অযোধ্যার সেই জমিতে হবে রামমন্দির: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় মসজিদের জন্য বিকল্প জায়গা
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ |
হিন্দুদের
দাবিই মেনে নিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। মেনে নিয়েছেন বিতর্কিত স্থানেই
রাম মন্দির নির্মাণের আর্জিও। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার
রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ ভূমি বিবাদ মামলার বহু প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণা করে।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, শরদ অরবিন্দ বোরদে, এস আব্দুল নাজির, অশোক ভূষণ
ও ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত ৫ সদস্যের সংবিধান বেঞ্চ
সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় ঘোষণা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে বিতর্কিত স্থানেই রামমন্দির নির্মাণের কথা বলেছেন। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে মন্দির নির্মাণের জন্য তিন মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করতে বলেছেন। সেইসঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি হিন্দুদের হাতে দেয়ার কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট। তবে সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানিয়েছেন, মুসলমানদেরর বঞ্চিত করা হচ্ছে না।
তাদের অযোধ্যারই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য বিকল্প ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করা হবে। সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডের আইনজীবী জাফরিয়াব জিলানি বলেছেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করছি। তবে এই রায়ে আমরা খুশি নই। তবে কাউকে কোনো প্রতিবাদ-প্রতিরোধের রাস্তায় না যাওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন জাফরাইব।
অন্যদিকে হিন্দু মহাসভার আইনজীবী বরুণ কুমার সিংহ বলেছেন, এটা ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের মধ্যদিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। রায়ে সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারকরা বলেছেন, জমির মালিকানার পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মসজিদটি ফাঁকা জায়গায় তৈরি হয়নি। এর নিচে কোনো স্থাপনা ছিল। যে কাঠামো ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল তা মসজিদ ছিল না। তা যে মন্দির ছিল তাও নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না। অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু জানায় নি। আদালতের আরো পর্যবেক্ষণ, রাম যে অযোধ্যায় জন্মেছিলেন হিন্দুদের এই বিশ্বাসের ওপর প্রশ্ন তোলা যায় না। ১৮৫৬-৫৭ সালের মধ্যে যে নথি মিলেছে, হিন্দুদের সেখানে পুজো করতে কোনো বাধাদান করা হয়নি। তবে বিচারপতিরা সর্বসম্মতিক্রমে সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়ার দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আদালত ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা যে আইনবিরুদ্ধ হয়েছে সেকথাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
ভারতের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় রায় পড়া শুরু করেছিলেন রঞ্জন গগৈ । শুক্রবার সন্ধ্যাতেই চার বিচারপতির সঙ্গে মামলা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। তার পরই শনিবার আদালতের ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও মামলার রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। মামলাকে ঘিরে যাতে কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে কারণে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গেও আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আগামী ১৭ই নভেম্বর অবসর নেবেন। তার আগেই তিনি এই রায় দেবেন বলে আগেই জানা গিয়েছিল। গত ৬ই আগস্ট থেকে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার টানা ৪০ দিন শুনানি হয়েছে। শুনানির পর রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
প্রায় পাঁচ শ’ বছর ধরে চলছিল এই বিতর্ক। মুঘল শাসন শেষ হয়ে ভারতে বৃটিশ রাজ প্রতিষ্ঠার পরই আইনি লড়াই শুরু হয়েছিল ফৈজাবাদের আদালতে। তারপর প্রায় ১৩৪ বছর কেটে গেছে। শনিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই বিতর্কের অবসান ঘটলো না নতুন বিতর্ক তৈরি হলো তা বলার সময় অবশ্য এখনও আসেনি।
১৫২৮ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপ্রধান মীর বাকী বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৮৫ সালে মহন্ত রঘুবীর দাস বাবরি মসজিদের বাইরে একটি শামিয়ানা খাটিয়ে রামলালার মূর্তি স্থাপনের দাবি জানান। ফৈজাবাদ কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ১৯৪৯ সালে মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হয়। ১৯৫০ সালে জনৈক গোপাল সিমলা বিশারদ রামলালার মূর্তি পূজার জন্য আর্জি জানিয়ে ফৈজাবাদ জেলা কোর্টে আবেদন জানান। ১৯৫৯ সালে এলাকার অধিকার দাবি করে নির্মোহী আখড়া মামলা করে। ১৯৬১ সালে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডও এলাকার অধিকার জানিয়ে পাল্টা আবেদন করে। তবে ১৯৮৬ সালের ১লা অক্টোবর স্থানীয় আদালত সরকারকে এক নির্দেশে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দিয়ে রামলালা যেখানে রয়েছে তার গেট খুলে দিতে বলে। ১৯৮৯ সালে ভগবান শ্রী রামলালা বিরাজমানের পক্ষে তার সখা এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেওকী নন্দন আগরওয়াল আদালতে মামলা করেন।
১৯৯০ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানী গুজরাটের সোমনাথ থেকে দেশব্যাপী রথযাত্রা শুরু করেন। ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে করসেবকদের একটি দল উন্মত্ততার সঙ্গে বাবরি মসজিদকে ধূলিসাৎ করে দেয়। ২০০২ সালের এপ্রিলে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিতর্কিত স্থানের মালিকানা সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। ২০১০ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২:১ সংখ্যাধিক্যের রায়ে বিতর্কিত জমিকে সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালার মধ্যে তিনভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেয়। এরপরই সব পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। ২০১১সালের (৯ই মে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার ভূমি বিবাদ নিয়ে এলাহাবাদ হাইকের্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে ২০১৭ সালের ২১শে মার্চ সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে কোর্টের বাইরে সমাধান খোঁজার কথা বলেন। ২০১৯ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতার কথা জানায়। তিন সদস্যের মথ্যস্থতাকারী কমিটি তৈরি করে দেয়। তবে কমিটি মধ্যস্থতায় ব্যর্থ হওয়ার কথা জানানোর পর ২০১৯ সালের ৬ই আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা ভূমি বিবাদ মামলার প্রতিদিন শুনানির কথা ঘোষণা করে। ১৬ই অক্টোবর:শুনানি শেষ ঘোষণা করার পর আদালত রায় সংরক্ষিত রেখেছিল।
এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অযোধ্যাকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। গোটা উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৪০ হাজার পুলিশকে আইনশৃঙ্খলা দেখার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। সব রাজ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে বলে জানা গেছে। অযোধ্যা মামলার রায় নিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মন্ত্রীদেরও তিনি কোনোরকম বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং এসএমএসের মাধ্যমে রায় বেরোনোর পর যাতে কোনো রকম গুজব ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্যও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি রাজ্যের স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে বিতর্কিত স্থানেই রামমন্দির নির্মাণের কথা বলেছেন। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে মন্দির নির্মাণের জন্য তিন মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করতে বলেছেন। সেইসঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি হিন্দুদের হাতে দেয়ার কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট। তবে সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানিয়েছেন, মুসলমানদেরর বঞ্চিত করা হচ্ছে না।
তাদের অযোধ্যারই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য বিকল্প ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করা হবে। সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডের আইনজীবী জাফরিয়াব জিলানি বলেছেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করছি। তবে এই রায়ে আমরা খুশি নই। তবে কাউকে কোনো প্রতিবাদ-প্রতিরোধের রাস্তায় না যাওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন জাফরাইব।
অন্যদিকে হিন্দু মহাসভার আইনজীবী বরুণ কুমার সিংহ বলেছেন, এটা ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের মধ্যদিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। রায়ে সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারকরা বলেছেন, জমির মালিকানার পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মসজিদটি ফাঁকা জায়গায় তৈরি হয়নি। এর নিচে কোনো স্থাপনা ছিল। যে কাঠামো ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল তা মসজিদ ছিল না। তা যে মন্দির ছিল তাও নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না। অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু জানায় নি। আদালতের আরো পর্যবেক্ষণ, রাম যে অযোধ্যায় জন্মেছিলেন হিন্দুদের এই বিশ্বাসের ওপর প্রশ্ন তোলা যায় না। ১৮৫৬-৫৭ সালের মধ্যে যে নথি মিলেছে, হিন্দুদের সেখানে পুজো করতে কোনো বাধাদান করা হয়নি। তবে বিচারপতিরা সর্বসম্মতিক্রমে সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়ার দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আদালত ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা যে আইনবিরুদ্ধ হয়েছে সেকথাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
ভারতের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় রায় পড়া শুরু করেছিলেন রঞ্জন গগৈ । শুক্রবার সন্ধ্যাতেই চার বিচারপতির সঙ্গে মামলা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। তার পরই শনিবার আদালতের ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও মামলার রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। মামলাকে ঘিরে যাতে কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে কারণে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গেও আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আগামী ১৭ই নভেম্বর অবসর নেবেন। তার আগেই তিনি এই রায় দেবেন বলে আগেই জানা গিয়েছিল। গত ৬ই আগস্ট থেকে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার টানা ৪০ দিন শুনানি হয়েছে। শুনানির পর রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
প্রায় পাঁচ শ’ বছর ধরে চলছিল এই বিতর্ক। মুঘল শাসন শেষ হয়ে ভারতে বৃটিশ রাজ প্রতিষ্ঠার পরই আইনি লড়াই শুরু হয়েছিল ফৈজাবাদের আদালতে। তারপর প্রায় ১৩৪ বছর কেটে গেছে। শনিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই বিতর্কের অবসান ঘটলো না নতুন বিতর্ক তৈরি হলো তা বলার সময় অবশ্য এখনও আসেনি।
১৫২৮ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপ্রধান মীর বাকী বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৮৫ সালে মহন্ত রঘুবীর দাস বাবরি মসজিদের বাইরে একটি শামিয়ানা খাটিয়ে রামলালার মূর্তি স্থাপনের দাবি জানান। ফৈজাবাদ কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ১৯৪৯ সালে মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হয়। ১৯৫০ সালে জনৈক গোপাল সিমলা বিশারদ রামলালার মূর্তি পূজার জন্য আর্জি জানিয়ে ফৈজাবাদ জেলা কোর্টে আবেদন জানান। ১৯৫৯ সালে এলাকার অধিকার দাবি করে নির্মোহী আখড়া মামলা করে। ১৯৬১ সালে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডও এলাকার অধিকার জানিয়ে পাল্টা আবেদন করে। তবে ১৯৮৬ সালের ১লা অক্টোবর স্থানীয় আদালত সরকারকে এক নির্দেশে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দিয়ে রামলালা যেখানে রয়েছে তার গেট খুলে দিতে বলে। ১৯৮৯ সালে ভগবান শ্রী রামলালা বিরাজমানের পক্ষে তার সখা এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেওকী নন্দন আগরওয়াল আদালতে মামলা করেন।
১৯৯০ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানী গুজরাটের সোমনাথ থেকে দেশব্যাপী রথযাত্রা শুরু করেন। ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে করসেবকদের একটি দল উন্মত্ততার সঙ্গে বাবরি মসজিদকে ধূলিসাৎ করে দেয়। ২০০২ সালের এপ্রিলে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিতর্কিত স্থানের মালিকানা সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। ২০১০ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২:১ সংখ্যাধিক্যের রায়ে বিতর্কিত জমিকে সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালার মধ্যে তিনভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেয়। এরপরই সব পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। ২০১১সালের (৯ই মে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার ভূমি বিবাদ নিয়ে এলাহাবাদ হাইকের্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে ২০১৭ সালের ২১শে মার্চ সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে কোর্টের বাইরে সমাধান খোঁজার কথা বলেন। ২০১৯ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতার কথা জানায়। তিন সদস্যের মথ্যস্থতাকারী কমিটি তৈরি করে দেয়। তবে কমিটি মধ্যস্থতায় ব্যর্থ হওয়ার কথা জানানোর পর ২০১৯ সালের ৬ই আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা ভূমি বিবাদ মামলার প্রতিদিন শুনানির কথা ঘোষণা করে। ১৬ই অক্টোবর:শুনানি শেষ ঘোষণা করার পর আদালত রায় সংরক্ষিত রেখেছিল।
এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অযোধ্যাকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। গোটা উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৪০ হাজার পুলিশকে আইনশৃঙ্খলা দেখার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। সব রাজ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে বলে জানা গেছে। অযোধ্যা মামলার রায় নিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মন্ত্রীদেরও তিনি কোনোরকম বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং এসএমএসের মাধ্যমে রায় বেরোনোর পর যাতে কোনো রকম গুজব ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্যও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি রাজ্যের স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
No comments