১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে খাদ্য সংকটে ঠেলে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন
লাখ
লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকারে ভারী হয়ে উঠছে পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত
কারাগারখ্যাত গাজা উপত্যকার আকাশ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক
ত্রাণ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনি সহায়তা
তহবিলে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখনি এই ঘাটতি
পূরণ না করা গেলে আগামী মাস থেকেই ১০ লাখেরও বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে
বলে আশঙ্কা জাতিসংঘের।
ট্রাম্প প্রশাসন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হতে শুরু করে। তখন থেকেই গাজা ও পশ্চিম তীরের জন্য জাতিসংঘের সহায়তা খাতে বরাদ্দ বাতিল করতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দ প্রত্যাহারের পর গত বছর জুনে ফিলিস্তিনিদের আরেকটি সহযোগিতাও বাতিল করা হয়।
এই ঘাটতি পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরব দেশগুলোসহ রাশিয়া এবং চীনের মতো সমৃদ্ধশালী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। তারা জানায়, লাখ লাখ মানুষকে ক্ষুধার তাড়না থেকে বাঁচাতে জুনের মাঝামাঝিতেই ৬ কোটি ডলার প্রয়োজন।
সংস্থাটির পরিচালক ম্যাথিয়াস স্কেমেল বলেন, আমরা খাবার সরবরাহের ব্যাপারে খুবই জটিল পরিস্থিতিতে রয়েছি। আমরা ১০ লাখ মানুষকে তাদের প্রয়োজনের এক চতুর্থাংশ খাবার সরবরাহে সমর্থ হচ্ছি। ন্যূনতম এই খাবার না পেলে তাদের অনেকেই বাঁচবে না। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার আগে ম্যাথিয়াস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ বন্ধ করার কারণেই এই ঘাটতি পূরণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক সংস্থাকে ৩৬০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে এসে তারা ঘোষণা দেয় আর কোনও সহায়তা দেওয়া হবে না। ম্যাথিয়াস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক। খানিকটা সময় নিয়ে সহায়তা কমাতে থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারতো। তবে একদিনের মধ্যে ত্রাণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য খাত ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের বরাদ্দ কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ।
২০১৮ সালের শেষার্ধে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খাতে ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শিশুরা পর্যাপ্ত কাউন্সিলিং থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া গাজাবাসীদের জন্য স্বল্পসময়ের চাকরি দেওয়ার এক প্রকল্প থেকেও বাজেট কমাতে হয়েছে তাদের। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ১৩৯ জন ফিলিস্তিনি চাকরি পেয়েছিলো, আগের বছর থেকে বেকারত্বের হার নেমে এসেছিলো ৪৮ শতাংশে।
বর্তমানে সংস্থাটির সবচেয়ে বড় দাতা ইইউ। এছাড়া আলাদাভাবে সহায়তা করছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও সুইডেন। ইইউয়ের পলিসি প্রধান ফেডরিকা মোঘেরিনির প্রশংসা করলেও ম্যাথিয়াসের দাবি, ইউরোপীয় দেশগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না।
ম্যাথিয়াস স্কেমেলক বলেন, ‘আমি গাজায় সবসময়ই শুনি যুক্তরাষ্ট্রের অনিশ্চিত আচরণে কারণেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তার ওপর আস্থা হারিয়েছে সবাই। ইউরোপীয় দেশগুলোর দায়িত্বপালনের সুযোগ ছিলো কিন্তু তারা নিজেদেরকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত। ফলে তারা ভূমিকা পালন করবে এমনটা আশা করা অবাস্তব।
১৯৪৮ সালে আরব যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় এক বছর পরেই জাতিসংঘের এই সংস্থাটি যাত্রা শুরু করে। পশ্চিমতীর, জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়ায়ও স্কুল, হাসপাতাল ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সংস্থাটি। ২০০৭ সাল থেকে জল, স্থল ও আকাশসীমায় অবরুদ্ধ থাকা গাজা উপত্যকাতেই তাদের কার্যক্রমের পরিধি বেশি বিস্তৃত। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতে এই অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নেই বললেই চলে। দিনের ৪-৫ ঘণ্টা থাকে বিদ্যুৎ সংযোগ।
ম্যাথিয়াস বলেন, আমরা সময়ের সঙ্গে ছুটছি। কোনও স্বপ্ন বা আশা না থাকায় শিশুরাও উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকছে। তিনি বলেন, ‘তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পরও অনেক শিশুই ইন্টারনেট দিয়ে বিশ্ব দেখে, নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। তবে অবরোধ অব্যাহত থাকলে এই পরিস্থিতি থাকবে না। স্বপ্ন দেখবে না তারা। ফিলিস্তিনি বাবা-মা’রা এটা নিয়েই শঙ্কিত।
ট্রাম্প প্রশাসন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হতে শুরু করে। তখন থেকেই গাজা ও পশ্চিম তীরের জন্য জাতিসংঘের সহায়তা খাতে বরাদ্দ বাতিল করতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দ প্রত্যাহারের পর গত বছর জুনে ফিলিস্তিনিদের আরেকটি সহযোগিতাও বাতিল করা হয়।
এই ঘাটতি পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরব দেশগুলোসহ রাশিয়া এবং চীনের মতো সমৃদ্ধশালী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। তারা জানায়, লাখ লাখ মানুষকে ক্ষুধার তাড়না থেকে বাঁচাতে জুনের মাঝামাঝিতেই ৬ কোটি ডলার প্রয়োজন।
সংস্থাটির পরিচালক ম্যাথিয়াস স্কেমেল বলেন, আমরা খাবার সরবরাহের ব্যাপারে খুবই জটিল পরিস্থিতিতে রয়েছি। আমরা ১০ লাখ মানুষকে তাদের প্রয়োজনের এক চতুর্থাংশ খাবার সরবরাহে সমর্থ হচ্ছি। ন্যূনতম এই খাবার না পেলে তাদের অনেকেই বাঁচবে না। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার আগে ম্যাথিয়াস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ বন্ধ করার কারণেই এই ঘাটতি পূরণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক সংস্থাকে ৩৬০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে এসে তারা ঘোষণা দেয় আর কোনও সহায়তা দেওয়া হবে না। ম্যাথিয়াস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক। খানিকটা সময় নিয়ে সহায়তা কমাতে থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারতো। তবে একদিনের মধ্যে ত্রাণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য খাত ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের বরাদ্দ কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ।
২০১৮ সালের শেষার্ধে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খাতে ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শিশুরা পর্যাপ্ত কাউন্সিলিং থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া গাজাবাসীদের জন্য স্বল্পসময়ের চাকরি দেওয়ার এক প্রকল্প থেকেও বাজেট কমাতে হয়েছে তাদের। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ১৩৯ জন ফিলিস্তিনি চাকরি পেয়েছিলো, আগের বছর থেকে বেকারত্বের হার নেমে এসেছিলো ৪৮ শতাংশে।
বর্তমানে সংস্থাটির সবচেয়ে বড় দাতা ইইউ। এছাড়া আলাদাভাবে সহায়তা করছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও সুইডেন। ইইউয়ের পলিসি প্রধান ফেডরিকা মোঘেরিনির প্রশংসা করলেও ম্যাথিয়াসের দাবি, ইউরোপীয় দেশগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না।
ম্যাথিয়াস স্কেমেলক বলেন, ‘আমি গাজায় সবসময়ই শুনি যুক্তরাষ্ট্রের অনিশ্চিত আচরণে কারণেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তার ওপর আস্থা হারিয়েছে সবাই। ইউরোপীয় দেশগুলোর দায়িত্বপালনের সুযোগ ছিলো কিন্তু তারা নিজেদেরকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত। ফলে তারা ভূমিকা পালন করবে এমনটা আশা করা অবাস্তব।
১৯৪৮ সালে আরব যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় এক বছর পরেই জাতিসংঘের এই সংস্থাটি যাত্রা শুরু করে। পশ্চিমতীর, জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়ায়ও স্কুল, হাসপাতাল ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সংস্থাটি। ২০০৭ সাল থেকে জল, স্থল ও আকাশসীমায় অবরুদ্ধ থাকা গাজা উপত্যকাতেই তাদের কার্যক্রমের পরিধি বেশি বিস্তৃত। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতে এই অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নেই বললেই চলে। দিনের ৪-৫ ঘণ্টা থাকে বিদ্যুৎ সংযোগ।
ম্যাথিয়াস বলেন, আমরা সময়ের সঙ্গে ছুটছি। কোনও স্বপ্ন বা আশা না থাকায় শিশুরাও উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকছে। তিনি বলেন, ‘তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পরও অনেক শিশুই ইন্টারনেট দিয়ে বিশ্ব দেখে, নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। তবে অবরোধ অব্যাহত থাকলে এই পরিস্থিতি থাকবে না। স্বপ্ন দেখবে না তারা। ফিলিস্তিনি বাবা-মা’রা এটা নিয়েই শঙ্কিত।
No comments