রহস্যের শহর মিসর by মাহবুব পারভেজ
মিসরে উটের ওপর লেখক |
মিসর
এক মায়া! রহস্যময় সব ঐতিহ্য নিয়ে ভ্রমণপ্রেমীদের আবেগতাড়িত করে দেশটি। তাই
মিসরকে বলা হয় রহস্যের শহর, প্রাচীন শহর। আধুনিক মিসর এখনও নীলনদের
অববাহিকা ধরে বিস্তৃত। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই নদী মধ্য ইথিওপিয়া থেকে শুরু
হয়ে ৬ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার পেরিয়ে মিসরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পতিত হয়েছে
ভূমধ্যসাগরে।
নীলনদের ৩০০ মিটারের মধ্যে কেউ প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করলে তিন মাসের কারাদণ্ডের নিয়ম রেখেছে মিসর সরকার। ‘রাজকন্যা’তুল্য বলেই সমগ্র আফ্রিকা এই নদীর রক্ষণাবেক্ষণ করে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশ মিসর ২৯টি অঙ্গরাজ্যে বিভক্ত। ভূমধ্যসাগর ও নীলনদকে ঘিরে ৯ কোটি জনগণের প্রধান বসতিপূর্ণ শহরগুলো হলো কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, আসওয়ান ও পোর্টসাইড। ১ লাখ ২ হাজার ৪৫০ বর্গকিলোমিটারের মিসরে মাত্র ৭ শতাংশে মানুষের বসবাস, বাকিটা মরুভূমি। বিপুল মরুভূমিকে আবাদযোগ্য করার জন্য দেশটির মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। প্রতিবছর মাত্র ৩০০ একর জমি আবাদযোগ্য করা সম্ভব হয়। বালি সরিয়ে ও নদ থেকে পলি এনে নিরলসভাবে ফসল ফলান তারা।
কায়রো থেকে আলেকজান্দ্রিয়া যাওয়ার পথে সবুজ দেখে চোখ জুড়িয়ে দেয়। দু’পাশেই সবুজ। কমলা, কলা, খেজুর, মরিচসহ লাল-সবুজ-হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম দেখা যায়। সবজি উৎপাদনে মিসর প্রায় স্বনির্ভর, অন্তত যেসব সবজি খেয়েছি সবই তাদের নিজেদের।
প্রাচীন মিসরের ইতিহাস আজও রহস্যে আবৃত। এখনও কোনও দেশ নতুন একটি নিখুঁত পিরামিড তৈরি করতে পারেনি। কেউ এগুলোকে প্রাচীন রাজাদের সমাধিস্থল মনে করেন। অনেকের মতে, এসব হলো বিদ্যুৎ তৈরির কারখানা। ছোটবড় মিলিয়ে মোট ১১২টি পিরামিডের কথা শোনা যায়। এগুলোকে ঘিরে রয়েছে রহস্যের বেড়াজাল।
নীলনদের ৩০০ মিটারের মধ্যে কেউ প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করলে তিন মাসের কারাদণ্ডের নিয়ম রেখেছে মিসর সরকার। ‘রাজকন্যা’তুল্য বলেই সমগ্র আফ্রিকা এই নদীর রক্ষণাবেক্ষণ করে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশ মিসর ২৯টি অঙ্গরাজ্যে বিভক্ত। ভূমধ্যসাগর ও নীলনদকে ঘিরে ৯ কোটি জনগণের প্রধান বসতিপূর্ণ শহরগুলো হলো কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, আসওয়ান ও পোর্টসাইড। ১ লাখ ২ হাজার ৪৫০ বর্গকিলোমিটারের মিসরে মাত্র ৭ শতাংশে মানুষের বসবাস, বাকিটা মরুভূমি। বিপুল মরুভূমিকে আবাদযোগ্য করার জন্য দেশটির মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। প্রতিবছর মাত্র ৩০০ একর জমি আবাদযোগ্য করা সম্ভব হয়। বালি সরিয়ে ও নদ থেকে পলি এনে নিরলসভাবে ফসল ফলান তারা।
কায়রো থেকে আলেকজান্দ্রিয়া যাওয়ার পথে সবুজ দেখে চোখ জুড়িয়ে দেয়। দু’পাশেই সবুজ। কমলা, কলা, খেজুর, মরিচসহ লাল-সবুজ-হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম দেখা যায়। সবজি উৎপাদনে মিসর প্রায় স্বনির্ভর, অন্তত যেসব সবজি খেয়েছি সবই তাদের নিজেদের।
প্রাচীন মিসরের ইতিহাস আজও রহস্যে আবৃত। এখনও কোনও দেশ নতুন একটি নিখুঁত পিরামিড তৈরি করতে পারেনি। কেউ এগুলোকে প্রাচীন রাজাদের সমাধিস্থল মনে করেন। অনেকের মতে, এসব হলো বিদ্যুৎ তৈরির কারখানা। ছোটবড় মিলিয়ে মোট ১১২টি পিরামিডের কথা শোনা যায়। এগুলোকে ঘিরে রয়েছে রহস্যের বেড়াজাল।
পিরামিডের সামনে উটের ওপর লেখক |
ঐতিহ্যের
ধারক সর্ববৃহৎ পিরামিডটি তৈরি করতে ২৩ হাজার শ্রমিকের ২২ বছর লেগেছিল। এটি
পর্যটকদের অন্যতম শিহরণের বিষয়। গিজায় অবস্থিত প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের
অন্তর্ভুক্ত এই পিরামিড রাজা কিউপিসের তৈরি। অন্য দেশ থেকে আনা প্রায় আড়াই
মিলিয়ন পাথরের ব্লক দিয়ে এটি গড়ে তোলা হয়। এগুলোর প্রতিটির ওজন প্রায় দুই
টন। রহস্যময় এই পিরামিডের উচ্চতা ১৪৭ মিটার। এর ভূমি প্রায় ২৩০ মিটার
বিস্তৃত।
দ্বিতীয় বৃহত্তম পিরামিড তৈরি করেন কিউপিসের ছেলে সাফ্রেন (কাফ্রি)। যদিও এর উচ্চতা ১৪০ মিটার, কিন্তু এটি কিউপিসের পিরামিডের চেয়ে উঁচু! এর কারণ উঁচু জায়গায় তৈরি হয়েছে এই পিরামিড। তৃতীয় পিরামিডটি রাজা ফারাওয়ের তৈরি। প্রাচীন মিসরের ঐতিহ্যের আরেকটি আকর্ষণ হলো স্ফিংস, যা প্রায় ২০ মিটার লম্বা। ধারণা করা হয়, স্ফিংস ছিল প্রাচীন মিসরবাসীর রক্ষক।
মধ্যযুগীয় মিসরে ক্ষমতা ছিল রোমানদের। তখন ভার্জিন মেরী অপরাধী ঘোষিত হওয়ার নীলনদের অববাহিকা ধরে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন কায়রোতে। তার নামে একটি গির্জা এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি যে কুয়া থেকে তিনি পানি পান করতেন তাও আছে অবিকল!
দ্বিতীয় বৃহত্তম পিরামিড তৈরি করেন কিউপিসের ছেলে সাফ্রেন (কাফ্রি)। যদিও এর উচ্চতা ১৪০ মিটার, কিন্তু এটি কিউপিসের পিরামিডের চেয়ে উঁচু! এর কারণ উঁচু জায়গায় তৈরি হয়েছে এই পিরামিড। তৃতীয় পিরামিডটি রাজা ফারাওয়ের তৈরি। প্রাচীন মিসরের ঐতিহ্যের আরেকটি আকর্ষণ হলো স্ফিংস, যা প্রায় ২০ মিটার লম্বা। ধারণা করা হয়, স্ফিংস ছিল প্রাচীন মিসরবাসীর রক্ষক।
মধ্যযুগীয় মিসরে ক্ষমতা ছিল রোমানদের। তখন ভার্জিন মেরী অপরাধী ঘোষিত হওয়ার নীলনদের অববাহিকা ধরে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন কায়রোতে। তার নামে একটি গির্জা এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি যে কুয়া থেকে তিনি পানি পান করতেন তাও আছে অবিকল!
প্রাচীন মিসরের নিদর্শন |
প্রাচীন
মিসরের আরেকটি প্রধান আকর্ষণ রাজা রামসিস দ্বিতীয়, যাকে আমরা ফেরাউন বলে
জানি। কায়রোর জাদুঘরে এখনও তার মমি সংরক্ষিত আছে। এটি সর্বসাধারণের জন্য
উন্মুক্ত। তখন মমি তৈরির জন্য সময় লাগতো ৭০ দিন। এটি তৈরির রহস্য কালের
আবর্তে হারিয়েছে, যেমন আমরা হারিয়েছি মসলিন তৈরির কারিগরি দক্ষতা।
প্রাচীন মধ্যযুগীয় ও আধুনিক মিসর ঐতিহ্যের সব নিদর্শন ধরে রেখেছে। সেজন্যই প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ পর্যটক দেশটিতে বেড়াতে যায়। এর মাধ্যমে রাজস্ব আসে প্রায় ১২০ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে মিসরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটনের ভূমিকা ব্যাপক।
মিসরের খাবার সুস্বাদু। এর মধ্যে অপরিহার্য হলো রুটি। গোলরুটি, চ্যাপ্টা রুটি, লম্বা রুটি, শক্ত রুটি, নরম রুটি, রুটির বল, আরও কত কী! এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের রাইতা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মিসরে সব খাবারই গ্রিল (চিকেন গ্রিল, ফিশ গ্রিল ইত্যাদি) হয়। নয়তো ফ্রাই। গ্রেভি খাবার খুবই বিরল।
প্রাচীন মধ্যযুগীয় ও আধুনিক মিসর ঐতিহ্যের সব নিদর্শন ধরে রেখেছে। সেজন্যই প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ পর্যটক দেশটিতে বেড়াতে যায়। এর মাধ্যমে রাজস্ব আসে প্রায় ১২০ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে মিসরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটনের ভূমিকা ব্যাপক।
মিসরের খাবার সুস্বাদু। এর মধ্যে অপরিহার্য হলো রুটি। গোলরুটি, চ্যাপ্টা রুটি, লম্বা রুটি, শক্ত রুটি, নরম রুটি, রুটির বল, আরও কত কী! এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের রাইতা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মিসরে সব খাবারই গ্রিল (চিকেন গ্রিল, ফিশ গ্রিল ইত্যাদি) হয়। নয়তো ফ্রাই। গ্রেভি খাবার খুবই বিরল।
মিসরে বিভিন্ন দেশের পর্যটক সমাগম চোখে পড়ার মতো |
মিসরীয়দের
ভাষা আরবী। স্থানীয় খুব কম লোকই ইংরেজি বলতে পারেন। মানুষজন অতিথিপরায়ণ ও
সরল। তবে ব্যবসায়ীরা ছাড়া! সেখানে পণ্যের দুই ধরনের দাম থাকে। পর্যটকদের
জন্য একরকম, স্থানীয়দের জন্য আরেকরকম।
মিসর ভ্রমণ করতে চাইলে দেখেশুনে খাওয়া ও কেনাকাটা করা ভালো। কেননা যেকোনও খাবারের সঙ্গে পানি বা অন্যান্য পানীয়ের আলাদা দাম ধরা হয়। এমনকি হোটেলেও পানি কিনতে হয় অনেক দামে। আলাদাভাবে রুমে কোনও পানির ব্যবস্থা নেই। তা যে মাপেরই হোটেল হোক।
>>>লেখক: ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক
মিসর ভ্রমণ করতে চাইলে দেখেশুনে খাওয়া ও কেনাকাটা করা ভালো। কেননা যেকোনও খাবারের সঙ্গে পানি বা অন্যান্য পানীয়ের আলাদা দাম ধরা হয়। এমনকি হোটেলেও পানি কিনতে হয় অনেক দামে। আলাদাভাবে রুমে কোনও পানির ব্যবস্থা নেই। তা যে মাপেরই হোটেল হোক।
>>>লেখক: ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক
মিসরের খাবার |
No comments