ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছে বামরা by পরিতোষ পাল
একসময়
বামদলগুলো পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোটে জয়ী হয়ে দীর্ঘ তিন দশকের
বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলেও ২০১১ সালের পর পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
বামদের জনভিত্তিতে ধস নেমে এসেছে। সেই ধসকে গত আট বছরে সামাল দেয়া যায় নি।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি গোটা দেশেই বামদের একই পরিস্থিতি। সাম্প্রতিক লোকসভা
নির্বাচনে বামদের ভোট নেমে এসেছে ৭-৮ শতাংশে। এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার
পেতে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআইএম) ডিজিটাল প্ল্যাটফরমকে আশ্রয়
করেছে। অবশ্য ইতিমধ্যে বিজেপি সোস্যাল মিডিয়াকে দারুণভাবে ব্যবহার করেছে
সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য। এমনকি বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
তৃণমূল কংগ্রেসও ডিজিটাল যোদ্ধা নিয়োগ করে সোস্যাল মিডিয়াতে বিজেপির সঙ্গে
লড়াই জারি রেখেছে।
এবার বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিআইএম একই পথ নিয়েছে। অবশ্য রাজ্য ও কেন্দ্র স্তরে সিপিআইএমের নিজস্ব সাইবার টিম রয়েছে। তবে তাদের দিয়ে এই যুদ্ধ সামাল দেয়া কঠিন। এই বিবেচনায় ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সিপিআইএম বিপুল সাড়া পেয়েছে। এই ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরির প্রধান দায়িত্বে থাকা সাবেক এমপি ও পলিটব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল অর্থ খরচ করে সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছে। কিন্তু বামদের সেই অর্থবল নেই। তাই সোস্যাল মিডিয়ার বাইরে যারা ডিজিটাল দুনিয়ায় সক্রিয়, স্বাধীনভাবে সৃষ্টিশীল কাজে যুক্ত, তাদের একসূত্রে বাধার জন্যই এই উদ্যোগ।
মশা চর্র্চায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ: পতঙ্গবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবে মানুষ উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া মোকাবিলা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গুর নতুন নতুন জীবাণুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এসব নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। তবে এবার আর আলাদা আলাদাভাবে না করে মশা নিয়ে চর্চা করার জন্য জোটবদ্ধ হয়েছেন পতঙ্গবিদেরা। তৈরি করা হয়েছে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপেই দিনরাত আলোচনা চলছে। ঠিক করা হচ্ছে ডেঙ্গু নিয়ে ‘রণকৌশল’। এই গ্রুপের নাম দেয়া হয়েছে ‘মশামুক্ত বাংলা’। এই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের প্রধান কারিগর পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র বলেছেন, আমরা মশা সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষকরা আলাদা আলাদাভাবে এতদিন কাজ করছিলাম। কিন্তু ডেঙ্গুর চরিত্র গত কয়েক বছরে অনেকটাই বদলেছে। তাই সে সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্যের আদান-প্রদান জরুরি হয়ে উঠেছে। তাই এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। পতঙ্গবিদদের মতে, দিন দিন ডেঙ্গুর চরিত্র যত জটিল হচ্ছে, তাতে এককভাবে এ নিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। বিচ্ছিন্নভাবে মশা-গবেষকরা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া নিয়ে কী করছেন, তা এক মঞ্চে এনে আলোচনা করা জরুরি হয়ে উঠেছিল। এ ছাড়া মশা নিয়ে কোনো জার্নালে কারও গবেষণাপত্র প্রকাশ হলে তা নিয়েও সার্বিকভাবে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের মশা নিয়ে গবেষণা ও চর্চায় যুক্তদের বড় অংশই এই গ্রুপের সদস্য হয়েছেন। আগামী দিনে সাধারণ মানুষকেও ওই গ্রুপের সদস্য করার কথা ভাবা হচ্ছে, যাতে তারাও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেন।
বিশ্বে প্রথম শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে মিউজিয়াম
ষোড়শ শতাব্দীতে বৈষ্ণব ধর্মের প্রধান প্রবক্তা ও সমাজ সংস্কারক ছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু্ । তার সময়কালেই তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেকক’টি জীবন চরিত। জাতপাতের বিরুদ্ধে তার লড়াই সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করেছিল। পাশাপাশি বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গিয়েছেন। প্রায় ৪০০ বছর পরে এই মানুষটিকে নিয়ে প্রথম সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে। বৈষ্ণব গবেষকদের মতে, এটাই বিশ্বে প্রথম শ্রীচৈতন্য সংগ্রহশালা। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের ১৬ এ, কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী স্ট্রিটের গৌড়ীয় মঠ ও মিশনে তৈরি হয়েছে এই মিউজিয়ামটি। টেরাকোটার কারুকার্যে সাজানো এই মিউজিয়াম ভবনের প্রধান আকর্ষণ শ্রীচৈতন্যের নিজের হাতে লেখা একটি তালপাতা। এ ছাড়াও থাকছে শ্রীচৈতন্যের ব্যবহৃত জিনিস, পাদুকা প্রভৃতি। শ্রীচৈতন্যের জীবন ও চিন্তাধারা নিয়ে আলো ও ধ্বনির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। গৌড়ীয় মিশনের সন্ন্যাসীদের মতে, দেশ-বিদেশের চৈতন্য অনুরাগী এবং গবেষকদের অবশ্য গন্তব্য হবে এই মিউজিয়ামটি। এটি ধর্মীয় পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা নেবে বলে তারা আশাবাদী। ১৩ই আগস্ট এটির উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মিউজিয়াম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ, লন্ডন, আমেরিকা থেকে ভক্ত ও অনুরাগীরা আসছেন বলে জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি নিয়ে কলকাতায় সংগ্রহশালা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রজীবনে কলকাতায় কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। এই সময় তিনি ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমান নাম মৌলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ছিলেন। এই সময় তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এমনকি জাতীয় মুসলিম নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগও হয়েছিল এই সময়ই। তবে মাত্র দু’বছর ৮ স্মীথ লেনের বেকার হোস্টেলে থাকলেও বাকি সময় নানা জায়গায় থেকেছেন। ফলে কলকাতার নানা জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে মুজিবের নানা স্মৃতি। এক শীর্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা একসময় আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মুজিবের কলকাতার জীবন নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তবে মুজিবের স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেয়া হলে সেটা হবে বড় কাজ। এ ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি কলকাতায় বেকার হলে মুজিবের নতুন আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে এসে বলেছেন, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন অংশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বহু স্মৃতি। সেই সব স্মৃতি সংরক্ষণ করে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হবে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত উদ্যোগ নেবেন বলেও জানিয়েছেন। জানা গেছে, সম্মতি পেলে কলকাতারই কোনো জায়গায় এটি গড়ে তোলা হতে পারে। উল্লেখ্য, ছাত্র হিসেবে ইসলামিয়া কলেজের বেকার হোস্টেলে যে ঘরটিতে তিনি থাকতেন সেটির সঙ্গে পাশের ঘরটি যুক্ত করে একটি স্মৃতিকক্ষ আগেই তৈরি করা হয়েছে। সেই কক্ষে রয়েছে শেখ মুজিবের ব্যবহৃত ঘাট, টেবিল ও চেয়ার।
অভিবাসনের নেপথ্যে বিবাহ: পশ্চিমবঙ্গে বহুদিন সব ধর্ম, সব জাতের মানুষের বাস। তবে এর পেছনে রয়েছে অভিবাসনের ভূমিকা। এই রাজ্যে অভিবাসনের প্রক্রিয়া চলছে বহুযুগ ধরে। তবে সর্বশেষ জন গণনার রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, রাজ্যের বাইরে থেকে যে অধিবাসীরা রাজ্যে আসছেন তাদের অধিকাংশই আসছেন বিবাহসূত্রে। বিবাহের সূত্রে ১ কোটি ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই রাজ্যে অভিবাসী হয়ে এসেছেন। তবে এর মধ্যে বড় অংশই নারী। এদেরই সংখ্যা ১ কোটি ৬২ লাখ। পুরুষ অভিবাসী হয়ে এসেছেন মাত্র ১ লাখ ৬৫ হাজার। তবে বিবাহ সূত্রে যারা রাজ্যে অভিবাসী হয়ে এসেছেন তাদের অধিকাংশই এসেছেন গ্রাম এলাকায়। গ্রামে এই অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। সেখানে শহুরে এলাকায় অভিবাসী হয়ে এসেছেন মাত্র ১৯ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। বিবাহ সূত্রে আসা এই সব অভিবাসীরা প্রধানত এসেছেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও মুর্শিদাবাদে। কলকাতায় বিবাহ সূত্রে এসেছেন দেড় লাখ মানুষ। এর মধ্যে মাত্র ৪০০০ পুরুষ। বাকিরা নারী। পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা গেছে, বাইরে থেকে যারা অভিবাসী হয়ে রাজ্যে এসেছেন তাদের বেশিরভাগই এসেছেন বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে। এশিয়ার দেশগুলো থেকেও অনেক মানুষ অভিবাসী হয়ে এসেছেন। তবে সঠিক কোন দেশ থেকে এসেছে তা জন গণনায় উল্লেখ করা হয় নি।
এবার বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিআইএম একই পথ নিয়েছে। অবশ্য রাজ্য ও কেন্দ্র স্তরে সিপিআইএমের নিজস্ব সাইবার টিম রয়েছে। তবে তাদের দিয়ে এই যুদ্ধ সামাল দেয়া কঠিন। এই বিবেচনায় ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সিপিআইএম বিপুল সাড়া পেয়েছে। এই ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরির প্রধান দায়িত্বে থাকা সাবেক এমপি ও পলিটব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল অর্থ খরচ করে সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছে। কিন্তু বামদের সেই অর্থবল নেই। তাই সোস্যাল মিডিয়ার বাইরে যারা ডিজিটাল দুনিয়ায় সক্রিয়, স্বাধীনভাবে সৃষ্টিশীল কাজে যুক্ত, তাদের একসূত্রে বাধার জন্যই এই উদ্যোগ।
মশা চর্র্চায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ: পতঙ্গবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবে মানুষ উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া মোকাবিলা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গুর নতুন নতুন জীবাণুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এসব নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। তবে এবার আর আলাদা আলাদাভাবে না করে মশা নিয়ে চর্চা করার জন্য জোটবদ্ধ হয়েছেন পতঙ্গবিদেরা। তৈরি করা হয়েছে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপেই দিনরাত আলোচনা চলছে। ঠিক করা হচ্ছে ডেঙ্গু নিয়ে ‘রণকৌশল’। এই গ্রুপের নাম দেয়া হয়েছে ‘মশামুক্ত বাংলা’। এই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের প্রধান কারিগর পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র বলেছেন, আমরা মশা সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষকরা আলাদা আলাদাভাবে এতদিন কাজ করছিলাম। কিন্তু ডেঙ্গুর চরিত্র গত কয়েক বছরে অনেকটাই বদলেছে। তাই সে সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্যের আদান-প্রদান জরুরি হয়ে উঠেছে। তাই এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। পতঙ্গবিদদের মতে, দিন দিন ডেঙ্গুর চরিত্র যত জটিল হচ্ছে, তাতে এককভাবে এ নিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। বিচ্ছিন্নভাবে মশা-গবেষকরা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া নিয়ে কী করছেন, তা এক মঞ্চে এনে আলোচনা করা জরুরি হয়ে উঠেছিল। এ ছাড়া মশা নিয়ে কোনো জার্নালে কারও গবেষণাপত্র প্রকাশ হলে তা নিয়েও সার্বিকভাবে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের মশা নিয়ে গবেষণা ও চর্চায় যুক্তদের বড় অংশই এই গ্রুপের সদস্য হয়েছেন। আগামী দিনে সাধারণ মানুষকেও ওই গ্রুপের সদস্য করার কথা ভাবা হচ্ছে, যাতে তারাও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেন।
বিশ্বে প্রথম শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে মিউজিয়াম
ষোড়শ শতাব্দীতে বৈষ্ণব ধর্মের প্রধান প্রবক্তা ও সমাজ সংস্কারক ছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু্ । তার সময়কালেই তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেকক’টি জীবন চরিত। জাতপাতের বিরুদ্ধে তার লড়াই সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করেছিল। পাশাপাশি বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গিয়েছেন। প্রায় ৪০০ বছর পরে এই মানুষটিকে নিয়ে প্রথম সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে। বৈষ্ণব গবেষকদের মতে, এটাই বিশ্বে প্রথম শ্রীচৈতন্য সংগ্রহশালা। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের ১৬ এ, কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী স্ট্রিটের গৌড়ীয় মঠ ও মিশনে তৈরি হয়েছে এই মিউজিয়ামটি। টেরাকোটার কারুকার্যে সাজানো এই মিউজিয়াম ভবনের প্রধান আকর্ষণ শ্রীচৈতন্যের নিজের হাতে লেখা একটি তালপাতা। এ ছাড়াও থাকছে শ্রীচৈতন্যের ব্যবহৃত জিনিস, পাদুকা প্রভৃতি। শ্রীচৈতন্যের জীবন ও চিন্তাধারা নিয়ে আলো ও ধ্বনির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। গৌড়ীয় মিশনের সন্ন্যাসীদের মতে, দেশ-বিদেশের চৈতন্য অনুরাগী এবং গবেষকদের অবশ্য গন্তব্য হবে এই মিউজিয়ামটি। এটি ধর্মীয় পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা নেবে বলে তারা আশাবাদী। ১৩ই আগস্ট এটির উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মিউজিয়াম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ, লন্ডন, আমেরিকা থেকে ভক্ত ও অনুরাগীরা আসছেন বলে জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি নিয়ে কলকাতায় সংগ্রহশালা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রজীবনে কলকাতায় কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। এই সময় তিনি ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমান নাম মৌলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ছিলেন। এই সময় তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এমনকি জাতীয় মুসলিম নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগও হয়েছিল এই সময়ই। তবে মাত্র দু’বছর ৮ স্মীথ লেনের বেকার হোস্টেলে থাকলেও বাকি সময় নানা জায়গায় থেকেছেন। ফলে কলকাতার নানা জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে মুজিবের নানা স্মৃতি। এক শীর্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা একসময় আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মুজিবের কলকাতার জীবন নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তবে মুজিবের স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেয়া হলে সেটা হবে বড় কাজ। এ ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি কলকাতায় বেকার হলে মুজিবের নতুন আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে এসে বলেছেন, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন অংশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বহু স্মৃতি। সেই সব স্মৃতি সংরক্ষণ করে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হবে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত উদ্যোগ নেবেন বলেও জানিয়েছেন। জানা গেছে, সম্মতি পেলে কলকাতারই কোনো জায়গায় এটি গড়ে তোলা হতে পারে। উল্লেখ্য, ছাত্র হিসেবে ইসলামিয়া কলেজের বেকার হোস্টেলে যে ঘরটিতে তিনি থাকতেন সেটির সঙ্গে পাশের ঘরটি যুক্ত করে একটি স্মৃতিকক্ষ আগেই তৈরি করা হয়েছে। সেই কক্ষে রয়েছে শেখ মুজিবের ব্যবহৃত ঘাট, টেবিল ও চেয়ার।
অভিবাসনের নেপথ্যে বিবাহ: পশ্চিমবঙ্গে বহুদিন সব ধর্ম, সব জাতের মানুষের বাস। তবে এর পেছনে রয়েছে অভিবাসনের ভূমিকা। এই রাজ্যে অভিবাসনের প্রক্রিয়া চলছে বহুযুগ ধরে। তবে সর্বশেষ জন গণনার রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, রাজ্যের বাইরে থেকে যে অধিবাসীরা রাজ্যে আসছেন তাদের অধিকাংশই আসছেন বিবাহসূত্রে। বিবাহের সূত্রে ১ কোটি ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই রাজ্যে অভিবাসী হয়ে এসেছেন। তবে এর মধ্যে বড় অংশই নারী। এদেরই সংখ্যা ১ কোটি ৬২ লাখ। পুরুষ অভিবাসী হয়ে এসেছেন মাত্র ১ লাখ ৬৫ হাজার। তবে বিবাহ সূত্রে যারা রাজ্যে অভিবাসী হয়ে এসেছেন তাদের অধিকাংশই এসেছেন গ্রাম এলাকায়। গ্রামে এই অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। সেখানে শহুরে এলাকায় অভিবাসী হয়ে এসেছেন মাত্র ১৯ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। বিবাহ সূত্রে আসা এই সব অভিবাসীরা প্রধানত এসেছেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও মুর্শিদাবাদে। কলকাতায় বিবাহ সূত্রে এসেছেন দেড় লাখ মানুষ। এর মধ্যে মাত্র ৪০০০ পুরুষ। বাকিরা নারী। পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা গেছে, বাইরে থেকে যারা অভিবাসী হয়ে রাজ্যে এসেছেন তাদের বেশিরভাগই এসেছেন বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে। এশিয়ার দেশগুলো থেকেও অনেক মানুষ অভিবাসী হয়ে এসেছেন। তবে সঠিক কোন দেশ থেকে এসেছে তা জন গণনায় উল্লেখ করা হয় নি।
No comments