কাস্টমস কমিশনারের সহায়তায় আকিজের ব্যান্ডরোল জালিয়াতি! by সেরাজুল ইসলাম সিরাজ
পুরনো ব্যান্ডরোল নতুন প্যাকেটে লাগিয়ে
বিড়ি বাজারজাত করে আকিজ গ্রুপ। বছরের পর বছর ধরে আকিজ বিড়ি এভাবে শতশত কোটি
টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। আর ব্যান্ডরোল জালিয়াতি ও দুর্নীতিতে
প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করছেন স্বয়ং রংপুর বিভাগের কাস্টমস কমিশনার।
বিনিময়ে তিনি আকিজ গ্রুপ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অংকের মাসোহারা। আকিজ বিড়ির কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে ব্যান্ডরোল জালিয়াতির এক ভয়ংকর চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
পুরনো ব্যান্ডরোল ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, খুচরা দোকান থেকে পুরনো ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করে আকিজ গ্রুপ। সংগৃহীত ব্যান্ডরোল আবার লাগানো হয় নতুন বিড়ির মোড়কে। আর কাজে জড়িত রয়েছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট।
ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয় পুরনো ব্যান্ডরোল। আকিজ বিভিন্ন লোকের নামে রংপুরে গড়ে তুলেছে বেশ কিছু পুরনো ব্যান্ডরোলের কারখানা। কারখানাগুলোয় ব্যবহৃত বিড়ির প্যাকেট থেকে পুরনো ব্যান্ডরোল ছাড়ানো হয়। সেগুলো নামমাত্র মূল্যে কিনে কারখানায় ঢোকায় আকিজ গ্রুপ।
আকিজ গ্রুপের এই পুকুর চুরির কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন রংপুর বিভাগের কাস্টমস কমিশনার এনামুল হক। জানা গেছে, আকিজ গ্রুপ উচ্চ পর্যায়ে কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে তাকে এই পদে বদলি করে এনেছেন নিজেদের দুর্নীতি আরও প্রসারিত করতে।
এ কারণেই পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে আকিজ বিড়ি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিলেও কাস্টমসের ওই কর্মকর্তা সাফাই গাইছেন আকিজ গ্রুপের পক্ষেই।
আকিজ বিড়ির ব্যান্ডরোল জালিয়াতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কাস্টমস কমিশনার এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, আকিজসহ বড় কোম্পানিগুলো এ কাজ করছে না। কিছু ছোট ছোট কোম্পানি এ কাজে জড়িত।
আকিজের নানা অনিয়ম বাংলানিউজসহ একাধিক দৈনিকে প্রকাশ হলেও তিনি বলেছেন, “আকিজ খুব ভালোভাবে ব্যবসা করছে।” এমনকি আকিজের ব্যবস্থাপক খান মজলিস প্রকাশ্যেই চোরাকারবারীর মাধ্যমে পুরাতন ব্যান্ডরোল কিনলেও তার কাছে নাকি কোনোই তথ্য নেই।
আইনের দুর্বলতা ও জনবল সংকটের কারণে তিনি এই ব্যান্ডরোল চক্রকে ঠেকাতে পারছেন না দাবি করে বলেন, রংপুর অঞ্চলে ৯১টি বিড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে। যার বিপরীতে তার কর্মকর্তা রয়েছে মাত্র ১৩ জন। এ অবস্থায় পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার ঠেকানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “আমার পক্ষে পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার ঠেকানোর জন্য কোনো বিড়ি কোম্পানিতে গিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয়। কে কি অভিযোগ করল তাতে আমার যায়-আসে না। আমি মাঝে মধ্যেই অভিযান পরিচালনা করছি। ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
তিনি দায় চাপালেন রংপুরের পুলিশ প্রশাসনের ওপর, “কোথাও অভিযান পরিচালনা করতে হলে পুলিশ চেয়ে আবেদন করতে হয়। সেখানে উল্লেখ করতে হয় কোথায়, কোন বাজারে এবং কোন দোকানে রেইড দেওয়া হবে। এতে আগেই অভিযানের খবর ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। পরে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে কাস্টমস বিভাগকে। আইনই এমন, আমার করার কিছুই নেই।”
কাস্টমস বিভাগের এই কর্মকর্তার কারণে বিশাল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। বিড়ি কোম্পানিগুলো ডাকঘরে টাকা জমা দিয়ে ব্যান্ডরোল তোলার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরাতন ব্যান্ডরোল বাজার থেকে সংগ্রহ করে আবার ব্যবহার করা হচ্ছে প্রকাশ্যেই।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা পুরাতন ব্যান্ডরোল চোরাকারবারী নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবসায় কাস্টমসের বিষয়টি বিড়ি কোম্পানির মালিক দেখে থাকেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে মাসোহারা চুক্তি। কোথাও ব্যান্ডরোল ধরা পড়লে বিশেষ কার্ড দেখালেই ছেড়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি তিনি রংপুরে ধরা পড়লে এভাবে ছাড়া পান।
তিনি জানান, কাস্টমস কর্মকর্তা হয়ত মাসে টাকা পাচ্ছেন। তার বিনিময়ে বিড়ি কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, শুধু আকিজের একটি ফ্যাক্টরিতে যে পরিমাণ শ্রমিক রয়েছে এতে যে বিড়ি উৎপাদন হওয়ার কথা তাতে ব্যান্ডরোলের প্রয়োজন হওয়ার কথা প্রায় সাড় ৫০০ কোটি টাকার মতো। এছাড়া আরও অনেক বড় বড় বিড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে রংপুর অঞ্চলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাস্টমস অফিসের সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, “এনামুল হক দু’হাতে টাকা কালেকশন করছেন। তার কাছে হালাল-হারাম বাছবিচার নেই। অনেক বড় বড় আমদানিকারকের গ্রেড কম দেখিয়ে মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এনামুল হক।”
বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে তার চুক্তি রয়েছে, তারা প্রতি মাসে তাকে অর্থ দেয়। যে কারণে টাকা হালাল করতে তিনি তাদের পক্ষে সাফাই গাইছেন বলে জানা গেছে। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কাস্টমস কমিশনার বলেন, “আপনাদের কাছ সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে দেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুরনো ব্যান্ডরোল ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, খুচরা দোকান থেকে পুরনো ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করে আকিজ গ্রুপ। সংগৃহীত ব্যান্ডরোল আবার লাগানো হয় নতুন বিড়ির মোড়কে। আর কাজে জড়িত রয়েছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট।
ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয় পুরনো ব্যান্ডরোল। আকিজ বিভিন্ন লোকের নামে রংপুরে গড়ে তুলেছে বেশ কিছু পুরনো ব্যান্ডরোলের কারখানা। কারখানাগুলোয় ব্যবহৃত বিড়ির প্যাকেট থেকে পুরনো ব্যান্ডরোল ছাড়ানো হয়। সেগুলো নামমাত্র মূল্যে কিনে কারখানায় ঢোকায় আকিজ গ্রুপ।
আকিজ গ্রুপের এই পুকুর চুরির কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন রংপুর বিভাগের কাস্টমস কমিশনার এনামুল হক। জানা গেছে, আকিজ গ্রুপ উচ্চ পর্যায়ে কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে তাকে এই পদে বদলি করে এনেছেন নিজেদের দুর্নীতি আরও প্রসারিত করতে।
এ কারণেই পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে আকিজ বিড়ি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিলেও কাস্টমসের ওই কর্মকর্তা সাফাই গাইছেন আকিজ গ্রুপের পক্ষেই।
আকিজ বিড়ির ব্যান্ডরোল জালিয়াতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কাস্টমস কমিশনার এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, আকিজসহ বড় কোম্পানিগুলো এ কাজ করছে না। কিছু ছোট ছোট কোম্পানি এ কাজে জড়িত।
আকিজের নানা অনিয়ম বাংলানিউজসহ একাধিক দৈনিকে প্রকাশ হলেও তিনি বলেছেন, “আকিজ খুব ভালোভাবে ব্যবসা করছে।” এমনকি আকিজের ব্যবস্থাপক খান মজলিস প্রকাশ্যেই চোরাকারবারীর মাধ্যমে পুরাতন ব্যান্ডরোল কিনলেও তার কাছে নাকি কোনোই তথ্য নেই।
আইনের দুর্বলতা ও জনবল সংকটের কারণে তিনি এই ব্যান্ডরোল চক্রকে ঠেকাতে পারছেন না দাবি করে বলেন, রংপুর অঞ্চলে ৯১টি বিড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে। যার বিপরীতে তার কর্মকর্তা রয়েছে মাত্র ১৩ জন। এ অবস্থায় পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার ঠেকানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “আমার পক্ষে পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার ঠেকানোর জন্য কোনো বিড়ি কোম্পানিতে গিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয়। কে কি অভিযোগ করল তাতে আমার যায়-আসে না। আমি মাঝে মধ্যেই অভিযান পরিচালনা করছি। ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
তিনি দায় চাপালেন রংপুরের পুলিশ প্রশাসনের ওপর, “কোথাও অভিযান পরিচালনা করতে হলে পুলিশ চেয়ে আবেদন করতে হয়। সেখানে উল্লেখ করতে হয় কোথায়, কোন বাজারে এবং কোন দোকানে রেইড দেওয়া হবে। এতে আগেই অভিযানের খবর ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। পরে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে কাস্টমস বিভাগকে। আইনই এমন, আমার করার কিছুই নেই।”
কাস্টমস বিভাগের এই কর্মকর্তার কারণে বিশাল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। বিড়ি কোম্পানিগুলো ডাকঘরে টাকা জমা দিয়ে ব্যান্ডরোল তোলার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরাতন ব্যান্ডরোল বাজার থেকে সংগ্রহ করে আবার ব্যবহার করা হচ্ছে প্রকাশ্যেই।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা পুরাতন ব্যান্ডরোল চোরাকারবারী নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবসায় কাস্টমসের বিষয়টি বিড়ি কোম্পানির মালিক দেখে থাকেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে মাসোহারা চুক্তি। কোথাও ব্যান্ডরোল ধরা পড়লে বিশেষ কার্ড দেখালেই ছেড়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি তিনি রংপুরে ধরা পড়লে এভাবে ছাড়া পান।
তিনি জানান, কাস্টমস কর্মকর্তা হয়ত মাসে টাকা পাচ্ছেন। তার বিনিময়ে বিড়ি কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, শুধু আকিজের একটি ফ্যাক্টরিতে যে পরিমাণ শ্রমিক রয়েছে এতে যে বিড়ি উৎপাদন হওয়ার কথা তাতে ব্যান্ডরোলের প্রয়োজন হওয়ার কথা প্রায় সাড় ৫০০ কোটি টাকার মতো। এছাড়া আরও অনেক বড় বড় বিড়ি ফ্যাক্টরি রয়েছে রংপুর অঞ্চলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাস্টমস অফিসের সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, “এনামুল হক দু’হাতে টাকা কালেকশন করছেন। তার কাছে হালাল-হারাম বাছবিচার নেই। অনেক বড় বড় আমদানিকারকের গ্রেড কম দেখিয়ে মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এনামুল হক।”
বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে তার চুক্তি রয়েছে, তারা প্রতি মাসে তাকে অর্থ দেয়। যে কারণে টাকা হালাল করতে তিনি তাদের পক্ষে সাফাই গাইছেন বলে জানা গেছে। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কাস্টমস কমিশনার বলেন, “আপনাদের কাছ সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে দেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
No comments