দেয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকে লিখিত পরামর্শ দিবেন। অন্য কোন সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন নেই এই মর্মে সন্তুষ্ট হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিবেন। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪শে জানুয়ারি। এর আগে নির্বাচন হলে সংসদ রেখেই তা হওয়ার কথা। আর এসময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে কখন নির্বাচন হবে তা সংবিধানে স্পষ্ট নয়। কারণ অন্য কোন কারণে সংসদ ভেঙে দেয়া বলতে আসলে কি বোঝানো হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অপরিহার্য বলেই মনে হচ্ছে। যদিও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সংবিধান সংশোধনীর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আর অন্তর্বর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারবেন। ওই মন্ত্রিসভা সরকারের দৈনন্দিন কার্যাবলী সম্পাদন করবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে ক্রমশ। রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচিত হচ্ছে নানা থিওরি। কখনও কখনও রাজনীতির কারবারিদের মুখ ফসকে কিছু পরিকল্পনা বেরিয়েও পড়ছে। এ যেন হ্যামলেট বর্ণিত সেই জীবন যন্ত্রণা, শোষকের অন্যায় কাজ, গর্বিত মানুষের অহমিকা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, পদের ঔদ্ধত্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
দশম সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটছে না। সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে (ক) মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে; (খ) মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদিও বলেছেন, অক্টোবরের শেষ দিকে সংসদ ভেঙে দেয়া হবে। তবে সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভেঙে দেয়ার এখতিয়ার নিয়ে কোথাও কিছু বলা নেই। সংবিধানের ৫৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারালে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন এবং সংসদ ভেঙে দেয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকে লিখিত পরামর্শ দিবেন। অন্য কোন সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন নেই এই মর্মে সন্তুষ্ট হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিবেন। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪শে জানুয়ারি। এর আগে নির্বাচন হলে সংসদ রেখেই তা হওয়ার কথা। আর এসময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে কখন নির্বাচন হবে তা সংবিধানে স্পষ্ট নয়। কারণ অন্য কোন কারণে সংসদ ভেঙে দেয়া বলতে আসলে কি বোঝানো হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অপরিহার্য বলেই মনে হচ্ছে। যদিও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সংবিধান সংশোধনীর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আর অন্তর্বর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারবেন। ওই মন্ত্রিসভা সরকারের দৈনন্দিন কার্যাবলী সম্পাদন করবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে ক্রমশ। রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচিত হচ্ছে নানা থিওরি। কখনও কখনও রাজনীতির কারবারিদের মুখ ফসকে কিছু পরিকল্পনা বেরিয়েও পড়ছে। এ যেন হ্যামলেট বর্ণিত সেই জীবন যন্ত্রণা, শোষকের অন্যায় কাজ, গর্বিত মানুষের অহমিকা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, পদের ঔদ্ধত্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
No comments