স্থবির শিক্ষা খাত by পিয়াস সরকার

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পেরিয়ে গেছে দু’মাস। এখনো স্থবিরতা কাটেনি শিক্ষা প্রশাসনে। কিছুটা গা এড়িয়েই চলছেন প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। আবার নানা কর্মকাণ্ডেই সমালোচনা কুড়িয়েছেন তারা। পরীক্ষা নিচ্ছে না পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), সদস্যের অভাবে কাজ করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ২০২৫ সালের বই দেয়ার সময় এগিয়ে এলেও এগোয়নি পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজ। তালগোল পাকিয়ে গেছে শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে। দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বদলির আশ্বাস দেয়ার পরও রোডম্যাপ ঠিক করা হয়নি। আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দ্রুততার সঙ্গে ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) নিয়োগ দেয়া হলেও কাটেনি স্থবিরতা। প্রশাসন চাইলেও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না সিদ্ধান্ত। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো নানা দিক সরাসরি ও পর্দার আড়ালে থেকে নাড়ছে কলকাঠি।

স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে হটাতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাখাতটাই রয়েছে প্রদীপের আলো থেকে দূরে। শিক্ষার্থীরা মূলত আন্দোলন শুরু করেছিলেন কোটা সংস্কারের দাবিতে। তারা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটার সংস্কার চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি চাকরি নিয়ন্ত্রণ করা পিএসসিকে সচল করতে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও হাত গুটিয়ে বসে আসে প্রতিষ্ঠানটি। আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক সুবিধাভোগী পিএসসি’র চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনসহ সদস্যরা। ব্যাপক সমালোচনার পরও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তই নেয়া হয়নি। আটকে আছে তিনটি বিসিএসসহ একাধিক নন-ক্যাডারের নিয়োগ কার্যক্রম। হচ্ছে না পদোন্নতির পরীক্ষাও। আন্দোলনের সময় স্থগিত করা হয় ৪৪তম বিসিএস’র মৌখিক পরীক্ষা। পরবর্তীতে ৪৬তম বিসিএস’র লিখিত পরীক্ষা। ১৪ই সেপ্টেম্বর ক্যাডারভুক্ত ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের অর্ধবার্ষিক বিভাগীয় পরীক্ষা স্থগিত হয়। আর দীর্ঘদিন ধরে ৪৫তম বিসিএস’র লিখিত পরীক্ষার ফলও আটকে আছে।

আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী প্রশাসন দিয়েই চলছে পিএসসি। পিএসসি’র চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এসএম গোলাম ফারুক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ফয়েজ আহম্মদ। অন্য সদস্যরা হলেন, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক (প্রকৌশল) জাহিদুর রশিদ, ঢাবি’র আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুবিনা খোন্দকার, কেএম আলী আজম ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মো. খলিলুর রহমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাবেক সচিব, মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী সাবেক ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করা ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পিএসসি’র এক সদস্য বলেন, আমাদের এখন বার্তা প্রয়োজন। আমরা যে নতুন পরিকল্পনা নেবো কিসের ভিত্তিতে। আমরা যে এই অবস্থায় থাকবো নাকি সামনে চলে যেতে হবে সেটার একটা বার্তা প্রয়োজন। পিএসসি স্থবির হওয়ায় দেশেরসহ চাকরিপ্রত্যাশীদের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে একটি বার্তা দেয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। এতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকার যেভাবে চাইবে সেভাবেই আমরা কাজ করবো। সংস্কার বা অপসারণ যেটাই চাক সেটাইতেই আমরা রাজি আছি।

এদিকে বিসিএস’র প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ অভিযুক্তরা স্বীকার করার পরও পিএসসি বারংবার না করে আসছে। এখনও স্বপদে বহাল আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরানোর জন্য সোচ্চার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। গত শনিবার ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লেখেন- এই সপ্তাহের মধ্যে পিএসসি সংস্কার করে চাকরিপ্রত্যাশীদের জব এক্সামগুলো শুরু করতে হবে। যে তরুণ প্রজন্ম এই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক তাদের প্রায়োরিটির কথা ভুলে গেলে চলবে না।
গতকালও বিপাকে পড়েছিলেন পিএসসি সদস্যরা। জুুনিয়র ইন্সট্রাক্টর নিয়োগের ফল প্রত্যাশীরা দ্রুত ফল প্রকাশের দাবিতে আন্দোলন করেন এবং আলোচনায় বসেন। কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো আশ্বাস না মেলায় বাইরে অবস্থান অব্যাহত রাখেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরপর তারা কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখে আন্দোলন করতে থাকেন।

আওয়ামী লীগের আমলে ইউজিসি হয়ে উঠেছিল নেতার স্বজন ও পরিচিতদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে। চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার কাজী জাফরুল্লাহর ভাই অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। আবার সদস্য হিসেবে ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ছেলে অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র  চন্দ। এ ছাড়াও বাকি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ, অধ্যাপক ড. হাসিনা খান ও অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন। তারা সবাই আওয়ামী ঘনিষ্ঠ লোক। তাদের অপসারণ করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। ইউজিসিতে চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইউজিসি চেয়ারম্যানের। এ ছাড়াও সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে। ইউজিসি’র শীর্ষ পদে রদবদল হলেও পুরনো ধাচেই আছে প্রতিষ্ঠানটি। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ভীত অবস্থায়। তাই তারা চলমান কাজগুলোতে নতুন করে এগুচ্ছে না। দু’মাস কেটে গেলেও নিয়োগ দেয়া হয়নি বাকি তিন সদস্যকে। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ সম্প্রতি মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের সদস্যরা পূর্ণাঙ্গভাবে যোগদান না করায় কাজে গতি আসছে না। তারা যোগ দিলেই ইউজিসি জোরদারভাবে কাজ শুরু করবে।

এদিকে ১০০ দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম। আন্দোলনের তোড়ে জুলাইয়ের শুরু থেকেই বন্ধ হয়ে যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও শুরু করা যায়নি ক্লাস ও পরীক্ষা। একের পর এক ভিসি পদত্যাগের কারণে অস্থির হয়ে ওঠে পরিবেশ। এরপর বিপুল পরিমাণ ভিসি নিয়োগ দেয়া হলেও পুরোপুরি শিক্ষার পরিবেশ এখনো ফুটে ওঠেনি।
অন্যদিকে আগামী বছরের জন্য পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ চলার কথা থাকলেও তা থেমে আছে। সংশোধন ও পরিমার্জনে গঠিত কমিটি ৩০শে সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমালোচনার প্রেক্ষিতে বাতিল হয় সেই কমিটি। নতুন সদস্য সংযুক্ত না করে কমিটি বাতিল করে দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম নেয়। এরপর পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিলের নিন্দা জানান ১২২ বিশিষ্ট নাগরিক। তারা অবিলম্বে কমিটি পুনর্বহাল করার দাবি করেন।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষার সংস্কারে গঠিত কমিটি নিয়েও আছে নানা সমালোচনা। এই কমিটিতে দু’জন শিক্ষাবিদ, তিনজন সরকারি কর্মকর্তা (আমলা), তিনজন এনজিও প্রতিনিধি এবং একজন শিক্ষক রয়েছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও এই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে এখানে আরও শিক্ষকের উপস্থিতি প্রয়োজন। মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে এই কমিটির পূর্ণতা পাওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যন্ত এলাকার এক প্রাথমিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষার সংস্কারের জন্য প্রথমত প্রয়োজন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করা এবং উপলব্ধি করা। শিক্ষকের যুক্তকরণের পাশাপাশি একজন অভিভাবক, প্রত্যন্ত এলাকায় মাঠ পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করা একজন প্রতিনিধি, দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পড়ে আসা কোনো একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে যুক্ত করা প্রয়োজন ছিল। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই কমিশনের কার্যক্রম শুধু ‘কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ না হয়ে যায়।

আবার শিক্ষার মেরুদণ্ড বাঁকা করে ফেলা হয়েছে বিগত ১৫ বছরে। ব্যাপকভাবে হয়েছে স্বজনপ্রীতি ও দলীয় লোকজনকে পদায়ন। শিক্ষা প্রশাসনের মাথা থেকে অনেক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয়া হলেও স্বপদেই আছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, সকল শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম)সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে সচিব পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে গত নভেম্বরে নিয়োগ পাওয়া কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব পালন করছেন এখনো। আবার অনেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ ও সুবিধা পেলেও এখন গাইছেন বিএনপি’র গুণগান। বহাল তবিয়তেই দায়িত্ব পালন করছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি আওয়ামী শাসনামলে ডিসি থেকে শুরু করে সামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শেখ ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সিইও এবং পরবর্তীতে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হয়েছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ পদত্যাগ করার পর আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী পরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম দায়িত্ব পান। তিনি এখন বিএনপি’র এক কেন্দ্রীয় নেতার বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেন। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি ঢাকাতেই পদায়ন রয়েছেন। রাজধানীর ইডেন কলেজ, বিজ্ঞান কলেজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে সর্বশেষ মাউশিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে পদায়ন হন। ইডেন কলেজে থাকাকালীন বাসে থাকা সাবেক ‘প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপহারের বাস’ এই স্টিকারগুলো খুলে ফেলেন। একইভাবে পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর সৈয়দ জাফর আলী, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর একিউএম শফিউল আজমসহ অনেক কর্মকর্তা এখনো মাউশিতে বহাল রয়েছেন। ৪ঠা আগস্ট নওফেলের পক্ষে মাউশিতে মিছিল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়ে মিছিল দেয়া হয়। এর প্রধান উদ্যোক্তা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। এতে যোগ দিয়েছিলেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা- মোহাম্মদ হাসানাত, স্বরূপ কুমার, আলমগীর হোসেন, মো. মুকিব মিয়া, শাহিনুর ইসলাম, রিপন মিয়া, মঞ্জুরুল আলম, কামরুন নাহার, শফিকুল ইসলাম, শফিউল্লাহ দিদার, সাদিয়া সুলতানা, ওয়ায়েছ আলকারনী মুন্সী, প্রলয় দাস, মাউশির- কাওছার আহমেদ, তরিকুল ইসলাম, রিয়াদ আরাফাত, হাফিজুর রহমান প্রমুখ। এদের মধ্যে ইতিমধ্যে সরিয়ে দেয়া হয়েছে শিক্ষা পরির্দশক মো. রিপন মিয়া, মো. মুকিব মিয়াকে। বাকিরা রয়েছেন স্বপদে। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) পরিচালক পদে প্রফেসর ড. উম্মে আসমাসহ উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালকরা রয়েছেন আগের মতোই। আবার শিক্ষা বোর্ডগুলোতে এখনো দায়িত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া সকল চেয়ারম্যানই। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) একটি দুর্নীতিগ্রস্ত ও অনিয়মের পাহাড়সম প্রতিষ্ঠান। এখানে চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন ছাড়া হয় না গতি। প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ চেয়ারম্যান ও সচিবের পরিবর্তন আসলেও পূর্বের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা পুরনো দায়িত্বেই। এদিকে এনটিআরসিএ’র পূর্বের দায়িত্বরতরা এমনভাবে প্রক্রিয়া সাজিয়েছে যে চাইলেও সুরাহা করতে পারছে না। দীর্ঘদিনের বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির দাবি শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্মতি জানালেও নিয়মের বেড়াজালে আটকে আছে। এখনো এনটিআরসিএ’র জালে আটকে আছে লাখো চাকরিপ্রত্যাশী।

শিক্ষার সার্বিক বিষয়ে গত শনিবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, শিক্ষার মানের থেকে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত ছিল পূর্বের সরকার। এমনি অবস্থা যে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি করে বড় বড় সুপারিশ আসছে। আমরা তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে পারছি না। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন করে তারা অপরাজনীতি, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় তিনি ইচ্ছাকৃত শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন উল্লেখ করে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

No comments

Powered by Blogger.