লন্ডনের ‘বাংলা টাউন’ টিকিয়ে রাখলেন বাংলাদেশিরাই by মুনজের আহমদ চৌধুরী
যুক্তরাজ্যে
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত একটি অঞ্চলের নাম ‘বাংলা
টাউন’। সেই অঞ্চলে যেমন বাঙালিরা রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন শ্বেতাঙ্গরাও।
দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাসরত শ্বেতাঙ্গদের একটি গ্রুপ স্পিটারফিল্ড ও বাংলা
টাউন অঞ্চলকে একত্রিত করে আলাদা একটি প্যারিশ কাউন্সিল গঠনের চেষ্টা করে
আসছিলেন। এই চেষ্টা সফল হলে ‘বাংলা টাউন’ নামটি একটি অতীতে পরিণত হতো। তবে
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলর ও নাগরিকদের ভোটে শ্বেতাঙ্গদের সেই উদ্যোগ
ভেস্তে গেছে। টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে ‘বাংলা টাউন’ নামটি।
প্যারিশ কাউন্সিলের পক্ষের ক্যাম্পেইনার গ্রুপটি রেফারেন্ডামের মাধ্যমে স্পিটারফিন্ড, বাংলা টাউন ও ওয়েভার্স ওয়ার্ডের সমন্বয়ে নতুন একটি কাউন্সিল গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। অন্যদিকে, স্পিটারফিল্ডস ও বাংলাটাউন এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশ প্রচার চালাচ্ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অধীনেই নিজ নিজ ওয়ার্ডে থাকবার পক্ষে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বাসিন্দাদের মতামত চেয়ে ঘরে ঘরে আবেদন ফরম পাঠায়। সেই মতামত প্রক্রিয়ায় বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আলাদা কাউন্সিল গঠন না করার পক্ষে অবস্থান নেন।
নাগরিকদের মতামতের ধারাবাহিকতায়. গত ১৭ জুলাই টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় স্পিটারফিল্ডস ও বাংলা টাউন ওয়ার্ডের নাম পরিবর্তন না করার পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়। কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী উইল ট্যাকলে জানান, সভায় ২৮ জন কাউন্সিলর প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে অবস্থান নেন। পক্ষে ভোট দেন মাত্র তিন জন। অনুপস্থিত তথা ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন ১০ জন।
কাউন্সিলর শাদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, দ্বিতীয় রাউন্ডে প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে প্রায় ১৫০০ নাগরিক ও পক্ষে প্রায় ৫০০ নাগরিক তাদের মতামত দেন। তার নেতৃত্বে লেবার পার্টির একটি গ্রুপ ২০১৮ সাল থেকে প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে প্রচার চালান। কমিউনিটি নেতা ও টাওয়ার হ্যামলেটস-এর স্থানীয় রাজনৈতিক দল এম্পায়ার টাওয়ার হ্যামলেটস-এর চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের চৌধুরীর নেতৃত্বে অপর একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপও ছিল প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষের প্রচারে।
তাহের চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শ্বেতাঙ্গ গ্রুপটি শুরুতে বাংলা টাউন নাম বাদ দিয়ে শুধু স্পিটারফিল্ড প্যারিশ কাউন্সিল নামকরণের প্রস্তাব করেছিল। ‘পরবর্তীতে বাংলাদেশি কমিউনিটির জোরালো প্রচারের মুখে তারা তাদের প্রস্তাবে বাংলা টাউন শব্দটিও সংযুক্ত করে। তবে তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, তারা বিজয়ী হলে বাংলা টাউন নামটি মুছে দিতে পারে।’ বলেন তাহের চৌধুরী।
গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের সাবেক সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ১৯৯৯ সালের ৪ জানুয়ারি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সভায় শুরুতে স্পিটারফিল্ড ওয়ার্ডের পরিবর্তে বাংলাটাউন নামকরণের প্রস্তাব করা হয়। বাউন্ডারি কমিশন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকে’র পক্ষে সেই সময়ের চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহির চৌধুরী কমিশনে আপিল করার পাশাপাশি জনমত গঠনে জনসভা ও ক্যাম্পেইন চালান। পরবর্তীতে দুই দশক আগে বাউন্ডারি কমিশন স্পিটারফিল্ড ও বাংলা টাউন নামকরণ করে।
‘প্যারিশ কাউন্সিলের পক্ষে শ্বেতাঙ্গরা হাজার হাজার পাউন্ড ব্যয় করে প্রচার চালিয়েছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশিরা এ ব্যাপারে সচেতন ছিল না। আমরা কয়েক দফা বৈঠক করি, ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যাপারটি নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করি, মতামত চেয়ে সরবরাহ করা ফরম পূরণে সহযোগিতা করি।’ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন আবু তাহির চৌধুরী। তিনি জানান, ওই অঞ্চলে ক্রমাগত শ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা বাড়ছে। আর পুরনো বাংলাদেশি বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্যারিশ কাউন্সিল গঠন হলে বাংলা টাউন অস্তিত্বের সংকটে পড়ত। একটি বারার (নগর কর্তৃপক্ষ) ভেতরে আরেকটির কোনও যৌক্তিকতা নেই। এটি হলে বাসিন্দাদের ট্যাক্স বাড়ত। আর নিঃসন্দেহে সেখানে থাকা ব্রিটেনের সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতেন।
প্যারিশ কাউন্সিলের পক্ষের ক্যাম্পেইনার গ্রুপটি রেফারেন্ডামের মাধ্যমে স্পিটারফিন্ড, বাংলা টাউন ও ওয়েভার্স ওয়ার্ডের সমন্বয়ে নতুন একটি কাউন্সিল গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। অন্যদিকে, স্পিটারফিল্ডস ও বাংলাটাউন এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশ প্রচার চালাচ্ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অধীনেই নিজ নিজ ওয়ার্ডে থাকবার পক্ষে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বাসিন্দাদের মতামত চেয়ে ঘরে ঘরে আবেদন ফরম পাঠায়। সেই মতামত প্রক্রিয়ায় বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আলাদা কাউন্সিল গঠন না করার পক্ষে অবস্থান নেন।
নাগরিকদের মতামতের ধারাবাহিকতায়. গত ১৭ জুলাই টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় স্পিটারফিল্ডস ও বাংলা টাউন ওয়ার্ডের নাম পরিবর্তন না করার পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়। কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী উইল ট্যাকলে জানান, সভায় ২৮ জন কাউন্সিলর প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে অবস্থান নেন। পক্ষে ভোট দেন মাত্র তিন জন। অনুপস্থিত তথা ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন ১০ জন।
কাউন্সিলর শাদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, দ্বিতীয় রাউন্ডে প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে প্রায় ১৫০০ নাগরিক ও পক্ষে প্রায় ৫০০ নাগরিক তাদের মতামত দেন। তার নেতৃত্বে লেবার পার্টির একটি গ্রুপ ২০১৮ সাল থেকে প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষে প্রচার চালান। কমিউনিটি নেতা ও টাওয়ার হ্যামলেটস-এর স্থানীয় রাজনৈতিক দল এম্পায়ার টাওয়ার হ্যামলেটস-এর চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের চৌধুরীর নেতৃত্বে অপর একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপও ছিল প্যারিশ কাউন্সিলের বিপক্ষের প্রচারে।
তাহের চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শ্বেতাঙ্গ গ্রুপটি শুরুতে বাংলা টাউন নাম বাদ দিয়ে শুধু স্পিটারফিল্ড প্যারিশ কাউন্সিল নামকরণের প্রস্তাব করেছিল। ‘পরবর্তীতে বাংলাদেশি কমিউনিটির জোরালো প্রচারের মুখে তারা তাদের প্রস্তাবে বাংলা টাউন শব্দটিও সংযুক্ত করে। তবে তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, তারা বিজয়ী হলে বাংলা টাউন নামটি মুছে দিতে পারে।’ বলেন তাহের চৌধুরী।
গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের সাবেক সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ১৯৯৯ সালের ৪ জানুয়ারি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সভায় শুরুতে স্পিটারফিল্ড ওয়ার্ডের পরিবর্তে বাংলাটাউন নামকরণের প্রস্তাব করা হয়। বাউন্ডারি কমিশন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকে’র পক্ষে সেই সময়ের চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহির চৌধুরী কমিশনে আপিল করার পাশাপাশি জনমত গঠনে জনসভা ও ক্যাম্পেইন চালান। পরবর্তীতে দুই দশক আগে বাউন্ডারি কমিশন স্পিটারফিল্ড ও বাংলা টাউন নামকরণ করে।
‘প্যারিশ কাউন্সিলের পক্ষে শ্বেতাঙ্গরা হাজার হাজার পাউন্ড ব্যয় করে প্রচার চালিয়েছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশিরা এ ব্যাপারে সচেতন ছিল না। আমরা কয়েক দফা বৈঠক করি, ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যাপারটি নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করি, মতামত চেয়ে সরবরাহ করা ফরম পূরণে সহযোগিতা করি।’ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন আবু তাহির চৌধুরী। তিনি জানান, ওই অঞ্চলে ক্রমাগত শ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা বাড়ছে। আর পুরনো বাংলাদেশি বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্যারিশ কাউন্সিল গঠন হলে বাংলা টাউন অস্তিত্বের সংকটে পড়ত। একটি বারার (নগর কর্তৃপক্ষ) ভেতরে আরেকটির কোনও যৌক্তিকতা নেই। এটি হলে বাসিন্দাদের ট্যাক্স বাড়ত। আর নিঃসন্দেহে সেখানে থাকা ব্রিটেনের সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতেন।
No comments