আমেরিকার দিকে তাকিয়ে যেন পুরো বিশ্ব! by সিদ্দিকুর রহমান সুমন
শেষ লগ্নে দু’পক্ষের মধ্যে প্রচারের লড়াইও জমে উঠেছে। নির্বাচন ৫ তারিখে হলেও অপেক্ষায় থাকতে হবে আগামী কয়েকদিন। কারন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী পদ্ধতির কারনে ফল পেতে কয়েকদিন এমনকি কয়েক সাপ্তাহ লেগে যায়। ইলেকটরাল ভোটের চুড়ান্ত ফল পাওয়ার পরই জানা যাবে কে হয়েছেন বিজয়ী। সব মিলিয়ে যিনি অন্তত: ২৭০টি বা তার বেশী ইলেক্টরাল ভোট পাবেন তিনিই হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
কমলাকে জিতানোর জন্য ওবামা, ক্লিন্টন এবং বাঘা বাঘা শিল্পীরা, এইসঙ্গে মিশেল ওবামা এবং হিলারি ক্লিন্টনও মাঠে নেমেছেন। ওদিকে দুই শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ও বিল গেটস অর্থের ভাণ্ডার নিয়ে নেমেছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে জিতিয়ে নিজের ব্যবসায় আরো শিখরে উঠতে। জো বাইডেনের বয়সের ভারসাম্যহীনতার জন্য তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরতে হয়েছে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও বয়স একটি ফ্যাক্টর, এদিক থেকে কমলা সুবিধাজনক অবস্থানে। তবে বয়সে প্রবীণ হলেও ট্রাম্প আক্রমণাত্নক, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ও সফল ব্যবসায়ী যা মার্কিনিদের পছন্দ। আবার জেনারেশন গ্যাপেও কমলার অবস্থান সুবিধাজনক।
৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্য ১৯টি ডেমোক্র্যাটদের যেখানে ইলেকটরাল ভোট ২২৬টি, আর রিপাবলিকানদের দখলে ২৪টি অংগরাজ্যে যাদের ভোট ২১৯টি, অন্যদিকে ৭টি দোদুল্যমান রাজ্যের ভোট ৯৩টি, এখান থেকে ৪৪টি পেলে কমলা জয়ী আর ট্রাম্পকে পেতে হবে ৫১টি। এখানেই দোদুল্যমান রাজ্যগুলির মাহাত্ম্য। তাই দুইজনই আদা-জল খেয়ে নেমেছেন ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জন করতে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে কেন পৃথিবীব্যাপী এমন উৎসাহ? কারণ, পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে যা কিছুই ঘটুক - যুদ্ধ কিংবা যে কোনো সংকট-সমস্যা বা যে কোন সামাজিক-রাজনৈতিক-মানবাধিকার সমস্যা - সবখানেই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র জড়িত এবং তা গুরুত্ব বহন করে। ইউক্রেন, গাজা, লেবানন, তাইওয়ান, এমনকি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থানেও আমেরিকা সক্রিয়। তাছাড়া, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সবগুলি সংস্থার উপরও মোড়লিপনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরান, রাশিয়া, চীন, ভারত, পাকিস্তান সবাই নিজ নিজ স্বার্থে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশি আমেরিকানরাও ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান শিবিরে বিভক্ত, তবে ডেমোক্র্যাট সমর্থক বেশী।
নির্বাচনী অ্যাজেন্ডা ও প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে কমালা-ট্র্যাম্প দুইজন কিছুটা দুই মেরুর, বিশেষ করে অভিবাসী ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায়। কমলা মধ্যবিত্তদের প্রতি সদয়, আর ট্রাম্প ধনী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে উন্নয়নে বিশ্বাসী।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে কেউ জিতুক তাতে মার্কিন পররাষ্ট্র ও ভূরাজনৈতিক নীতিতে তেমন পরিবর্তন হবে না তবুও ব্যক্তি ট্রাম্প ও কমলার দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটুকু প্রভাব ফেলবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সব সময় নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পর মঙ্গলবার হয়। এ বছর সেই অগ্নিপরীক্ষার দিন ৫ নভেম্বর। বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী ১১ ঘণ্টা পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হবে ভোটাভুটির পর্ব।
No comments