মেয়র-সাংসদের নির্লিপ্ততায় রাজশাহীতে শিবিরের তাণ্ডব by ইমরান আলী
রাজশাহীতে সিটি মেয়র ও সাংসদের রাজনৈতিক
নির্লিপ্ততার কারণে শিবির ধারাবাহিকভাবে তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। শিবিরের এই
তাণ্ডবের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল তেমনভাবে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি না
দেওয়ার কারণে অনেকটা প্রতিরোধহীন ভাবেই
জামায়াত-শিবির
ধারাবাহিকভাবে তাণ্ডব চালাচ্ছে। শিবির আগে শুধুমাত্র রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড চালালেও বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ
পয়েন্ট এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসা-বাড়ির সামনেই তাণ্ডব চালিয়ে আসছে।
সম্প্রতি পর পর দু’দিন পুলিশের ওপর শিবির যেভাবে হামলা করেছে, তাতে করে রাজশাহী এক প্রকার আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে। নগরবাসী বলছেন, এক সময়ের শিক্ষানগরী রাজশাহী এখন আতঙ্কের নগরী।
তবে রাজনৈতিক নির্লিপ্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘাত বাড়বে। এ কারণে সামাজিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য পাড়া-মহল্লায় সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। এছাড়া শিবিরের এই তাণ্ডবের পেছনে বিএনপিও মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
শিক্ষানগরী হিসেবে খ্যাত বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে সম্প্রতি জামায়াত-শিবির ধারাবাহিক তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। গত বছরের নভেম্বরে রাজশাহী মহানগরীর জিরো পয়েন্টে তারা প্রকাশ্য মিছিল-সমাবেশ করার নামে পুলিশের রাইফেল কেড়ে নিয়ে পুলিশকেই বেধড়ক মারধর করে। মূলত এর পর থেকেই জামায়াত রাজশাহী শহরে একের পর এক তাণ্ডব শুরু করে। এমনকি বোয়ালিয়া থানা ও আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
যুদ্ধাপরাধের বিচার বাতিল, আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয়ভাবে জামায়াত-শিবির ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচিই রাজশাহীতে জামায়াত-শিবির পালন করে। বিক্ষোভ সমাবেশের নামে স্বাধীনতারবিরোধী জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠন শিবির গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
দেখা গেছে, বর্তমানে জামায়াত-শিবির মহানগরীর যে কয়েকটি স্থানে তারা মিছিল-সমাবেশ করার নাম করে তাণ্ডব করছে, তার মধ্যে বিনোদপুর, কাদিরগঞ্জ, শালবাগান, কাশিয়াডাঙ্গা অন্যতম।
জামায়াত-শিবির কাদিরগঞ্জের যে স্থানটি থেকে মিছিল বের করে সেই স্থান ঘেঁষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ভবন অফিস, এর একটু অদূরে বর্তমান সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বাড়ি। এছাড়া বিনোদপুর, শালবাগান, কাশিয়াডাঙ্গার যে সকল এলাকায় মিছিল-সমাবেশ হয় সে সকল এলাকার আশপাশেই আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ঘর রয়েছে। এক কথায় ওই সকল এলাকায় আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান রয়েছে।
বর্তমানে জামায়াত-শিবির এমন একটা অবস্থান তৈরি করেছে যে, তারা ওই সকল স্থানগুলো থেকে মিছিল-সমাবেশের নামে নির্বিঘ্নেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। পুলির ওপর হামলা করছে, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে যানবাহনগুলোতে। এসবের মাধ্যমে পুরো নগরজুড়েই আতঙ্ক তৈরি করছে জামায়াত-শিবির। সর্বশেষ রোববার ও সোমবার তারা নগরীর নিউমার্কেট ও শালবাগান এলাকায় দুই জন পুলিশ সদস্যের ওপর পৈশাচিক হামলা চালায়। একজনের বোমের আঘাতে কব্জি উড়ে যায়। অন্যজনকে প্রকাশ্যেই রাস্তার ওপরে ফেলে দিয়ে ইটের আঘাতে থেঁতলে দেয়া হয়। আহত দুই পুলিশ সদস্যকেই ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের হাতের কব্জি কেটে ফেলতে হয়েছে।
এ ঘটনা সারাদেশে যেমন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তেমনি রাজশাহীকে পরিণত করেছে আতঙ্কের নগরীতে।
এদিকে জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রতিক তাণ্ডব করার সাহস পাওয়ার জন্য নগরবাসী মূলত দায়ী করছেন স্থানীয় সিটি মেয়র ও সংসদ সদস্যের নির্লিপ্ততাকে। নগরবাসী মনে করছেন, মূলত রাজনৈতিকভাবে শিবিরকে মোকাবেলা করার কোনো কর্মসূচি না থাকার কারণে প্রতিরোধহীনভাবেই তারা তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করে চলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘এখানকার রাজনৈতিক নেতারা শিবির প্রতিরোধের কথা বললেও সেটি মুখে মুখে আর টিভির সামনে। বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। যার কারণে রাজশাহীতে শিবিরের এতো বড় বড় নৃশংসতা চলছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতে ‘নাশকতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আসলে এই কমিটির কোনো কাজ নেই। মসজিদসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় শিবিরের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির কথা বলা হলেও মূলত তার ফলাফল শূন্য।’’
তিনি মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো শক্তিই জামায়াত-শিবির প্রতিরোধে কোনো কর্মসূচির আয়োজন করে না। যার কারণে প্রতিরোধহীন ভাবে শিবিরের এই উগ্র তৎপরতা চলছে।
ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম বাংলানিউজকে বলেন, জামায়াত-শিবির বিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচির ঘাটতি রয়েছে, ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে কর্মসূচি। তিনি বলেন, ছাত্রলীগও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দেয় না। তবে বর্তমানে জামায়াত-শিবির বিরোধী কর্মসূচি বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শিবির খুবই সংঘটিত হয়ে সামরিক কায়দায় হামলা করছে। তারা কয়েকটি স্থান বেছে নিয়ে সেখানে সামরিক কায়দায় তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে রুখতে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলেও মনে করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকার কারণে শিবিরের তাণ্ডব- এ কথাটি যথার্থ নয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিবির প্রতিরোধে কমিটি গঠন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নিয়ে থানা, পাড়া, মহল্লায় ‘নাশকতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে শিবিরবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।’’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘শিবিরের এ তাণ্ডবে সহায়তা করছে বিএনপি। মূলত বিএনপির মদদের কারণেই শিবির এই অপতৎপরতা চালাতে সাহস পাচ্ছে।’’
‘‘খুবই স্বল্প সংখ্যক শিবির ক্যাডার এই অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত। তারা ৬/৭টি স্কোয়াড গঠন করে গেরিলা স্টাইলে তাণ্ডব চালাচ্ছে।’’
তবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবেলা করতে গেলে সংঘাত বাধবে। শিবিরের তাণ্ডব ঠেকানো পুলিশের কাজ। তবে পুলিশের আচরণ আমার কাছে খুবই রহস্যজনক মনে হয়।’’
রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘জামায়াত-শিবিরের গুটি কয়েক নেতা এই অপতৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর এই সকল সন্ত্রাসীরা রাজশাহীর স্থানীয় নয়। এরা বাইরে থেকে এসে এই সন্ত্রাসবাদ করছে। পুলিশ এই সন্ত্রাস প্রতিরোধে সফল হতে পারেনি। কেন পুলিশ সফল হতে পারছে না তা ভেবে দেখতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘রাজশাহীর যে সকল স্থানে শিবির এই হামলা চালাচ্ছে, তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের, আমাদের নয়। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে গেলে সংঘাত হবে।’’
‘‘বর্তমানে কমিটি গঠনের মাধ্যমে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে’’ বলেও জানান এমপি বাদশা।
অন্যদিকে রাজশাহীর সাধারণ মানুষ বলছেন, সংসদ সদস্য আর মেয়র একসঙ্গে জামায়াত-শিবির প্রতিরোধের ডাক দিলে রাজশাহীতে জামায়াত-শিবির কোনোভাবেই তাণ্ডবতো দূরের কথা, মিছিল-সমাবেশ পর্যন্ত করতে পারবে না। বর্তমানে শান্তির নগরী রাজশাহীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তারা।
সম্প্রতি পর পর দু’দিন পুলিশের ওপর শিবির যেভাবে হামলা করেছে, তাতে করে রাজশাহী এক প্রকার আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে। নগরবাসী বলছেন, এক সময়ের শিক্ষানগরী রাজশাহী এখন আতঙ্কের নগরী।
তবে রাজনৈতিক নির্লিপ্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘাত বাড়বে। এ কারণে সামাজিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য পাড়া-মহল্লায় সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। এছাড়া শিবিরের এই তাণ্ডবের পেছনে বিএনপিও মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
শিক্ষানগরী হিসেবে খ্যাত বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে সম্প্রতি জামায়াত-শিবির ধারাবাহিক তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। গত বছরের নভেম্বরে রাজশাহী মহানগরীর জিরো পয়েন্টে তারা প্রকাশ্য মিছিল-সমাবেশ করার নামে পুলিশের রাইফেল কেড়ে নিয়ে পুলিশকেই বেধড়ক মারধর করে। মূলত এর পর থেকেই জামায়াত রাজশাহী শহরে একের পর এক তাণ্ডব শুরু করে। এমনকি বোয়ালিয়া থানা ও আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
যুদ্ধাপরাধের বিচার বাতিল, আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয়ভাবে জামায়াত-শিবির ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচিই রাজশাহীতে জামায়াত-শিবির পালন করে। বিক্ষোভ সমাবেশের নামে স্বাধীনতারবিরোধী জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠন শিবির গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
দেখা গেছে, বর্তমানে জামায়াত-শিবির মহানগরীর যে কয়েকটি স্থানে তারা মিছিল-সমাবেশ করার নাম করে তাণ্ডব করছে, তার মধ্যে বিনোদপুর, কাদিরগঞ্জ, শালবাগান, কাশিয়াডাঙ্গা অন্যতম।
জামায়াত-শিবির কাদিরগঞ্জের যে স্থানটি থেকে মিছিল বের করে সেই স্থান ঘেঁষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ভবন অফিস, এর একটু অদূরে বর্তমান সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বাড়ি। এছাড়া বিনোদপুর, শালবাগান, কাশিয়াডাঙ্গার যে সকল এলাকায় মিছিল-সমাবেশ হয় সে সকল এলাকার আশপাশেই আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ঘর রয়েছে। এক কথায় ওই সকল এলাকায় আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান রয়েছে।
বর্তমানে জামায়াত-শিবির এমন একটা অবস্থান তৈরি করেছে যে, তারা ওই সকল স্থানগুলো থেকে মিছিল-সমাবেশের নামে নির্বিঘ্নেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। পুলির ওপর হামলা করছে, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে যানবাহনগুলোতে। এসবের মাধ্যমে পুরো নগরজুড়েই আতঙ্ক তৈরি করছে জামায়াত-শিবির। সর্বশেষ রোববার ও সোমবার তারা নগরীর নিউমার্কেট ও শালবাগান এলাকায় দুই জন পুলিশ সদস্যের ওপর পৈশাচিক হামলা চালায়। একজনের বোমের আঘাতে কব্জি উড়ে যায়। অন্যজনকে প্রকাশ্যেই রাস্তার ওপরে ফেলে দিয়ে ইটের আঘাতে থেঁতলে দেয়া হয়। আহত দুই পুলিশ সদস্যকেই ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের হাতের কব্জি কেটে ফেলতে হয়েছে।
এ ঘটনা সারাদেশে যেমন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তেমনি রাজশাহীকে পরিণত করেছে আতঙ্কের নগরীতে।
এদিকে জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রতিক তাণ্ডব করার সাহস পাওয়ার জন্য নগরবাসী মূলত দায়ী করছেন স্থানীয় সিটি মেয়র ও সংসদ সদস্যের নির্লিপ্ততাকে। নগরবাসী মনে করছেন, মূলত রাজনৈতিকভাবে শিবিরকে মোকাবেলা করার কোনো কর্মসূচি না থাকার কারণে প্রতিরোধহীনভাবেই তারা তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করে চলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘এখানকার রাজনৈতিক নেতারা শিবির প্রতিরোধের কথা বললেও সেটি মুখে মুখে আর টিভির সামনে। বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। যার কারণে রাজশাহীতে শিবিরের এতো বড় বড় নৃশংসতা চলছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতে ‘নাশকতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আসলে এই কমিটির কোনো কাজ নেই। মসজিদসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় শিবিরের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির কথা বলা হলেও মূলত তার ফলাফল শূন্য।’’
তিনি মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো শক্তিই জামায়াত-শিবির প্রতিরোধে কোনো কর্মসূচির আয়োজন করে না। যার কারণে প্রতিরোধহীন ভাবে শিবিরের এই উগ্র তৎপরতা চলছে।
ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম বাংলানিউজকে বলেন, জামায়াত-শিবির বিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচির ঘাটতি রয়েছে, ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে কর্মসূচি। তিনি বলেন, ছাত্রলীগও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দেয় না। তবে বর্তমানে জামায়াত-শিবির বিরোধী কর্মসূচি বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শিবির খুবই সংঘটিত হয়ে সামরিক কায়দায় হামলা করছে। তারা কয়েকটি স্থান বেছে নিয়ে সেখানে সামরিক কায়দায় তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে রুখতে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলেও মনে করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকার কারণে শিবিরের তাণ্ডব- এ কথাটি যথার্থ নয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিবির প্রতিরোধে কমিটি গঠন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নিয়ে থানা, পাড়া, মহল্লায় ‘নাশকতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে শিবিরবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।’’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘শিবিরের এ তাণ্ডবে সহায়তা করছে বিএনপি। মূলত বিএনপির মদদের কারণেই শিবির এই অপতৎপরতা চালাতে সাহস পাচ্ছে।’’
‘‘খুবই স্বল্প সংখ্যক শিবির ক্যাডার এই অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত। তারা ৬/৭টি স্কোয়াড গঠন করে গেরিলা স্টাইলে তাণ্ডব চালাচ্ছে।’’
তবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবেলা করতে গেলে সংঘাত বাধবে। শিবিরের তাণ্ডব ঠেকানো পুলিশের কাজ। তবে পুলিশের আচরণ আমার কাছে খুবই রহস্যজনক মনে হয়।’’
রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘জামায়াত-শিবিরের গুটি কয়েক নেতা এই অপতৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর এই সকল সন্ত্রাসীরা রাজশাহীর স্থানীয় নয়। এরা বাইরে থেকে এসে এই সন্ত্রাসবাদ করছে। পুলিশ এই সন্ত্রাস প্রতিরোধে সফল হতে পারেনি। কেন পুলিশ সফল হতে পারছে না তা ভেবে দেখতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘রাজশাহীর যে সকল স্থানে শিবির এই হামলা চালাচ্ছে, তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের, আমাদের নয়। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে গেলে সংঘাত হবে।’’
‘‘বর্তমানে কমিটি গঠনের মাধ্যমে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে’’ বলেও জানান এমপি বাদশা।
অন্যদিকে রাজশাহীর সাধারণ মানুষ বলছেন, সংসদ সদস্য আর মেয়র একসঙ্গে জামায়াত-শিবির প্রতিরোধের ডাক দিলে রাজশাহীতে জামায়াত-শিবির কোনোভাবেই তাণ্ডবতো দূরের কথা, মিছিল-সমাবেশ পর্যন্ত করতে পারবে না। বর্তমানে শান্তির নগরী রাজশাহীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তারা।
No comments