হয়রানির অভিযোগের জেরে মার্কিন রাজস্ব সংস্থার প্রধানের পদত্যাগ
রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব বিভাগের হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠার পর গত বুধবার পদত্যাগ করেছেন মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের (আইআরএস) ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্টিফেন মিলার। অভিযোগ তদন্তে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নির্দেশ দিয়েছেন। রক্ষণশীলদের অভিযোগ, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে রক্ষণশীল সামাজিক সংগঠনগুলো রাজস্ব বিভাগের নানা হয়রানি ও তল্লাশির সম্মুখীন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কঠোর সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আইআরএস তোপের মুখে পড়ে। বিব্রত প্রেসিডেন্ট ওবামাও। শীর্ষ কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে আইআরএসের প্রধানের পদত্যাগ ও অভিযোগ তদন্তের নির্দেশের পরও সমালোচনা থেমে নেই। কংগ্রেসের শুনানিতে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে কংগ্রেসে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ওবামা। রিপাবলিকান দলের ক্ষুব্ধ আইনপ্রণেতারা অভিযোগ করেছেন, দলীয় পরিচয়ের কারণে হয়রানির প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। এমনকি আইনপ্রণেতাদের সামনে রাজস্ব কর্মকর্তারা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করেছেন। সমালোচনার মুখে হোয়াইট হাউস থেকে বুধবার সন্ধ্যায় দেওয়া বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, ‘আমি নিজেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ।’ তিনি বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিষ্ঠানের, বিশেষ করে আইআরএসে এ ধরনের আচরণ সহ্য করব না। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমি আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছু করব।’ তিনি বলেন, রাজস্ব বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে নতুন নেতৃত্ব গঠন করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওবামা তাঁর ভাষণে রাজস্ব বিভাগের বৈরী আচরণে মার্কিন জনগণের ক্ষোভ যৌক্তিক উল্লেখ করে এ নিয়ে নিবিড় তদন্ত পরিচালনার ঘোষণা দেন। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে আইআরএসের প্রধানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দেন তিনি। অর্থমন্ত্রী জ্যাক লিউ আইআরএসের প্রধানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকে ওবামার বক্তব্যকে স্বাগত জানানো হয়েছে। রাজস্ব বিভাগে নতুন নেতৃত্ব সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছে তারা। এর আগে বুধবার সকালে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার কংগ্রেসে চার ঘণ্টা জেরার সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁকে আইআরএস বিতর্ক, বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সাংবাদিকদের ফোনকলের রেকর্ড জব্দ ও লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলেটে হামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কংগ্রেসের বিচার বিভাগীয় কমিটির কাছে তিনি বলেন, আইআরএসের কর্মীরা আইন লঙ্ঘন করেছেন কি না তা তদন্ত করে দেখতে এফবিআইয়ের সময় লাগবে। বেনগাজি নিয়ে ই-মেইল প্রকাশ: লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলেটে সন্ত্রাসী হামলা-সংশ্লিষ্ট ৯৯ পৃষ্ঠার ই-মেইল বার্তা প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। এতে গণমাধ্যমকে ওই হামলা সম্পর্কে ব্রিফ করার প্রাক্কালে ওবামা প্রশাসনের সদস্যদের বক্তব্য রয়েছে। ২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বেনগাজির ওই হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস স্টিভেনসসহ চার মার্কিন নাগরিক নিহত হন। রিপাবলিকানদের অভিযোগ, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে হোয়াইট হাউস তখন ওই হামলার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল। সমালোচনা এড়াতেই বুধবার ই-মেইল বার্তাগুলো প্রকাশ করে ওবামা প্রশাসন।
No comments