আইলা কি ভুলে যাওয়া দুর্যোগ?
আইলা এসেছে ও চলে গেছে আট মাস হলো। কিন্তু উপকূলীয় দুর্গত এলাকার এখনো যে চিত্র, তাতে মনে হতে পারে যেন গত মাসেই এই দুর্যোগ বয়ে গেছে। খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান, চিকিত্সা-পানি-জীবিকাসহ জীবিত মানুষের যা ছাড়া চলে না, তার সবকিছুরই অভাব এখনো সেখানে তীব্র। আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৫০ লাখ মানুষ। কিন্তু সরকার যেন এদের নিয়ে ক্লান্ত, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্যোগও দায়সারা। সম্প্রতি প্রথম আলোর ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আইলাকে ‘ভুলে যাওয়া দুর্যোগ’ হিসেবে সঠিকভাবেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
আমরা সবাই কি ভুলে গেছি, সিডর উপকূলীয় এলাকার জীবন-জীবিকা, প্রতিবেশ, কৃষি, অর্থনীতি ও সামাজিক এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষাকে বিপর্যয়ের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল। আর আইলা এসে তাদের বিপন্নতার খাদে ছুড়ে ফেলেছে। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া এ অবস্থা থেকে তাদের বেরিয়ে আসা এককথায় অসম্ভব। তাই সবাই ‘ভুলে’ থাকলেও আশ্রয়হীন ক্ষুধার্ত ও বিপন্ন আইলা-দুর্গতদের এ কষ্ট ভুলে থাকার কোনো উপায় নেই।
আইলার শিকারের তালিকায় ৫০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তো আছেই, এর সঙ্গে তিন লাখ ২৩ হাজার একরের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, গবাদিপশু মারা গেছে দেড় লাখ। ৭০ শতাংশ চিংড়ির ঘেরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবার পুনর্বাসন হয়নি, জলাবদ্ধতার জন্য প্রধান ফসল আমনের চাষ হতে পারেনি। দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোয় সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের প্রায় সব শর্তই অনুপস্থিত অথবা থাকলেও অতিসামান্য। এ অবস্থায় অপ্রতুল সরকারি বরাদ্দ মরুতে যেন কয়েক আঁজলা জল। অন্যদিকে বিদেশি সংস্থাগুলো সিডরের সময় যে পরিমাণ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল, আইলার বেলায় তারা ততটাই উদাসীন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি সিডরে দিয়েছিল তিন কোটি ডলারের সাহায্য, কিন্তু আইলার ত্রাণে তাদের অবদান পাঁচ লাখ ডলারের ওপরে ওঠেনি। একই কথা প্রযোজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইডের বেলায়ও। অন্যদিকে সরকার মাত্র ১১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েই হয়রান হয়ে পড়েছে।
প্রথম আলোর বরাতে জানা যাচ্ছে, আইলার আঘাতে ১৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে না আনলে নিরাশ্রয়ী মানুষ আগামী বর্ষায় একেবারেই ভেসে যাবে। এ ক্ষেত্রে দুটি অভিযোগ রয়েছে।
প্রথমত, সরকার কি আইলার ক্ষতকে জিইয়ে রেখে তা দেখিয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা আনার পন্থা গ্রহণ করেছে? দ্বিতীয়ত, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনর্নির্মাণ না করার সঙ্গে কি টেন্ডারবাজি ও দলীয়করণের সম্পর্ক রয়েছে?
ফিবছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আমরা দেখতে চাই না। আমরা চাই না দীর্ঘদিনের পরিশ্রম, বিনিয়োগ ও যত্নে গড়া সম্পদ ও অবকাঠামো সিডর ও আইলার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের এক ধাক্কাতেই বিলীন হয়ে যাক। সে জন্যই আমরা বারবার বলে আসছি, ত্রাণ-পুনর্বাসন ও অবকাঠামো নির্মাণ যেন একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়। যেন তা উপকূলীয় অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, কৃষি ও উত্পাদনব্যবস্থার সহায়ক হয়। তবে আপাতত বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে থাকা আইলা-দুর্গতদের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমরা সবাই কি ভুলে গেছি, সিডর উপকূলীয় এলাকার জীবন-জীবিকা, প্রতিবেশ, কৃষি, অর্থনীতি ও সামাজিক এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষাকে বিপর্যয়ের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল। আর আইলা এসে তাদের বিপন্নতার খাদে ছুড়ে ফেলেছে। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া এ অবস্থা থেকে তাদের বেরিয়ে আসা এককথায় অসম্ভব। তাই সবাই ‘ভুলে’ থাকলেও আশ্রয়হীন ক্ষুধার্ত ও বিপন্ন আইলা-দুর্গতদের এ কষ্ট ভুলে থাকার কোনো উপায় নেই।
আইলার শিকারের তালিকায় ৫০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তো আছেই, এর সঙ্গে তিন লাখ ২৩ হাজার একরের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, গবাদিপশু মারা গেছে দেড় লাখ। ৭০ শতাংশ চিংড়ির ঘেরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবার পুনর্বাসন হয়নি, জলাবদ্ধতার জন্য প্রধান ফসল আমনের চাষ হতে পারেনি। দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোয় সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের প্রায় সব শর্তই অনুপস্থিত অথবা থাকলেও অতিসামান্য। এ অবস্থায় অপ্রতুল সরকারি বরাদ্দ মরুতে যেন কয়েক আঁজলা জল। অন্যদিকে বিদেশি সংস্থাগুলো সিডরের সময় যে পরিমাণ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল, আইলার বেলায় তারা ততটাই উদাসীন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি সিডরে দিয়েছিল তিন কোটি ডলারের সাহায্য, কিন্তু আইলার ত্রাণে তাদের অবদান পাঁচ লাখ ডলারের ওপরে ওঠেনি। একই কথা প্রযোজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইডের বেলায়ও। অন্যদিকে সরকার মাত্র ১১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েই হয়রান হয়ে পড়েছে।
প্রথম আলোর বরাতে জানা যাচ্ছে, আইলার আঘাতে ১৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে না আনলে নিরাশ্রয়ী মানুষ আগামী বর্ষায় একেবারেই ভেসে যাবে। এ ক্ষেত্রে দুটি অভিযোগ রয়েছে।
প্রথমত, সরকার কি আইলার ক্ষতকে জিইয়ে রেখে তা দেখিয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা আনার পন্থা গ্রহণ করেছে? দ্বিতীয়ত, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনর্নির্মাণ না করার সঙ্গে কি টেন্ডারবাজি ও দলীয়করণের সম্পর্ক রয়েছে?
ফিবছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আমরা দেখতে চাই না। আমরা চাই না দীর্ঘদিনের পরিশ্রম, বিনিয়োগ ও যত্নে গড়া সম্পদ ও অবকাঠামো সিডর ও আইলার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের এক ধাক্কাতেই বিলীন হয়ে যাক। সে জন্যই আমরা বারবার বলে আসছি, ত্রাণ-পুনর্বাসন ও অবকাঠামো নির্মাণ যেন একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়। যেন তা উপকূলীয় অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, কৃষি ও উত্পাদনব্যবস্থার সহায়ক হয়। তবে আপাতত বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে থাকা আইলা-দুর্গতদের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
No comments