এবার বাবরি মসজিদ ভাঙার রায়ের অপেক্ষা
অযোধ্যার
ভূমি বিবাদ মামলার রায় বেরোনোর পর আলোচনায় উঠে এসেছে প্রায় ৫০০ বছরের
ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভাঙার রায়ের প্রশ্নটি। মসজিদ ভাঙার জন্য শাস্তি দেওয়া
হবে কি লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ার-সহ
অন্য নেতাদের? অযোধ্যা ভূমি বিরোধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোনও প্রভাব
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় পডবে কিনা, তা নিয়ে এখন নানা মহলে চলছে
জল্পনা।
অবশ্য অযোধ্যা মামলার রায়ে সপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙা আইনবিরুদ্ধ কাজ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন। আদালতের মতে, যে অন্যায় হয়েছে তার প্রতিকার করা উচিত। একই সঙ্গে ১৯৪৯ সালে ২২ ও ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে বাবরি মসজিদে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রাখার প্রবল সমালোচনা করেছে আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, তখন মুসলিমদের আইন মেনে সেখান থেকে সরানো হয়নি। বরং তাদের প্রার্থনা জানানোর স্থান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এর পরে ফৌজদারি দন্ডবিধির ১৪৫ ধারা মেনে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিচারপতিদের বক্তব্য, এর পরে মামলা চলাকালীনই রীতিমতো হিসেব কষে মসজিদ ধ্বংস করা হয়। ৪৫০ বছরেরও বেশি আগে তৈরি মসজিদ থেকে বঞ্চিত হন মুসলিমরা।
তাদের মতে, সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া আশ্বাস সত্ত্বেও ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর মসজিদ ধ্বংস করা হয়। এটা আইন ভাঙার বড় নজির।
বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে মামলা চলছে লখনউয়ের সিবিআই আদালতে। ২৭ বছর ধরে চলছে মামলা, ঢিলেতালে। আদালতে বিচার যাতে দ্রুততার সঙ্গে করা হয় সেজন্য শনিবার সুপ্রিম কোর্ট সময় বেঁধে দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, জানুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করে এপ্রিলের মধ্যে রায় দিতে হবে। রায়দানের জন্য সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদবের অবসরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত এবং সাক্ষীদের মধ্যে অনেকেই মৃত। ফলে অযোধ্যা জমি বিরোধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোনও প্রভাব বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় পডবে কিনা, তা নিয়ে এখন নানা মহলে চলছে জল্পনা।
১৯৮৪ সালে নতুন উদ্যমে রামমন্দির আন্দোলন শুরু করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। দু-বছর পর, আদালতের নির্দেশে তালা খুলে যাওয়ায়, তুঙ্গে উঠেছিল মন্দিরের দাবি। ১৯৮৯ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী আমলেই বিতর্কিত জমির কাছেই রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরের বছর অযোধ্যায় মন্দিরের দাবিতে ভারত জুড়ে রথযাত্রায় বেরিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। ১৯৯০ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর সোমনাথ থেকে অযোধ্যা, যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। যাত্রা চলাকালীন সারা দেশে দেড়শোর বেশি হিংসার ঘটনায় পাঁচশোর বেশি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। ঐ বছরের ৩০শে অক্টোবর কর সেবকরা জোর করে বাবরি মসজিদে ঢুকতে গেলে গুলি চালিয়েছিল মুলায়ম সিং যাদবের পুলিশ। ২০ জন কর-সেবকের মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৯১ সালের জুনে উত্তর প্রদেশে বসেছিলেন বিজেপি নেতা কল্যাণ সিং। দিল্লিতে ছিল কংগ্রেসের সরকার। রাম মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণও করেছিল কল্যাণ সিং সরকার। ১৯৯২ সালের ৩০ অক্টোবর ভিএইচপি ঘোষণা, ৬ই ডিসেম্বর কর-সেবার ঘোষণা দিয়েছিল। নির্ধারিত দিনে বেলা ১০টার মধ্যেই প্রায় ২ লাখ কর-সেবক বাবরি মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়েছিল। পৌঁছে গিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতী, অশোক সিঙ্ঘল এবং বিনয় কাটিয়ার-সহ অন্য বিজেপি নেতারা। দুপুর ১২টা নাগাদ বাবরি মসজিদের ভিতর ঢুকে পড়েন। কর-সেবকরা মসজিদ ভাঙা শুরু করেছিল। সুপ্রিম কোর্টে প্রতিশ্রুতি দিলেও সেদিন কর-সেবকদের নিয়ন্ত্রণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি উত্তরপ্রদেশের কল্যাণ সিং সরকার। ৮০ কোম্পানি আধা-সেনা পাঠিয়ে দায় সেরেছিলেন তৎ্কালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও। পরে তদন্তের জন্য ১৬ ডিসেম্বর লিবেরহান কমিশন গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ১৭ বছর পর ২০০৯ সালের ৩০ জুন মনমোহন সিং সরকারের কাছে কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সবটাই ছিল ষড়যন্ত্র। সব জানতেন আডবাণী-জোশী-কল্যাণরা। যদিও পরে আডবাণী দাবি করেন, সেদিন তারা চেষ্টা করেও কর-সেবকদের মসজিদে ঢোকা আটকাতে পারেননি। এরপরেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসে আডবাণী-জোশীদের বিরুদ্ধ লখনউয়ের সিবিআই আদালতে মামলা শুরু হয়েছে। এখনও চলছে সেই মামলা।
অবশ্য অযোধ্যা মামলার রায়ে সপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙা আইনবিরুদ্ধ কাজ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন। আদালতের মতে, যে অন্যায় হয়েছে তার প্রতিকার করা উচিত। একই সঙ্গে ১৯৪৯ সালে ২২ ও ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে বাবরি মসজিদে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রাখার প্রবল সমালোচনা করেছে আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, তখন মুসলিমদের আইন মেনে সেখান থেকে সরানো হয়নি। বরং তাদের প্রার্থনা জানানোর স্থান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এর পরে ফৌজদারি দন্ডবিধির ১৪৫ ধারা মেনে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিচারপতিদের বক্তব্য, এর পরে মামলা চলাকালীনই রীতিমতো হিসেব কষে মসজিদ ধ্বংস করা হয়। ৪৫০ বছরেরও বেশি আগে তৈরি মসজিদ থেকে বঞ্চিত হন মুসলিমরা।
তাদের মতে, সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া আশ্বাস সত্ত্বেও ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর মসজিদ ধ্বংস করা হয়। এটা আইন ভাঙার বড় নজির।
বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে মামলা চলছে লখনউয়ের সিবিআই আদালতে। ২৭ বছর ধরে চলছে মামলা, ঢিলেতালে। আদালতে বিচার যাতে দ্রুততার সঙ্গে করা হয় সেজন্য শনিবার সুপ্রিম কোর্ট সময় বেঁধে দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, জানুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করে এপ্রিলের মধ্যে রায় দিতে হবে। রায়দানের জন্য সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদবের অবসরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত এবং সাক্ষীদের মধ্যে অনেকেই মৃত। ফলে অযোধ্যা জমি বিরোধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোনও প্রভাব বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় পডবে কিনা, তা নিয়ে এখন নানা মহলে চলছে জল্পনা।
১৯৮৪ সালে নতুন উদ্যমে রামমন্দির আন্দোলন শুরু করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। দু-বছর পর, আদালতের নির্দেশে তালা খুলে যাওয়ায়, তুঙ্গে উঠেছিল মন্দিরের দাবি। ১৯৮৯ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী আমলেই বিতর্কিত জমির কাছেই রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরের বছর অযোধ্যায় মন্দিরের দাবিতে ভারত জুড়ে রথযাত্রায় বেরিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। ১৯৯০ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর সোমনাথ থেকে অযোধ্যা, যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। যাত্রা চলাকালীন সারা দেশে দেড়শোর বেশি হিংসার ঘটনায় পাঁচশোর বেশি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। ঐ বছরের ৩০শে অক্টোবর কর সেবকরা জোর করে বাবরি মসজিদে ঢুকতে গেলে গুলি চালিয়েছিল মুলায়ম সিং যাদবের পুলিশ। ২০ জন কর-সেবকের মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৯১ সালের জুনে উত্তর প্রদেশে বসেছিলেন বিজেপি নেতা কল্যাণ সিং। দিল্লিতে ছিল কংগ্রেসের সরকার। রাম মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণও করেছিল কল্যাণ সিং সরকার। ১৯৯২ সালের ৩০ অক্টোবর ভিএইচপি ঘোষণা, ৬ই ডিসেম্বর কর-সেবার ঘোষণা দিয়েছিল। নির্ধারিত দিনে বেলা ১০টার মধ্যেই প্রায় ২ লাখ কর-সেবক বাবরি মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়েছিল। পৌঁছে গিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতী, অশোক সিঙ্ঘল এবং বিনয় কাটিয়ার-সহ অন্য বিজেপি নেতারা। দুপুর ১২টা নাগাদ বাবরি মসজিদের ভিতর ঢুকে পড়েন। কর-সেবকরা মসজিদ ভাঙা শুরু করেছিল। সুপ্রিম কোর্টে প্রতিশ্রুতি দিলেও সেদিন কর-সেবকদের নিয়ন্ত্রণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি উত্তরপ্রদেশের কল্যাণ সিং সরকার। ৮০ কোম্পানি আধা-সেনা পাঠিয়ে দায় সেরেছিলেন তৎ্কালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও। পরে তদন্তের জন্য ১৬ ডিসেম্বর লিবেরহান কমিশন গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ১৭ বছর পর ২০০৯ সালের ৩০ জুন মনমোহন সিং সরকারের কাছে কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সবটাই ছিল ষড়যন্ত্র। সব জানতেন আডবাণী-জোশী-কল্যাণরা। যদিও পরে আডবাণী দাবি করেন, সেদিন তারা চেষ্টা করেও কর-সেবকদের মসজিদে ঢোকা আটকাতে পারেননি। এরপরেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসে আডবাণী-জোশীদের বিরুদ্ধ লখনউয়ের সিবিআই আদালতে মামলা শুরু হয়েছে। এখনও চলছে সেই মামলা।
No comments