ক্যানভাসের প্রতারণায় বিদেশে গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীদের স্বপ্নভঙ্গ by জাহাঙ্গীর সুমন ও ইমরান আলী
বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, রবিউলের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। এ লক্ষ্যে ঢাকায় এসে পত্রিকার বিজ্ঞাপণ দেখে কনসালটিং ফার্ম ক্যানভাসের খোঁজ পায় সে। রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত “ক্যানভাস”
বিদেশে অধ্যয়ন ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সহজে স্টুডেন্ট ভিসার ব্যবস্থা করে দেয়- এটাই ছিলো বিজ্ঞাপনের ভাষ্য। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিদেশে পছন্দসই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিরও ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেওয়া হয় বিজ্ঞাপনে।
বিজ্ঞাপনের চটকদারি ভাষায় প্রলোভিত হয়ে রবিউল যোগাযোগ করে ওই কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানে। স্বল্প সময়ে তাকে জর্জিয়ার তিবিলিস কমিউনিটি কলেজে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দেয় ক্যানভাস কর্তৃপক্ষ। রবিউলও রাজি হয়ে যায়।
এরপর রবিউলের থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়ে জর্জিয়ার ওই কলেজে ভর্তির কাগজপত্র ও বিমানের টিকিট দেয় ক্যানভাস। ভর্তির কাগজপত্র ও বিমানের টিকিট পেয়ে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর বাড়ির সবার থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকায় আসে রবিউল। ১৫ ডিসেম্বর সকালে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ২৪ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত ক্যানভাসের অফিসে যায় সে। কিন্তু তালাবদ্ধ অফিস দেখে থমকে যেতে হয় তাকে। এ সময় ক্যানভাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ দেখায়।
কাউকে না পেয়ে সেখানেই অপেক্ষা করতে থাকে রবিউল। প্রায় ৩ ঘন্টা কেটে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে ওই বাড়ির দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে দারোয়ান জানায়, দুইদিন আগেই অফিস গুটিয়ে ওই বাড়ি থেকে চলে গেছে ক্যানভাসের লোকজন।
দারোয়ানের কথা শোনার পর যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে রবিউলের। দারোয়ানের কথা প্রথমে বিশ্বাস না হলেও প্রতিষ্ঠানের সবার ফোন বন্ধ পাওয়ার পর রবিউল নিশ্চিত হয় ভুল জায়গায় পা দিয়েছে সে। হতাশ হয়ে সে দিন ফিরে আসে রবিউল। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বরও ওই অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পায় সে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু রবিউলই নয়, তার মত অন্তত শতাধিক ছাত্রকে বিদেশ পাঠানোর নাম করে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ক্যানভাস। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছাত্র পাঠানোর নাম করে এই টাকা হাতায় তারা।
গত ১৭ ডিসেম্বর রবিউল ফার্মটির মালিক তোফাজ্জল হোসেন বাবু ওরফে মাহবুবের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা থানায় একটি জিডি দায়ের করেন।
রবিউল বাংলানিউজকে জানান, “ক্যানভাসে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। পরে অষ্ট্রেলিয়ায় সমস্যার কথা বলে এক মাসের মধ্যে আমাকে জর্জিয়ায় পাঠাবে বলে জানায়। এতে আমি রাজি হয়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দেই। আমাকে তারা মিয়াজি ট্যুরস এ্যান্ড ট্রাভেলসের অধীনে তুর্কিশ এয়ার লাইন্সের একটি টিকিট দেয়।”
তিনি জানান, “ কিন্তু তারা আমাকে কাগজ যা দিয়েছে তার সবই ভূয়া। বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে এন্ট্রি ভিসা সবই ছিল নকল। ”
তিনি বলেন, “১৭ তারিখে একবার মোবাইল খোলা পেয়ে ফোন দিলে ক্যানভাসের মালিক মাহবুব আমাকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়।”
তিনি বলেন, “এখন আমি কি করবো, ভাবতে পারছিনা।” তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উত্তরার ৩ নম্বর গেক্টরের ২ নম্বর রোডের ২৪ নং বাড়িতে অফিস ভাড়া নিয়ে বছর খানেক আগে তোফাজ্জল হোসেন বাবু ওরফে মাহাবুব ক্যানভাস নামের বিদেশে ছাত্র ভর্তির কনসালটিং ফার্ম স্থাপন করে।
গত প্রায় এক বছর ধরে তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বর রবিউল কর্তৃক থানায় জিডি দায়েরের পর সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে অফিসটিকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। আগে বড় সাইনবোর্ড থাকলেও এখন সেটিও নেই।
সেখানেই খোঁজ মেলে আরো কয়েকজন প্রতারিত ছাত্রের। এরা হলো আরমান আলী, আহমেদ জোবায়ের, গিয়াস উদ্দিন সজল, নোমান ইবনে মিনদাদ তূর্য, শুভাশিষ সরকার, আরিফুর রহমান, হিমেল ইসলাম ও আবু রায়হান।
প্রতারিত ছাত্র জোবায়ের, আরমান, তূর্য বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের ইউরোপের কয়েকটি দেশে পাঠানোর কথা। পুরো টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। দুই লাখ টাকা করে পরিশোধ করেছি। ক্যানভাস পালিয়ে গেছে শুনে আমরা এখানে এসেছি।”
তারা জানায়, “আমরা টাকা উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নেবো।”
এদিকে জিডি তদন্তকারী উত্তরা পশ্চিম থানারে উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই অফিস বন্ধ পেয়েছি, সাইন বোর্ড পর্যন্ত ছিলনা। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এখন এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বাবুর শাস্তি দাবির পাশাপাশি আর যেন কোনো শিক্ষার্থীকে এভাবে প্রতারণার শিকার না হতে হয় সে ব্যাপারেও সরকারের নজরদারি ও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান তারা।
এরপর রবিউলের থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়ে জর্জিয়ার ওই কলেজে ভর্তির কাগজপত্র ও বিমানের টিকিট দেয় ক্যানভাস। ভর্তির কাগজপত্র ও বিমানের টিকিট পেয়ে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর বাড়ির সবার থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকায় আসে রবিউল। ১৫ ডিসেম্বর সকালে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ২৪ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত ক্যানভাসের অফিসে যায় সে। কিন্তু তালাবদ্ধ অফিস দেখে থমকে যেতে হয় তাকে। এ সময় ক্যানভাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ দেখায়।
কাউকে না পেয়ে সেখানেই অপেক্ষা করতে থাকে রবিউল। প্রায় ৩ ঘন্টা কেটে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে ওই বাড়ির দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে দারোয়ান জানায়, দুইদিন আগেই অফিস গুটিয়ে ওই বাড়ি থেকে চলে গেছে ক্যানভাসের লোকজন।
দারোয়ানের কথা শোনার পর যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে রবিউলের। দারোয়ানের কথা প্রথমে বিশ্বাস না হলেও প্রতিষ্ঠানের সবার ফোন বন্ধ পাওয়ার পর রবিউল নিশ্চিত হয় ভুল জায়গায় পা দিয়েছে সে। হতাশ হয়ে সে দিন ফিরে আসে রবিউল। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বরও ওই অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পায় সে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু রবিউলই নয়, তার মত অন্তত শতাধিক ছাত্রকে বিদেশ পাঠানোর নাম করে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ক্যানভাস। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছাত্র পাঠানোর নাম করে এই টাকা হাতায় তারা।
গত ১৭ ডিসেম্বর রবিউল ফার্মটির মালিক তোফাজ্জল হোসেন বাবু ওরফে মাহবুবের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা থানায় একটি জিডি দায়ের করেন।
রবিউল বাংলানিউজকে জানান, “ক্যানভাসে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। পরে অষ্ট্রেলিয়ায় সমস্যার কথা বলে এক মাসের মধ্যে আমাকে জর্জিয়ায় পাঠাবে বলে জানায়। এতে আমি রাজি হয়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দেই। আমাকে তারা মিয়াজি ট্যুরস এ্যান্ড ট্রাভেলসের অধীনে তুর্কিশ এয়ার লাইন্সের একটি টিকিট দেয়।”
তিনি জানান, “ কিন্তু তারা আমাকে কাগজ যা দিয়েছে তার সবই ভূয়া। বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে এন্ট্রি ভিসা সবই ছিল নকল। ”
তিনি বলেন, “১৭ তারিখে একবার মোবাইল খোলা পেয়ে ফোন দিলে ক্যানভাসের মালিক মাহবুব আমাকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়।”
তিনি বলেন, “এখন আমি কি করবো, ভাবতে পারছিনা।” তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উত্তরার ৩ নম্বর গেক্টরের ২ নম্বর রোডের ২৪ নং বাড়িতে অফিস ভাড়া নিয়ে বছর খানেক আগে তোফাজ্জল হোসেন বাবু ওরফে মাহাবুব ক্যানভাস নামের বিদেশে ছাত্র ভর্তির কনসালটিং ফার্ম স্থাপন করে।
গত প্রায় এক বছর ধরে তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বর রবিউল কর্তৃক থানায় জিডি দায়েরের পর সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে অফিসটিকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। আগে বড় সাইনবোর্ড থাকলেও এখন সেটিও নেই।
সেখানেই খোঁজ মেলে আরো কয়েকজন প্রতারিত ছাত্রের। এরা হলো আরমান আলী, আহমেদ জোবায়ের, গিয়াস উদ্দিন সজল, নোমান ইবনে মিনদাদ তূর্য, শুভাশিষ সরকার, আরিফুর রহমান, হিমেল ইসলাম ও আবু রায়হান।
প্রতারিত ছাত্র জোবায়ের, আরমান, তূর্য বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের ইউরোপের কয়েকটি দেশে পাঠানোর কথা। পুরো টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। দুই লাখ টাকা করে পরিশোধ করেছি। ক্যানভাস পালিয়ে গেছে শুনে আমরা এখানে এসেছি।”
তারা জানায়, “আমরা টাকা উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নেবো।”
এদিকে জিডি তদন্তকারী উত্তরা পশ্চিম থানারে উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই অফিস বন্ধ পেয়েছি, সাইন বোর্ড পর্যন্ত ছিলনা। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এখন এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বাবুর শাস্তি দাবির পাশাপাশি আর যেন কোনো শিক্ষার্থীকে এভাবে প্রতারণার শিকার না হতে হয় সে ব্যাপারেও সরকারের নজরদারি ও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান তারা।
No comments